ঢাকা ভ্রমণের স্মৃতি -পর্ব ১//১০% বেনেফিশিয়ারি shy-fox 🦊এর জন্য
"আজ মঙ্গলবার-৮ই চৈত্র-১৪২৮ বঙ্গাব্দ, ২২শে-মার্চ-২০২২ সাল"
" হ্যালো বন্ধুরা "
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মাবলম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছি, সুস্থ্য আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। আমি আমার অনেক পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করেছি আমি একজন ভ্রমণবিলাসী মানুষ। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে আমার ভীষণ ভালো লাগে। আর তাই সময় সুযোগ হলেই আমি ছুটে বেড়াই এইসব ঘুরাফেরার জায়গায়। যদিওবা আমি আমার ব্যবসায়িক ছোট্ট একটা কাজে ঢাকা গিয়েছিলাম তথাপি আমি আমার অর্ধাঙ্গিনী কে সাথে করে নিয়ে গিয়েছিলাম যাতে করে একটু ঘোরাফেরা করে আসতে পারি। আমার বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলা হওয়ার জন্য আমাদের এখান থেকে ঢাকার দূরত্ব অনেক বেশি। তাই যখনই আমরা ঢাকা যাই তখনই অনেক প্লান প্রোগ্রাম করে যেতে হয়। কিন্তু আমি সেদিন হঠাৎ করেই কাজের জন্য ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হই। আর ঢাকা যাওয়ার জন্য আমি যে প্রথম যানবাহনটি ব্যবহার করি তা হচ্ছে এই এনা গাড়ি। এই গাড়িতে চেপে আমি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলাম।
আমি যেহেতু হঠাৎ করেই ঢাকা যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে ছিলাম। এজন্য আগে থেকেই টিকিট কাটার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। তাই আমি বাসা থেকেই এনা কাউন্টার এর ম্যানেজার কে ফোন দিয়ে দুইটি এসি গাড়ির টিকিট বুক করার কথা বলে দিলাম। ম্যানেজার আমার কথা শুনে দুইটি টিকিট আমাদের জন্য রেখে দিল। আমি যে গাড়িতে টিকেট বুক দিলাম সেই গাড়িতে যাওয়ার সময় ছিল সাড়ে ৯:৩০ টায়। আর আমি ম্যানেজার কে ফোন দিয়েছিলাম ঠিক রাত ৮:০০টায়। আর তাই আমরা তড়িঘড়ি করে তৈরি হয়ে কাউন্টার এর উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। কাউন্টারে পৌছেই ম্যানেজার জালাল ভাই আমাকে গাড়ির টিকিট দুটো বুঝিয়ে দিল।
আমরা যখন এনা কাউন্টারে গিয়ে টিকিট সংগ্রহ করা শেষ করি তখন পর্যন্ত এনা এসি গাড়িটি ঢাকার উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়নি। গাড়িটি ধোয়ামোছা করে পরিষ্কার করার জন্য দুজন ব্যক্তি কাজ করে চলেছে। আর তাই আমি ও আমার অর্ধাঙ্গিনী এনা কাউন্টার এর ওয়েটিং রুমে বসে আছি, কখন গাড়ির স্টাফ এসে আমাদের ডাকবে এই অপেক্ষায়। এরই মাঝে আমি ও আমার অর্ধাঙ্গিনী একটি সেলফি তুলে নিলাম আমার মুঠোফোনে, যা স্মৃতি হিসেবে ক্যামেরাবন্দি হয়ে থাকবে।
আমাদের অপেক্ষার পালা শেষ। অবশেষে গাড়ির স্টাফ এসে আমাদেরকে গাড়িতে উঠতে বলল। যেই কথা সেই কাজ, বলা মাত্রই আমরা গাড়িতে উঠে যার যার বসার আসনে বসে পড়লাম।
এসি গাড়িতে উঠেই মনটা কেমন যেন প্রফুল্ল হয়ে উঠলো। কারণ গাড়িটি পরিষ্কার করে ঝকঝকে চকচকে করে রেখেছে। বসার আসন গুলো খুবই আরামদায়ক যার কারণে যত দূর জার্নি করা হোক না কেন তাতে শরীরের ওপর তেমন কোন প্রভাব পড়বে না। যাত্রাকালে ভালো মানের একটি গাড়ি পেলে যাত্রা পথে অনেক ভালো লাগে, যাত্রা পথ অনেক আরামদায়ক হয়ে ওঠে। ঠিক ৯:৩০ মিনিটে আমাদের গাড়িটি কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা শুরু করে।
আমরা যেহেতু রাতে রওনা দিয়েছিলাম, সেহেতু বাইরের কোনো প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার সৌভাগ্য হয়নি। কিন্তু রাতের আলোতে চলন্ত গাড়ি গুলো একে অপরের সাথে রেস খেলার মত করে ছুটে চলছে। এভাবে চলতে চলতেই আমরা খাবারের বিরতির জন্য ফুটভিলেজ এ গিয়ে পৌছালাম।
