শ্বাসরুদ্ধকর ঘটনা
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আর আজকের পোস্ট হচ্ছে আমার অর্ধাঙ্গিনীর স্কুলের হেড ম্যাডামের ছেলের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। আর ঘটনাটি ঘটেছে আজ বিকেলের দিকেই। আমার অর্ধাঙ্গিনী প্রতিদিনের মতো তার চারজন কলিগের সাথে আমাদের কুড়িগ্রাম শাপলা চত্বর এসে পৌঁছার আগেই আমাকে ফোন দিয়েছিল তাকে নিয়ে আসার জন্য। আর আমি তাকে নিয়ে আসার জন্য যথারীতি শাপলা চত্বরে গিয়ে উপস্থিত হয়েছিলাম। আর তখন আমার অর্ধাঙ্গিনীর স্কুলের হেড ম্যাডাম আমাকে দেখে তার বাসায় যাওয়ার জন্য খুব অনুরোধ করতে থাকলো।
কারন সে আমাকে ছোট ভাইয়ের মতো খুবই স্নেহ ও আদর করে। যার কারনে তিনি একটি নতুন খাট কিনেছেন তাই দেখার জন্য এবং নতুন খাট কিনেছেন বলে আমাকে মিষ্টি খাওয়াবে এজন্য খুব তোর জোর করছিল। আমার হাতে বেশ খানিকটা সময় থাকার কারণে চিন্তা করলাম যেহেতু হেড ম্যাডাম এত জোর করে ডাকছে, সেহেতু না হয় একটু ঘুরে আসি। তাই আমি আমার অর্ধাঙ্গিনী ও হেড ম্যাডাম তার বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হয়েছিলাম। আমার অর্ধাঙ্গিনীর হেড ম্যাডামের বাড়িটি হচ্ছে তিনতলা ফ্ল্যাট। আর সেই তিন তলাতেই থাকতেন তারা।
আর আমরা যখন হেড ম্যাডামের বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হয়েছিলাম তখন বিকেল প্রায় পাঁচটা পার হয়ে গিয়েছে। আর এই বিকেল বেলায় হেড ম্যাডামের ছেলে বাড়িতেই ছিল। কেননা সে নবম শ্রেণীতে পড়ে তাই স্কুল ছুটির পরে সে বাড়িতেই ছিল।তাই আমরা সরাসরি তিনতলায় উঠে কলিং বেল দিতে লাগলাম। তবে কলিংবেলের শব্দ শুনেও যখন হেড ম্যাডামের ছেলে দরজা খুলছিল না তখন আমরা বেশ বিভ্রান্তিতে পড়ে গিয়েছিলাম। এভাবে বারে বারে দরজায় নক করতে থাকি এবং কলিং বেল বাজাতে থাকি তবুও কোন সারা শব্দ পাচ্ছিলাম না। আর এমন অবস্থায় হেড ম্যাডামের দুশ্চিন্তা ও শারীরিক অবস্থা দেখে আমি আরো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।
কেননা প্রায় ১৫ মিনিট কেটে যাওয়ার পরেও যখন হেড ম্যাডামের ছেলে দরজা খুলছিল না, তখন হেড ম্যাডাম হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করে দিয়েছিল। আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না ওই মুহূর্তে আমার কি করা উচিত। এভাবে যখন ৩০ মিনিট পেরিয়ে গিয়েছিল তখন ওই ফ্ল্যাটের অন্য ঘর থেকে আরো বেশ কয়েক জন লোক এসে জড়ো হয়েছিল। তখন আমার অর্ধাঙ্গিনী বলতে লাগলো আর অপেক্ষা করার কোন মানেই হয় না, দ্রুত দরজাটা ভেঙে ফেলো। তাই আমিও কোন চিন্তা ভাবনা ছাড়াই দরজায় খুব জোরে আঘাত করতে লাগলাম।
