অস্বস্তিকর ঘটনা
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে। আর আজ আমি আমার পাশের বাড়িতে ঘটে যাওয়া একটি নির্মম ঘটনা আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। আমার বাড়ি থেকে প্রায় ৪-৫ টি বাড়ি পেরিয়ে এক প্রতিবেশী খালু রয়েছে আর সেই খালুর দুইজন কন্যা সন্তান রয়েছে, তাদের নাম হচ্ছে চামেলী ও কাকলি। চামেলি বড় ও কাকলি হচ্ছে ছোট। বড় বোন চামেলীর বিয়ে হয়েছে রংপুর জেলায়। তবে বিয়ে হওয়ার পরে শ্বশুর বাড়িতে ঠিকমতো থাকা হয়নি চামেলি আপুর।
বেশিরভাগ সময় বাবার বাড়িতেই থাকা হয়েছিল তার। আর একটা সময় বাবার বাড়িতে থাকতে থাকতে যখন আর বাবার বাড়িতে থাকা হচ্ছিল না, তখন বাবার বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বাসা ভাড়া থাকতে শুরু করেছিল চামেলী আপু। আর সেই চামেলী আপুর স্বামী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম ব্যবসা-বাণিজ্য করে সংসার চালাত। তবে ঠিকঠাকভাবে সংসার চালাতে পারতো না বলে, চামেলী আপু একটা সময় অনেক টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে যায়। ঋণের বোঝা যখন সইতে পারছিল না তখন চামেলা আপু হঠাৎ করেই বাসা বাড়ি ছেড়ে দিয়ে তার শ্বশুরবাড়িতে চলে গিয়েছিল।
এ মত অবস্থায় চামেলী আপুর কাছে যারা টাকা পয়সা পেতো তারা খুব ক্ষুব্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে যারা টাকা পেত তারা শ্বশুরবাড়ির ঠিকানা জানতো না বলে টাকা পয়সা চাওয়ার কোন জায়গা খুঁজে পাচ্ছিল না। তবে পাওনাদাররা মাঝে মাঝেই তার বাবার বাড়িতে এসে বিভিন্ন রকমের কথাবার্তা শুনিয়ে যেত। বেশ কয়েকদিন থেকে আমার সেই প্রতিবেশী খালু ভীষণ অসুস্থ হওয়ার কারণে, বড় মেয়ে চামেলীকে দেখতে চেয়েছিল। আর তাই চামেলী আপু বাবার চিন্তা করে রাতের অন্ধকারে বাবার বাসায় এসেছিল, বাবাকে দেখার জন্য।
তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস চামেলী আপু তার বাবার বাড়িতে আসার কথাটি মুহূর্তের মধ্যেই ছড়িয়ে যায়। আর তখন কিভাবে যেন যারা টাকা পায় তারা চামেলী আপুর বাড়িতে চলে আসে। এবং চামেলী আপুকে ভীষণ অপমান করতে থাকে। এক পর্যায়ে বেশ কয়েকজন মহিলা তো চামেলী আপুকে পাকড়াও করার চেষ্টা করে। পরেতো মনে হয় সবাই মিলে চামেলি আপুকে মেরেই ফেলবে। তবে আমার কেন জানি এরকম পরিস্থিতি দেখতে একটুও ভালো লাগেনা।
তাই আমি চেষ্টা করলাম চামিলি আপুকে সকলের হাত থেকে রক্ষা করে, তার মান সম্মান বাঁচানোর। যদিওবা কথার মাধ্যমে বেশ অপমানিত হয়েছিল, তবু আমি বারবার চাইছিলাম কেউ যেন তার গায়ে আঘাত করতে না পারে। কেননা এর চেয়ে বোধ হয় মান সম্মান হানিকর আর কিছুই নেই। তাই আমি সকল পাওনাদারকে বুঝিয়ে একটা সমঝোতায় আনার চেষ্টা করেছি। যাতে করে চামেলি আপু তার সময় সুযোগ মতো সবার টাকা বুঝিয়ে দিতে পারে। আর আমার কথা শুনে যারা টাকা পেত তারা সকলে আশ্বস্ত বোধ করেছে।
এবং বলেছে আমার কথা শুনে তারা আজ চামেলী আপুর উপরে আর কোন অ্যাকশন নিচ্ছে না। তবে ভবিষ্যতে কথা অনুযায়ী টাকা না দিতে পারলে হয়তো তারা আর কোনোভাবে চামেলী আপুকে ছাড় দিবে না। আমার জানামতে আমার প্রতিবেশী খালু ও চামেলি আপুরা মোটামুটি বেশ ভালো ও ভদ্র ফ্যামিলি। তাদের পরিবারে হঠাৎ করে এমন অস্বস্তিকর ঘটনা সত্যিই আমার কাম্য ছিল না। আমি তো এরকম পরিস্থিতি দেখে মনে খুব কষ্ট পেয়েছি। যাইহোক টাকা পয়সার সম্পর্ক খুব খারাপ সম্পর্ক। এ সম্পর্কে বেশ ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার।
কেননা যাকে এ পর্যন্ত আমি টাকা ধার দিয়েছি, তার কাছ থেকেই কোনদিন ভালো ভাবে ধার দেয়া টাকাগুলো ফিরিয়ে নিতে পারিনি। যাইহোক আজ আমি সেসব বিষয়ে আর কোন কথা বলবো না। শুধু বলতে চাই, মানুষের জীবনে মান সম্মান খুব কষ্টে অর্জন করতে হয়। তবে এই মান সম্মান সামান্য ভুলত্রুটির জন্য মুহূর্তের মধ্যেই ধূলিসাৎ হয়ে যায়। আর যখন চামেলি আপুর মান সম্মান নিয়ে সকলে টানাটানি করছিল, তখন তার মুখের দিকে তাকিয়ে আমার খুবই খারাপ লেগেছিল।
তাই তাকে বুঝিয়ে দিয়ে এসেছি, সে যেন সঠিক সময়ে যারা টাকা পায় তাদেরকে বুঝিয়ে দেয়। তানাহলে যেটুকু মান-সম্মান আছে সেটুকু হয়তো আর থাকবে না। যাইহোক আজকের ঘটনাটি আমার কাছে খুবই খারাপ লেগেছে, তাই আমার খারাপ লাগার মুহূর্তটুকু আপনাদের মাঝে শেয়ার করে নিলাম।
আশা করি আমার পোস্ট আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
খুব দুঃখজনক ঘটনা।আপনার চামেলি আপু ঋণের জালে জর্জরিত হয়ে গেছে। আজ সে পালিয়ে থাকে শুধু ঋণের টাকা শোধ করতে পারছে না বলে।খুব খারাপ লাগলে যে অসুস্থ বাবাকে দেখতে এসেও অপমানিত হতে হলো এই ঋণের জন্যই খুব বেদনা দায়ক একটি পোস্ট।
দিদি, চামেলী আপুর সাথে যে ঘটনাটি ঘটেছে সে ঘটনাটি সত্যি খুবই দুঃখজনক। যা আমার কাছে ভালো লাগেনি, তাই আমার ভালো না লাগার মুহূর্তটুকু আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।