আমার রাজকন্যার কষ্ট
আমার প্রিয় বাংলা ব্লগ এর ভাই ও বোনেরা, মুসলিম ভাই ও বোনদের জানাই আসসালামু আলাইকুম। সনাতন ধর্মালম্বী ভাই ও বোনদের জানাই আদাব এবং অন্যান্য ধর্ম অবলম্বনকারী ভাই ও বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সবাই বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে এবং আপনাদের সকলের দোয়ায় ভালো আছি, সুস্থ আছি।
আজ আবারো ফিরে আসলাম আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে। আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন, আমার ঘরে একটি রাজপুত্র এবং একটি রাজকন্যা আছে। আর সেই রাজকন্যা গত ১৬ ই ডিসেম্বর কুড়িগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ডিসপ্লেতে অংশগ্রহণ করে, দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়ে বিজয়ী হয়েছিল, সে বিষয় নিয়ে ইতোমধ্যেই আমি আপনাদের মাঝে পোস্ট করেছি। আর সেই ১৬ই ডিসেম্বর রাতে আমার পাশের বাড়িতে শর্ট সার্কিট হয়ে আগুন লেগেছিল। যার কারনে আমার রাজকন্যা তড়িঘড়ি করে ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসার সময়, সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে ভীষণ আঘাত পেয়েছিল।
আর আঘাতের পরিমাণ এতটাই বেশি ছিল যে সাথে সাথেই পা প্রচন্ড ফুলে গিয়েছিল। তাৎক্ষণিকভাবে আমার রাজ কন্যাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর, পরেরদিন তাকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলাম। আর ডাক্তার দেখে বলেছে আমার রাজকন্যার পায়ে ফ্যাকচার হয়ে গিয়েছে। আর এই কথা শুনে তো আমি খুবই কষ্ট পেয়েছিলাম। আমার কেন জানি আমার রাজকন্যার এই কষ্ট কিছুতেই সহ্য হচ্ছিল না। আমার মনে হয় প্রতিটি বাবা-মায়ের কাছে তার সন্তানের আঘাত, নিজের আঘাত বলেই মনে হয়।
তাই যখন আমার রাজকন্যা পায়ের ব্যথায় কাঁদতে থাকে, তখন আমি যেন তাকে সান্তনা দেয়ার ভাষা খুজে পাই না। আর বারবার শুধু মহান আল্লাহ তায়ালাকে ফরিয়াদ জানাই, যেন আমার রাজকন্যার পায়ের ব্যথা সহনশীল হয়, যাতে করে সে সহ্য করতে পারে। তবে সেতো ছোট মানুষ, তাই ব্যথা সহ্য করতে না পেরে সব সময় বাবা বাবা বলে ডাকে। আর সে সময় নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়। যেন এই অসুস্থতার কাছে আমার করার কিছুই নেই। শুধু তার পাশে বসে সান্ত্বনা দেয়া ছাড়া।
এই হচ্ছে আমার রাজকন্যা, যার হাসি খুশি মুখ আমার সর্বদা কাম্য। অথচ আমার এই রাজকন্যা পায়ের ব্যথায় ঠিকঠাক ভাবে হাঁটতে পারছে না। যদিও বা ডাক্তারি চিকিৎসাধীন আছে, ওষুধ খাচ্ছে তবুও সে পায়ে ভর করে হাঁটতে পারছে না। আর এমনটি যে কতদিন চলবে, তাও বলতে পারছি না। তবে ডাক্তার বলেছে অন্ততপক্ষে একমাস বেড রেস্টে থাকতে। আমার চঞ্চল পাখিটি এখন আর চঞ্চলতা প্রকাশ করতে পারছে না। সে আর সারা বাড়ি দাপিয়ে বেড়াতে পারছে না। যা আমার কাছে খুবই বেদনাদায়ক।
