ঈদের দিন কাটানো কিছু মুহূর্ত এবং অনুভূতি।।

in আমার বাংলা ব্লগlast year
আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি। আজ আবার এসেছি নতুন একটি পোস্ট নিয়ে।

ঈদের দিন ভেবেছিলাম ঈদ নিয়ে একটি কবিতা লিখব এবং সেদিন রাতেই শেয়ার করব। সারাদিন এত ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে গেল সময়ই পেলাম না কবিতা লেখার। তবে হ্যা রাতে কবিতা লিখা শুরু করেছিলাম কিন্তু লিখা শেষ হয়েছে ঈদের দ্বিতীয় দিন। ঈদের পরদিন ভেবেছিলাম ঈদের দিন কিভাবে কেটেছে সেটা নিয়ে লিখব কিন্তু সেদিনও ব্যস্ততার জন্য লিখা শুরু করেও শেষ করতে পারিনি। আজ ঈদের তৃতীয় দিন এসে ঈদের দিন কাটানো মুহূর্ত শেয়ার করছি। আজও অনেক ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে গেলেও ভাবলাম ও এক দেরি হয়ে যাচ্ছে পরে আর পাঠক পড়ে আনন্দ পাবে না। যাই ঈদের দিন কাটানো আমার কিছু মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।

IMG20230422084035.jpg

ঈদের দিন খুব বেশি স্পেশাল কেটেছে সেটা বলব না কিন্তু ঈদ মানে প্রতিটি মুহূর্তই স্পেশাল। এই একটি দিনের অপেক্ষায় আমরা অধীর আগ্রহে থাকি। ঈদের আগের দিন অনেক জ্যাম এবং জার্নি করে গ্রামের বাড়ি এসেছি তাই অনেক টায়ার্ড ছিলাম। এসেই খাওয়া দাওয়া করে ঘুম দিয়েছি। সকালে ঘুম ভাঙলো আব্বার ডাকে। আব্বার এই ডাক বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনছি। মানে আব্বা একদম সকালে উঠিয়ে দিতেন যেন গোসল করে সেমাই খেয়ে সবার আগে ঈদগাহ মাঠে বসে থাকি। এখন বড় হয়েছি, বাচ্চার বাবা আমি তাও আব্বা এখনো সেই আগের মতই ডেকে তুলে দেন। যাই হোক ঈদের দিন আব্বা ডেকেছেন ঠিক ৬ টা বাজে। তখন আমার গভীর ঘুম। আব্বা না উঠা পর্যন্ত ডাকতেই থাকেন তাই উঠে রুম থেকে বের হয়ে আব্বাকে আগে চেহারা দেখলাম। দেখলাম আব্বা একদম রেডি হয়ে আছেন পাজামা পাঞ্জাবী পড়ে। কিছুক্ষণ পর আব্বা আমাকে বললেন নামাজ ৮ টা বাজে শুরু হবে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে চলে এস। আমাদের ঈদগাহ যেতে ১৫ মিনিট হাঁটার রাস্তা।

IMG20230422084038.jpg

আব্বা বের হয়ে চলে গেলেন সেমাই খেয়ে আর এরই মধ্যে আমারও ঘুম কেটে গেল। গোসল করে ফ্রেশ হয়ে রেডি হলাম ততক্ষণে ৭টা বেজে ৩০ মিনিট। এর মধ্যে পাশের বাড়ির লোকজন ডেকে গিয়েছে। আমার দেরি দেখে দুই তিনজন থেকে বাকিরা চলে গিয়েছে। আমি সেমাই খাচ্ছি তখন আব্বা ফোন দিয়ে বললেন নামাজ ৮ টা বেজে ৩০ মিনিট এ শুরু হবে। আমি ধীরে সুস্থে সেমাই খেয়ে তারপর বের হয়েছি। বাকিদের কি অবস্থা জানিনা আমরা সকালে সেমাই না খেয়ে নামাজে যাই না।

আমি আর বাকিরা মিলে রাস্তার ডান পাশ ধরে ঈদগাহ মাঠের দিকে এগোলাম এবং প্রায় ১৫ মিনিট পর মাঠে পৌঁছেছি। গিয়ে দেখি নামাজের কাটার প্রায় শেষ দিকে। আমাদের ঈদের নামাজ খোলা মাঠে আদায় হয়। শেষের দিকে একটি কাতারে জায়নামাজ বিছিয়ে বসে পড়লাম। তারপর কিছুক্ষণ পর নামাজ শুরু হয়ে গেল এবং নিয়ম অনুসারে নামাজ আদায় করে, মোনাজাত করে ঈদের নামাজ শেষ করেছি। নামাজ শেষে প্রতিবেশী, আত্মীয়, বন্ধু এবং আরো পরিচিত অনেকের সাথে কোলাকুলি করে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি। তারপর কবর জিয়ারত করেছি।

