ক্ষীরাচোরা গোপীনাথ মন্দির

in আমার বাংলা ব্লগ21 hours ago

নমস্কার বন্ধুরা,

বালেশ্বর শহর থেকে মাত্র ৮ কিমি দূরে রেমুনা জনপদ। সেখানে রয়েছে ক্ষীরাচোরা গোপীনাথ মন্দির, যা দেখার জন্য যে দূর দূর থেকেও ভক্তরা আসেন। দূর হলেও কেন এতো ভক্তদের ভিড় তা মন্দিরে প্রবেশ করা মাত্রই বুঝতে পারলাম। মন্দির চত্বরে প্রবেশ করার মাত্র উড়িয়া ভাষার কথাবার্তা যেমন ভেসে আসছিল তেমনি বাংলা ভাষারও বুলি কানে আসছিলো। মন্দির ঢুকতেই বিশেষ দুটো বিষয় পরিলক্ষিত হলো এক, মূল মন্দির এবং আরেকটা হলো নাট মন্দির। ভারতীয় সংস্কৃতির মন্দির স্থাপত্য কলার যে প্রকৃষ্ট উদাহরণ সেটা বর্তমান সময়েও উড়িষ্যার বিভিন্ন মন্দিরে পরিলক্ষিত হয় সেটা ক্ষীরাচোরা গোপীনাথ মন্দিরেও পেলাম। বাইরের দেশ থেকে আগত লুটেরা যেহেতু উড়িষ্যায় তেমন প্রবেশ করতে পারেনি তাই মন্দির স্থাপত্য কলার দিক থেকে উড়িষ্যা তাদের পুরনো সংস্কৃতি এখনো ধরে রাখতে পেরেছে।

1000017369.jpg

ক্ষীরাচোরা গোপীনাথ মন্দির

ক্ষীরাচোরা গোপীনাথ মন্দিরটি ৮০০ বছর আগে গোপীনাথ পট্টনায়েক নামে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের এক ভক্ত দ্বারা নির্মিত হয়। সেই ইতিহাস মাথায় রেখে যখন মন্দিরে প্রবেশ করলাম তখন সেখানের স্থাপত্য কলা দেখে শুধুই অবাক হতে হলো। এতদিনের পুরোনো মন্দিরে খোদাই কৃত স্থাপত্য কলা এখনো বর্তমান রয়েছে সেটা সত্যিই অপূর্ব লাগলো। মন্দিরের ভেতরে ছবি তোলা নিষিদ্ধ ছিল তাই বাইরে থেকেই ছবি তুললাম। ঈশ্বরের সামনে ধুপ এবং প্রদীপ জ্বালিয়ে মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ করলাম। মন্দিরের গাত্রে রামায়ণ মহাভারতের বিভিন্ন পর্ব ছবি রূপে আঁকা রয়েছে। তবে মন্দিরের গর্ভ গৃহ তখন বন্ধ। যখন পৌঁছেছি তখন শ্রীকৃষ্ণ শায়িত অবস্থায় ছিলেন তাই গর্ভগৃহ বন্ধ ছিলো। কিছুক্ষণ মন্দিরের ভিতরে বসে থাকার পরে শ্রী কৃষ্ণের দুপুরের ভোগের ব্যবস্থা শুরু হলো। অপূর্ব ভগবান দর্শন করলাম। যেটা আরো মাধুরী নিয়ে এসেছে তা হলো মন্দিরের প্রত্যেকটা অংশে ভগবান শ্রীরাম এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বিভিন্ন লীলা ছবি আকারে। মন্দিরের ভেতরে অদ্ভুত ধরনের শীতল। মন্দিরের ভেতরে ছবি তোলা নিষেধ তাই সেই কাজে বিরত থাকলাম।

1000017370.jpg

মূল মন্দির

1000017375.jpg

মন্দিরে কাজ চলছে

মূল মন্দিরের ঠিক উল্টো দিকেই রয়েছে নাটমন্দির। যেখানে শ্রীকৃষ্ণ সংকীর্তন হয়। মন্দির থেকে বেরিয়ে নাট মন্দিরের এগিয়ে গেলাম। সেখানে বিভিন্ন লীলা ছবি হিসেবে আঁকা ছিলো। কিছু ছবি মুঠোফোনে ধারণ করে নিলাম। তারপর মন্দিরের পেছন দিকটায় চলে গেলাম। বর্তমানে মন্দির সংস্কারের কাজ চলছে।

1000017376.jpg

নাটমন্দির

1000017373.jpg

ভগবান শ্রীরামের বিবাহ

1000017374.jpg

শ্রী চৈতন্য লীলা

মন্দিরের পাশে পেলাম ক্ষীরাচোরা গোপীনাথ মন্দিরের ক্ষীর। যেটা ভগবান শ্রীকৃষ্ণ খুব পছন্দের জিনিসই ছিল ক্ষীর। সেখান থেকে কিনে নিলাম এক ভাঁড়। আহা কি সেই স্বাদ।

1000017371.jpg

ক্ষীর




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness

Or

Set @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 15 hours ago 

ক্ষীরাচোরা গোপীনাথ মন্দিরটি ৮০০ বছর এর পুরনো মন্দির! তার মানে তো অনেক ইতিহাস জড়িয়ে আছে এর সাথে। আসলে দাদা ভারতবর্ষের অনেক বড় বড় মন্দিরগুলোতে ফটো তুলতে দেয় না। এজন্য কেউ ঘুরতে গেলে বাড়ি এসে সেগুলো দেখাতেও পারে না। যদিও তুমি ভেতরের ফটোগ্রাফি দেখাতে পারোনি, তবে মোটামুটি যে বর্ণনা দিয়েছ তাতে বুঝতে পেরেছি। তাছাড়া বাইরে থেকে তোলা বেশ কিছু ফটোগ্রাফি দেখলাম, যেটা দেখেও মন ভরে গেল।

 6 hours ago 

ক্ষীরাচোরা গোপীনাথ মন্দির আসলেই খুব সুন্দর। মূল মন্দিরটা যেমন সুন্দর, তেমনি নাট মন্দিরটাও খুব সুন্দর। মূল মন্দিরের ভিতরে গিয়ে যদি ফটোগ্রাফি করতে পারতেন, তাহলে আরও অনেক কিছু দেখার সুযোগ পেতাম। যাইহোক সেখান থেকে কিনে বেশ মজা করেই ক্ষীর খেয়েছেন তাহলে 😂। সবমিলিয়ে পোস্টটি দারুণ হয়েছে দাদা। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.027
BTC 60611.05
ETH 2703.38
USDT 1.00
SBD 2.45