স্মৃতিচারণঃস্মৃতির পাতা থেকে বন্ধুদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করার জীবনের গল্প //পর্ব-১

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

আসসালামু-আলাইকুম/আদাব।

হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন।হ্যাঁ, আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @mohamad786 🇧🇩 বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলায় বাস করি।আমির সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যায়নরত আছি।

আমাদের স্মৃতির পাতায় হাজারো গল্প রয়েছে। আর এই স্মৃতির পাতার গল্প গুলো মনে করতে পেরে খুবই ভালো লাগে। বিশেষ করে আজকে আমার বন্ধুদের সাথে ক্লাস নাইনের একটি ঘটনা খুব মনে পরেছে। আসলে বন্ধুদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছিলাম। আর এই গল্পটি মনে করার কারণ হলো আজকে আমি মার্কেটে গিয়েছিলাম এবং মার্কেটে গিয়ে আমার সেই স্মৃতিময় বন্ধু রহিমকে দেখতে পেলাম। আসলে রহিমকে দেখে খুবই ভালো লাগলো, ও এখন বিয়ে করেছে। একটা সন্তানও দেখতে পেলাম, ওকে যখন মার্কেটে দেখতে পেলাম খুবই ভালো লাগলো। দেখলাম ওর মুখে হাসি খুশি এবং পরিবারের সাথে মার্কেট করছে। অনেক কিছু কেনাকাটা করেছে। যার কারণে ওর সাথে অনেকক্ষণ কথা বললাম, কথা বলে খুবই ভালো লাগলো। বললাম তুই এখন কি করিস, ও বলল যে সিরাজগঞ্জ ডিসি অফিসে অফিস সহকারী একটা সরকারি চাকরি করছে। কথাটা শুনতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। যাক বন্ধু তাও অনেক ভালো একটা পজিশনে আছে। তো বন্ধুরা আপনাদের মাঝে আমার স্মৃতিময় গল্প শেয়ার করছি, তো চলুন সেই গল্পটি পড়া শুরু করা যাক।


hands-2847508_1280.jpg

Source

আমি তখন ক্লাস নাইনে পড়াশোনা করি, ক্লাস নাইনে ফেব্রুয়ারি মার্চ আর এ ফেব্রুয়ারি মাসে আমাদের স্কুল থেকে বনভোজনে যাওয়ার আয়োজন করেছে। নাইন ট্রেনের স্টুডেন্টরা মিলে এই বনভোজনের জায়গা ঠিক করে। আমরা সকলে মিলে আলোচনা করে স্বপ্নপুরী জায়গা ঠিক করলাম। আসলে আমাদের স্কুলে নবম, দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের নিয়েই বনভোজনের যাওয়ার ব্যবস্থা করা হতো। তাই দীর্ঘ অপেক্ষা ছিল যে কবে নাইন টেনে উঠবো, তখন আমরা পিকনিকে যাব স্যারদের সাথে মজা করবো। সেই দিনগুলো ভাবতেছিলাম। আর আমরা যখন স্বপ্নপুরী জায়গা ঠিক করলাম। আমরা সকল বন্ধুরা অনেক আনন্দের সাথে সেই দিনটা প্রহর গুনতে লাগলাম। আসলে আমরা শুক্রবারে ঠিক করেছি শুক্রবারে ভোরবেলা যাব এবং তার এক সপ্তাহ সময় রয়েছে, আর এই এক সপ্তাহ সময়ের মধ্যে আমাদের টাকাগুলো উঠাতে হবে এবং টাকার তোলার দায়িত্ব দিল আমার আর রনির উপরে। আমার বন্ধুর রনি স্যারের ছেলে ছিল।


তাই আমরা সকল বন্ধুরা এবং বান্ধবীরা মিলে টাকা উঠানো শুরু করলাম। অনেকেই টাকা দিয়েছে।তবে তিন, চারদিন হয়ে যায় আমার বন্ধু মানিক টাকা দেয় না। ওকে বললে টাকা দিস না কেন। আসলে মানিকের অবস্থা যে খুব খারাপ এটা আমি বুঝতামই না। কারণ মানিক কখনোই মন খুলে আমাদের সাথে এই অভাবের কথা বলতো না। তবে স্যাররা ওর অভাবের কথা জানতো। তাই স্যারা গোপনে ওকে ফ্রি পড়াতো। কারণ মানিক খুবই ভালো স্টুডেন্ট ছিল।ওর ক্লাসে ২ রোল ছিলো,অনেক ভালো স্টুডেন্ট, যা বলার মত না, সবসময় পড়াশোনা করেতো, আসলে এক্সট্রা ব্রিলিয়ান কিছু ছাত্র রয়েছে, মানিকও সেরকমই ছিল, মাথায় প্রচুর পরিমাণে পড়া মনে থাকতো। যার কারণে স্যারদের ওকে খুবি ভালোবাসতো।


