বিপদ কখনো বলে আসে না
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট নিয়ে। আর আজকের পোস্ট হচ্ছে হঠাৎ ঘটে যাওয়া একটি বিপদকে কেন্দ্র করে। গত বৃহস্পতিবার মাগরিবের আজানের সময় আমার অর্ধাঙ্গীনির বড় খালা এই বিপদে পড়ে গিয়েছিলেন। আর সেই বিপদটাই আজ আমি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছি। আমার বড় খালা শাশুড়ি খুব সহজ ও সরল একজন মানুষ। আর খুবই ধর্মভীরু লোক। আর তাই সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কালাম পড়েন। তিনি গত বৃহস্পতিবার মাগরিবের আজানের আগ মুহূর্তে তার বাড়ির পাশে শাক সবজির বাগানে কি যেন একটা কাজ নিয়ে গিয়েছিলেন।
আর ঠিক সেই মুহূর্তে মাগরিবের আজান দেয়ার কারণে নামাজ আদায় করার জন্য খুব তাড়াহুড়ো করে শাক সবজির বাগান থেকে ফিরে আসছিল। তার এই শাক সবজির বাগান একটি ঝোপের পাশেই ছিল। যার কারণে এই ঝোঁপ থেকে বিষাক্ত একটি সাপ রাস্তায় ছিল কিন্তু আমার খালা শাশুড়ি তা লক্ষ্য না করে রাস্তা দিয়ে হেঁটে আসছিলেন। এমন সময় হঠাৎ তিনি চিৎকার করে ওঠেন, তিনি মনে করেছিলেন তার পায়ে কোন পোকা কামড়ে দিয়েছে।
তাই তিনি তাড়াহুড়ো করে বাড়িতে এসে হেক্সিসল দিয়ে পোকা কামড়ের জায়গাটি পরিষ্কার করেছিলেন। কিন্তু তার কাছে মনে হচ্ছিল তার পায়ে রক্ত কেমন যেন শির শির করে উপরের দিকে উঠে আসছিল। আর এরকম পরিস্থিতি দেখে তিনি তার বড় ছেলেকে গিয়ে বলতে শুরু করেছিলেন, আমার পায়ে পোকা কামড় দিয়েছে, আর তারপর থেকেই পায়ের রক্ত যেন শিরশির করে উপরে উঠতে শুরু করেছে। তখন পর্যন্ত তিনি আন্দাজ করতে পারেননি, যে তার পায়ে সাপ কামড় দিয়েছে।
তার এইসব কথা শুনে খালা শাশুড়ির বড় ছেলে খুব দ্রুত তার পায়ের হাঁটুর উপরে কাপড় পেঁচিয়ে গিট দিয়েছিলেন। যেহেতু আমার খালা শাশুড়ি ঝোপের দিক থেকেই এসেছিল আবার পায়ের রক্ত শিরশির করে উপরে উঠছিল এই কথা শুনেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, তার মাকে সাপ কামড় দিয়েছে। আর তৎক্ষণাৎ খালা শাশুড়ির বড় ছেলে, তার অন্য ভাই ও বোনকে ডেকে খুব দ্রুত আমাদের কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তাকে কয়েকটি টেস্ট করিয়ে ডাক্তার নিশ্চিত হয়েছিলেন যে, আমার খালা শাশুড়িকে বিষাক্ত সাপে কামড়ে দিয়েছে।
তবে সেই মুহূর্তে হাসপাতালে ভ্যাকসিনের সমস্যা থাকার কারণে খুব দ্রুত তাকে রংপুর মেডিকেলে রেফার্ড করে দিয়েছিলেন। যখন ডাক্তার রংপুর মেডিকেলে রিফার্ড করে দিয়েছিলেন তখন আমার খালাতো ভাইয়েরাও বুঝেছিল তাদের এই বিপদটা ভয়ানক আকার ধারণ করেছিল। যার কারণে তারা অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে এক ঘন্টার মধ্যেই রংপুর মেডিকেলে গিয়ে আমার খালা শাশুড়িকে ভর্তি করিয়েছিলেন। সেখানে যাওয়ার পরই রংপুর মেডিকেলে থাকা ডাক্তার খুব দ্রুতই আমার খালা শাশুড়ির চিকিৎসা শুরু করেছিলেন।