ফুটভিলেজ রেস্টুরেন্ট টিতে আধুনিকতার ছোয়া লেগে আছে। কিন্তু এখানে উত্তরবঙ্গের প্রায় অর্ধেক গাড়ি এই রেস্টুরেন্ট টিতে এসে খাবারের জন্য বিরতি দিয়ে থাকে। তাই রেস্টুরেন্ট টিতে সব সময় কাস্টমারের ভিড়ে কোলাহল লেগেই থাকে। এই ব্যস্ততার ভিড়ে আমরাও একটি টেবিলে বসে আমাদের রাতের খাবার খেয়ে নিই। আমরা এখানে গরুর মাংস দিয়ে ভাত খাবার কারণে খাবারের ফটোগ্রাফি গুলো তুলে ধরতে পারলাম না।
এই ফুড ভিলেজ রেস্টুরেন্টে খাবারের দাম বলাবাহুল্য। এক কাপ চায়ের মূল্য ১৫ টাকা। খাবার শেষে আমরা চা খেয়ে বাহিরে এসে রেস্টুরেন্টের পাশে একটি অত্যাধুনিক ফিলিং স্টেশন এবং রেস্টুরেন্টের অপর সাইডে অত্যাধুনিক একটি সুন্দর মসজিদ দেখতে পেয়ে আরো কয়েকটি ছবি আমার মুঠোফোনের ক্যামেরায় বন্দী করে নিলাম স্মৃতি হিসেবে।
খাবারের জন্য ২০ মিনিট বিরতি বলে কিন্তু আরো ৫-১০ মিনিট ওভার হয়ে যায়। খাবারের পালা শেষ করে আবারও যাত্রা শুরু করে দিল ঢাকার উদ্দেশ্যে গাড়িটি। কিছুক্ষণ গাড়ি চলার পরে আমরা দেখতে পেলাম বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সেতু যমুনা সেতু। তাই গাড়ির ভেতর থেকেই আরো কয়েকটি ছবি তুলে নিলাম আমার মুঠোফোনে।
যমুনা সেতু শেষ হয়ে গেল রাত ও বুঝি শেষ হতে লাগল এভাবে চলতে চলতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম তা বুঝতে পারলাম না। হঠাৎ গাড়ির স্টাফ আমাদেরকে ডাক দিল, ভাইয়া গাবতলী গাড়ি পৌঁছেছে সব প্যাসেঞ্জার নেমে গেছে। আমি একটু হেসে বললাম ভাইয়া খুব ঘুম ধরেছিল। সারারাত জার্নি করে আমার শরীর খুব ক্লান্ত। তাই এখানেই শেষ করছি, আমার ঢাকা সফর নিয়ে আগামী পর্বে আবারও দেখা হবে।
আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে, আমি নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় বলতে, বাংলায় শুনতে, বাংলায় চলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, আরো ভালো লাগে এই অপরূপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন, আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
কুড়িগ্রাম জেলা থেকে ঢাকা অনেক দূরে হয়।আপনার যাত্রাপথে কাটানো সুন্দর মুহূর্ত গুলো খুব সুন্দর ভাবে আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন।আমিও ভ্রমণ করতে অনেক ভালোবাসি।আপনার ভ্রমন অভিজ্ঞতা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
জি ভাইয়া, কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকার দূরত্ব অনেক বেশি। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
প্রথমেই আপনাকে ঢাকাতে স্বাগতম।কুড়িগ্রাম তো অনেক দূর।বাংলাদেশ শেষ পান্তে মনে হয়।যাই হোক মনে হচ্ছে জার্নিটা ভালোই ছিলো।ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু, আমার পোস্টে এসে সহযোগিতা করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
বাহ চমৎকার ভাবে উপস্থাপন করেছেন ভাই। তবে আমি কখনো ঢাকায় যাই নাই। তবে ইনশাআল্লাহ সময় হলে যাব একদিন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাইয়া।
আমার পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে জেনে ভীষণ খুশি হলাম। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
জীবনে প্রথমবার একবার ঢাকা গিয়েছিলাম। আমার যে অবস্থা হয়েছিল তা বলার বাইরে। আর এসি গাড়িতে বসে সুন্দর একটা জার্নি করেছেন। আর অনেকগুলো বিষয় আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। সত্যি আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
সত্যি ভাইয়া, এসি গাড়িতে করে ভ্রমণ করতে পারলে, ভ্রমণ টা খুব আরামদায়ক হয়ে ওঠে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।