ভালোবাসায় পরিপূর্ণ আমার বাংলা ব্লগ
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আর আজ আমি আমার বাংলা ব্লগ নিয়ে কিছু ভালোবাসার কথা মন খুলে বলতে এসেছি। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন আমার বাবা ভীষণ অসুস্থ। তিনি দশ দিন মেডিকেলে ভর্তি থাকার পর কিছুটা সুস্থ হয়েছেন। আর আমার বাবার অসুস্থতার কারণে আমি ঠিকমত আমার প্রিয় কমিউনিটিতে কাজ করতে পারিনি। গতকাল ছিল আমার বাংলা ব্লগের তৃতীয় বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান। আর সেই সাথে ছিল আমার মেয়ের জন্মদিন।
যখন থেকে এই কমিউনিটিতে এসেছি তখন থেকে আমার মেয়ের জন্মদিন ও আমার বাংলা ব্লগের জন্মদিনের কেক একসাথে আমি আমার মেয়েকে দিয়ে কেক কাটিয়ে উদযাপন করতাম। তবে এবার আমার বাবা অসুস্থ থাকার কারণে কেক কেটে জন্মদিনের অনুষ্ঠানটি পালন করতে পারিনি। এজন্য অবশ্য আমার মনের মধ্যে খুবই কষ্ট অনুভূত হচ্ছে। সেই সাথে আমার পুরো পরিবার আমার মেয়ে ও আমার বাংলা ব্লগের জন্মদিনের কেক কাটতে না পেরে খুবই কষ্ট পেয়েছে। যেহেতু আমার বাবা অসুস্থ সেহেতু আমি কেক কেটে জন্মদিন পালন করতে কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলাম।
তাই ভাবলাম শুধুমাত্র কেক কাটাই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং আমার বাংলা ব্লগ ও আমার মেয়ের জন্মদিন আমার মন থেকে ভালোবাসার অফুরন্ত ভান্ডার। আর এই অফুরন্ত ভান্ডার থেকে কখনোই আমার বাংলা ব্লগ ও আমার মেয়ের জন্মদিনের সময়টুকু আলাদা হতে পারে না। শুধুমাত্র কেক কাটতে পারিনি এই ছিল মনের কষ্ট। আমার পুরো পরিবার বারবার আমাকে বলেছিল আমার মেয়ের জন্মদিনের কেক ও বাংলা ব্লগের কেক যেন একসাথে কেটে উদযাপন করি। কিন্তু ওই যে বললাম না মনের দিক থেকে দ্বিধা দ্বন্দে ছিলাম এজন্য আর কোন আয়োজন করিনি।
আমার বাবা ভীষণ অসুস্থ, তারপরেও তিনি বারবার আমাকে আধো আধো করে বলছিল, আমি যেন আমার মেয়ের জন্মদিনের কেক ও বাংলা ব্লগের জন্মদিন কেক কাটার মাধ্যমে উদযাপন করি। তবে বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে এবং পারিপার্শ্বিক চিন্তাভাবনা করে আমি কেক কাটা সিদ্ধান্ত থেকে বিরত ছিলাম। যাইহোক বাস্তবে কেক কাটা হোক কিংবা নাই হোক, গতকাল হ্যাংআউটের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি কেক কাটার সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পেরে মনটা খুবই প্রফুল্ল হয়েছিল। আর হ্যাঁ গতকাল যখন ভিডিওগ্রাফিতে দেখেছিলাম,আমাদের শায়ান বাবু যখন আমার বাংলা ব্লগের জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটছিল, তখন দেখে খুবই আনন্দ পেয়েছিলাম। মনে হয় আমার পরিবারে শুধুমাত্র আমিই যে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবাসি তা নয়, আমার পুরো পরিবারের সদস্য আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভীষণ ভালোবাসে।
আর এ জন্য আমার মা আমাকে বলেছিল, আমার বাবা অসুস্থ তো কি হয়েছে, আমি যেন একটি কেকের অর্ডার করি, এবং খুব আনন্দের সাথে কেক কেটে জন্মদিন পালন করি। আমার মা ভেবেছিল হয়তোবা আমার বাংলা ব্লগের জন্মদিনের কেক ও আমার মেয়ের জন্মদিনের কেক কাটতে না পারলে হয়তো আমি মনে কষ্ট পাবো। এছাড়া যেহেতু আমার বাংলা ব্লগের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান আর সেখানে কেক না কাটলে কি চলে। তারমানে আমার মায়ের মনেও আমার বাংলা ব্লগের জন্য রয়েছে অফুরন্ত ভালোবাসা।