ডাক্তার দেখানোর পর আমার রাজকন্যার পায়ের দুটি এক্সরে করতে দিয়েছিল। আর এক্সরেতে পায়ে ফ্যাকচার ধরা পড়েছে। যার কারণে আমার রাজকন্যা ভীষণ ভয় পেয়ে গেছে। সে আমাকে বারবার জিজ্ঞেস করে, বাবা আমি কবে ভালো হব? আমার রাজকন্যার এই প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই। শুধু মহান আল্লাহ তায়ালাকে ডেকে ডেকে বলি, আমার রাজকন্যা যেন খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়।
এখন আমার রাজকন্যার পায়ে এঙ্গক্লেট পড়িয়ে রাখা হয়েছে। সারাদিন ঘরে বসেই থাকে, হাঁটাচলা ফেরা একদম বন্ধ করে রাখা হয়েছে। তাই আমার রাজকন্যাকে দেখলে মনে হয়, এক দুরান্ত পাখিকে খাঁচায় বন্দি করে রাখা হয়েছে। আমার রাজকন্যার এমন কষ্ট, আমার কিছুতেই ভালো লাগছে না। তাই আপনাদের সাথে আমার মনের কষ্টটুকু শেয়ার করে নিলাম। আপনারা সকলে আমার রাজকন্যার জন্য দোয়া করবেন, যাতে সে খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়।
আশা করি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে। ভালো লেগে থাকলে অবশ্যই অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। আজ আর নয়, দেখা হবে আগামীতে নতুন কোন পোস্ট নিয়ে।
আমি মোঃ মাহবুবুল ইসলাম লিমন। বাংলাদেশ আমার জন্মভূমি। বাংলা ভাষা আমার মাতৃভাষা। আমি এই অপরূপ বাংলার কোলে জন্ম নিয়ে নিজেকে অনেক অনেক গর্বিত মনে করি। এই বাংলায় আমার ভালো লাগে, বাংলায় চলতে, বাংলায় বলতে, বাংলায় হাসতে, বাংলায় গাইতে, বাংলায় শুনতে, আরো ভালো লাগে এই অপরুপ বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে দিতে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি যেন আগামীতেও আরো অনেক সুন্দর সুন্দর পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পারি। সবাই পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। এই প্রত্যাশাই সর্বদা।
সন্তানের অসুস্থতা যে বাবা,মায়ের কতোটা যন্ত্রণাদায়ক তা শুধু মাত্র ভুক্তভোগী বাবা,মা জানে।আসলেই এই বয়সে ওর দাপিয়ে বেড়ানোর কথা।পুরা বাড়ি চঞ্চলতায় ভরিয়ে রাখার কথা কিন্তুু তা অসুস্থতার জন্য হচ্ছে না।সৃষ্টি কর্তার উপর ভরসা রাখুন খুব তারাতারি সুস্থ করে তুলবেন।
আপু আমার মেয়ে সারাদিন এত হাসি খুশি থাকে এবং সবাইকে আনন্দে মাতিয়ে রাখে যা আমাদের কাছে খুবই ভালো লাগে। তবে তার পায়ের কারণে এখন সে একদম নিরানন্দ হয়ে গেছে, যা দেখে একদম ভালো লাগে না। তবে আপনাদের দোয়ায় সে এখন একটু সুস্থ হয়েছে।
মাহবুবুল ভাই খুব দুঃখজনক ঘটনা! আসলে শীতের সময়ে খুব বেশি চোট লাগার সম্ভাবনা থাকে। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করবো আপনার মেয়ে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক।
ভেঙে গেছে নাকি চিড় ধরেছে?
