আমার মামার জমি কেনার গল্প
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে। আজ আমি আমার এক মামা জমি কেনা গল্প নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। আমার নানার ছিল ৭ ছেলে, সেই সূত্রে আমিও সাতজন মামা পেয়েছি। আর আজ যার গল্প করবো সে হচ্ছে আমার নানার ষষ্ঠ ছেলে, আর আমার ষষ্ঠ মামা। আমার এই মামা অনেক বুদ্ধিমান এবং অনেক পরিশ্রমী একজন মানুষ। তার বুদ্ধিমত্তা ও পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে তিনি আজ অনেক অনেক উন্নতি ও সাংসারিক অগ্রগতি নিয়ে এসেছে।
আমার নানা বাড়ি হচ্ছে রৌমারী থানার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত একটি গ্রামে। সেখানে যেমন যোগাযোগ ব্যবস্থার খুবই দুরবস্থা ছিল, ঠিক তেমনি জায়গা জমির দামও খুবই কম ছিল। যার কারণে আমার এই মামা তার বাবার পৈত্রিক সম্পত্তি সমস্ত টুকু বিক্রি করে, রৌমারীর একদম শহরে দুই বিঘা জমি কিনেছিল। রৌমারীতে আবার ৬২ শতাংশে এক বিঘা। যা আমাদের কুড়িগ্রাম শহরে ৩৩ শতাংশে এক বিঘা।
যাইহোক আমার এই মামা ১৯৮৯ সালে যখন এই দুই বিঘা জমি কিনেছিল তার মূল্য ছিল ১,৬০০০০ হাজার টাকা। যা শতক প্রতি ছিল ১২৯০ টাকা। আমার মামা যখন এই জমি কিনেছিল তখন হয়তো সে স্বপ্নেও ভাবেনি বর্তমান সময়ে এসে তার জমির মূল্য ঠিক কতটা হতে পারে। এই তো কিছুদিন আগে আমি যখন আমার এই মামার বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম, তখন তার জমির মূল্য শুনে আমি নিজেও একদম হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম।
বর্তমান সময়ে আমার মামার ১ শতক জমির মূল্য তিন লক্ষ টাকা। যদি এক শতক জমির মূল্য তিন লক্ষ টাকা হয়, তাহলে দুই বিঘা জমির মূল্য হচ্ছে ৩ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা। যা আমার মামা কখনো কল্পনাও করতে পারেনি। আমার মামার বাড়ি খুব বেশি একটা যাওয়া হয় না। কিন্তু কিছুদিন আগে যখন বেড়াতে গিয়েছিলাম তখন এই জমির দাম শুনে আমি যেন আকাশ থেকে পড়ে গিয়েছিলাম।
আমার মামা প্রায় ২০ বছরের মত ঢাকাতে গিয়ে একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেছিল। কিন্তু চাকরি করা অবস্থায় তার খুব বেশি একটা স্বচ্ছলতা ছিল না। তাই সে খুব চিন্তাভাবনা করে, তার দুই বিঘা জমি থেকে মাত্র ৫০ শতক জমি দেড় কোটি টাকায় বিক্রি করে, রৌমারী বাজারে একটি বিশাল রড সিমেন্টের দোকান দিয়েছিল। আর সেই দোকান এখন রৌমারী বাজারের সবচেয়ে সেরা দোকান গুলোর মধ্যে অন্যতম।
আমি তো আগেই বলেছিলাম আমার মামা খুবই বুদ্ধিমান লোক। যার কারণে তার বুদ্ধি দিয়ে ব্যবসায় খুবই উন্নতি করতে পেরেছে। সেই সাথে আমার মামা একজন সৎ ব্যক্তি। যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে এবং মানুষকে আল্লাহর রাস্তায় দাওয়াত দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে। আজ তার সততার কারণেই মহান সৃষ্টিকর্তা তার ব্যবসায় এত এত বরকত দান করেছে।
বর্তমানে আমার মামা এক ছেলে ও এক মেয়ের পিতা। আর এই ছেলে মেয়েকে মামা খুব ধুমধাম করে বিয়ে দিয়েছে। আর মামাতো ভাই ও বোন দুজনেই খুবই ভালো পরিবারের সান্নিধ্য পেয়েছে। এখন আমার মামা তার এই ছোট্ট পরিবার নিয়ে ভীষণ সুখে শান্তিতে আছে। মহান আল্লাহ তায়ালা আমার মামার এই ছোট্ট পরিবারের উপর তার সদয় দৃষ্টি সব সময় রাখুক এই কামনাই করি।
আজ কেন জানি হঠাৎ করে আমার এই মামার পরিবার নিয়ে গল্প করতে করতে তার জীবনের ঘটনাগুলো মনে পড়ে গেল। তাই আমি নিজেও গল্পগুলো মনে করলাম এবং আপনাদের মাঝে তা শেয়ার করলাম। আশা করি আমার এই মামার জমি কেনার গল্প আপনাদের কাছেও ভালো লাগবে।
আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপনার মামার জমি কেনার গল্প। গল্পটি পড়ে সত্যি খুবই ভালো লাগলো। আপনি আপনার মামাদের বাড়ির ডিটেলস আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার মামা একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করে জেনে খুবই ভালো লাগলো। আপনার মামার দুই বিঘা জমির মধ্যে শুধুমাত্র ৫০ শতক জমি বিক্রি করেছিল দেড় কোটি টাকায় জেনে সত্যি অবাক হলাম। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
