লাইফ স্টাইল || পৌর বাজারে মাছ কেনার অনুভূতি
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে। আর আজকের পোস্ট হচ্ছে আমাদের এখানে পৌর বাজারে মাছ কিনতে যাওয়ার অনুভূতিকে কেন্দ্র করে। প্রচন্ড গরমে বাহিরে একদমই যাওয়ার ইচ্ছে হয় না। তবুও প্রয়োজনের তাগিদে, আর পেট মহাশয় কে খাবারের যোগান দিতে বাধ্য হয়ে বাজারে যেতে হয়। যদিও বা ইদানিং আমি খুব বেশি একটা মাছের বাজারে যাইনা। কেননা গরমের মধ্যে টাটকা মাছ পাওয়া যেন মুশকিল ব্যাপার হয়ে গিয়েছে। আর যখনই আমি এই মাছ কিনে বাসায় আসি তখন আমার অর্ধাঙ্গিনী মাছ গুলো দেখে কিছু না কিছু বলতেই থাকে। হয় বলবে মাছগুলো টাটকা নয়, অথবা বলবে এই মাছ না কিনলেই ভালো হতো।
তার এরকম কথা বার্তা শুনে আমার খুবই বিরক্ত লাগে। তাই তাকে বলে দিয়েছি, মাছ কেনার দায়িত্বটা যেন সেই নিয়ে নেয়। তাই আমার অর্ধাঙ্গিনী বেশিরভাগ সময় স্কুল থেকে ফেরার পথে পৌরবাজার থেকে মাছ কিনে নিয়ে আসে। সে যদি পচা মাছও কিনে নিয়ে আসে তাহলে কোন কথা নেই। আর আমি টাটকা মাছ কিনে নিয়ে আসলেও কোন না কোন কথা হবে। তাই প্যারামুক্ত থাকার জন্য বাজারের দায়িত্বটা তার ঘারেই চাপিয়ে দিয়েছি।
তবে বর্তমানে গরমের যে পরিস্থিতি, আমার অর্ধাঙ্গিনী স্কুল থেকে ফেরার সময় কোনোভাবেই বাজারে গিয়ে বাজার করতে চাইছে না। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়ে বাজারে গিয়েছিলাম মাছ কিনতে। মাছের বাজারে যতই ঘুরে ঘুরে মাছ দেখছি, ততই যেন আমার মেজাজ বিগড়ে যাচ্ছিল। একদিকে তো মাছ পছন্দই হচ্ছিল না, অন্যদিকে মাছের যে দাম মনে হচ্ছিল মাছে হাতই দেয়া যাচ্ছিল না। বাজারে সব কিছুরই উর্ধ্বমূল্য হওয়ার কারণে, পরিস্থিতি যেন আমাদের হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। যাইহোক এরই মধ্যে আমি আমার মেজাজটাকে শান্ত রেখে মাছ কিনতে উঠে পড়ে লেগে গেলাম।
![]() | ![]() |
---|
মাছ দেখতে দেখতে আমি একটা সময় রূপালী ইলিশের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। যে ইলিশ মাছ একসময় ২৫ থেকে ৩০ টাকায় অনেক বড় বড় ইলিশ মাছ পাওয়া যেত। আমার বাবাকে দেখেছি এই বড় বড় মাছগুলো প্রায় সময় কিনে নিয়ে আসতো। কিন্তু এখনকার সময়ে এসব কথা বললে আমার ছেলে মেয়েরা স্বপ্নের মত মনে করবে। তবুও সাহস করে ইলিশ মাছের দাম জিজ্ঞেস করেছিলাম, মাছ বিক্রেতা বলেছিল ১ কেজি ইলিশ মাছের দাম ১৮০০ টাকা। তাই আমি আর সেদিকে হাত বাড়াতেই চাইলাম না। কেননা আমার পকেটে তো ঘুষের কোন টাকা নেই, যা আছে সব হালাল টাকা। ঘুষের টাকা ছাড়া ১৮০০ টাকা দিয়ে ইলিশ মাছ খাবার ইচ্ছে হবে না। তাই পরবর্তী মৌসুম না আসা পর্যন্ত ইলিশ মাছের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে।
এরপর ইলিশ মাছ না কিনে আরও অন্যান্য মাছগুলো দেখতে লাগলাম। মাছ দেখতে দেখতে একটা পর্যায়ে মন স্থির করে ফেললাম আমি রুই মাছ কিনব। কেননা আমার ছেলে রুই মাছ খেতে খুবই পছন্দ করে। আর আমার কাছেও মনে হয় অন্যান্য মাছের তুলনায় রুই মাছের কাটার পরিমাণ কিছুটা হলেও কম থাকে। তাই দেখেশুনে টাটকা ও সতেজ রুই মাছ কেনার জন্য মাছের বাজার ঘুরতে শুরু করেছিলাম। টাটকা ও সতেজ মাছ না কিনতে পারলে, বাড়িতে গিয়ে আবার না জানি কি কথা শুনতে হবে। তাই ঘুরে ঘুরে মাছ দেখছিলাম।
