কিছু স্মৃতি // ১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

নমস্কার,

বেশ কয়েক মাস হলো ট্রেনে চড়িনা। যদিও না চড়ার পেছনে দুটো কারন আছে মূল কারণ অবশ্যই করোনা। দ্বিতীয় কারণ, কলকাতার বাইরে বেশি কাজকর্ম না থাকা। আগে নানা কাজে কলকাতার বাইরে যাওয়া লেগেই থাকতো, এখন সেখানে বাইরে যেতে হয়না বললেই চলে। আর কলকাতার বাইরে কোনো কাজে যাওয়া মানেই লোকাল ট্রেন একমাত্র ভরসা। আমি ব্যক্তিগতভাবে কলকাতার আশেপাশে যাওয়ার জন্য লোকাল ট্রেনকেই বেশি পছন্দ করি, বেশ আরামে যাওয়া যায়।

সব যে ভালো তা তো কখন হয়না। লোকাল ট্রেনের ক্ষেত্রেও মন্দ ব্যাপার আছে। কলকাতার লোকাল ট্রেন গুলোর ক্ষেত্রে সে মন্দ ব্যাপারটি হলো মাত্রাতিরিক্ত ভীড়! আসলে কলকাতার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের মানুষ গুলোর যাতায়াতের জন্য মূল ভরসা লোকাল ট্রেন, তাই অফিসের সময়টায় হয় উপচে পরা ভীর। অফিসের সময়টায় কেউ ট্রেনে যাতায়াত করতে চাইলে তাকে অবশ্যই ধস্তাধস্তিতে পটু হতে হয়। ধস্তাধস্তিতে পটু না হলেও অসুবিধা নেই কিছুদিন যাতায়াত করলেও অন্য সহযাত্রীরাই পটু করিয়ে দেবে।


ট্রেনে চড়বো! আহা! আমি বেশ খুশি ছিলাম অনেকদিন পরে ট্রেনের হাওয়া গায়ে লাগবো তবে মনের কোনায় অল্প ভয় ছিলো। হয়তো ট্রেনে অতিরিক্ত ভিড় থাকবে।

কিন্তু ভীড় মোটেই ছিলোনা। বেলার দিকে হওয়ায় কারণেই হওয়ায়। উঠেই বসবার জায়গা পেলাম, জানলার ধার। 😌

মাত্র এক ঘন্টার দূরত্ব। জানালার ধারে বসে কোথা দিয়ে ১ ঘন্টা কেটে গেলো বুঝতে পারলাম না। রাস্তা জুড়ে হাওয়া খেয়ে মনটা বেশ ফুরফুরে ছিলো। সেই ভালোলাগার রেশেই আমার কাজগুলো মসৃণ ভাবে মিটলো।

কাজকর্ম মিটিয়ে কলকাতা ফেরার জন্য স্টেশনে ফিরে এলাম। একটা দোকানের সামনে থমকে গেলাম, "দাদা ভাই" ঘুগনির দোকান। কিছু স্মৃতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো ভেবেছিলাম হয়তো বন্ধ থাকবে, আমার কাজ শেষ করতে দুপুর হয়ে গিয়েছিলো তাই দোকান খুলে দিয়েছে।

"দাদা ভাই" -এর ঘুগনি একসময় আমার রোজনামচা ছিলো। নবনিতা দেশে থাকাকালীন আমরা স্টেশনের উপর দিয়ে যাতায়াত করলে দাদা ভাইয়ের ঘুগনি অবশ্যই খেতাম। ইচ্ছে ছিলো দাঁড়িয়ে কিছুটা সময় কাটিয়ে ঘুগনি খেয়ে যাই। সবে ছবি তুলেছি সেই মাত্র ট্রেনের মাইকে ঘোষণা, শিয়ালদহ যাওয়ার গাড়ি দুই নম্বর প্লাটফর্মে আসছে। ঘোষণা শুনতেই হুড়মুড় করে ফুট ব্রিজ পেরিয়ে ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে চলে এলাম।

ভাগ্যে ছিলো না হয়তো কিংবা হতে পারে ঈশ্বর চাননি আমি নবনিতাকে ছাড়াই খাই! যাক এ যাত্রায় তো জুটলো না তবে নবনিতা দেশে ফিরলে অবশ্যই আসবো। পুরোনো স্মৃতিগুলোকে কিছুটা তাজা করতে...