দাদা, সৃষ্টিকর্তা যেন আপনার প্রার্থনা কবুল করে নেন। আর আমার মেয়ের পায়ে চিড় ধরেছে দাদা। একদম বেড রেস্টে থাকতে বলেছে ডাক্তার। তবে আগের থেকে একটু সুস্থ হয়েছে। আপনার মন্তব্য পেয়ে খুব ভালো লাগলো দাদা। অনেক অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
তাহলে তো মিয়া ভাই আমাদের রাজকন্যার সত্যিকারের অনেক কষ্ট। আসলে কখন যে কার ভাগ্যে কি ঘটে যায়,সেটা বুঝাটাই বেশ মুশকিল। আপনার রাজকন্যা মানে আমাদের মামুনি কে দেখে কিন্তু সত্যি অনেক কষ্ট হচেছ। আর সন্তান অসুস্থ হলে তো বাবা মায়ের কষ্টের সীমা থাকে না। দোয়া রইল রাজকন্যার জন্য। খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক।
হ্যাঁ আপু, আমার মেয়ে সত্যিই খুব খুব কষ্টের মধ্যে দিয়ে দিন পার করে যাচ্ছে। এখনো সে ভালোভাবে হাঁটা চলাফেরা করতে পারেনা। তবে আপনাদের দোয়ায় আগের থেকে পায়ের ব্যথাটা অনেক কমেছে। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
অনেক খারাপ লাগলো পোস্টটি পড়ে। মেয়ের পায়ে ফ্যাকচার হয়েছে।মেয়ের বিজয় দিবসের পোস্টটি আমার পড়া হয়েছিল।আপনার মেয়ে বিজয়ী হয়েছিন জেনেছিলাম। আসলে বাচ্চাদের কিছু হলে মনে হয় আমাদের হতো এমনটা।বাচ্চাদের কষ্ট আমরা মায়েরা একদমই সহ্য করতে পারিনা।যাই হোক ভাইয়া মেয়েকে সাবধানে কষ্ট করে থাকতে বলেন।ইনশা আল্লাহ সুস্থ হয়ে যাবে। আল্লাহ ভরসা।
ঠিক বলেছেন আপু, সন্তানের কষ্ট কোন বাবা-মায়েরই সহ্য হয় না। তাই আমার মেয়ের কষ্ট আমার কাছেও সহ্য হয় না। যাই হোক আপনাদের দোয়ায় আমার মেয়ে যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে এই প্রত্যাশা করছি।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
এটা জেনে খুবই খারাপ লাগলো শর্ট সার্কিট এর কারণে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে আপনার কন্যা পায়ে আঘাত পেয়েছে ব্যাপারটা আসলেই অনেক বেশি কষ্টের। সন্তানের কিছু হলে মা-বাবা অনেক বেশি কষ্টে থাকে আর বাবারা সবসময়ই মেয়ের অনেক বেশি ভালোবাসে। ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম জেনে ভালো লাগলো অবশেষে ব্যান্ডেজ করা হয়েছে দেখছি আশা করি কিছুদিন রেস্ট করলে সুস্থ হয়ে যাবে। সব সময় তার খেয়াল রাখবেন বলে আশা রাখি আর আপনার মত একজন বাবা যার আছে তার খেয়ালের অভাব হবে না। ধন্যবাদ আমাদের মাঝে পুরো ব্যাপারটা তুলে ধরার জন্য।
ঠিক বলেছেন ভাই, সন্তানের কষ্ট কোন বাবা মায়েরই কাম্য নয়। বর্তমানে আমার মেয়েকে পুরো বেড রেস্টে রেখে দিয়েছি এবং তার খুব ভালোভাবে যত্ন নিচ্ছি। দোয়া করবেন সে যেন খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়।
মিষ্টি মেয়েটার জন্য খুবই খারাপ লাগছে। দোয়া করছি ভাইয়া খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক। সত্যি সন্তান অসুস্থ হলে বাবা-মার একদম ভালো লাগে না।
ঠিক বলেছেন আপু, সন্তান অসুস্থ হলে বাবা-মায়ের একদমই ভালো লাগেনা। এখন আমার মেয়ে একটু সুস্থ হলেও সে হাঁটা চলাফেরা করতে পারেনা। তবে আপনাদের দোয়ায় ইনশাআল্লাহ আমার মেয়ে দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবে।
আসলেই আপনার রাজকন্যা তার পায়ে গুরুতর আঘাত পেয়েছিল। যার কারণে পায়ে ফ্যাকচার হয়েছে। আমি আশা করি আপনার মেয়ে যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে তার স্বাভাবিক জীবন যাপনে ফিরে আসে। আর অবশ্যই আপনারা আপনার রাজকন্যাকে সান্তনা দেবেন যাতে সে মানসিকভাবে ভেঙ্গে না পড়ে। আপনার মেয়ের জন্য অনেক অনেক দোয়া রইলো।
ভাই, আপনাদের দোয়ায় আমার মেয়ে আগের থেকে একটু সুস্থ হয়েছে। তবে ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী তার হাঁটা চলাফেরা বন্ধ রেখেছি। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।