চায়ে অন্ত বিষণ্ণতা // ১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago




চা খেয়ে বেশ লাগছে | w3w

নমস্কার,

উদ্যম নিয়ে শুরু করা কোনো কাজ যদি শেষ মুহূর্তে গিয়ে না হয় তবে খুবই হতাশাগ্রস্ত লাগে। আজ সেরমই একটা অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলাম। হয়তো অতীব ছোটো একটা ঘটনা মনে হতেই পারে। তবে যেটা আগে ফোন জানিয়ে দিলে শরীর খারাপ নিয়ে ১৬ কিলোমিটার যাতায়াত করতে হতো না, তা তো খারাপ লাগারই কথা, তাইনা? কাজের সাথেই জড়িত একটা বিষয়।

গত শুক্রবার থেকেই সর্দি কাশি লেগেই আছে, আজ শরীরটা খারাপ নিয়েই কাজে যাওয়ার ইচ্ছে আমার মোটেই ছিলো না। তবে যেতেই হলো, আমার এক ক্লায়েন্ট হঠাৎ ছোট্ট একটা সমস্যার সম্মুখীন হয়ে যায়, সেটা মেটাতেই। মধ্য কলকাতায় এক নামধারী খদ্দেরের বিল সংক্রান্ত সমস্যা হয়েছিল, তাই আমি না গেলেই নয়। যখন জানতে পারলাম, ভেবেছিলাম অনেক বড়ো কিছু কিন্তু গিয়ে বুঝলাম সেসব কিছুই না। ছোটো কয়েকটা বদল আনলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যেতো।


অফিসের অন্দরে | w3w

শরীরটা ভালো ছিলো না তাই আশীষকে অনুরোধ করা। প্রায় একপ্রকার পাকড়াও করে নিয়ে গিয়েছিলাম। বাইকে করে পুরনো কলকাতার রাস্তা ধরে অভিজাত মধ্য কলকাতায়। ক্লায়েন্টের খদ্দের নামি লোকই বলা চলে, মোহনবাগান ক্লাবের কর্মকর্তা। তিনি আবার সংবাদ প্রতিদিনের কর্ণধার। বাইরে থেকে অন্ধকার বিল্ডিং মনে হলেও, এটাই পশ্চিমবঙ্গের সর্ববৃহৎ জাহাজ কোম্পানির অফিস। উপরতলায় অফিসে ঢুকলে প্রকান্ডতা বোঝা সম্ভব। বিল সংক্রান্ত কাজের জন্যই একটা আলাদা অফিস, যেটা লোকে-লোকারণ্য থাকে সবসময় থাকে। সেসব বিষয়ে বেশি কথা না বলাটাই ভালো। গিয়ে বসে থাকা ছাড়া কিছুই কাজ হলো না। যে কাজের জন্য আসা সেটা তো নাই। পরে যখন সমস্যার কথা শুনলাম, একটু অবাকই হলাম। অফিসের ঠিকানা পরিবর্তন করা নিয়েই এতো হম্বিতম্বি। যেটা ফোনে বলে দিলেই মিটে যেতো, সেটার জন্য এতো হয়রানির প্রয়োজন ছিলো না।


চা খেয়ে বেশ লাগছে | w3w


কাজ না হওয়ায় মনটা যখন খারাপ, বিল্ডিং থেকে বেরিয়ে যখন অরুন টি স্টল দেখলাম, মনটা একটু হলেও ভালো হয়েছিলো। আদ্যোপান্তে স্ন্যাকসের দোকান, চা, সিঙ্গাড়া আর বিভিন্ন ভাজা ভুজির পাওয়া যায়। কাজে বিফল হয়ে যে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম সেটা অরুন টি স্টল দেখে একটু যেন কেটে গেলো 😛। মধ্য কলকাতার অফিস পাড়ায় এলে নিজেকে হারিয়ে ফেলা যায়। চারিদিক বড়ো বড়ো অফিস। তাই আশে পাশে নামি দামী খাবারের ফ্রাঞ্চাইজি, এদেরই মাঝে বেশ মাথা উঁচিয়ে দোকানটা দিব্য চলছে, অরুন টি স্টল।


অরুন টি স্টল | w3w

নানান জায়গার চা খেয়ে বেড়ানো আমার শখ বলা যায়। আর দোকানের নামের সাথে চা জুড়ে আছে, "অরুন টি স্টল"। চা টাই আসল আকর্ষণ। সাধারণ চা নয়, এক্কেবারে কেশর চা। কেশর চা দেখে মনের হতাশা একটু কমলো। চা টা আগে অর্ডার দিলেও, হাতে আগে পেলাম সিঙ্গাড়াটা।


