মাঝ রাতের শো: পর্ব ৬
নমস্কার বন্ধুরা,
মাঝ রাতের শো: পর্ব ৫ এর পর....
অফিস কলিগদের শুভেচ্ছা বার্তা নিয়ে সুদীপ্তা সোজা ঢুকে গেল অভীকের কেবিনে। সেখানে ঢুকেই নিজের শিলিগুড়িতে রেডিও সঞ্চালক হওয়ার সিদ্ধান্ত অভীককে জানিয়ে দিলো। অভীক সুদীপ্তাকে অনেক সংবর্ধনা ও শুভেচ্ছবার্তা জানিয়ে বললো, বাড়ি গিয়ে তাড়াতাড়ি ব্যাগপত্র গুছিয়ে নাও। পরশু দিনই তুমি বেড়িয়ে পড়ো। আমরা চটজলদি তোমার জন্য পরশু সকালের বিমানের টিকিট কাটছি আর হোটেল রুম বুক করছি। আজ ও কাল দুটো দিন কাজ করার দরকার নেই। দুটো দিন অফ ডে নিয়ে নাও। দুদিন বাড়িতে কাটাও। বাড়িতে সময় দাও। মা বাবাকে সময় দাও। বন্ধুদের সাথে আড্ডা নাও।
অভীকের কথা শুনে চার বছরের সঙ্গী ডেস্ক এবং অফিস কলিগদের বিদায় জানিয়ে টেবিলের ছোট্ট গাছটা সাথে নিয়ে সুদীপ্তা বেরিয়ে পড়ল। গন্তব্য শিলিগুড়ি।
তিন দিন পর....
খুব সকালবেলায় বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে সুদীপ্তার শীত লেগে গেলো। যদিও এর আগে সে কয়েক বার শিলিগুড়ি হয়েই দার্জিলিং ঘুরতে গেছে তবে শিলিগুড়িতে এতোটা শীত অনুভব করেনি। কলকাতার গরম গায়ে লাগিয়ে শিলিগুড়ির হালকা শীত অন্যরকমের লাগছিলো সুদীপ্তার। বিমানবন্দরের গেট থেকে বেরিয়ে আসতেই সুদীপ্তা দেখতে পেলো তার নাম লেখা প্লাকার্ড নিয়ে হাতে এক মাঝবয়সী ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে আছেন। ভদ্রলোকের কাছে যেতেই উনি নিজের পরিচয় দিয়ে বললেন ওনাকে অফিস থেকে পাঠিয়েছে, সুদীপ্তাকে হোটেল নিয়ে যেতে।
গাড়ি চেপে সুদীপ্তা সোজা চলে গেল হোটেলে। গাড়িতে চড়ে সুদীপ্তা সৌজন্যতার খাতিরে চালক ভদ্রলোকের নাম জিজ্ঞেস করে ফেললো।
"দিদিমণি আমার নাম সুবল। শিলিগুড়িতে আপনাদের অফিসের আমাকে চালক হিসেবে কাজ ঢুকেছি। আজ থেকে আমিই আপনাকে গাড়িতে করে সব জায়গায় পৌঁছে দেবো। কোথাও যাওয়ার হলে আপনি শুধু আমাকে একবার ফোন করে বলবেন।"
পথে যেতে যেতে সুদীপ্তার সুবল বাবুর সাথে ভালো সখ্যতা জমে গেল। আসলে ফালাকাটার বাসিন্দা সুবল বাবু এর আগে বহু কোম্পানিতে চালক হিসেবে কাজ করেছেন। প্রায় তিরিশ বছর হলো তিনি গাড়িই চালাচ্ছেন। বাড়িতে তার দুটি মেয়ে এবং বউ। বাবা মা গত হয়েছেন। করোনার পর কয়েক মাসের অন্তরালে দুজনকে হারিয়েছেন। মেয়ে দুটি এখন স্কুলের গন্ডি পেরোয়নি।
কথা বলতে বলতে সুদীপ্তা ওর হোটেল পৌঁছে গেলো। সুবল বাবু হোটেলের মুখে নামিয়ে দিয়ে সুদীপ্তাকে জানিয়ে দিল, দিদিমণি আমি এখানেই আছি। আপনি কিছুটা রেস্ট নিয়ে আসুন এরপর সোজা অফিসে নিয়ে যাবো। আমার বাংলা রেডিও সুদীপ্তার জন্য অত্যন্ত দামী একটা হোটেল রুম বুক করেছে। আধুনিক সব ধরণের সুবিধায় ঠাঁসা।
রুমে ঢুকেই সুদীপ্তা ব্যাগ পত্র রেখে ওর মাকে হোটেলে ঢোকার কথা জানিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলো। স্নান করে বেরিয়ে এসে বুঝতে পারলো বিমানে আসার পরেও তার ভেতরে কোনো ক্লান্তি নেই। এতো সুন্দর আবহাওয়া দেখে রুমে চুপটি না বসে থেকে সুদীপ্তা জামা প্যান্ট গলিয়ে বেরিয়ে পড়লো অফিস যাওয়ার জন্য।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
সুদীপ্তার রেডিও সঞ্চালক হওয়ার কথাটা শুনে খুবই ভালো লেগেছে। যেহেতু অনেকদিন পরে শিলিগুড়িতে এসেছে গরম থেকে ঠান্ডার মধ্যে আসলে একটু তো পরিবর্তন মনে হবে। তবে সুবল বাবুর সাথে সুদীপ্তার বেশ ভালোই পরিচিতি হয়ে গেল। হোটেলে পৌঁছানোর পরেই দেখছি আবারো অফিসের জন্য বেরিয়ে পড়ল। পরবর্তী পর কি হয় সেটা জানার অপেক্ষায় রইলাম।
সুদীপ্তা একেবারে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অবশেষে সুদীপ্তা শিলিগুড়িতে পৌঁছে গিয়েছে তাহলে। আশা করি খুব শীঘ্রই সুদীপ্তা অফিসে পৌঁছে যাবে এবং কাজ শুরু করে দিবে। আসলে স্বপ্ন শুধু দেখলেই হয় না,বরং স্বপ্ন পূরণ করার জন্য লেগে থাকতে হয়। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।