সাজেক ভ্যালি (bike) বাইক ভ্রমণ || পর্ব - ১

" আজ শুক্রবার - ১৭ই চৈত্র - ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, ৩১মার্চ - ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ "

মার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।

Picsart_23-03-31_04-59-17-250.jpg

আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে। আজকে আমি ১৪৫০ কিলোমিটার বাইক ভ্রমণের গল্প নিয়ে এসেছি। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন আমি ভ্রমণ পিপাসু লোক। বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে বেড়াতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আর তাইতো যখন যেখানে ইচ্ছা, প্রিয় বাইকটি নিয়ে নন্দনীয় এই জায়গাগুলো ভ্রমণ করে আসি।এইতো কিছুদিন আগে আমার খুব ইচ্ছে হলো দূরে কোথাও ভ্রমণে যাওয়ার। আর তাইতো আমি প্রিয় বাইকটি নিয়ে ১৪৫০ কিলোমিটার ঘুরে এসেছি।

এই ১৪৫০ কিলোমিটার আমি কিভাবে ঘুরে এসেছি তা আপনাদের মাঝে ভাগাভাগি করে নিব। যদিও বা আমি অনেকবার বাইকে করে, বিভিন্ন দূর পাল্লায় গিয়ে দর্শনীয় স্থানগুলো দেখে এসেছি। তবে সেটি ছিল হয়তো ১২০০ থেকে ১২৫০ কিলোমিটারের মধ্যে। এই প্রথম আমি ১৪৫০ কিলোমিটার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। আর সেই অভিজ্ঞতাটুকু আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

IMG_20230330_033328.jpg

IMG_20230330_033426.jpg

আমি গত অক্টোবর মাসে সাজেক ভ্যালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে একদম প্রস্তুত হয়েছিলাম। আর তাই একদিন সময় সুযোগ করে রাতের বেলায় বেরিয়ে পড়েছিলাম সাজেক ভ্যালির উদ্দেশ্যে। সেদিন অবশ্য আমি একদম একাই ছিলাম, আমার মোটর বাইকটিতে। তবে আমার সাথে আরেকটি মোটর বাইকে করে আমার সহযাত্রী হিসেবে,আমার বন্ধু ঢাকা পর্যন্ত আমার সঙ্গেই ছিল।

আমার বন্ধুরও খুবই শখ মোটরবাইকে করে ঢাকা ঘুরে আসার। তাই আমি আর আমার বন্ধু মিলে চিন্তাভাবনা করে মোটরবাইকে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলাম। তো আমি যেদিন রাতের বেলায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলাম সেদিন আকাশটা মেঘলা ছিল। আমরা কিছুতে বুঝে উঠতে পারিনি এই মেঘলা আকাশে বৃষ্টি হতে পারে। আমরা কুড়িগ্রাম থেকে ভালোভাবেই বগুড়া পর্যন্ত পৌঁছেছিলাম।

আর বগুড়ায় পৌছা মাত্রই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছিল। তাই আমরা একটি চায়ের দোকানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলাম। এই সমস্ত চায়ের দোকান গুলো প্রায় সারা রাত্রিই চা বিক্রি করে থাকে। যখন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি থেমে গেল তখন আমরা আবারো রওনা হয়ে গেলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে। যখন রাতের অন্ধকার কেটে ভোরের আলো ফুটতে থাকল, তখন দেখি হাইওয়েতে গাড়িগুলো লাইট জ্বালিয়েই চলছে।

IMG_20230330_033358.jpg

IMG_20230330_033500.jpg

আমরা সেদিন ঢাকার পথে যাওয়ার সময় মেঘলা আকাশ ও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির সম্মুখীন বেশ কয়েকবার হয়েছিলাম। তাই আমি পথিমধ্যে তেমন কোন ফটোগ্রাফি করতে পারিনি। আমরা চলতে চলতে সকাল দশটার দিকে ঢাকায় গিয়ে পৌঁছেছিলাম। তখন পর্যন্ত মেট্রোরেলের কাজ চলছিল। তাই আমি নিচ থেকে মেট্রোরেল যাতায়াতের রাস্তাটি ফটোগ্রাফি করেছি। আমি যখন ঢাকায় গিয়েছিলাম তখন পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল শুরু করেনি। তাই মনের মধ্যে ইচ্ছা পোষণ করেছি আবারও সময় সুযোগ করে ঢাকায় যাব এবং মেট্রোরেলে চড়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করব।

IMG_20230330_033559.jpg

IMG_20230330_034118.jpg

আমি ঢাকায় পৌঁছে খুব বেশি একটা দেরি না করেই, বন্ধুকে বিদায় জানিয়ে আমার ভাগ্নেকে সাথে করে নিয়ে, আবারো সাজেক ভ্যালির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিলাম। আর এই যাত্রায় আমরা বেশ কয়েক জায়গায় চা খেয়েছিলাম এবং দুপুরবেলায় লাঞ্চ করেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেই সময়গুলোতে ছবি তোলার কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। তবে আমরা যেতে যেতে কুমিল্লা যখন রাত হয়ে গিয়েছিল তখন কুমিল্লার সুনাম খ্যাত নুরজাহান হোটেলে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য বিরতি নিয়েছিলাম।