IMG20230422084045.jpg

আমাদের গ্রামে দুটি কবরস্থান এবং দুটিতেই আমাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয় স্বজনদের কবর আছে। আমরা যেখানে ঈদের নামাজ পড়ি সেখান থেকে আরেকটি কবরস্থানে যেতে প্রায় ২০ মিনিট হেঁটে যেতে হয়। প্রতি ঈদেই ঈদের নামাজ শেষে আমাদের গোষ্ঠীর সবাই দল বেধে হেঁটে অন্য কবরস্থানে যাই। এবারও নামাজ শেষে রাস্তার বাম পাশ ধরে কবরস্থানের দিকে এগোলাম। এর মাঝে আমার নিজস্ব একটি রেওয়াজ আছে সেটি হচ্ছে অন্য কবরস্থানে যাওয়ার সময় আমার এক বন্ধুর দোকানে দেখা করে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করা এবং এবারও ব্যতিক্রম হয়নি। তারপর কবরস্থানে গিয়ে আবার জিয়ারত করে বাড়ি চলে এসেছি।

বাড়ি আসার সাথে সাথেই সালামির জন্য হামলা করল আমার উপর। সবাই কে এক এক করে সালামি দিলাম। সালামি দেয়ার পর মনে হল ছোটবেলায় নিজের পকেট ভারী করতাম আর এখন ছোটদের দিয়ে দিয়ে পকেট খালি হয়ে যায়। যাই হোক সালামি দিতেও এক আনন্দ লাগে। বাড়ি এসে দেখি ততক্ষনে আম্মা পোলাও রোস্ট ঝাল মাংস পায়েস রান্না করে রেখেছে। এসেই আমি আর আব্বা খেতে বসে গেলাম। বসে দেখি সালাদ নেই। আম্মাকে বলতেই বললেন সব কাটা আছে কিন্তু মাখানো নেই। আমি ঝট করে লবণ সরিষার তেল দিয়ে সালাদ মাখিয়ে নিলাম এবং তারপর খাওয়া শুরু করলাম। খেয়ে দেয়ে ছোট করে ঘুম দিয়ে দিলাম। ঘুম থেকে উঠে পাশের বাড়ি গিয়ে সেমাই পায়েস খেয়ে গল্প করেছি। তারপর নিজের বাসায় দুপুরের খাবার খেয়েছি। বিকেলে ঘুরতে বের হয়েছি।

ডিভাইসঅপ্পো এ ৫৪
বিষয়ঈদের সকাল
ক্রেডিট@miratek
লোকেশনজাফরগঞ্জ, দেবিদ্বার, কুমিল্লা

সারাদিনের মুহূর্ত লিখতে গেলে অনেক বড় হয়ে যাবে তাই স্পেশাল মুহূর্ত নিয়েই লিখেছি। আজ এই পর্যন্তই। আশা করি আমার পোস্ট আপনাদের ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ সবাইকে।

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

ঈদের দিনে কাটানো মুহূর্ত জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। সত্যিই ঈদ মানে আনন্দ ঈদ মানে খুশি, পরিবারের সাথে নিয়েই আনন্দময় দিন এভাবেই কাটানো প্রত্যেকটা মানুষেরই ইচ্ছা। যাইহোক আপনার অনুভূতি জানতে পেরে ভালো লাগলো।

 last year 

ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্ট পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

