সমস্যা গুলোকে পাশ কাটিয়ে কিছুটা বিনোদনের আশায় ||পর্ব -২||steemCreated with Sketch.

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম/আদাব। সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন আশা করছি। আমিও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার ব্লগ লেখা শুরু করছি।

প্রথম পর্ব

Picsart_22-09-17_22-30-34-740.jpg

সেদিন ভাগ্য সুপ্রসন্ন ছিল শেষ বিকালে আকাশ কিছুটা মেঘলা হলেও আর বৃষ্টি আসেনি। একবার খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যদি বৃষ্টি আসে তাহলে কাক ভেজা হয়ে যাব। আমি নিজে ভিজলে কোন সমস্যা ছিল না। কিন্তু সাথে হেড অফিস থেকে পাঠানো কিছু এগ্রিমেন্ট পেপার ছিল। যেগুলো জামিনদার ও নতুন কলিগের সিগনেচার নেওয়ার জন্য আমি চিলমারী এসেছিলাম। সমস্ত ডকুমেন্টস ঠিকঠাক করে বাসায় ফিরতে অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল। কারণ মাঝখানে আমি যে জামিনদারের সিগনেচার নিতে গিয়েছিলাম তিনি অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন। একদিক থেকে অবশ্য ভালোই হয়েছে, তিনি না থাকাতে আমি চিলমারী বন্দর একটু ঘুরে দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম। অনেক বছর আগে এদিকটায় এসেছিলাম। চিলমারী বন্দরের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর আর আসা হয়নি তাই স্বচক্ষে একটু দেখে নেয়া হলো আর কি।

20220917_221327.jpg
20220917_221255.jpg

একদম দিনের শেষ সময়ের শেষ নৌকা এগুলো। এখান থেকে বেশ কয়েক জায়গায় নৌকা ছেড়ে যায়। রৌমারী, রাজিবপুর ছাড়াও গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ পর্যন্ত নৌকা চলাচল করে। নদী বন্দর ঘোষণা করার আগে এই ঘাট মৃত প্রায় ছিল। দিনে হয়তো দু একটা নৌকা চলাচল করতো। তাই লোকজনের আসা যাওয়া চোখে পড়ার মতো ছিল না। এখন নদী বন্দরের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর অনেক কর্মচাঞ্চল্য বেড়ে গেছে এখানকার। প্রতিনিয়ত দেশি-বিদেশে ছোটখাটো জাহাজ ছাড়াও দিনে বেশ কয়েকবার নৌকা চলাচল করে। তাই সবসময় লোকজনের আনাগোনা দেখা যায়।

20220917_221924.jpg

এটি কোন সিরিয়ালের নৌকা নয়। চিলমারী বন্দরে পারাপারের জন্য লোকজন আসা ছাড়াও অনেক দর্শনার্থী আসে নদী দেখার জন্য। তারা বিভিন্ন সময়ে নৌকা ভাড়া করে কিছুক্ষণের জন্য নদীতে ঘুরে বেড়ায়। এই লোকগুলো আমাকেও নৌকায় উঠার জন্য অফার করেছিল। আমি বাবা এসবের মধ্যে নাই !! কারণ আমি সাঁতার জানিনা তাই নৌকা ভ্রমন একটু হলেও এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে সহজে নৌকায় উঠি না। এক্ষেত্রেও তাই করলাম একটু কায়দা করে এড়িয়ে গেলাম।

20220917_221651.jpg

সন্ধ্যা প্রায় হয়ে আসছিল এই সময় বেশ কিছু নৌকা যাত্রী নিয়ে ঘাটে চলে আসে তারা এখন নামার অপেক্ষায়। এখন যে নৌকাটা দেখতে পাচ্ছি সেটা একদম লোকে পরিপূর্ণ। নিচের জায়গায় সম্ভবত বসার মত অবস্থা ছিল না তাই বেশ কিছু লোক ছাদের উপর উঠে গিয়েছিল। এটা অবশ্য অনেক রিস্কি ব্যাপার। একবার আমি বিকালে নদী পার হওয়ার সময় নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য ছাদের উপরে উঠে বসি। আমি একদম সামনের দিকে বসে ছিলাম। যেন সবকিছু ঠিকঠাক দেখতে পারি। কিন্তু আমার সামনে দুই তিনজন লোক ছিল। তো নৌকা চলতে চলতে হঠাৎ সামনে এক চরের মধ্যে আটকে গেল। নদীর পানি যখন শুকাতে শুরু করে তখন হঠাৎ মাঝখানে জেগে উঠা চর গুলো বোঝা যায় না। হঠাৎ নৌকার গতি থেমে যাওয়ায় আমার সামনে বসা লোক দুটো ধাক্কা সামলাতে পারেনি। সে কারণে তারা নিচে ছিটকে পড়ে যায়। এবং সাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লেগে চোখের নিচে কেটে গিয়েছিল। আসলেই অনেক বিপদজনক।