এরপর আমি আমার মন মতো টাটকা রুই মাছ পেয়েছিলাম। তাই দেরি না করে দরদাম করে ২টি রুই মাছ কিনে নেই, যা ওজনে ছিল ২ কেজি ৫০০ গ্রাম। যার মূল্য এসেছিল ৬২৫ টাকা। যাক অল্প টাকাতে আড়াই কেজি মাছ কিনতে পেরে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিল। তাই মাছ দুটো কিনে নিয়ে বাজারেই কাটতে দিয়েছিলাম। তবে মাছ দুটোর ভেতরে ডিম ছিল। সে দিক থেকে মনে হচ্ছিল, হয়তোবা মাছের ভেতরে ডিম থাকার কারনে স্বাদ একটু কমই লাগবে। যাইহোক মাছ কাটা হয়ে গেলে, মাছ নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় নিজের একটি সেলফি তুলে নিয়েছিলাম। এই ছিল আমার পৌর বাজারে গিয়ে মাছ কেনার অনুভূতি। আর সেই অনুভূতিটুকু আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।
আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
মাছ কেনার অনুভূতি খুব সুন্দর করে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনার মাছ কেনার অনুভূতি খুবই দুর্দান্ত হইছে। রুই মাছ আমার খুব পছন্দের । বড় দুটি রুই মাছ কিনেছেন জেনে সত্যি খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
রুই মাছ আমার কাছেও ভীষণ রকম প্রিয়। আপনার কাছে রুই মাছ খুব পছন্দের কথাটি জেনে খুব ভালো লাগলো। সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
ওয়াও ভাই আপনি আজ আমাদের মাঝে লাইফস্টাইল পোস্ট করেছেন দেখে আমার অনেক ভালো লাগলো। মাছ কেনার অনুভূতি খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। বড় বড় দুইটি রুই মাছও কিনেছেন দেখছি। রুই মাছ খেতে আমি অনেক বেশি ভালোবাসি ধন্যবাদ।
ঠিক বলেছেন ভাই, সেদিন টাটকা মাছ কিনতে পেরে খুব ভালো লেগেছিল। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
পৌর বাজারে গিয়ে মাছ কিনতে গিয়ে খুব সুন্দর ভাবে আপনি আপনার অনুভূতি শেয়ার করেছেন ভাইয়া।খুব ভালো লাগলো পড়ে। আসলে এখন সব জিনিসের দাম হাতের নাগালের বাইরে।আর ইলিশের দাম তো আরো বেশীই হবে।এক কেজি রুপালী ইলিশ ১৮০০ টাকা।মানুষ আর কি খাবে বলেন।যাই হোক আপনি আপনার ছেলের পছন্দের রুই মাছ কিনলেন। সাথে আবার মাছের ডিমও। আর হে শুনেছি মাছের ডিম হলে স্বাদের কিছুটা ভিন্নতা হয়।খুব সুন্দর করে আপনি মাছ কেনার অনুভূতি গুলো শেয়ার করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।
আপু, আমার পোস্ট পড়ে খুব সুন্দর মন্তব্য করেছেন, এজন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আসলে ভাইয়া বর্তমান বাজারের পরিস্থিতি অনুসারে আপনি রুই মাছটি সঠিক দামে কিনতে পেরেছেন। আর সবকিছুর মূল্য ঊর্ধ্বগতি হওয়ার কারণে মাছের দামও বেশ চওড়া। বাজারে মাছ কেনার অনুভূতির কথা গুলো খুবই চমৎকারভাবে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই, খুব সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।