পুজো পরিক্রমা ২০২১ : অষ্টমীর ফটোগ্রাফি // ১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে
নমস্কার,
অষ্টমীতে ইচ্ছে ছিলো দক্ষিণ কলকাতা ঘোরার। সেইমতো বন্ধুরা বেড়িয়েছি। অল্প দূর যেতেই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামলো অগত্যা একটা ফুটপাতের দোকানে নীচে দাঁড়ানো হলো। কিছু বাদে বৃষ্টি থামলো বটে তবে আকাশের পরিস্থিতি দেখে কারো দক্ষিণ কলকাতা যাবার সাহস হলো না। সল্টলেক আর মধ্য কলকাতার পুজো দেখাই স্থির হলো। শুরু করা হলো সল্টলেকের এফ-ডি ব্লক সার্বজনীন পুজো আর শেষ করা হলো চোরবাগান সার্বজনীন দিয়ে।
সল্টলেকের পুজো মানেই এফ-ডি ব্লকের পুজো। ৩৭ বছরে পা দেওয়া এই পুজোর বয়স কম হলেও সল্টলেকের অন্যতম পুজো কমিটি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, দূর দূরান্ত থেকে মানুষ এখানে আসেন। এই বছরে এফ-ডি ব্লকের প্যান্ডেল ছিলো ভিন্ন। ব্রিটিশ কেল্লার আদলে পুজোর প্যান্ডেল তৈরী হলেও মায়ের প্রতিমা ছিলো অদ্যাপীঠের আদলে। কোভিডবিধি মেনেই প্যান্ডেল ছিলো বেশ খোলামেলা।
বেলিয়াঘাটা ৩৩ নং এর পুজো এবারে ২১ তম বছরে পদার্পণ করলো, পুজোর এবারের থিম ছিলো মুক্তির অলিন্দে। পুজোর থিমের পেছনের চিন্তা করোনা প্যান্ডেমিক পরিস্থিতিতে ভেঙে পড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আর্থিক ব্যবস্থার উপর। শিক্ষার জন্য অতিরিক্ত প্রযুক্তি নির্ভরতা আমাদের বইয়ের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করছে, সাথে করোনায় আর্থিক ভাবে দেউলিয়া করে দিয়েছে সাধারণ মানুষকে। পাশাপাশি পুজা কমিটি প্রিন্ট মিডিয়া ও ডিজিটাল মিডিয়ার কথা তুলে ধরেছে। এদের একঘেয়েমি থেকে মানুষ হাঁফ ছেড়ে বাঁচতে ঘরবন্দি থেকে বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে। পুরো সভ্যতা যেন মুক্তির অলিন্দে দাঁড়িয়ে।
লালাবাগান সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির থিম বিপন্ন প্রাণবায়ু। থিমের পেছনের ভাবনা বর্তমান সময়ে ইলেকট্রনিক্সের অতিরিক্ত ব্যবহার, এতেই বিপর্যস্ত আমাদের দেহের অঙ্গ। উদ্যোক্তারা বোঝাতে চেয়েছেন, ইলেকট্রনিক্সের থেকে আমাদের অঙ্গ বেশি জরুরি। ইলেকট্রনিক্স একটি অস্থায়ী বস্তু সেখানে আমাদের অঙ্গ স্থায়ী। আমাদের অঙ্গের উপরেই বেশি খেয়াল রাখতে হবে, ইলেকট্রনিক্সের উপরে নয়। মাকে এখানে আমাদের প্রাণবায়ু জোগাতে দেখানো হয়েছে।
মা দুর্গাকে বিসর্জন দেবার ঠিক আগে মায়ের মুখ এবং পা একটি আয়নায় দেখা হয়, যাহাকে দর্পন বলা হয়। আর এই দর্পনের মধ্য দিয়েই দুঃখ, কষ্ট, আশা উচ্চাশা দেখা হয়। বলা হয়, এই দর্পন মানুষের জীবনের প্রতিফলন। লালাবাগান নবাঙ্কুর সংঘের এবারের পুজোর থিম ছিলো এই প্রতিফলনকে ঘিরেই। ৬২ তম বর্ষে পদার্পণ করা এই পুজোর ভাবনা দর্পন। মণ্ডপে ব্যবহৃত অসংখ্য আয়নার মধ্য দিয়েই মায়ের প্রতিফলন পরিষ্কার।