সিঙ্গাড়া | w3w

ছবিতে হয়তো বোঝা যাচ্ছে না, তবে সিঙ্গাড়াটা প্রমাণ সাইজের। সিঙ্গাড়া আমি যেখানে তিন চার কামড় দিয়েই খেয়ে ফেলি, এক্ষেত্রে সাত আট কামড় দিতে হলো। সিঙ্গাড়ার বাইরেটা বেশ মুচমুচে আর খুবই ভালো মানের উপকরন দিয়ে বানানো। ভেতরের পুরটাও বেশ ভালো সবজি ব্যবহার করেছে। সিঙ্গাড়াটা ভালো মানের হলেও, আসল জিনিসটাই এর মধ্যে ছিলো না, স্বাদ। স্বাদটা আমার পছন্দ হয়নি। যেন মনে হলো, সৌন্দর্য্য নিয়েই বেশি পরিশ্রম করেছে তাই স্বাদের কথাটা খেয়াল রাখেনি।

ইচ্ছে ছিলো চা আর সিঙ্গাড়া একসাথে খাবার, ভাগ্যে নেই যখন। সিঙ্গাড়া শেষ করার প্রায় মিনিট দুয়েক পর চা পেলাম। আমাদের আগে বেশ কয়েকজনের চা প্রাপ্তি হলো তারপরেই আমরা চায়ের সুযোগ পেলাম।


কেশর চা | w3w

আহা! চায়ে প্রথম চুমুক দিয়েই বুঝলাম অপেক্ষা সার্থক। চায়ের উপরে ছোটো ছোটো কেশর দেওয়া। রং এর স্বাদ দুটোই অতুলনীয়। ছোটো এলাচ দিয়ে স্বাদ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।

সন্ধ্যের শুরুটা হতাশা দিয়ে শুরু হলেও, শেষটা চা সিঙ্গাড়া দিয়ে হতাশা অনেকটাই কাটানো গেলো।



Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Sort:  
 3 years ago (edited)

আমি যেখানে তিন চার কামড় দিয়েই খেয়ে ফেলি

মানুষ নাকি রাক্ষস তা মনে হচ্ছে চ্যাক করতে হবে। তিন চার কামড়েই সাবাড়। 🤪
দেখতে বেশি ভালো হলে খেতে মজা কম হয়। এইটা কেনো যেনো বেশি প্রমাণিত হয়।

 3 years ago 

সিঙ্গাড়া তো ছোটো ছোটো অল্প কামড়েই শেষ 😆। রাক্ষস না হলেও শেষ 😛। সত্যিই, দেখতেই ভালো, খেতে অতোটা নয়।

 3 years ago 

আপনার চা এর বর্ণনা শুনে আমারতো খেতে ইচ্ছে করছে। যদিও আমি এইমাত্র আমার চা শেষ করলাম। মাটির ভাঁড়ে চা আমার কাছে সবসময় খুব ভালো লাগে। অন্য রকম একটা স্বাদ থাকে এই চাতে। সিঙ্গারার থেকে সিঙ্গারা এর পিছনের লোকেরা হাসিটা আমার কাছে বেশি প্রাণবন্ত লেগেছে। প্রথমে আপনার দিনটি খারাপ গেলও শেষে পরে মনে হলো আপনার সব ক্লান্তি দূর হয়ে গেছে। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 3 years ago 

হাঃ হাঃ! ইচ্ছে করলেই আবার এক কাপ চা খেয়েই নিন দিদি।

মাটির ভাড়ে চায়ের স্বাদ একটু আলাদা লাগেই। স্বাদ বাড়ে কিনা জানিনা, তবে ব্যাপারটা পরিপাটি লাগে আমার।

লোকটার হাসিটা আমারও বেশ ভালো লেগেছে। শরীর খারাপ নিয়ে বাড়িতে আটকে ছিলাম, বাইরে বেরিয়ে একটু চাঙ্গা হলাম। ধন্যবাদ দিদি আমার ব্লগটি পড়ার জন্য।

 3 years ago 

প্রথম কলকাতায় গিয়ে মাটির ভাঁড়ে চা খেয়েছিলাম। তখন একটু কেমন লেগেছিল।তারপর থেকে এখন যেখানে মাটির ভারে চা দেখি সাথে সাথে খেয়ে নেই। এত মজা লাগে।

 3 years ago 

এক্কেবারে কেশর চা।

চা টা দেখে তো বেশ ভালো মনে হচ্ছে। তবে কীনা নামটা প্রথমবার শুনলাম।

মোহনবাগান কিন্তু আমার পছন্দের ক্লাব। কলকাতা লীগে মোহনবাগানের খেলাগুলো নিয়মিত দেখতাম বলা যায়।

 3 years ago 

কেশর চা তো বেশ নামকরা। কিছুই না চায়ের উপরে ছোটো ছোটো কেশরের টুকরো দেওয়া থাকে। সুগন্ধি হয়।