20220917_220736.jpg

এইতো কয়েক বছর আগেও যখন ঘাট এভাবে ব্লক দিয়ে বাধানো ছিল না। তখন যাতায়াত করা অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার ছিল। নদী ড্রেজিং না করায় পানি যখন কমে যায় তখন অনেক দূর পর্যন্ত চর পায়ে হেঁটে যেতে হয়। রোদের মধ্যে বালুর চর হাটা অনেক কষ্টের ব্যাপার। আপনার কাছে বারবার মনে হবে মরুভূমির মধ্য দিয়ে হাঁটছি। যাইহোক সেই দিনগুলো অনেক কষ্টের ছিল। এখন অবশ্য সুযোগ-সুবিধা অনেক বেড়ে গিয়েছে। এদিক দিয়ে যাওয়ার সময় এখন আর নদীর চর হাঁটতে হয় না। নির্বিঘ্নে ঘাটের কাছে নৌকায় উঠে চলে যাওয়া যায়। এসব কিছু সম্ভব হয়েছে নদীবন্দরের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পরে। সব মিলিয়ে প্রতিনিয়ত যারা নদী পারাপার হয় তাদের কষ্ট অনেকটাই লাঘব হয়েছে।

বন্ধুরা আজ আর লিখছিনা। অন্য কোনদিন অন্যকিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে আসবো। আজকের জন্য বিদায় নিচ্ছি। সবার জন্য শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।

ডিভাইসস্যামসাং গ্যালাক্সি A-10
ফটো@mayedul
লোকেশনw3w location

Logo-1.png

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

Sort:  
 2 years ago 

দারুন একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন ভাইয়া। পোস্টটি পড়ে মোটামুটি আমি শিহরিত হয়ে উঠেছি। আমি মনে করি নদী পথ পাড়ি দেওয়ার সময় এভাবে ছাদের উপর ওঠা আমাদের কারো উচিত নয়। তবে নৌ পথে চলাচল করার জন্য এখন অবশ্য বেশ সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি হয়েছে।

 2 years ago 

চিলমারা বন্দরটি কোথায় ভাইয়া? ভালোই তো জামিনদারের সিগনেচার নিতে গিয়ে সুযোগের সদ্ব্যবহার করে নিয়েছেন। বাসায় না থেকেই ভালো হয়েছে আপনি একটু ঘোরার সুযোগ পেয়েছেন। এই নৌকাগুলো রেখেছে লোকজনের এপার ওপার আসা যাওয়া করার জন্য পরে দেখলাম যে ভাড়াও করা যায় , আমার তো দেখেই নৌকায় চলতে মন চাইছে। আল্লাহ ভাইয়া কি বলেন আপনি সাঁতার জানেন না তাহলে তো নৌকায় চড়া আপনার জন্য ঠিক না ।নৌকার ছাদের উপর থেকে ছিটকে পরে লোকটার চোখের কোনায় কেটে গিয়েছিল ভাগ্যিস চোখে লাগিনি।ভালোই কাটালেন দিনটি।

 2 years ago 

একটা গান অবশ্যই শুনেছেন
"ওকি গাড়িয়াল ভাই হাকাও গাড়ি তুই চিলমারীর বন্দর"
এটা সেই চিলমারী বন্দর। কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদে।
আপনি ঠিকই ধরেছিলেন নৌকা গুলো যাত্রীদের নিয়ে এপার ওপার যাওয়া আসার জন্য। আর ছোট এই নৌকা গুলো মাঝে মাঝে খেয়া পারাপার ও ভাড়ায় যায়।
নদীমাতৃক দেশে থাকি আপু সাঁতার না জানলেও নৌকায় উঠতে হয়।

