ঢাকা ঘুরে আসার স্মৃতি - পর্ব ১ || ১০% বেনিফিশিয়ারি shy-fox এর জন্য
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। এইতো কয়েকদিন আগের কথা আমার ব্যবসায়িক সূত্রে একটি কনফারেন্সে যোগদানের জন্য এবং আমার মিসেসের কলিগের হাজবেন্ড হূদরোগে আক্রান্ত হয়ে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট শেরে বাংলা নগর হাসপাতলে চিকিৎসাধীন ছিল তাকে দেখার উদ্দেশ্যে ঢাকা যাওয়া। ঢাকায় আমি আর আমার মিসেস দুজনেই গিয়েছিলাম। কোন প্ল্যান-প্রোগ্রাম ছাড়াই হঠাৎ করেই ঢাকা যাওয়া হয়েছিল। আমরা ঢাকায় গেলে সবসময়ই এনা এসি পরিবহনে যাতায়াত করতাম। কিন্তু যেহেতু হঠাৎ করেই যাওয়া সেহেতু চটজলদি এনা এসি পরিবহন এর কোন টিকিট আমরা পাইনি।
আর তাই আমরা হক স্পেশাল পরিবহনে ঢাকা যাওয়ার জন্য টিকেট কেটে ফেললাম। এই হক স্পেশাল পরিবহন আমাদের কুড়িগ্রাম জেলার এমপি মহোদয়ের গাড়ি। এই গাড়ির সার্ভিস মোটামুটি ভালই ছিল। আমরা ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে হক স্পেশাল গাড়ির টিকিট সংগ্রহ করি। আমাদের বাড়ির পার্শ্ববর্তী খলিলগঞ্জ বাজারের উপর দিয়েই ঢাকাগামী বাস গুলো যাতায়াত করে থাকে। আর তাই আমরা কাউন্টার পর্যন্ত না গিয়ে আমাদের খলিলগঞ্জ বাজার থেকেই হক স্পেশাল গাড়িতে ওঠার জন্য বাজারে গিয়ে উপস্থিত হই।
আমরা আমাদের খলিলগঞ্জ বাজারে গিয়ে উপস্থিত হওয়ার পর বেশ কিছু শুকনা খাবার কিনে নিলাম গাড়িতে বসে খাওয়ার জন্য। আমাদের গাড়িটি ঠিক রাত্রি ৯:৩০ মিনিটে কাউন্টার ত্যাগ করার কথা এবং খলিলগঞ্জ বাজারে পৌঁছানোর কথা ছিল রাত্রি ৯:৪০ মিনিটে। কিন্তু গাড়িটি সঠিক সময়ে না এসে ২০ মিনিট পর এসে উপস্থিত হলো। আর আমি গাড়িতে ওঠার আগেই নিজের এবং গাড়ির একটি ছবি তুলে নেই আমার মুঠোফোনে স্মৃতি হিসেবে ধরে রাখার জন্য।
নিজের এবং গাড়ির ছবি তোলার পরে আমরা গাড়িতে উঠে আমাদের সংগ্রহ করা আসন দুটিতে বসে পড়লাম। আর বসেই আমাদের দুজনের একটি সেলফি তুলে নিলাম। আমরা সারাদিন খুবই কর্মব্যস্ততায় কাটিয়েছি যার কারণে গাড়িতে ওঠার পরে বিশ্রাম নিতে নিতে কখন যেন সিরাজগঞ্জ খাবারের হোটেল গুলোতে চলে আসলাম বুঝতেই পারলাম না।
সিরাজগঞ্জে যে খাবারের হোটেলটিতে আমাদের গাড়িটি দাঁড়িয়েছিল সেই হোটেলটির নাম ছিল পেন্টাগন হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট। আমাদের গাড়ির স্টাফদের মাধ্যমে জানতে পারলাম হোটেলের মালিক ছিল (বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের অভিনেতা) ডিপজল। এই হোটেলটিতে আমার আগে কখনো যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। প্রথমবার হোটেলটিতে এসে আমার বেশ ভালই লেগেছিল। আর ভালোলাগার মুহূর্তটুকু ধরে রাখার জন্য আমি দূর থেকেই হোটেলের দুই একটি ছবি তুলে নেই আমার মুঠোফোনে।
অনেক গাড়ি দাঁড়িয়েছিল হোটেলের বাইরে। উত্তরবঙ্গের সবগুলো গাড়ি এই রাস্তা দিয়েই যমুনা সেতুর উপর দিয়ে ঢাকা যাতায়াত করে থাকে। আমার জানামতে দিবা-রাত্রি মিলে উত্তরবঙ্গ থেকে আনুমানিক ৫-৬ হাজার গাড়ি ঢাকার উদ্দেশ্যে প্রতিদিন যাতায়াত করে। এবং এই সিরাজগঞ্জে খাবারের জন্য প্রতিটি গাড়ি ব্রেক দিয়ে থাকে। এই সিরাজগঞ্জে ছোট বড় হোটেল মিলে আনুমানিক প্রায় ৮০-১০০ টি হোটেল আছে হাইওয়ের পাশ দিয়ে।
এই পেন্টাগন হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট এর সদর দরজা দুটি। একটি হচ্ছে এসি করা রুমের সদর দরজা এবং অন্যটি হচ্ছে নন এসি রুমের সদর দরজা। আমরা এসি রুমের সদর দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলাম। রেস্টুরেন্টের পরিবেশ খুবই মনোরম ছিল এবং অনেক অনেক পরিষ্কার ও বটে। দেখতে বেশ ভালই লাগছিল। আমরা প্রথমেই ওয়াশরুমে গিয়ে কিছুটা ফ্রেশ হয়ে এসে খাবারের অর্ডার করলাম। খাবারের জন্য যখন অপেক্ষা করছিলাম তখন নিজের একটি সেলফি তুলে নেই।
