গল্প।। ভালবাসি তোমায়।। দ্বিতীয় পর্ব।।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার লেখা গল্প ভালোবাসি তোমায় এর দ্বিতীয় পর্ব শেয়ার করব ।


heart-g961a802e6_1920.jpg

দ্বিতীয় পর্ব

সায়মা শরীফের গাড়িতে না উঠে একটি সি এন জি ডেকে উঠে পরল। শরীফ সায়মা এর সি এন জি ফলো করে তার বাসা পর্যন্ত গেল। শরীফ গাড়ি করে আবার নিজের বাসায় চলে এসেছে। । পরদিন অফিসে শরীফ কাজে জয়েন দিয়ে শুধু সায়মা এর আশেপাশে ঘুরঘুর করছে। সায়মা আজ পিংক কালারের একটি ড্রেস পড়েছে এবং এই কারণেই হয়ত তাকে আজ অসম্ভব সুন্দর লাগছে। শরীফ অনেকবার সায়মা কাছে এই সমস্যা সেই সমস্যা নিয়ে এসেছে কথা বলার জন্য কিন্তু সায়মা এতই ব্যস্ত যে কাজ বুঝিয়ে দিয়ে আর কিছু বলে না। অবশেষে শরীফ মন খারাপ করে ডেস্ক এ বসে আছে। আসলে সারাদিন সায়মার পিছনে ঘুরে ঘুরে শরীফ কোন কাজই করেনি। তার বস্ এসে তার কাছে রিপোর্ট চেয়ে না পাওয়াতে সবার সামনেই বিকট আওয়াজ করে যা তা ভাষায় বকাবকি করল। সায়মা এতই ব্যস্ত একবার তাকিয়ে আবার কাজে ঢুকে পড়ল। আজ বৃহষ্পতিবার হওয়ায় তাদের অফিস হাফ বেলা ।

সবাই কাজ শেষে যখন বের হয়ে গেল শরীফ তখনও তার ডেস্ক এ মাথা দিয়ে বসে আছে। হঠাৎ একজন বলল চলেন আজ আমি আপনাকে লাঞ্চ করাব। শরীফ তাকিয়ে দেখল সায়মা এসে তার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে । সায়মা কে দেখে কিছুক্ষণের জন্য মন ভাল হলেও আবার মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে রইল। সায়মা বলল আজ আমার জন্মদিন আর যেহেতু আমার কাছের মানুষ কেউ নেই তাই চলুন আপনার সাথেই আজ লাঞ্চ করব। যখনই সায়মা আন্তরিকভাবে তার সাথে লাঞ্চ করার কথা বলল তখনই সে সব গ্লানি ভুলে সায়মা সাথে লাঞ্চ করতে বের হল। সায়মা বের হয়ে বলল কোথায় লাঞ্চ করতে চান? শরীফ বলল চলুন পল্টন একটি ভাল রেস্টুরেন্ট আছে রুফ টপে, ১৫ তলা বিল্ডিং এর ছাদে। সায়মা কি যেন চিন্তা করে পরে বলল চলুন তাহলে যাওয়া যাক। শরীফ বলল চলুন তাহলে আমার গাড়ি করে যাওয়া যাক। সায়মা বলল না গাড়ি করে না চলুন আমরা রিকশা করে যাব। শরীফ খুশি হয়ে বলল তাহলে ত খুবই ভাল হয়। শরীফ বাহিরে এসেই রিকশা ডাকল। তারা রিকশায় একসাথে পাশাপশি বসে ধানমন্ডি ৮ নম্বর এর ভিতর দিয়ে রওনা দিয়েছে। দুজনে বেশ খুশি মনেই কথা বলতে বলতে পল্টনের দিকে যাচ্ছে। রিকশা সায়েন্স ল্যাব দিয়ে বামে ঢুকবে এই সময় সায়মা রিকশা মামা কে বলল মামা সওজ গিয়ে ঢাকা ভার্সিটির ভিতর দিয়ে যান। শরীফ বলল আপনিও কি ঢাকা ভার্সিটির ভিতর দিয়ে যেতে পছন্দ করেন? সায়মা বলল আমার খুবই ভাল লাগে এই সবুজে ঘেরা গাছগাছালির ভিতর দিয়ে যেতে। শরীফ বলল আমি পারলে প্রতিদিন এখন দিয়ে যাই কারণ আমারও আপনার মত খুব ভাল লাগে এখান দিয়ে যেতে। সায়মা শরীফের হাতে একটি চিমটি কাটল। শরীফ অবাক হয়ে বলল এটা কি করলেন? সায়মা বলল আপনার আর আমার মধ্যে এই ব্যাপারে মিল আছে তাই চিমটি কাটলাম। শরীফ হাসছে আর সায়মা দিকে তাকিয়ে আছে। সে মনে হচ্ছে আরো প্রেমে পড়ে গেল সায়মার।