friendship-2366955_1280.jpg

Source

তারপরে সবাই মোটামুটি পিকনিকের টাকা দিয়েছে। মানিক এখনো টাকা দিচ্ছে না, আমি মানিককে বললাম কিরে মানিক তুই টাকা দিচ্ছিস না কেন। তুই কি পিকনিকে যাবি না। মানিক বলল যে না বন্ধু আমি তো পিকনিকে যেতে পারবো না, ওই তারিখে আমার একটা বৃত্তি পরীক্ষা রয়েছে শহরে, আর বাড়িতে একটা সমস্যা রয়েছে। যার কারণে আমি যেতে পারব না।তবে খুবই ইচ্ছা ছিল বন্ধু তোদের সাথে পিকনিকে গিয়ে মজা করবো, কিন্তু সেটা আমার আর হচ্ছে না, তবে সমস্যা নেই পরবর্তীতে যাব তোদের সাথে ইনশাআল্লাহ। আসলে মানিকের কথার ভিতরে কেমন জানি লাগলো, ওর হয়তো যাওয়ার খুব ইচ্ছা রয়েছে, কিন্তু কোন এক কারণে ওর মন ভেতর থেকে এই কথাগুলো বের হচ্ছে। কথাগুলো যখন বলল তখন কি রকম জানি বিনয়ী ভাব ছিল। মনে হচ্ছিল কথা গুলো ইচ্ছাকৃতভাবে বলেনি। যার কারণে আমার খুবই খারাপ লাগলো, তাই আমি আমার রনি বন্ধুকে নিয়ে কথাগুলো বললাম। রনি বললো যে আচ্ছা ওর কি সমস্যা আমি আগে স্যারের সাথে কথা বলি।


তাই আমি আর রনি মিলে স্যারের কাছে গেলাম। আমাদের গণিত স্যাবের কাছে, এই স্যার রনিকে ফ্রি পড়াতো, এটা আমরা জানতামই না। রনি স্যারকে বললাম স্যার মানিক তো পিকনিকে যেতে চাচ্ছে না, ওর নাকি পরীক্ষা রয়েছে স্যার বললো, কোন পরীক্ষা নেই, পরীক্ষা হলে আমি জানতাম। ওর হয়তো অন্য কোন সমস্যা রয়েছে। তোমরা যদি এই সমস্যার সমাধান করতে চাও তাহলে রনির বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেও। কি হয়েছে,মানিক কিন্তু সহজে রাজি হবে না। সত্যিটা তোমাদেরই বের করতে হবে। কারণ রনি খুবই লাজুক ছেলে, আর কারো কাছে ওর কষ্ট প্রকাশ করে না।


তাই পরের দিন বিকেলবেলা আমি রনি এবং আমার আরো কিছু বন্ধু মিলে মানিকদের বাড়িতে আসলাম। মানিককে না জানিয়ে, বিকেলবেলা মানিক বাড়িতে ছিল না, মানিক হাঁটে গেছে, সবজি বিক্রি করতে। আর ওর বাবা বারান্দায় বসে রয়েছে।আমরা মানিকের বাবাকে সালাম দিলাম। মানিকের বাবার কাছে এসে দেখতে পেলাম সে অসুস্থ। বললাম আমরা মানিকের বন্ধু। মানিক কই বলল, যে ওতো সবজি নিয়ে হাঁটে গেছে। তারপরে আমরা মানিকের বিষয়ে সকল কিছু ওর বাবার কাছ থেকে জানতে চাইলাম। আর ওর বাবা দুঃখের কথাগুলো বলতে লাগলো, তো বন্ধুরা আজকে এই পর্যন্তই, আগামী পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করব বাকি গল্পের অংশ।সে পর্যন্ত আশা করি আপনারা অপেক্ষা করবেন।

আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

standard_Discord_Zip.gif

আমার পরিচয়

IMG_20230821_180423.jpg

আমার নাম মোঃ ফয়সাল আহমেদ ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবসি ।আমি সর্বদাই গরীব-দুঃখীদের সেবায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমি ফটোগ্রাফি করতে খুব ভালোবাসি এবং নতুন সৃজনশীলতার মাধ্যমে কিছু তৈরি করতে আমার খুবই ভালো লাগে।এই ছিল আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, আপনারা সবাই আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট দিয়ে উৎসাহিত করবেন, ধন্যবাদ সবাইকে।

Amar_Bangla_Blog_logo_png.png

👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 months ago 

আসলে বন্ধুদের সাথে আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করতে খুবই ভালো লাগে। আজকে আপনার স্মৃতির পাতার গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। তবে মানিক ভাইয়ের কথা এবং মানিক ভাইয়ের বিষয়টি জানতে পেরে মনে হচ্ছে মানিক ভাই টাকার কারনেই আপনাদের কাছে মিথ্যা বলেছিলো।হয়তো তার কাছে যাওয়ার মত টাকা ছিল না তাই হয়তো আপনার কাছে পরীক্ষা কথা বলেছে। যাই হোক আপনারা সবাই মিলে তার বাড়িতে আসলেন এবং সেখান থেকে আসল ঘটনা জানতে পারবেন। আগামী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

Posted using SteemPro Mobile

 2 months ago 

আপনার মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনি সুন্দর মতামত দিয়েছেন। আশা করছি আগামী পর্বে বিষয়গুলো সম্পূর্ণ বুঝতে পারবেন।

 2 months ago 

ভাইয়া আপনার স্মৃতির পাতা গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আপনার বন্ধুর মত আমাদের চারপাশে অনেক মানিক রয়েছে। হয়তো আমরা সেভাবে বুঝতে পারিনা। আপনার গল্পের পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 2 months ago 

আসলেই বন্ধুত্বের বন্ধন কখনো ভুলা যায় না। আর এই বন্ধুত্বের মুহূর্তগুলো অসাধারণ ছিল। আপনার মতামত ভালো লাগছে।

 2 months ago 

বন্ধুদের এই খুনসুটি সময় গুলো সত্যি অনেক মজাদার এবং পিকনিক নিয়ে তো এমন একটু হয়েই থাকে। আপনার ছোটবেলার মুহূর্তগুলো খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন গল্পটা পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.23
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 67033.58
ETH 3521.90
USDT 1.00
SBD 3.20