যার কারনে আমার খালা শাশুড়ি হয়তোবা বিপদের হাত থেকে বেঁচে ফিরেছেন, তবে তার পা অনেকটাই ফুলে গিয়েছিল। এবং পায়ের ব্যথা অসহ্য যন্ত্রণা দিয়েছিল। আমার খালা শাশুড়িকে রংপুর মেডিকেলে দুদিন রাখার পরে তিন দিনের দিন রিলিজ করে দিয়েছিলেন। এখন তিনি মোটামুটি সুস্থ তাই বাড়িতে রয়েছেন। তবে আমার খালা শাশুড়ি যখনই এই সাপে কাটার বর্ণনা করছিলেন, তখন আমি এইসব কথা শুনে সত্যিই খুবই ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। আর এখন রাস্তা চলাচল করার সময় কেন জানি খুবই ভয় করে, হয়তো কখন বা আমার সামনে বিষাক্ত সেই সাপ এসে পড়ে।
আমার খালা শাশুড়িকে যে সাপ কেটেছিল, সেই সাপ খুবই বিষাক্ত ছিল এই কথাটা ডাক্তার নিশ্চিত করেছিলেন, বিভিন্ন টেস্টের মাধ্যমে। আমার খালা শাশুড়ি ভুল করেও জানেন না তার সামনে কি বিপদ অপেক্ষা করছিল। বিপদ যে কখনো বলে কয়ে আসে না, এর চেয়ে চরম সত্যি কথা বোধহয় আর কিছুই নেই। এখনই আমরা সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে রয়েছে অথচ কিছুক্ষণ পরে আমাদের সাথে কি ঘটতে পারে সে বিষয়ে আমাদের কোন নিশ্চয়তা নেই। এই সাপের কামড়ে আমার চাচাতো ভাই রিপন মারা গিয়েছিল।
আর সে বিষয়ে আমি একটি পোস্ট আপনাদের মাঝে উপস্থাপনও করেছিলাম। আর আজ আবার আমার খালা শাশুড়িকে বিষাক্ত সাপে কেটেছে সে বিষয়ে আপনাদের মাঝে পোস্ট উপস্থাপন করছি। আমার আজকের পোস্ট এজন্যই উপস্থাপন করা, আপনারা সবাই যখন যেখানে চলাফেরা করুন না কেন, তখন অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করে চলাফেরা করবেন। আমার খালা শাশুড়ি যদি সাবধানে রাস্তা দেখে চলাফেরা করতো, তাহলে হয়তো এমন বিপদ সামনে নাও আসতে পারতো।
আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
বেশ খারাপ লাগলো আসলেই বর্ষাকালে এমন বিষাক্ত সাপের আনাগোনা বেড়ে যায়। তাই বাড়ির আশেপাশে কিংবা যে কোন জায়গায় এরকম ঝোপঝাড় বাড়তে না দেওয়াই অনেক ভালো। তবে উনার বড় ছেলে বুঝতে পেরেছেন না হয় উনার জন্য অনেক বড় একটি বিপদ অপেক্ষা করছিলেন। তবে সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করি প্রত্যেক মানুষকে যেন এরকম বিপদের হাত থেকে রক্ষ করেন। উনি একজন পরহেজগার মানুষের তাই রক্ষা পেলেন বিপদ থেকে।
আপু, মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে আমার খালা শাশুড়ি এখন ভালো আছে ও সুস্থ আছে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আসলে এটা কিন্তু সত্যি যে, বিপদ কখনো বলে আসেনা। যেকোনো সময় আমাদের যে কোন বিপদ হতে পারে, এটা আমরা কেউ ভুল করেও জানতে পারবো না। তেমনি আপনার খালা শাশুড়ি ও জানতে পারেনি ওনার সাথে কোন বিপদে ঘটতে চলেছে। তিনি তো এটাও বুঝতে পারেনি, উনাকে সাপে কামড় দিয়েছে নাকি পোকা কামড় দিয়েছে। যাই হোক তিনি এখন সুস্থ আছেন এটা জেনেই অনেক ভালো লেগেছে। আমাদের সবার সাবধানে চলা উচিত।
ঠিক বলেছেন আপু, আমার খালা শাশুড়ি ভুল করেও ভাবেননি তার সামনে কত বড় বিপদ অপেক্ষা করছিল। যাহোক এখন তিনি বিপদ থেকে উদ্ধার হয়েছেন এটাই হচ্ছে বড় কথা। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
এখন বর্ষার মৌসুম চারিদিকে পানিতে ভরে উঠছে ।যার কারণে ঝোপঝাড়ে এবং ডোবা নালা থেকে সাপ 🐍 🐍 গুলো সব লোকালয়ে উঁচু জায়গাতে চলে এসেছে। এখন খুবই সাবধানে চলাচল করতে হবে বিশেষ করে রাতের বেলায়।