প্রায় ৪-৫ মিনিট পর আমাদের অর্ডার করা খাবারগুলো এসে গেল। আমি খাবারের জন্য অর্ডার করেছিলাম, ভাত, মুরগির মাংস, ডাল ও সবজি। এত রাতেও খাবার গুলো বেশ গরম গরম ছিল। যার কারণে খাবারগুলো খেতে ভীষণ রকম ভাল লেগেছিল। খাবারগুলো আসার পরেই আমি আমার মুঠোফোনে খাবার গুলোর ছবি ধারণ করে নেই।
আমি ও আমার মিসেস খাবার শেষে যথারীতি গাড়িতে এসে উঠে বসলাম। এবং আমরা গাড়িতে বসার পর পরই বাসটি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হল। আমরা যেহেতু সারাদিন কর্মব্যস্ততায় খুবই ক্লান্ত ছিলাম সেহেতু আমরা আবারো গাড়িতে উঠার পরই বিশ্রাম নিতে শুরু করে দিলাম। গাড়ি চলছে আর আমরাও রাতের অন্ধকার দেখতে দেখতে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছি। আর এগিয়ে চলতে চলতে আমার যে কখন ঘুম ধরে গেলো তা বুঝে উঠতে পারলাম না। ক্লান্তিময় শরীরে ঘুমটা বোধহয় একটু বেশি ধরে। যার কারণে একদম ঢাকায় গিয়ে পৌঁছার পরই আমি ঘুম থেকে জেগে উঠেছি। ঢাকায় গিয়ে পৌঁছামাত্রই আমরা বাস থেকে নেমে পড়ি আমাদের গন্তব্যস্থলে যাওয়ার জন্য। এই ছিল আমার ঢাকা আসার পর্ব ১ দেখা হবে আগামী পর্বে।
আশা করি আমার ঢাকা যাওয়ার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ সুন্দর বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
কোথাও ভ্রমন করতে খুব ভাল লাগে। আর যদি কোন প্রিয় জন থাকে তাহলে তো কথাই নেই আপনি ভাবির সাথে ঢাকা ভ্রমণ করার ভালো মুহূর্ত উপভোগ করেছেন দেখেই বোঝা যাচ্ছে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এই মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ঢাকা ভ্রমণে আপনার ভাবি আমার সাথে থাকায় ভ্রমণটি সত্যিই আমার অনেক ভালো লেগেছিল। অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছেন এ জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ঢাকায় খুব সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করেছেন যেটা দেখেই বুঝতে পারলাম। আসলে এরকম মুহূর্তে ভোগ করতে খুবই ভালো লাগে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আমার পোস্টে এসে মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Please check my new project, STEEM.NFT. Thank you!
এরপরের বার ঢাকায় আসলে অবশ্যই বলবেন। ভাই আপনার ঢাকায় ঘোরাঘুরি এর চিত্র গুলো দেখে আমার সত্যিই খুব ভালো লাগলো ।আমিও প্রতিরাতে বেরিয়ে যাই রাতের ঢাকা ঘোরার জন্য
এরপরের বার ঢাকা গেলে অবশ্যই আপনাকে জানিয়ে দেবো। সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
এর আগেও আপনার ঢাকা ভ্রমণের স্মৃতি পর্ব এক পড়ছিলাম তাই দেখেই দুই মাস আগের সেই পোস্ট এর কথা মনে পড়ে গেলো। আজকে আবার পর্ব ১ থেকে শুরু করলেন দেখে ভালো লাগলো। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
পূর্বের ভ্রমণ↓
ঢাকা ভ্রমণের স্মৃতি -পর্ব ১
ভাইয়া গত ২ মাস আগে ঢাকা গিয়েছিলাম আবারো সেদিন ঢাকা থেকে ঘুরে আসলাম। মাঝে মাঝে বিভিন্ন কাজের জন্য ঢাকা যেতেই হচ্ছে। আমার পোস্টগুলো পড়েছেন এ জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
মিতা আপনি আজকে চমৎকার ভাবে ঢাকা ঘুরে আসার স্মৃতি শেয়ার করেছেন। দেখে অনেক ভালো লাগলো সুন্দর সম উপভোগ করেছেন। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সবসময় এই কামনাই করি।
মিতা অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছেন পড়ে খুবই ভালো লাগলো। সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।