বর্তমানে আমার মামা জমি বিক্রির টাকা দিয়ে রোড সিমেন্টের দোকান দিয়ে বেশ ভালই আছেন। আপনার সঙ্গে মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
পরিশ্রম, ধৈর্য এবং দূরদর্শিতা এই সবকিছুর সমন্বয়ে একজন মানুষ জীবনে অনেক বেশি সফলতা লাভ করতে পারে। আপনার মামার গল্পটা পড়ে সত্যিই খুব ভালো লেগেছে ভাইয়া। তিনি সেই তৎকালীন সময়ে দুই বিঘা জমি ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছিল। আর এখন তার দাম অনেক কোটি টাকা হয়ে গেল। তার সততা, ধৈর্য, পরিশ্রম সবকিছুই তার এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে। আজকে আপনার মামার গল্পটি শেয়ার করেছেন বলেই তো একজন মহৎ মানুষের কথা জানতে পারলাম, ধন্যবাদ ভাইয়া।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু, সুন্দর মন্তব্য করে আমার পাশে থাকার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ভাইয়া আপনার মামার জমি কেনার গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো। তার বাবার পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে রৌমারীর একদম শহরে দুই বিঘা জমি কিনেছিল। এত বছর আগে কেনা জমি আজ এত বছর পরে এসে তার মূল্য তিনগুণ বেড়ে গিয়েছে। আপনার মামা বিশ বছর চাকরি করেও যা করতে পারিনি অল্প একটু জমি বিক্রি করে তার স্বপ্ন পূরণ করে নিয়েছে। আপনার মামা যেহেতু বুদ্ধিমান তার জন্য বাজারে রড সিমেন্টের দোকান দিয়ে আজ লাভবান হয়েছে। তার ছেলে মেয়েদের ভালো ঘরে বিয়ে দিয়ে সংসারে সুখ শান্তি ফিরিয়ে এনেছে। আপনার মামার জমি কেনার গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
আমার মামা তার পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে সত্যিই খুব লাভবান হয়েছেন। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সময় যে কাকে কোন জায়গায় নিয়ে যাবে বোঝা মুশকিল ৷ আপনার মামা এখন অনেক সুখী ৷ আসলে মাঝে মধ্যে জীবনে কিছু সুযোগ আছে যেগুলো কে সঠিক কাজে ব্যবহার করতে হয় ৷ যেটা আপনার মামা করেছে ৷ আর সর্বোপরি ধৈর্য থাকা খুবই জরুরী ৷ আপনার মামা এর গল্প কাহিনী শুনে ভালো লাগলো ৷
হ্যাঁ ভাই আমার মামা এখনো অনেক সুখী। তার ছেলে মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সুখেই দিন কাটাচ্ছে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আপনার মামার জমি কেনার গল্পটি পড়ে আমার কাছে ভালো লেগেছে। আসলে মাঝেমধ্যে এরকম আমরাও দেখি যে আগে যে জমিগুলো যে দামে কিনে বর্তমান সময়ে এসে বহু গুণ দাম বেড়ে যায়। যাইহোক আপনার মামা বুদ্ধি করে আগের পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে এ জমিটি কিনেছিল বিধায় এখন উনি এত টাকার মালিক হতে পেরেছেন। এবং ওনার ছেলে মেয়েকে নিয়ে খুব সুখে আছে জেনে আমার কাছেও খুবই ভালো লাগলো । আল্লাহ উনাদেরকে সুখে রাখুক।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু, আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
আপনার নানার সাত ছেলের মধ্যে মনে হয় 6 নম্বর মামাটি চালাক বেশি। আসলে যারা আগে জমি কিনেছে ওই সময় জমিগুলোর দাম একদম কম ছিল। এখন সব জায়গাতে জমির দাম অনেক বেশি। আপনার মামা এবং তার পরিবার জায়গা গুলোর রেট দেখে মনে হয় অনেক খুশি আছে। আপনি আপনার মামার গল্পটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ঠিক বলেছেন আপু, আমার ৬ নম্বর মামা খুবই বুদ্ধিমান লোক আর সে জন্যই আজ তিনি অনেক অনেক সুখী। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
তাহলে আপনার সাত মামার মধ্যে ৬ নম্বর মামা একটু চালাক বেশি। নিজের বাবার সম্পত্তি বিক্রি করে অন্য জায়গায় কম টাকায় অনেক জমির কিনেলো। তবে আগে মানুষ জায়গাগুলো কিন্তু অনেক কম দামে কিন্তু বর্তমান সময়ে জায়গাগুলোর দাম অনেক বেশি। সত্যি আপনার মামার বুদ্ধির প্রশংসা করতে হয়। এখন তো আপনার মামা কোটিপতি হয়ে গেল জায়গাগুলোর দামের কারণে। অনেক সুন্দর করে মামার গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই, খুব সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।