শৈশবের স্মৃতিঃ “ছোটবেলায় ছোট মামার সাথে নদীতে যাওয়ার মজার এক কাহিনী”
তখন আমার বয়স মাত্র ৬।ছোটবেলায় আম্মুর সাথে ঘনঘন নানার বাড়ি বেড়াতে যাওয়া হতো।ছোটবেলায় আমি নানার বাড়িতে বেশি যেতে চাইতাম কারণ নানার বাড়িতে অনেক মানুষ ছিল এবং আমরা অনেক অনেক খেলাধুল করতাম।বিশেষ করে আমার ছোট মামা এবং ছোট খালা আমাকে অনেক বেশি আদর করত।তারা দুজন আমাকে সব সময় কোলে কোলে রাখত।যেখানে যেত আমাকে সঙ্গে করে নিয়ে যেত।আমার ছোট মামা আমার থেকে বয়সে ১৫ বছরের বড়।বয়সের এত তফাৎ থাকার পরেও আমাদের মধ্যেকার সম্পর্ক বন্ধুত্বের মতো।ছোটবেলায় যখন নানাবাড়ি যেতাম তখন ছোট আমার সাথেই আমি বেশি থাকতাম।ছোট মামা যা যা করত আমিও দেখে দেখে তাই তাই করার চেষ্টা করতাম। এবং ছোট আমার যেখানে যেখানে যেত আমি পিছনে পিছনে আমার সাথে চলে যেতাম।এক কথায় নানা বাড়িতে গিয়ে আমি ছোট মামাকে ছাড়তাম না।তাই মামা আমাকে সব সময় সঙ্গে সঙ্গে রাখতো।
আমার নানার বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে সু বিশাল নদী।তাই আমার নানা এবং মামারা ছোটবেলা থেকেই মাছ ধরার পটু ছিলেন।বিশেষ করে আমার ছোট মামা মাছ ধরতে অনেক পছন্দ করতেন।একবার শীতকালে নানার বাড়িতে গিয়েছিলাম। কোন এক শীতের সকালে আমার মামারা নদীতে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছিল।মামাদের মাছ ধরতে যাওয়া দেখে আমি তাদের সাথে যাওয়ার জন্য বায়না করলাম।বিশেষ করে ছোট মামাকে বারবার বলতেছিলাম,মামা আমাকে নিয়ে যাও,আমাকে নিয়ে যাও,আমি যাব আমি মাছ ধরতে যাব।আমি যেহেতু অনেক ছোট এবং আমি সাঁতার কাটতেও জানি না তাই মামা আমাকে নদীতে নেওয়ার সাহস পাচ্ছিল না।এরপর আমি আম্মুর কাছে গিয়ে কান্নাকাটি শুরু করলাম।অনেক কান্নাকাটির পর নানা এসে বলল,ফয়সাল যাক,ওর ছোট মামা তো আছে, ওর ছোট মামা দেখে শুনে রাখবে।তারপর অনেক জোরাজোরি করার পর আম্মু রাজি হল এবং আমাকে মামাদের সাথে নদীতে যাওয়ার জন্য অনুমতি দিল।আমি ছোট আমার বলে গিয়ে আনন্দে ফেটে বললাম।কারণ ওই দিনই ছিল নানা বাড়িতে গিয়ে মামাদের সঙ্গে প্রথম নদীতে গিয়ে মাছ ধরার দিন।যদিও আমি মাছ ধরতে জানতাম না কিন্তু মাছ ধরার দেখতে অনেক পছন্দ করতাম।
আমার নানা বাড়ি থেকে নদীর দূরত্ব ছিল প্রায় দুই কিলোমিটার। আমি ছোট মামার কাঁধে চড়েই নদীর দিকে রওনা হলাম।গ্রাম বাংলার অপরূপ সৌন্দর্যময় দৃশ্য সম্পর্কে আমার ছোট মামা আমাকে বলতেছিল এবং আশেপাশের গাছপালাদের সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিল।আমার এখনো মনে পড়ে যে, শীতের দিন মৃদু ঠান্ডা হাওয়ায় আমি ছোট মামার বাঁধে উঠে মজা করে যাচ্ছিলাম।১৫/২০ মিনিট হাঁটার পর আমরা নদীর ধারে এসে পৌছালাম।আমি আর আমার ছোট মামা নদীর পাড়ে বসে রইলাম আর আমার বাকি দুই মামা নদীতে নেমে গেল মাছ ধরার জন্য।আমার ছোট মামা আমার জন্য নদীতে নামতে পারল না।কিন্তু আমি বারবার নদীতে নামতে যাচ্ছিলাম।তাই মামার একটা বুদ্ধি করে আমাকে নদীতে নামালো।মাছ রাখার জন্য বড় একটি স্টিলের পাতিল নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