আর আমার অর্ধাঙ্গিনী সব সময় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ করার জন্য আমাকে ভীষণভাবে সহযোগিতা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। বাইরে কোথাও গেলে অনেক সময় দেখা গেছে নিজের সেলফি না তুলে, বিভিন্নভাবে ফটোগ্রাফি করতে হয়। আর সেক্ষেত্রে আমার অর্ধাঙ্গিনী যথেষ্টভাবে আমাকে সহযোগিতা করে। এছাড়াও যখন বাড়িতে রেসিপি তৈরি করতে যাই, সেখানেও দেখা গেছে ছোট মাছ কিংবা মাংস নিয়ে আসলে সেগুলো কাটাকাটির দায়িত্বটা কিন্তু আমার অর্ধাঙ্গিনীই পালন করে থাকে। আর আমি রেসিপি তৈরি করে নেই।আমার তো মনে হয় শুধু আমি নই বরং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির প্রতিটি সদস্যের পরিবারের লোকজন প্রত্যেকটি সদস্যকে সহযোগিতা করে থাকে। হয়তো আমরা কখনো সে বিষয়গুলো আলোচনা করি না। তাই সেই বিষয়গুলো সব সময় রয়ে যায় ক্যামেরার অন্তরালে।
আর হ্যাঁ আমার পরিবারের প্রত্যেকটি সদস্যই আমার বাংলা ব্লগের সকল কাজকর্মে আমাকে অনুপ্রেরণা যোগায়। অনেক সময় আমার মেয়ে বাইরে গেলে বিভিন্ন রকমের ফুল, ফল কিংবা মজার মজার খাবার দেখলে, সাথে সাথে আমাকে মনে করিয়ে দেয়, বাবা তুমি ফটোগ্রাফি করবেনা। আমি ভুলে গেলে কি হবে আমার মেয়ে ঠিকই মনে করিয়ে দেয়, সেই সব সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করতে। এরপর রয়েছে আমার ছোট্ট ছেলেটি, আমি যখন রঙিন কাগজ কেটে ডাইপ্রজেক্ট তৈরি করতে যাই, তখন বেশিরভাগ সময় আমার ছেলে তা ওলট-পালট করে ফেলে।
আর আমি যদি তাকে বুঝিয়ে বলি আমি বাংলা ব্লগের জন্য এসব কিছু তৈরি করছি, তখন সে খুব সুন্দর ভাবে আমার কথাগুলোকে বোঝার চেষ্টা করে। এবং বলে বাবা তুমি তৈরি কর, আর তৈরি করা শেষ হয়ে গেলে আমাকে দিও। আমি আর দুষ্টুমি করবো না। এক্ষেত্রেও কিন্তু আমার বাংলা ব্লগের প্রতি আমার পরিবারের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ পাচ্ছে। আমার বাংলা ব্লগ এমন একটা কমিউনিটি, যেখানে শুধুমাত্র আমার নিজের ভালোবাসা নয়, বরং এই কমিউনিটিকে ঘিরে রয়েছে আমার পুরো পরিবারের ভালোবাসা। আর এই ভালোবাসায় পরিপূর্ণ হোক আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি, আমিও সব সময় এই প্রত্যাশাই করি।
আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
X Promotion: https://x.com/mahbubullemon/status/1800901236562231336?t=mFbsFsilLblL9m4AyJXMcA&s=19
আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। প্রথমে আপনার বাবার সুস্থতা কামনা করছি। তবে এটা ঠিক ভাই আমাদের পরিবারের প্রত্যেকটি সদস্য আমার বাংলা ব্লগ কে প্রচন্ড ভালোবাসে। ভাই এই কাজটা আমার সঙ্গেও হয় কোন ফুল অথবা দৃশ্য হলে আমার ছেলে আমাকে মনে করিয়ে দেয় আম্মু এটা খুব সুন্দর এই ছবিটা ওঠাও বাংলা ব্লগের জন্য।ওরা ছোট মানুষ ওদের মনের ভিতরেও বাংলা ব্লগ গভীরভাবে জায়গা করে নিয়েছে। আসলে এটাও আমাদের জন্য বিশাল পাওয়া। আমার বাংলা ব্লগকে আমরা এতটাই ভালবাসি তা প্রকাশ করে বা লিখে শেষ করতে পারবো না। ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।