Support @heroism by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Sort:  
 2 years ago 

উঠেই বসবার জায়গা পেলাম, জানলার ধার।

বাহ দারুণ তো। লোকাল ট্রেনে জানালার ধারে সিট পাওয়া লটারি পাওয়ার মতো ব‍্যাপার। কলেজ চলাকালীন আমি নিজেও নিয়মিত লোকাল ট্রেনে উঠতাম। কিন্তু এখন আর উঠা হয়ে উঠে না। বাংলাদেশের লোকাল ট্রেন গুলোর সমস্যা দুইটা প্রথমত দেরী করে দ্বিতীয়ত অনেক ভীড় হয়।

 2 years ago (edited)

লটারিই! আমিও আগে কোনোদিন পাই নি, সেদিনই প্রথম পেলাম 😆। কলকাতায় লোকাল ট্রেনে করেই বেশি তাড়াতাড়ি যাওয়া যায়।

 2 years ago 

🙂🙂👌

 2 years ago 

ভারতীয় ট্রেনে চড়ার ইচ্ছা আমার বহুদিনের। বিশেষ করে রাজধানী এক্সপ্রেস এর কথা আমি বহু শুনেছি। ইচ্ছা আছে কোন একদিন হয়তো দীর্ঘ ভ্রমণে যাব এই ট্রেনে করে। আর ফেসবুক খুললেই দেখি ভারতীয় স্ট্রীট ফুড এর নানা আইটেম। ঘুগনি আমারও ভীষণ পছন্দের। আপনার জন্য সৌভাগ্যই বলতে হবে যে লোকাল ট্রেনে এত সুন্দর আরামে ভ্রমণ করতে পারলেন।

 2 years ago 

ভারতে ট্রেনে করেই সারাদেশ ঘুরে ফেলা যায়, রেলওয়ে ব্যবস্থা এতোটাই ভালো। ঘুঘনি আমারও বেশ পছন্দের।

সৌভাগ্য তো বটেই! ট্রেনে সিট পাওয়া বিশাল ব্যাপার 😄।

 2 years ago 

সত্যজিৎ রায় আর শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখায় কতবার যে এই শিয়ালদহ স্টেশনের নাম পড়েছি, আপনার লেখায়ও সেটা পড়ে কিছুটা নস্টালজিক হয়ে পড়লাম। জানি সেই ছোয়া পাব না যেটা তাদের লিখায় ছিল, কিন্তু ঘুরে দেখতে চাই একবার।

যাই হোক, আপনার আরো অনেক বার কলকাতার বাইরে যাওয়া হোক আর দাদা ভাই এর ঘুগনিও খাওয়া হোক, সেই কামনা করি।

 2 years ago 

ব্যস্ত মানুষের আনাগোনা সারাদিন। ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে দেখা যায়, শিয়ালদহর ব্যস্ততা।

আশা সেটাই। কাজকর্মে হলেও মাঝে মধ্যে ভিন্ন জায়গা থেকে ঘুরে আসতে ভালোই লাগে।

 2 years ago 

দাদা,কিছু পুরনো স্মৃতি মনের মধ্যে গেঁথে থাকে যা সহজে ভুলা যায় না। দাদা, লোকাল ট্রেনে চড়ার চরম অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে 😢 লোকাল ট্রেনের চড়ার মানে তিক্ত অভিজ্ঞতা নিজের মধ্যে গ্রহণ করা।লোকাল ট্রেনে প্রচন্ড রকমের ভিড় থাকে তবে এখন ট্রেনে তেমন ভিড় থাকে না। দাদা,আমার ট্রেনে ওঠার ব্যাপারটা খুবই ভয় লাগে কারণ ট্রেনে উঠতে হলে অনেকটাই যুদ্ধই করতে হয়। কারণ যারা সব সময় ট্রেনে যাতায়াত করে তাদের ট্রেনে ওঠার অভিজ্ঞতা থাকে আর হঠাৎ করে যদি ট্রেনে উঠতে হয় তাহলে খুব বিরক্ত তিক্ততার শিকার হতে হয়।দাদা,আপনার পুরো পোস্টটা পড়ে আমার খুব ভালো লেগেছে।আপনি লোকাল ট্রেনে বেশ আরম করে আপনার গন্তব্যে পৌঁছেছেন।কিন্তু একটা লেখা পরে খুবই খারাপ লেগেছে।

ইচ্ছে ছিলো দাঁড়িয়ে কিছুটা সময় কাটিয়ে ঘুগনি খেয়ে যাই।

এই লেখাটি পড়ে কারণ প্লাটফর্মে ট্রেন এসে যাওয়ার দাঁড়িয়ে থেকে খেতেও পারে নি।যাইহোক দাদা আপনার পোস্টটি সত্যিই খুব ভালো লেগেছে আমার।ধন্যবাদ

 2 years ago 

ট্রেনে তিক্ত অভিজ্ঞতা গুলো আমারও কম হয়নি! তবে ভালো অভিজ্ঞতা গুলোর পাশে সেগুলো ফিকে হয়ে যায়।

ঘুগনি না খেয়েই ভালো হয়েছে। উনি ফিরলে একসাথে যাবো।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 58659.71
ETH 3164.52
USDT 1.00
SBD 2.43