কলকাতার ঐতিহ্যবাহী পুজোর মধ্যে অন্যতম হলো কাশী বোস লেন সার্বজনীন। ৮৪ তম বর্ষে পদার্পণ করা এই ঐতিহ্যশালী পুজোর এবারের থিম অপূর্ণা। কোভিড আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে অগণিত মানুষকে, সেইসব মানুষ আমাদেরকে ছেড়ে চলে গেলেও তাদের ইচ্ছা আকাঙ্খা গুলো রয়ে গেছে অপূর্ণ। পুজো কমিটি সেই মানুষ গুলোর অপূর্ন ইচ্ছাকেই তুলে ধরবার চেষ্টা করেছে। অরেকদিকে মায়ের মণ্ডপ তৈরী হয়েছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রেখেই। মা যেন অপূর্ণাকে এই ধরিত্রিকে তাঁর ছোঁয়ায় সম্পূর্ণা করেছেন।
আতঙ্ক, আশঙ্কা ও নিরাপত্তাহীন জীবনের ভ্রূকুটি সর্বত্র। অন্ধকারময় সমাজ ব্যবস্থার মধ্যেও জীবন যাপনের প্রচেষ্টায় মানব জীবনের লড়াই চলছে প্রতিনিয়তই। জীবন একটু আলোর দিশা পায় তো পরক্ষনেই আবার অজানা ভয়ে গুটিয়ে আসে, এমত অবস্থায় মানুষ আঁকড়ে ধরতে চায় ভরসার, নিরাপত্তার হাত। কিন্তু চাইলেই তো এমন অভিভাবকের খোঁজ পাওয়া যায় না! নিরাপত্তা, ভরসা ও বিশ্বাসের আবেষ্টনে প্রাচীর ঘেরা মণ্ডপে মা দুর্গা মানবজীবনের ছত্রছায়া। ৮৬ তম বর্ষে চোরবাগান সার্বজনীনের পুজোয় মা আমাদের আশ্রয় দাত্রী।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
শুভ নবমী পূজার শুভেচ্ছা দাদা ।প্রত্যেকটি ছবি অসাধারণ আর দেবী মাকেও খুব সুন্দর লাগছে।আপনার মাধ্যমে কলকাতার প্যান্ডেল ,দেবীমাকে দর্শন করতে পারছি এবং থিম সম্পর্কে ও জানতে পারছি।ধন্যবাদ দাদা।
ধন্যবাদ রিপা! 🤗
আপনার শুভ দিনের শুভেচ্ছা রইলো ভাইয়া, আমার তরফ থেকে ভালোবাসা নিবেন।
আপনি দেখি খুব ভালোই ঘুরোঘুরি করছেন। আপনার ছবি দেখে দেখে অনেক কিছুই দেখার সুযোগ পাচ্ছি।
ধন্যবাদ নুসূরা। অনেকেই বাড়ি থেকে বেরোতে পারে না তাদেরকেই দেখার সুযোগ করে 🤗।
আপনার ছবি তুলা আমার কাছে বেশি ভালো লেগেছে। কারণ আপনার ছবিগুলোতে মূল বিষয়টা ছাড়া অন্য কিছুই দেখা যাচ্ছেনা। এক কথায় বললে একদম পরিষ্কার ছবি। ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ ভাই। 🤗
যতই দেখছি চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে অনেক কিছু মিস করেছি। কলকাতাতে না যেয়ে তবে করোনা এখনো যায় নি সেই দিক থেকে না যাওয়া ঠিক আছে।তুমি কলকাতা থাকো। ঘরের কাছে বড় বড় পূজা না যেয়ে ঘরে বসে থাকা সম্ভব নয়। আগামী বছর যাবো কলকাতা। সত্যিই নিখুঁত ভাবে মা দুর্গা ও প্যান্ডেল গুলিকে ক্যামেরা বন্দি করেছো। দেখে মনে ভরে গেলো। শুভেচ্ছা রইলো দাদা
একদিন আসতেই পারতে। তবে বারাসাত আগে এলে ভালো করে ঘুরতে পারতে।