মোহনবাগান আর নেই, এখন এটিকে মোহনবাগান।

 3 years ago 

তবে ISL এ আমি কিন্তু চেন্নাইন সিটি এফসির সার্পোটার😄😄।

 3 years ago 

প্রথম দুটো সিজন বাদ দিয়ে ISL দেখাই হয়নি। 😆

 3 years ago 

2014,16 তে এটিকে
2015,17 তে সিএসএফসি চ‍্যাম্পিয়ন হয়েছিল।

 3 years ago 

বাহ! বেশ ভালো
আপনার পোস্ট পড়তে সত্যি খুব ভালো লাগে দাদা। আর আপনার আজকের পোস্ট থেকে বুঝতে পারলাম আপনি একজন চা প্রিয় লোক
আমার আবার চা তেমন একটা খাওয়া না

 3 years ago 

কাজ কর্মে বেরোলে ওটাই একটা সম্বল। চা খেতেও ভালো লাগে 😛

 3 years ago 

ভাইয়া খুবই বেদনাদায়ক মুহূর্ত ছিল প্রথমে যদিও, কিন্তু অরুন টি স্টল এর চা এর বর্ণনা শুনে তো আমারি খেতে মন চাচ্ছে এখন। আমি মারাত্মক চা পাগল। সেই সাথে হয় যদি অমন মজাদার সিঙ্গাড়া, জাস্ট ওয়াও!

 3 years ago 

কোনো কাজ না হলে একটু হতাশ লাগেই।

চা-সিঙ্গাড়া সেরা কম্বো, নির্দ্বিধায় খাওয়া যায়। 🤗

আপনার পোস্ট আমি সব সময় পরার চেষ্টা করি। আপনি খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেন সব কিছু। এবং খুবই গুছিয়ে লিখেন।চা কার না ভালো লাগে আমারও খুব প্রিয়। তবে আপনার পোস্ট দেখে বোঝা যাচ্ছে চা খুব বেশি পছন্দ করেন আপনি।চা প্রিয় মানুষ আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 3 years ago 

বাইরে বেরোলে ওই একটা জিনিসই থাকে। আর দোকানটা বেশ নাম করা, তাই সুযোগ যখন পেলাম। হাতছাড়া করিনি।

দাদা মনে হচ্ছে চা খেতে খুব পছন্দ করেন। যারা আসলে চা প্রেমি তারা ভালো মানের চা পেলে সবকিছু ভুলে যেতে পারে। আমি অবশ্য চা খুব বেশি খাই না।

 3 years ago 

তা বলা যায়, আমি আসলে সব জায়গাতেই চা খেয়ে বেড়াই। চায়ের সাথে টা হয়, তাই চায়ে অনীহা নেই। 😆

 3 years ago 

মাঝে মাঝে এই রকম ছোট ছোট সমস্যাগুলো অনেক বড় হয়ে ধরা দেয়।তাছাড়া কেশর দেওয়া চা ও বড়ো সাইজের সিঙ্গারাটি বেশ ছিল দাদা।সিঙ্গারা খেতে সেই মজার লাগে।ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

তা ঠিক। সবকিছুই যে প্ল্যান মাফিক হবে তা তো হয় না। সাইজ টাই বড়ো, খেতে খুব একটা ভালো ছিলো না।

 3 years ago 

দাদা কথায় আছে শেষ ভালো যার সব ভালো তার, আপনার সারাদিন খারাপ গেলেও শেষ সময়টা ভালো গিয়েছে সেটা হচ্ছে বড় কথা, তবে দাদা আপনার চা এর প্রতি আমার খুব লোভ হয়েছে, আমি চা খুব পছন্দ করি। আপনার মুখে চা এর এতো কথা শুনে আমার ও খেতে অনেক বেশি ইচ্ছে করছে।

 3 years ago 

চা খেয়ে প্রাণ ফিরলো আরকি 😆। ইচ্ছে করলেই খেয়ে নিতে হবে দিদি। ইচ্ছেকে প্রশমিত করা ঠিক না।

দাদা আপনি সামগ্রিকভাবে আপনার সারাদিনের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেছেন খুবই ভাল লেগেছে আপনার সহানুভূতি টি। দাদা সবাই আপনার লেখার প্রশংসা করছে তবে আমি আপনার হাসিটা প্রশংসা করি। দাদা একদম সত্যি বলছি আপনার হাসিটা অত্যন্ত সুন্দর লেগেছে আমাকে।

 3 years ago 

ধন্যবাদ দাদা 🤗

Coin Marketplace

STEEM 0.22
TRX 0.26
JST 0.040
BTC 98576.47
ETH 3487.76
USDT 1.00
SBD 3.25