আমাদের সমাজে লজ্জাজনক এই ঘটনাগুলোর অবসান হোক।
হ্যালো আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম/আদাব। সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন আশা করছি। আমিও মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার ব্লগ লেখা শুরু করছি।
পাপ কখনো চেপে রাখা যায় না এটা ক্রমশঃ প্রকাশ্য। আমরা এই ধরনের কাজ করার আগে একবারও ভেবে দেখি না এই ঘটনাগুলো প্রকাশ হয়ে যাওয়ার পর সমাজ এবং পরিবারের সামনে কিভাবে মুখ দেখাবো। ঘটনাটি একদমই প্রত্যাশিত আমাদের সকলের কাছে।
যাইহোক ঘটনাটি নিয়ে কিছু না লিখলে বুঝতে পারবেন না যে কি বিষয়ে কথা বলছি। গতকাল রাতে ঘটনার আকস্মিকতায় এতটাই মর্মাহত হয়েছিলাম আর লিখতে বসতে পারিনি। ঘটনাটি নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানতে পারিনি। তবে এ রকমই একটি ঘটনা বেশ কিছুদিন আগে আমার মহল্লায় ঘটেছিল।
যে ঘটনা সম্বন্ধে আমি বিস্তারিত জানি সেটা নিয়েই কিছু লেখার চেষ্টা করছি। আমার এলাকার সহজ সরল একটি ছেলে। কয়েক বছর আগে বিয়ে করে সংসারে বউ নিয়ে আসে। তারপর তার সংসারে আলোকরশ্মি ছড়িয়ে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। আসলে ছেলে হোক কিংবা মেয়ে নতুন অতিথি আসলে আমাদের ঘর আলোকিত হয়ে যায়।
ছেলেটি একটি প্রতিষ্ঠানে নৈশ প্রহরীর কাজ করে। মাঝে মাঝে ডিউটি চেঞ্জ হয়ে দিনের বেলাতেও কাজ করতে হয় সেটা অবশ্য খুবই কম। যাইহোক এরই মাঝে তার স্ত্রী ধীরে ধীরে অপর একজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।
স্বামী কাজে চলে গেলে রাতের বেলা সেই নতুন প্রেমিকের আগমন ঘটে বাসায়। এভাবেই চলতে থাকে দিনের পর দিন। একসময় কোনভাবে জানতে পেরেছিল তার স্বামী নতুন প্রেমিকের আগমনের খবর। কারণ আগে থেকেই একটু একটু করে সন্দেহ বাসা বেঁধেছিল তার মনে।
একদিন রাতের বেলা ডিউটি পরিবর্তন করে দিনে কাজ করার জন্য ছুটি নিয়ে এসেছিল। তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে এসেছিল অফিস থেকে। জানিনা এটা সন্দেহ থেকেই করেছিল কিনা। তবে বাসায় এসে ঘুমন্ত অবস্থায় মেয়েকে দেখে আর পাশের রুমের দরজা বন্ধ।
সন্দেহ আরো প্রবল হয়, তাই সে কোন কথা না বলে খোলা ছাদের উপরে মই দিয়ে উঠে। নতুন টিনশেড বিল্ডিং এখনো ঘরে ছাদ লাগানো হয়নি। যাইহোক ঘরের ভেতর ঢুকে তাদের আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলে।
এমন অবস্থায় লোক জানাজানি হওয়ার ভয়ে মেয়েটি তার প্রেমিক সহ স্বামীর গলা টিপে হত্যা করার চেষ্টা করে। কিছু শব্দ বাইরে চলে যায়, যার ফলে দরজায় লোক জমা হয়ে ডাকাডাকি শুরু করে। অবস্থা বেগতিক দেখে অন্য একটি দরজা খুলে পালিয়ে যায় ছেলেটি।
কয়েকজন দৌড়ে ধরার চেষ্টা করে কিন্তু ধরতে পারেনা অন্ধকার রাতে। সবাই ঘরে ফিরে এসে দেখে মেয়েটি লোক লজ্জার ভয়ে ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। একবারও চিন্তা করেনি তার ছয় বছরের ছোট্ট মেয়ের জন্য। আসলে এটা ভাবার মত অবস্থা তখন ছিল না।
কিন্তু আগে থেকেই সকলকে ভাবতে হবে সমাজ ও পরিবার নিয়ে। আমাদের পাপ-পুণ্য নিয়ে সচেতন হওয়া জরুরী। মাতৃহারা ছোট মেয়েটির চোখের পানি মুছে দেওয়ার মতো এখন কেউ নেই। জানিনা তার ভবিষ্যৎ কি হবে।
কারণ কয়েক মাস যেতে না যেতেই মেয়েটির বাবা আবার নতুন করে বিয়ে করেছে। এখন সেই ছোট্ট বাচ্চাটি তার দাদীর কাছে থাকে। আর কখনো সে বুঝতেও পারবে না মায়ের আদর কেমন হতে পারে। কাউকে কোনদিন মা বলেও ডাকতে পারবে না।
এদিকে যার সঙ্গে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়েছিল সেই লোকটি একটি কলেজের প্রভাষক। মানসিকতার কতটুকু অধঃপতন হলে একজন শিক্ষক এই কাজ করতে পারে। আমাদের সমাজ তার কাছ থেকে কি শিক্ষা গ্রহণ করবে।
একজন শিক্ষক আমাদের সমাজের আদর্শবান ব্যক্তি হওয়া উচিত। যার নৈতিকতা আমাদের সকলের জন্য আদর্শ হবে। তার হাত ধরে আমাদের সমাজের নতুন নতুন স্কলার তৈরি হবে।
অথচ যদি চোখের সামনে এরকম ঘটনা ঘটতে দেখা যায় তাহলে এটাকে সামাজিক অবক্ষয় ছাড়া আর কি বলব। আসলে আমাদের প্রত্যেকের নিজ অবস্থান থেকে ভালো থাকার প্রতিজ্ঞা করতে হবে। নিজেরা ভালো না হলে পরবর্তী প্রজন্ম কি শিখবে আমাদের কাছে।
এইরকম ঘটনা আমাদের সমাজের জন্য হুমকিস্বরূপ। যদি এইসব বিষয়ে সচেতনতা তৈরি না হয় তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক চিন্তিত হতে হবে। একটি উন্নত সমাজ তৈরির জন্য আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অত্যন্ত জরুরী।
বন্ধুরা আজ আর লিখছিনা। অন্য কোনদিন অন্যকিছু অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলে আসবো। আজকের জন্য বিদায় নিচ্ছি। সবার জন্য শুভকামনা। আল্লাহ হাফেজ।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
পুরো ঘটনাটা শুনে আমি কি বলো ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। মানুষ কতটা নিচে নামতে পারে এগুলো ঘটলে বোঝা যায় সব। মানুষ এখন পাপ পূণ্যের বিচার করে না সাময়িক ভোগ বিলাস বড় হয়ে উঠেছে সবার কাছে। আল্লাহ পাক এদের হেদায়েত নসিব করুন।
ঘটনাটি এলাকার সকলের কাছে অত্যন্ত ঘৃণিত হয়ে আছে।
এদিক দিয়ে হাঁটার সময় যখন ছোট বাচ্চাটিকে দেখি আমার কাছে এখনো খুব খারাপ লাগে।