হঠাৎ সায়মা শরীফ কে বলল আমাকে ওই যে গাছটা দেখা যাচ্ছে সেখান থেকে কৃষ্ণচূড়া ফুল এনে দিবেন? শরীফ বলল অবশ্যই পারব বলেই রিকশা থামিয়ে দৌড়। গাছের উচ্চতা একটু বেশি হওয়ায় বেশ বেগ পোহাতে হল শরীফকে। কিন্তু সায়মার আবদার বলে কথা অনেক কষ্ট করে ফুল এনে দিল।রিকশা আবার চলা শুরু করল। শরীফ খেয়াল করল সায়মা কৃষ্ণচূড়া ফুল তার খোঁপায় বেধেছে। শরীফকে সায়মা জিজ্ঞেস করল বলেন ত আমাকে কেমন লাগছে? শরীফ কিছুটা অন্য ধ্যানে এক দৃষ্টিতে সায়মা এর দিকে তাকিয়ে আছে। আবার জিজ্ঞেস করায় শরীফ বলল লিওনার্দো দা ভিঞ্চি বেঁচে থাকলে হয়ত আজ আরেকটি মোনালিসার জন্ম হত। এই কথা শুনে সায়মা অট্ট হাসিতে মেতে উঠলো। এরকম করতে করতে বার্ডস আই রেস্টুরেন্টে পৌঁছে গেল। রেষ্টুরেন্টে ঢুকে সায়মা চিন্তা করল এত বড় রেস্টুরেন্ট খাবার বিল কেমন আসে কে জানে। যেহেতু চলেই এসেছি সেহেতু খেতেই হবে। তারা দুজনে বসে খাবার অর্ডার করল। এর মধ্যে সায়মা খেয়াল করল এত উপর থেকে পুরো শহরটাকে অনেক কাছে মনে হয়। সে খুব উপভোগ করল। । শরীফ সায়মা কে বলল আমি একটু ফ্রেশ হয়ে আসছি। এর মধ্যে খাবার চলে এল। শরীফ এবং সায়মা খুব আয়েশ করে খাবার খেল। বিলের কপি আসতেই সায়মা মাথায় বাজ পড়ার মত অবস্থা এত টাকা বিল? চলবে...

আশা করি আমার গল্পের দ্বিতীয় পর্ব আপনাদের ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ সবাইকে।

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

শরীফ এবং সায়মার এই গল্পটির প্রথম পর্ব আমি পড়েছিলাম আমার কাছে সত্যি ভীষণ ভালো লেগেছিল আজকে দ্বিতীয় পর্ব পড়ে সত্যি অসম্ভব ভালো লেগেছে। এই গল্পটি আরো ইন্টারেস্টিংয়ের দিকে চলে যাচ্ছে দেখছি। মনে হয় রেস্টুরেন্টে খাবারের দাম অনেক বেশি ছিল এবং তাই সায়মার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে যেন। এমনিতে এরকম রেস্টুরেন্টগুলোতে দাম বেশি থাকে। যাইহোক এর পরের পর্বে কি আসবে তা ভাবছি। অসম্ভব ভালো ছিল আপনার আজকের গল্পের দ্বিতীয় পর্ব।

 2 years ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 2 years ago 

সায়মা এবং শরীফের একই জায়গায় দিয়ে যেতে ভালো লাগে এটা সায়মা জানার পর শরীফের গায়ে চিমটি কাটে যার কারণে সায়মার প্রতি শরীফের ভালোলাগা আরো বেশি সৃষ্টি হয়েছে। সায়মার জন্য শরীফ কৃষ্ণচূড়া ফুল নিয়ে এসেছিল। রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়ার এত টাকার বিল দেখে সায়মার মাথায় ভাঁজ পড়ার মত অবস্থা হয়ে গিয়েছিল এরপর কি হয়েছে এটা জানার আগ্রহ জাগছে। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি শেয়ার করবেন পরের পর্ব অপেক্ষায় থাকলাম।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 54370.47
ETH 2283.51
USDT 1.00
SBD 2.33