আলু দিয়ে দেশি মুরগির রেসিপি
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি রেসিপি পোস্ট নিয়ে। আর আজকের রেসিপি হচ্ছে আলু দিয়ে দেশি মুরগির মাংসের মজাদার রেসিপি। দেশি মুরগির মাংস খেতে আমার কাছে ভীষণ রকম ভালো লাগে। আর যদি তাতে আলু দেয়া যায় তাহলে সে আলুও খেতে দারুন লাগে। আর এই মজার রেসিপি আমি কিছুটা ভিন্নভাবে তৈরি করার চেষ্টা করেছি। মাঝে মাঝে আমরা এভাবে রেসিপি তৈরি করে খাই। তবে অনেকেই আবার এভাবে খায় না।
কেননা আমি প্রথমে মুরগিটিকে গরম পানির সাহায্যে পালক ছাড়িয়ে, আগুনে পুড়িয়ে মজার রেসিপি তৈরি করেছি। ঠিক যেমন আমরা হাঁসের প্রসেসিং করে রেসিপি তৈরি করে খাই। তেমনটাই এই মুরগির প্রসেসিং করে রেসিপি তৈরি করেছি। এভাবে মুরগি পুড়িয়ে তারপর রেসিপি তৈরি করে খেতে কতটা মজার হয় তা হয়তো আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। তাই যারা এখনো মুরগি প্রসেসিং করে পুড়িয়ে মজার এই রেসিপি তৈরি করে খাননি, তারা ইচ্ছে করলে আমার রেসিপি অনুসরণ করে খেতে পারবেন। আমার বিশ্বাস আপনাদের কাছে অবশ্যই ভালো লাগবে।
তো বন্ধুরা আমি কিভাবে মজাদার ও সুস্বাদু এই রেসিপি তৈরি করেছি তা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সুন্দর উপস্থাপনার মাধ্যমে তুলে ধরেছি, যাতে করে আপনারাও খুব সহজে এই রেসিপিটি তৈরি করতে পারেন। তাই কথা না বাড়িয়ে চলুন বন্ধুরা, আমার রন্ধন প্রণালীর ধাপগুলো থেকে ঘুরে আসা যাক।
ক্রমিক নং | উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | দেশি মুরগি | ১ টি |
২ | আলু | ৪-৫ টি |
৩ | গরম মসলা | পরিমাণ মতো |
৪ | মাংসের মসলা | ১৫ গ্রাম |
৫ | শুকনা মরিচ গুঁড়া | ২ চা চামচ |
৬ | জিরা গুড়া | ২ চা চামচ |
৭ | আদা বাটা | ২ চা চামচ |
৮ | রসুন বাটা | ২ চা চামচ |
৯ | হলুদ গুড়া | ১ চা চামচ |
১০ | সয়াবিন তেল | পরিমাণ মতো |
১১ | লবণ | স্বাদ মতো |
" ১ম : ধাপ "
![]() | ![]() |
---|
১। প্রথমে মুরগির লোম গরম পানির সাহায্যে ছাড়িয়ে, আগুনে পুড়িয়ে নিতে হবে। তারপর মুরগির মাংস ছোট ছোট টুকরো করে নিতে হবে। উপরে দেয়া চিত্রের মত করে।
" ২য় : ধাপ "
২। এবার আলু গুলোর ছাল ছাড়িয়ে, টুকরো করে কেটে নিতে হবে। উপরে দেয়া চিত্রের মত করে।
" ৩য় : ধাপ "
৩। এবার টুকরো করে নেয়া আলুর উপরে সামান্য পরিমাণ হলুদ গুঁড়া, শুকনা মরিচ গুঁড়া এবং লবণ ছড়িয়ে দিতে হবে। তারপর হাতের সাহায্যে ভালোভাবে মাখিয়ে নিতে হবে।
" ৪র্থ : ধাপ "
৪। এবার চুলায় কড়াই বসিয়ে দিতে হবে। কড়াই গরম হয়ে আসলে, পরিমাণ মতো সয়াবিন তেল কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে। তারপর সয়াবিন তেল গরম হয়ে আসলে, মাখিয়ে নেয়া আলুগুলো কড়াইতে ছেড়ে দিয়ে, ভেজে নিতে হবে। উপরে দেয়া চিত্রের মত করে।
" ৫ম : ধাপ "
৫। এবার পেঁয়াজ গুলোর খোসা ছাড়িয়ে, কুঁচি করে কেটে নিতে হবে।
" ৬ষ্ঠ : ধাপ "
৬। এবার চুলায় কড়াই বসিয়ে দিতে হবে। কড়াই গরম হয়ে আসলে পরিমাণ মতো সয়াবিন তেল কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে। সয়াবিন তেল গরম হয়ে আসলে, পেঁয়াজ কুচি গুলো কড়াইতে ছেড়ে দিয়ে, বাদামী রঙ করে ভেজে নিতে হবে।
" ৭ম : ধাপ "
৭। এবার পেঁয়াজ বাদামী রঙ হয়ে আসার পর, এক কাপ পরিমাণ পানি কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে। তারপর পানি গরম হয়ে আসলে উপকরণে নেয়া সকল মসলা কড়াইতে ঢেলে দিয়ে, কিছুক্ষণ কষিয়ে নিতে হবে।
" ৮ম : ধাপ "
৮। এবার মসলা পানি কিছুক্ষণ কষিয়ে নেয়ার পর, টুকরো করে নেয়া মুরগীর মাংস টুকু কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে। তারপর চামচের সাহায্যে ভালোভাবে নেড়ে চেড়ে নেয়ার পর, কষিয়ে কষিয়ে মসলা পানি গুলো কমিয়ে আনতে হবে।
" ৯ম : ধাপ "
৯। এবার মসলা পানি গুলো কমিয়ে আনার পর, আবারো পরিমান মতো পানি কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে। তারপর হাল্কা জ্বালে কষিয়ে কষিয়ে আবারো ঢেলে দেয়া পানি কমিয়ে আনতে হবে। পানি কমিয়ে আসার পর, পূর্বে ভেজে নেয়া আলুর টুকরো গুলো কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে।