আর সে সময় সৌভাগ্যক্রমে নিজের সেলফিও তুলেছিলাম। আমার নিজ জেলা কুড়িগ্রাম থেকে একটানা জার্নি করতে করতে কিছুটা হাপিয়ে উঠেছিলাম তাই কুমিল্লা নুরজাহান হোটেলে গিয়ে বেশ কিছুটা সময় বিরতি নিয়েছিলাম। যাইহোক এই ছিল আমার, ১৪৫০ কিলোমিটার বাইক ভ্রমণের কিছুটা অংশ যা আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। আজ এ পর্যন্তই রাখছি, পরবর্তী পর্ব নিয়ে খুব শীঘ্রই হাজির হব।

আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।

TZjG7hXReeVoAvXt2X6pMxYAb3q65xMju8wryWxKrsghkPKDYqZPTyz3HQnPBAZYA84k8k89ixkhuUsFjZkgWkC1gjU36M1oU8J7FbJUoPMtjB5EHLD1usXZox8d6boJGJdTa7jANjx37k.png
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

3q52Dkr5nBe3kDiHrk4F3qdzX6E5VuVcCcF7TDQDco37AUsMDxK7aJ1uasvrAaBSP6D1NgNuBSX2m.gif

3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3CeSsa63mzHQexuvWRDgxAQmHZjMKhFaYGe2ubQmiC33SnsVy3TGA7BbZJiqfXWxLCKhiShcGVU.png

Picsart_23-03-04_04-00-09-256.png

Sort:  
 2 years ago 

ভাইয়া আপনার বাইক ট্যুরের গল্প এর আগেও শুনেছি কিন্তু এবার সত্যি আপনি অনেক লম্বা ভ্রমণ কাহিনি শেয়ার করেছেন। বাইকটি নিয়ে ১৪৫০ কিলোমিটার ঘুরে এসেছেন শুনে আশ্চর্য হলাম। আপনার দম আছে বলতে হবে আর আপনাকে তো পুরস্কৃত করা উচিত। সাজেক ভ্যালির অনেক সৌন্দর্য বিভিন্ন ভিডিও তে দেখেছি কিন্তু কখনো যাওয়া হয়নি তবে ইচ্ছে আছে সেখানে যাওয়ার। কিন্তু আপনার মতো বাইক ট্যুর হবে না গাড়ি যাব হা হা হা। ধন্যবাদ আপনার ভ্রমন কাহিনি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আপু, একবার সময় সুযোগ করে সাজেক ভ্যালি ঘুরে আসবেন আমার বিশ্বাস আপনার কাছে খুবই ভালো লাগবে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

বাইকে করে ভ্রমণের মুহূর্তটা সত্যিই অসাধারণ। বাইকে ভ্রমণ করলে রাস্তার আশেপাশে প্রকৃতির সৌন্দর্য দৃশ্য গুলো খুব ভালোভাবে উপভোগ করা যায়। বাইক ভ্রমণ আমারও খুবই প্রিয়। আপনার ভ্রমনের প্রথম পর্ব পড়ে ভালো লাগলো।

 2 years ago 

অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া, আমার পোস্টে এসে সুন্দর মন্তব্য করে অনুপ্রেরণা দেয়ার জন্য।

 2 years ago 

ভাইয়া কিছুদিন আগে আপনার কুয়াকাটা বাইক ভ্রমন পড়ে অনেক ভাল লেগেছিল। আজ আবার সাজেক ভ্যালির ভ্রমন পর্ব শুরু করলেন। আশা করি সব গুলো পর্ব পড়ে আপনার সাথে থাকবো। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

কুয়াকাটা ভ্রমণ করে এসেই তার কিছুদিনের মধ্যেই আমি সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ করে এসেছি। তবে সময় সুযোগের অভাবে পোস্ট করা হয়নি। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 2 years ago 

তারমানে এটা ধরে নেওয়ায় যে আপনি একজন প্রফেশনাল বাইকার।প্রফেশনাল না হলে ১৪৫০ বা ১২০০ কিলোমিটার কোনটাই কারো পক্ষে চালানো সম্ভব না। তবে বাইক চালাতে গেলে অনেকটাই স্ট্যামিনা দরকার। বিশেষ করে এতক্ষণ ধরে বাইক চালাতে গেলে। আপনার অভিজ্ঞতা পড়ে বেশ ভালো লাগলো।পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। বাইক আমারও খুব পছন্দের। তবে চালাতে পারি না। চড়তে বেশ ভালো লাগে।

 2 years ago 

আপু, প্রফেশনাল বাইকার কিনা জানিনা তবে এভাবে মাঝে মাঝে আমি শখ করে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করে আসি। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

 2 years ago 

আপনার মতো আমার এক কাজিন তার কয়েকজন বন্ধু সহ কিছুদিন আগে ঢাকা থেকে বাইক ট্যুরে গিয়েছিল সাজেক ভ্যালিতে। আমাকেও বলেছিল তাদের সাথে যাওয়ার জন্য। তবে আমি যাইনি। যাইহোক ১৪৫০ কিলোমিটার অনেক লম্বা পথ। নুর জাহান হোটেলের খাবার বেশ ভালো। আমি সাজেক ভ্যালি ভ্রমণে গিয়েছিলাম বছর খানেক আগে। যাইহোক অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

ভাই, যেহেতু আপনি সাজেক ভ্যালি গিয়েছেন সেহেতু এর সৌন্দর্য অবশ্যই আপনাকে মুগ্ধ করেছে। আমিও এই সাজেক ভ্যালি দেখে মুগ্ধ হয়ে এসেছি। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.15
TRX 0.16
JST 0.028
BTC 67814.21
ETH 2401.94
USDT 1.00
SBD 2.34