সেই স্টিলের পাতিল এর মধ্যে আমাকে বসিয়ে আমার মামারা আমাকে নদীতে নামিয়েছিল।এই দৃশ্যটি এখনো আমার মনে পড়লে অনেক হাসি পায়।পাতিল এর মধ্যে বসে বসে আমি নদী বিলাস করেছিলাম🤭মামারা সবাই মিলে অনেক খোঁজাখুঁজি করার পরেও নদীতে তেমন মাছ ধরতে পারলো না।কারণ আমরা যে মৌসুমে নদীতে গিয়েছিলাম ওই মৌসুমীর নদীতে মাছ খুব কমই পাওয়া যায়।তাই অনেক চেষ্টা করার পরেও মামারা মাছ ধরতে ব্যর্থ হল।কিছুসংখ্যক ছোট মাছ নিয়েই তাদের ঘরে ফিরে আসতে হল।ঘরে ফিরে আসার আগে মামারা সবাই নদীতে গোসল করলো।আর আমাকে সেই বড় স্টিলের পাতিল এর মধ্যে বসিয়ে রেখেই গোসল করিয়ে দিল।আমিও অনেক মজা করলাম।এই দিনটির কথা আজও মনে পড়লে আমার অনেক হাসি পায় সাথে অনেক ভালোও লাগে।
আজ এখানেই শেষ করছি। অন্য কোন একদিন ভিন্ন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হব। ততক্ষন পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
👉বিশেষভাবে ধন্যবাদ সকল বন্ধুদের যারা এই পোস্টকে সমর্থন করছেন🌺🌹🌺
https://x.com/mohamad786FA/status/1812425666786210069?t=g8N8jxMMUf_LjKCS9jQcgQ&s=19
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলেই শৈশব স্মৃতি মনে পরলে মনে হয় আগের শৈশবে ফিরে যেতে।ছোটবেলায় নানা বাড়ি দাদা বাড়ির যেতে আসলেই অনেক ভালো লাগতো।আপনার শৈশন স্মৃতি পড়ে ভালো লাগলো।নিশ্চয়ই পাতিলাটা বড় ছিলো যার জন্য আপনি বসার পর ভেসে ছিলো।ধন্যবাদ
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
ছোটবেলার স্মৃতিময় দিনগুলোর কথা মনে পড়লে অনেক বেশি ভালো লাগে। আপনার আজকের লেখা পোস্ট পড়ে আমার তো ছোটবেলার অনেক কথাই মনে পড়ে গিয়েছে। আমার তো বেশি মজা লেগেছে এটা পড়ে যে, বড় পাতিল টার মধ্যে আপনাকে বসিয়ে নদীতে নামিয়ে ছিল। নিশ্চয়ই আপনি তখন অনেক বেশি আনন্দিত হয়েছিলেন। এখন এগুলো মনে পড়লে হাসি পেলেও, সেই মুহূর্ত কিন্তু সব থেকে আলাদা ছিল। ছোটবেলায় নানার বাড়িতে গিয়ে ভালো সময় কাটানোর মুহূর্ত গুলো সত্যি অনেক সুন্দর ছিল।
আসলে ভাই শৈশবের অনেক ঘটনাই মনে পড়ে। কিছু কিছু ঘটনা মনে পড়লে হৃদয় শিহরিত হয়ে ওঠে। আপনার মামার সাথে নদীতে যাওয়ার ঘটনা পড়ে বেশ ভালো লাগলো। এখন ভাই ছোট বাচ্চাদের পাতিলের মধ্যে বসিয়ে নদীতে ছেড়ে দেওয়া হয়। ধন্যবাদ আপনাকে শৈশবের চমৎকার স্মৃতির অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।
পাতিলের মধ্যে আপনাকে দিয়ে নদীতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল,হাহা হাসির ব্যাপার আসলেই।আগেকার দিনগুলো সত্যি মজার ছিল।শৈশবে মামার সাথে নদীতে যাওয়ার দারুন একটি পোস্ট আপনি শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।