" ১০ম : ধাপ "
১০। এবার আলুর টুকরো কড়াইতে ঢেলে দেয়ার পর, আবারও পরিমান মতো পানি কড়াইতে ঢেলে দিতে হবে। তারপর হাল্কা জ্বালে কষিয়ে নিতে হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত ঢেলে দেয়া পানি টুকু মাখোমাখো হয়ে ঝোলে পরিণত না হয়।
" শেষ : ধাপ "
১১। এবার ঢেলে দেয়া পানি মাখোমাখো হয়ে ঝোলে পরিণত হলেই আমাদের কাঙ্খিত রেসিপি সম্পূর্ণভাবে তৈরি হয়ে যাবে।
এবার পরিবেশনের জন্য আলাদা একটি পাত্রে ঢেলে নিয়ে, মনের মত সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
আশা করি আমার রেসিপি পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
আলু দিয়ে মুরগির মাংস রান্নার দারুন একটা পদ্ধতি আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইয়া। এটা আপনি ঠিক কথা বলেছেন এভাবে যদি পুড়িয়ে রান্না করা যায় তাহলে সেটা খেতে খুবই সুস্বাদু হয়ে যায়।
ঠিক বলেছেন ভাই, মুরগির মাংস পুড়িয়ে রান্না করে খেতে খুবই মজা লাগে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ভাইয়া আপনি দারুন মজার রেসিপি শেয়ার করেছেন। আসলে হাঁসের মতো করে কখনও মুরগি রান্না করে খাওয়া হয়নি।তবে আপনার রান্না দেখে মনে হচ্ছে খেতে খুব মজার হয়েছে। আপনি খুব সুন্দরভাবে ধাপগুলো তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে মজার রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য। একদিন করবো এভাবে রান্না আশাকরি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপু, হাঁসের মতো করে মুরগির মাংস পুড়িয়ে একদিন রেসিপি তৈরি করে খাবেন, আমার বিশ্বাস অবশ্যই ভালো লাগবে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
দেশি মুরগির রেসিপি চমৎকার ভাবে তৈরি করেছেন মিতা। দেশি মুরগি বলে কথা খেতে তো নিচ্ছই সুস্বাদু হয়েছে। দেশি মুরগির মাংস রান্না দেখে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে মিতা।
ঠিক বলেছেন মিতা, মুরগির রেসিপি খেতে দুর্দান্ত স্বাদ হয়েছিল। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
মাংসের ভিতরে তো আমি আলু ছাড়া কল্পনাই করতে পারি না । আর দেশি মুরগির মাংস আমার তো শুনেই খেতে ইচ্ছা করছে। তারপর আবার আপনি চামড়া সহ চামড়াটা পুড়িয়ে তারপরে রান্না করেছেন। তারপরে পেঁয়াজগুলোকে একেবারে ভেজে বেরেস্তা করে তারপরে মসলাগুলো এড করেছেন। আপনার মাংস তো মনে হয়েছে অনেক বেশি টেস্টি হয়েছে। আমার তো দেখেই খেতে ইচ্ছা করছে। মুরগির মাংস এমনিতেই আমার অনেক পছন্দ।
ঠিক বলেছেন আপু, আলু দিয়ে দেশি মুরগির রেসিপিটি খেতে ভীষণ রকম স্বাদ হয়েছিল। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
মুরগির মাংস আমার পছন্দের একটি রেসিপি। আর দেশি মুরগির মাংস হলে তো কথাই নেই।
যেকোনো মাংসের সাথে আলু দিলে ওই আলুগুলো খেতে আমার কাছে খুব ভালো লাগে। আপনার রেসিপি দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে খুবই মজা হয়েছে। সুস্বাদু ও মজাদার একটি রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু, খুব সুন্দর মন্তব্য করে আমাকে অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য।
ভাইয়া আপনার রেসিপি দেখে অনেক ভালো লাগল। তবে আপনি যে ভাবে মাংস রান্না করেছেন আমি এভাবে হাঁসের মাংস রান্না করি। যাইহোক আপনার মাংসের কালারটা দারুণ এসেছে। প্রতি ধাপ অনেক সুন্দর করে দেখিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে সুস্বাদু একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।
আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আজি প্রথম শুনলাম হাঁসের মাংসের মত করে মুরগির মাংসও রান্না করা যায়। ভাইয়া রেসিপির কালার টি দেখেই বুঝা যাচ্ছে অনেক মজার হয়েছে।।আসলে কখনো এভাবে রান্না করে খাওয়া হয়নি। ভাবছি এবার আপনার রেসিপিটির মতো করে একবার রান্না করে খাব।
আপু হাঁসের মাংসের মত করে মুরগির মাংস পুড়িয়ে রান্না করে খেতে ভীষণ স্বাদ লাগে। একদিন তৈরি করে খাবেন ইনশাল্লাহ অবশ্যই ভালো লাগবে। ধন্যবাদ