শাশুড়ি নির্যাতন
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট নিয়ে। আর আজকের পোস্ট হচ্ছে বর্তমান সময়ে বউয়ের দ্বারা শাশুড়ি নির্যাতনের কিছু কথাকে কেন্দ্র করে। আগে একটা সময় শুনতাম শাশুড়িরা বউদের উপরে খুবই নির্যাতন করতো। তবে এখনকার প্রেক্ষাপট একদমই পাল্টে গেছে, কেননা এখনকার সময় প্রতিটি ঘরে বউরা শাশুড়িদের ওপর নির্যাতন করছে। হয়তোবা আমার ধারণা ভুল হতে পারে, তবে আমার আশেপাশে এমন দুই একজন শাশুড়িকে দেখেছি যারা আমার সামনে এসে চোখের জল ফেলেছে।
আর তাদের এই চোখের জল এবং তাদের করুন কাহিনী শুনে সত্যিই ভেতরে যেন বিবেক নাড়া দিয়ে ওঠে। কেন হচ্ছে এমন, কেন বউরা তাদের শাশুড়ির ওপর এমন মানসিক টর্চার করছে তা বুঝে উঠতে পারছি না। হয়তো সকল পরিবারে এমন চিত্র দেখা যায় না, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সম্ভবত বউয়ের মাধ্যমে শাশুড়ি অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের শিকার হচ্ছে। যাই হোক আজ আমি এমনই একজন শাশুড়ির কথা আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে যাচ্ছি। যে শাশুড়ি খুব পছন্দ করে তার ছেলের বউকে ঘরে এনেছিল। তার খুব পছন্দের বউ ছিল, এই বড় ছেলের বউ। খুব ধুমধাম করে, আত্মীয়-স্বজন ডেকে তার ছেলের বিয়ে সম্পন্ন করেছিল। তার ছেলের নাম হিমেল।
আর হিমেলরা হচ্ছে দুই ভাই এক বোন। বোনটি বড়, হিমেল মেজ, আর শিমেল হচ্ছে ছোট। তাদের সংসারে হিমেলই হচ্ছে একমাত্র উপার্জনকারি ব্যক্তি।হিমেলের সংসারে হিমেলের যখন বিয়ে হয়েছিল তাদের সংসার মোটামুটি বেশ ভালই আনন্দে দিন পার করছিল। কিন্তু কয়েকটা মাস যেতে না যেতে হিমেলের বউ যেন তার রূপ একদম পরিবর্তন করে ফেলেছিল। সে বাবার বাড়ির আত্মীয়স্বজন ছাড়া, শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়-স্বজনদের মোটেই পছন্দ করত না। আর এসব বিষয় তার শাশুড়ি খুব ভালোভাবেই পর্যবেক্ষণ করেছিল। যখনই শাশুড়ি এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে যেত, তখনই বউ শাশুড়ির যুদ্ধ শুরু হয়ে যেত।
এমতাবস্থায় হিমেল যেন দোটানায় পড়ে গিয়েছিল। একদিকে মা আর একদিকে স্ত্রী, সে যেন কোনভাবেই কারো পক্ষ নিতে পারছিল না। তবে একটা সময় এসে হিমেল তার স্ত্রীর পক্ষেই বেশি সাপোর্ট করতে থাকে। আর তাই হিমেলের মা মানসিকভাবে খুব ভেঙ্গে পড়েছিল। তার সাজানো ছোট্ট সংসার সে একাই সামাল দিত। বিভিন্ন ধরনের রান্না করে মেয়েকে ও ছেলেকে খাওয়াতো। তবে এখন আর হিমেলের মা আর এসব করতে পারে না। কেননা হিমেল এর বউ রান্নাঘরের সকল দায়িত্ব সে নিয়ে নিয়েছে। কখন কি রান্না করতে হবে, তার ইচ্ছামতই করে।
যদি কখনো হিমেলের মায়ের কোন কিছু রান্না করে খেতে ইচ্ছে করে, তাহলে নিজেই টুকটাক বাজার করে রান্না করে খায়। আর রান্না ঘরের যাবতীয় জিনিস, যেমন তেল, পেঁয়াজ, চিনি, চা, দুধ, মসলা এসব কিছু হিমেলের বউ নিজের কক্ষেই রেখে দিয়েছে। তাই মন চাইলেও হিমেলের মা সে সব জিনিসগুলোতে হাত দিতে পারে না। আর এরকম পরিস্থিতিতে হিমেলের মা তার বউয়ের দ্বারা মানসিক নির্যাতন নিশ্চুপ হয়ে সহ্য করে যাচ্ছে। আর সেদিন যখন হিমেলের মা এসব বিষয় নিয়ে আমার সাথে গল্প করছিল, তখন সে কেঁদেই বুক ভাসাচ্ছিল।
আমাকে গল্প করে বলছিল, একটা সময় হিমেলের মা তার শাশুড়ির দ্বারা খুব নির্যাতিত হয়েছিল, আজ আবারও বহু বছর পর আমার ছেলের বউয়ের মাধ্যমে নির্যাতিত হচ্ছি। হয়তো হিমেল এর মায়ের বুকে এখনো এমন কোন কথা লুকিয়ে আছে যা হয়তো আমাকে বলতে পারছিল না, শুধু বলছিল আমি আর এসব কিছু সহ্য করতে পারছিনা। শুধু হিমেলের মা নয় আমি আরো একজন শাশুড়ির কথা জানি, যে ছেলের বউয়ের দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছে। তবে আজ আমি সে বিষয় নিয়ে কোন কিছু লিখব না, পরবর্তী সময়ে সেই শাশুড়ির বিষয় নিয়েও আপনাদের মাঝে হাজির হব।
আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
পৃথিবীতে যেমন এমন খারাপ বউ রয়েছে তেমনি অনেক খারাপ শাশুড়ি দিয়ে রয়েছে। কিন্তু বউদের দ্বারা শাশুড়িদের নির্যাতন টাই বেশি চোখে পড়ে। এইসব ক্ষেত্রে ছেলেদের পড়তে হয় মহা বিপদে। না যেতে পারে মায়ের পক্ষে না যেতে পারে বউয়ের পক্ষে। হিমেলের মায়ের কষ্ট দেখে আমারই তো খারাপ লাগছে। এরকম মায়েদের দুঃখের গল্প শুনতে আমার নিজেরই হৃদয় ভারাক্রান্ত হয়ে যায়। পৃথিবীর সব মায়েরা ভালো থাকুক আর বউদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।
আপু একদম ঠিক বলেছেন, শুধুমাত্র যে খারাপ বউ আছে তা নয় খারাপ শাশুড়িও আছে। আর এই বউ শাশুড়ির যুদ্ধ সব সময় চলে আসছে। তবে হয়তো সব পরিবারে নয়। কিছু কিছু পরিবারে এই দৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
খারাপ লাগলো আপনার গল্পটি পড়ে কারণ আগের বউরা শাশুড়ির হাতে নির্যাতিত হত। কিন্তু এখন নির্যাতিত হচ্ছে বউয়ের হাতে শাশুড়িরা। কি একটা কান্ড শুরু হয়ে গেল এই দুনিয়াতে। তাই বলে কি একেবারে রান্না ঘরে যাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে এমন নিয়ম তো দেখি নাই আর। একদম সংসারের সবকিছু দখল করে নিল হঠাৎ করে একটা মেয়ে এসে। এমন বউদের ভবিষ্যতেও তাদের ছেলেরাও এমন আচরণ করবে সেটা হচ্ছে পরিণতি।
আপু, হিমেলের মায়ের করুন অবস্থা দেখে আমার কাছে খুবই খারাপ লেগেছে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
খুবই খারাপ লাগলো হিমেলের বউ ও তার মায়ের মায়ের কথা শুনে। সত্যি দিন পাল্টাচ্ছে, আগে বউরা শাশুড়ির হাতে নির্যাতন হট। এখন শাশুড়িরা বউর হাতে হচ্ছে। তবে এখন আগের মত শাশুড়ি আছে,আবার আগের মত বউ ও আছে। খুব খারাপ লাগছে হিমেলের মায়ের জন্য। দোয়া করছি যেন তাদের সংসারটা আগের মত সুন্দর হয়ে যায়।
হিমেলের মায়ের প্রতি সমবেদনা জানানো ছাড়া আমার আর কিছুই করার নেই। তাই আমিও প্রত্যাশা করছি হিমেলের মায়ের সকল সমস্যা দূর হয়ে যাক। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
হিমেলের বউর মতো এরকম অনেক মানুষ আছে যেগুলো শ্বশুর শাশুড়িকে দেখতে পারে না। তবে একটা সময় শুনতাম বিয়ের আগে মেয়েরা চিন্তা করত শাশুড়ি কেমন হবে। আর এখনকার সময়ে শাশুড়ি চিন্তা করে বউ আসলে কেমন হবে। অনেক সময় পুরুষগুলো মায়ের দিকে এবং স্ত্রীর দিকে কথা বলতে ভয় পায়। আসলে সঠিক যেটি ওটি বলার দরকার। অনেক সময় ছেলেগুলো ওয়াইফ কে সাপোর্ট করে। যেমন শিমুলের বেলা হয়েছে। অনেক সুন্দর করে পোস্টটি আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করেছেন।
বর্তমান সময়ে শাশুড়িরাই চিন্তা করে ছেলের বউ ভালো হবে কিনা। যাইহোক আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
এখনকার সময়ে বউদের অত্যাচারে শাশুড়িরা আছে মহা বিপদে।হিমেলর মত অনেক পুরুষ আছে যেগুলো বউয়ের দোষ দেখল কিছুই বলে না। একসময় তারা বউদেরকে সাপোর্ট করে। তবে আগেরকার মানুষ বলতো শাশুড়িদের অত্যাচারে বউরা পালিয়ে যেত। এখন সেই পরিবেশ আর নেই এখন উল্টো হয়ে গেছে। তবে ছেলে এবং বউরা শশুর শাশুড়িকে সেবা করা দরকার। সত্যি আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক খারাপ লাগলো।
ঠিক বলেছেন ভাই, প্রতিটা মানুষের উচিত তার শশুর শাশুড়ির সেবা যত্ন করা। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।