আপনি তো দেখছি ঈদের দিন বেশ ভালোই মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। ভীষণ ভালো লেগেছে আপনার ঈদের দিনের কাটানো এত সুন্দর একটা মুহূর্তের পোস্ট পড়ে আমার কাছে। পরিবারের সাথে এভাবেই। মুহূর্ত অতিবাহিত করার মধ্যে অন্যরকম একটা অনুভূতি রয়েছে। আসলে ঠিকই বলেছেন সেলামি দেওয়ার মধ্যেও অন্যরকম একটা অনুভূতি রয়েছে। যাইহোক অসম্ভব ভালো লেগেছে আপনার সম্পূর্ণ পোস্টটা পড়ে।

 last year 

ধন্যবাদ আপু গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

ঈদ মোবারক ভাইয়া ঈদের দিন কাটানো কিছু মুহূর্ত এবং অনুভূতি। সত্যি বলছি ঈদের দিনটা সবারই অনেক আনন্দ এবং উৎসবের দিন এই দিনে আমরা অনেক আনন্দ এবং উৎসব করে থাকি অনেক হাসি ঠাট্টা। অনেক সুন্দর ভাবে ঈদগায়ের নামাজ পড়তে গিয়ে অনেক সুন্দর কিছু মুহূর্ত ছবি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ আমার পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য।

 last year 

ঈদের দিনের অনুভূতি গুলো শেয়ার করেছেন পড়ে খুব ভাল লাগলো। আনন্দের এই ঈদ পরিবারের সাথে খুব সুন্দরভাবে কাটিয়েছেন জেনে খুব ভাল লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।

 last year 

আপনার ঈদের দিনে কাটানো খুবই সুন্দর একটা মুহূর্ত এবং অনুভূতির পোস্ট পড়লাম। আপনার ঈদের দিনে কাটানো মুহূর্ত এবং অনুভূতি এই পোস্টের মাধ্যমে পড়ে খুবই ভালো লেগেছে আমার কাছে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আপনি খুবই সুন্দরভাবে লিখেছেন এই পোস্টটি। আপনার মুহূর্তটা খুবই ভালো কেটেছে যা আমি পড়ে বুঝতে পারছি। সবার মাঝে এত সুন্দর একটা মুহূর্ত তুলে ধরেছেন দেখে ভালো লেগেছে।

 last year 

জার্নি করে গ্রামের বাড়ি গিয়ে টায়ার্ড হয়ে গিয়েছিলেন। ঈদের দিন সকাল বেলায় আপনার বাবার ডাকে আগের মতোই ঘুম ভেঙেছে এবারও আপনার।আপনার বাবা আপনাকে আগে ডেকে দিতেন যাতে করে নামাজ পড়তে যেতে পারেন দ্রুত।আর এখন আপনি বাবা তাও একইভাবে আপনাকে এখনও ডাকা হয়।নামাজ শেষে কবর জিয়ারত করে বাসায় এসে সালামি দিলেন সবাইকে।আপনার ঈদের মুহূর্তের অনুভূতিমূলক পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 last year 

ঈদের আগে বাড়িতে যাওয়ার পোস্টটি আমি পড়েছিলাম ভাইয়া। যাত্রাবাড়ীর দিকে জ্যামে অনেকক্ষণ বসে থেকে বাসে বসেই ইফতার করতে হয়েছিল শেষ পর্যন্ত। যাইহোক ঈদের সময় সবাই খুব ব্যস্ত থাকে এবং এই ব্যস্ততার মধ্যে পোস্ট লেখাটা আসলেই একটু কষ্ট হয়ে যায়। তবুও ঈদের দিনের পোস্ট এখন না লিখলে অনেক দেরি হয়ে যাবে এবং পাঠকেরা পড়ে মজাও পাবে না। ঈদের দিন নামাজ আদায় করে সবাইকে সালামি দিয়েছেন এবং খাওয়া দাওয়া করেছেন। তারপর বিকেলে একটু ঘুরতে গিয়েছেন। সবমিলিয়ে মোটামুটি ভালোই কাটিয়েছেন ঈদের দিনটা। পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

অনেক ব্যস্ততার জন্য আপনি ঈদের দিন কবিতা পোস্ট করতে পারেননি এবং দ্বিতীয় দিন ঈদের দিনের কাটানো মুহূর্তটিও শেয়ার করতে পারেননি। তবে তৃতীয় দিন সময়ের অভাব থাকলেও বেশ সুন্দর করেই কিন্তু ঈদের দিনের মুহূর্তটা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। দেখে ভালো লাগলো। বাচ্চার বাবা হয়ে গেলেও আপনার বাবার কাছে তো আপনি এখনো ছোটই আছেন। তাই সে ছোটবেলার মতো করেই আপনাকে ডেকে তুলেছে ঈদের দিন সকালে, ভালোই হয়েছে সাড়ে আটটা থেকে নামাজ শুরু হয়েছে ,আপনি ধীরে সুস্থে যেতে পারলেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 62884.65
ETH 2444.83
USDT 1.00
SBD 2.61