এত জোরে দরজায় আঘাতের শব্দ আবার কলিংবেলের শব্দ তবুও হেড ম্যাডামের ছেলে রাইয়ান কিছুতেই দরজা খুলছিল না। আর এইদিকে রাইয়ানের মা অর্থাৎ হেড ম্যাডাম অঝোরে কেদেই চলেছিল। তাই আমি আর কোন চিন্তা ভাবনা না করেই দরজায় সজোরে আঘাত করতে লাগলাম। একবার গা দিয়ে ধাক্কা দিচ্ছিলাম, আরেকবার পা দিয়ে সজোরে লাথি মারছিলাম। আর এক পর্যায়ে জোরে জোরে ধাক্কার কারণে দরজাটি ভেঙে গিয়েছিল। আর তখনই হেড ম্যাডাম দৌড়ে ঘরের ভেতরে গিয়ে রাইয়ানকে কম্বলের নিচে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে। আর রাইয়ানকে পেয়ে হেড ম্যাডাম জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে। মায়ের কান্না দেখে রাইয়ানও খুবই ঘাবড়ে গিয়েছিল।
সে বলতে লাগলো মামুনি কি হয়েছে, ঘুমিয়ে থাকার কারণে সেও কোন কিছু বুঝতে পারেনি।এমন পরিস্থিতি দেখে সেখানে থাকা লোকজনও খুবই ভয় পেয়ে গিয়েছিল। কেননা রুমের ভেতরে কি হয়েছে অথবা কি এমন কারনে রাইয়ান দরজা খুলছিল না তা সকলকেই ভাবিয়ে তুলেছিল। রুমের ভেতরে গিয়ে আমরা দেখি রাইয়ান টিভিতে বেশ জোরে সাউন্ড দিয়ে ক্রিকেট খেলা দেখছিল, আর ক্রিকেট খেলা দেখতে দেখতে কখন সে ঘুমিয়ে পড়েছে তা সে নিজেও জানেনা। যার কারনে বাইরে থেকে দরজা ভাঙার শব্দ কিংবা কলিংবেলের শব্দ কিছুই তার কানে পৌঁছায়নি।
তবে আমরা অনেকেই ভেবেই নিয়েছিলাম হয়তো রাইয়ান ঘরের ভেতরে কোনো না কোনো বিপদে পড়ে গিয়েছিল। কেউ ধারণা করেছিল শর্ট সার্কিট থেকে হয়তো কোন দুর্ঘটনা ঘটেছে অথবা বাথরুমে পড়ে গিয়ে কোন দুর্ঘটনা ঘটেছে। যাক অবশেষে কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি বুঝতে পেরে সকলে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিল। আর আমিও আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেছিলাম। মহান আল্লাহ তায়ালা রাইয়ানকে সুস্থ ও ভালো রেখেছেন এর চাইতে বড় সৌভাগ্য বোধ হয় আর কিছুই নেই। যাইহোক এমন অস্বস্তিকর ঘটনা কারো সাথে যেন না ঘটে আমি এই প্রত্যাশাই করছি।
আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
গল্পটি পড়ে আমি তো বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যে ছেলেটা না আবার কোন কিছু করে বসেছে কিনা।অবশেষে ভালো আছে জেনে অনেক ভালো লাগলো।ভয় পাওয়ারই কথা ভাইয়া। এটা ঠিক বলেছেন বড় ধরনের কোন বিপদ হয়েও যেতে পারতো।
আপনার শেয়ার করা গল্পটি পড়ে আমি প্রথমে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যে ছেলেটির কোন খারাপ কিছু হলো নাকি যেহেতু ৩০ মিনিট অপেক্ষার পরেও দরজা খুললো না। অনেক কষ্টের পর দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে ছেলেটিকে সুস্থভাবে পেয়েছেন জেনে আমার কাছে খুবই ভালো লাগলো। আসলে এটাও খুব ভয় পাওয়ার কথা। কারণ যে কোন বড় ধরনের বিপদ হয়ে যেতে পারত। ধন্যবাদ পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
আসলে এমন পরিস্থিতিতে রুমের দরজা ভাঙ্গা ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। কারণ বাহিরে দাঁড়িয়ে আমরা অনেক কিছুই ভেবে থাকি। অনেক সময় বাসায় একা থাকলে বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যায়। যাইহোক হেড ম্যাডামের ছেলে রাইয়ান সুস্থ আছে, এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।