 2 years ago 

ভাইয়া আপনারর বাস্তব গল্পটি আমাকে বেশ শিহরিত করেছে। আপনি বিকালে নদী পার হওয়ার সময় নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য ছাদের উপরে উঠে বসেন। একদম সামনের দিকে বসে ছিলেন। যেন সবকিছু ঠিকঠাক দেখতে পারেন। কিন্তু আপনার সামনে দুই তিনজন লোক ছিল। তো নৌকা চলতে চলতে হঠাৎ সামনে এক চরের মধ্যে আটকে গেল। নদীর পানি যখন শুকাতে শুরু করে তখন হঠাৎ মাঝখানে জেগে উঠা চর গুলো বোঝা যায় না। হঠাৎ নৌকার গতি থেমে যাওয়ায় আপনার সামনে বসা লোক দুটো ধাক্কা সামলাতে পারেনি। সে কারণে তারা নিচে ছিটকে পড়ে যায়। এবং সাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লেগে চোখেরনিচে কেটে যায়।এটা এটা সত্যিই অনেক রিক্স। অবশ্যই এই বিষয়গুলোতে আমাদের অনেক বেশি সর্তকতা অবলম্বন করা দরকার।♥♥

 2 years ago 

আসলে অনেক বিপদজনক হয় সেই সময় গুলো। যখন নদীর পানি কমতে শুরু করে তখন ঠিকমতো নতুন জেগে ওঠা চড় গুলো দেখা যায় না। একবার তো বিকালে নদী পার হয়ে রৌমারী যাওয়ার সময় চড়ে আটকে সারারাত নদীতে ছিলাম। তাও আবার শীতের সময়। সে ঘটনাটি অবশ্য আমার পোস্টে শেয়ার করেছিলাম।
অন্যরকম একটি অভিজ্ঞতা হয়েছিল কিন্তু।

 2 years ago 

'সমস্যাগুলোকে পাশ কাটিয়ে কিছুটা বিনোদনের আশায়'ভাইয়া আপনার পোষ্টের এই টাইটেলটা আমার খুব ভালো লেগেছে। কারণ এটা সত্যি কথা মানুষের জীবনে সমস্যা লেগেই থাকবে। সেই সমস্যা জন্য আমরা আমাদের জীবনের বিনোদনগুলোকে নষ্ট করে ফেলতে পারি না। এটা অবশ্য অনেকেই বোঝেনা বা মেনে নিতে চায় না। কিন্তু যে যত তাড়াতাড়ি এই জিনিসটা মেনে নিতে পারবে সেই তত সুখী মানুষ। পুরো পোস্টটি খুব ভালো লাগলো কিন্তু এটা পড়ে আফসোস হচ্ছে যে আপনাকে অফার করার পরেও আপনি নৌকা ভ্রমণে গেলেন না। আমি কিন্তু আবার এসব অফার মিস করি না।যদিও আমি সাঁতার জানিনা তারপরেও।

 2 years ago 

আসলে বেশ কিছুদিন থেকে অনেকগুলো সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। মনের মধ্যে সবসময় অশান্তি কাজ করে। তাই বিকাল বেলা শুধু বসে বসে কারো জন্য অপেক্ষা না করে পাশেই নদী বন্দর ঘুরে আসতে ইচ্ছা করলো। কিন্তু সময়ের অভাবে আর নৌকা ভ্রমন করা হয়নি।
সাঁতার জানিনা মনের মধ্যে সেই ভয়ও কিন্তু ছিল হা হা হা।

 2 years ago 

চিলমারী বন্দরে ঘুরাঘুরির খুব সুন্দর ‍কিছু মূহর্ত দেখতে পেলাম। চিলমারী থেকে রৌমারী, রাজিবপুর ছাড়াও গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ পর্যন্ত নৌকা যায়। তাহলে তো সবাই নৌকা ভ্রমনটা ভালই উপভোগ করতে পারে। ধন্যবাদ ভাইয়া পড়ে ভালই লাগলো।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.14
JST 0.028
BTC 59631.75
ETH 2622.60
USDT 1.00
SBD 2.41