আপনার আত্মীয় ভালো হয়ে উঠেছে জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো ।আসলে চিকিৎসা এখন খুব দ্রুতই পাওয়া যাচ্ছে যার কারণে সাপের কামড় দেওয়া মানুষের মৃত্যুর হার কমছে।
আমার খালা শাশুড়ির ভাগ্যটা খুবই ভালো, যার কারনে সাপে কামড়ে দেওয়ার পরেও এখন পর্যন্ত সুস্থ রয়েছেন। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
বাপরে বাপ সাপের নাম শুনলেই তো বেশ ভয় লাগে। এখন তো বর্ষাকাল চারদিকে সাপের উপদ্রবও বেরে যাবে। বিশেষ করে গ্রামের দিকের মানুষগুলোর এখন বেশী সচেতন হওয়া প্রয়োজন। তবে জেনেই ভালোই লাগছে যে আপনার আত্নীয় এখন চিকিৎসা নিয়ে দিনে দিনে সেড়ে উঠেছে।
আপু আমিও সাপ দেখলে খুবই ভয় পাই। আর তাই যখন আমার খালা শাশুড়িকে সাপে কেটেছে শুনেছি তখন থেকে যেন ভয়টা আরো অনেক বেড়ে গিয়েছে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ঠিকই বলেছেন বিপদ কখনো বলে কয়ে আসেনা। কখন কার জন্য যে কোন বিপদ এসে হাজির হয় তার কেউ জানে না। আর সাপে কাটার কথা শুনে তো একটু ভয় পেয়েছিলাম। যাই হোক আপনার খালা শাশুড়ি র বড় কোন সমস্যা হয়নি জেনে ভালো লাগলো। খুব দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার কারণে হয়তো অনেক বড় বিপদ থেকে উনি বেচে ফিরেছেন।
আমার খালা শাশুড়িকে খুব দ্রুত হাসপাতালে নেয়ার কারণেই হয়তো বা আজ তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আসলে বিপদ কখনো বলে আসেনা এটা একেবারে বাস্তবিক একটা কথা। আমরা বেশিরভাগ সময় বিপদের মুখোমুখি হই। কিন্তু সেই বিপদ সম্পর্কে তার আগে আমরা কিছুই জানতে পারি না। আর রাস্তাঘাটে চলাফেরা করার সময় একটু সাবধানে চলাফেরা করা উচিত। কারণ রাস্তাঘাটে অনেক ধরনের বিপদ ঘটে। আপনার খালা শাশুড়ির এরকম বিপদের কথা শুনে খুব খারাপ লেগেছে। উনি এখন সুস্থ আছেন এটা যেন ভালো লাগলো। উনি যেন অসম্পূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে ওঠেন এটাই কামনা করি।
আমার খালা শাশুড়ির এরকম বিপদ দেখে আমারও সত্যি খুবই খারাপ লেগেছিল। তবে এখন ভালো আছে এটা জেনে সত্যিই খুব ভালো লাগে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
কার বিপদ কখন আসে কেউ ও বলতে পারে না। আপনার খালা শাশুড়ির উপর অনেক বড় বিপদ গিয়েছে। হয়তোবা তারা খুব তাড়াতাড়ি তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেল চিকিৎসা করালেন এই কারণে বড় বিপদ থেকে বেঁচে গেলেন। তবে অনেকে বিষধর সাপে কাটলে বাড়িতে চিকিৎসা করে এই কারণে অনেকে মারা যায়। আপনার নিজের চাচাতো ভাই রিপন ও সাপের ছোবলে মারা গেল। আপনি ঠিক বলেছেন এখন বর্ষাকাল তাই একটু সাবধানে চলাফেরা করা দরকার। সচেতন মূলক পোস্টটি করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যাঁ ভাই আমার চাচাতো ভাই রিপন বেশ কয়েক বছর আগে সাপের কামড়ে মারা গেছে। তাই আমার খালা শাশুড়ির এরকম পরিস্থিতি দেখে খুবই ভয় পেয়েছিলাম। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।