ক্ষীরাচোরা গোপীনাথ মন্দিরের পথে...
নমস্কার বন্ধুরা,
বালেশ্বর যখন পৌঁছে ছিলাম তখন রাত্রি বারোটা পেরিয়ে গিয়েছিল। সেদিন রাতটা আরামে ঘুমিয়ে পর দিন সকাল সকাল উঠেই কাজে বসে পড়লাম। যদিও কাজের সময়টা ছিল সোমবার তবুও আমি রবিবার সকালবেলা উঠেই অনেকটা কাজ গুছিয়ে রাখলাম। আসলে যে কোন কাজ একটু আগে থেকে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখাটাই আমি বেশি পছন্দ করি। যাই হোক! সকালবেলায় কাজ গুছিয়ে একটু বেলা বাড়ার সাথে সাথে বেরিয়ে পড়লাম উড়িষ্যার অন্যতম পুরনো শহর বালেশ্বরে কিছুটা সময় ঘুরে নেওয়ার জন্য। বালেশ্বর শহরের আশেপাশে ৭০০/৮০০ বছরের পুরনো বহু মন্দির দেখতে পাওয়া। সেইসব মন্দিরের মধ্যে আমার প্রথম যে মন্দিরের যাওয়ার ইচ্ছে ছিলো তা হলো ক্ষীরাচোরা গোপীনাথ মন্দির।
আমি ছিলাম বালেশ্বর রেলওয়ে স্টেশনের কাছের একটি জায়গায়। সেখান থেকে বেরিয়ে একটি আটো চেপে বালেশ্বর বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত পৌঁছে গেলাম। অটো থেকে নামবো সেই সময়ে তুমুল ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি শুরু হলো। যার কারণে আমাকে সেখানেই কিছুক্ষণ থমকে যেতে হলো। বৃষ্টি থামলে স্ট্যান্ডে খোঁজ খবর করে পেয়ে গেলাম রেমুনা মন্দির চক যাওয়ার আটো। সেটাতে উঠে অল্প বসতেই আমাদের পাশাপাশি আরো কিছু মানুষজন অটোতে উঠে বসলেন। যাত্রী ভরে যেতেও আটো ছেড়ে দিলো। বালেশ্বর শহর থেকে কিছুটা পথে পেরোতেই দেখি রাস্তাঘাট শুকনো সেদিকে বৃষ্টির কোন বালাই নেই। মন্দির চকে নামতে যাব সেই সময়ে অটোওয়ালা দাদা বলল মন্দির পর্যন্তই যাবে, আরো তিনজন যাত্রী নাকি সেখানেই যাচ্ছে। আরো কিলোমিটার দুয়েক পথ পেরোতে একদম মন্দির পর্যন্ত পৌঁছে নেমে পড়লাম।
১২০০ শতকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত উড়িষ্যা বাসী গোপীনাথ পট্টনায়ক ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে উৎসর্গ করে এই মন্দিরটি স্থাপনা করেছিলেন। ক্ষীরাচোরা'র অর্থ যিনি ক্ষীর চুরি করেন আর গোপীনাথ তো ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নাম সেই সাথে যিনি নির্মাণ করেন তারও নাম। তাহলে বুঝতেই পারছেন মন্দিরের এমন নামকরণ কেন হয়েছে। ৮০০ বছর পেরিয়েও মন্দিরটি এখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে, তার সুন্দর সব স্থাপত্য কলা এবং জটিল সব খোদাই নিয়ে। আমি বাইরে থাকা টিউবয়েলে পা ধুয়ে মন্দির প্রবেশ করে গেলাম।
মন্দিরে প্রবেশ করতেই মন্দিরের ভেতরে অদ্ভুত ধরনের স্নিগ্ধতা অনুভব করলাম। বেশ কিছুটা সময় রাস্তায় কাটিয়ে যে অল্প ক্লান্তি হয়েছিল সেটা কয়েক মুহূর্তে মন্দিরের আবহে এসে কেটে গেল।
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmVZ2LnjzbteWf1QSr3MqRaJx7dYMMGANXS258rRfzaubR/Division.jpeg)
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
দাদা আপনার মতো আমিও যেকোনো কাজ আগে থেকে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখতে পছন্দ করি। তাহলে কাজটা ভালোভাবে সম্পন্ন করা যায়।
যাইহোক এই মন্দিরের নামকরণ সম্বন্ধে জানতে পেরে ভীষণ ভালো লাগলো দাদা। তাছাড়া ফটোগ্রাফি গুলো জাস্ট অসাধারণ হয়েছে। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ক্ষীরচোরা গোপীনাথ মন্দিরের নামকরণের সার্থকতা জেনে খুব ভালো লাগছে। আসলে দাদা তুমি প্রতিনিয়ত যে পরিমাণ মন্দির আমাদের দর্শন করাচ্ছ, সেটা সত্যিই অভূতপূর্ব। আসলে আমার তো এত ঘুরাঘুরির সময় হয়না তাই তোমার মাধ্যমে বিভিন্ন মন্দির দেখে নিচ্ছি। এই ক্ষীরচোরা গোপীনাথ মন্দিরের দর্শন করতে পেরে বেশ ভালো লাগছে দাদা।