ভাগ্যের পরিহাস

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

নমস্কার বন্ধুরা,

ভাগ্যের পরিহাস কথাটা আমরা শুনি। ভাগ্য আমাদের যেমন চরম আনন্দ দিতে পারে তেমনি ভাগ্য খারাপ হলে জীবনে নেমে আসে হাজারো দুঃখ। অনেকে বলেন ভাগ্য নাকি নিজের হাতে রয়েছে। আমি বলবো, কথাটা কিছু ক্ষেত্রে ঠিক আবার কিছু ক্ষেত্রে ঠিক নয়। হঠাৎ এমন কেন বলছি তাইতো। আসলে পারিপার্শ্বিকের মধ্যে হঠাৎ ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনাক্রম মনে করিয়ে দিলো জীবনে ভাগ্য বলে একটি বস্তু রয়েছে। সেই ভাগ্যের জোরেই আমরা জীবনে কিছুটা ভালো সময় কাটাই আর কিছুটা খারাপ সময় কাটাই। ভাগ্য আমাদের আনন্দের চরম শিখরে পৌঁছে নিয়ে যায়, ভাগ্যই আবার আমাদের চরম দুঃখের মধ্যে ঠেলে দিতে পারে।

cube-1655118_1280.jpg

Pixabay

কথাগুলো আপনাদের কাছে হেঁয়ালি লাগতেই পারে। অনেকে ভাগ্যকে বিশ্বাসও করেন না। আমি বিগত কয়েক মাসে এমন কিছু ঘটনাক্রম দেখলাম যেটা আমার ভাগ্যের উপরে বিশ্বাস ফিরিয়ে আনলো। জানিনা কথাগুলো বলা ঠিক হবে, নাকি বেঠিক। তবে আশা করি আপনারা বুঝতে পারবেন। রবিবার ভেবেছিলাম একটু আরামে কাটাব কিন্তু দুপুর থেকে হঠাৎ শরীর খারাপ হওয়া শুরু হলো। ওষুধ খেয়ে অল্প ঘুমিয়ে উঠলাম খবরটা তখনই আসলো। পিসির বাড়িতে কাজকর্মে সহায়তা করেন যে বয়স্ক মানুষটি, যাকে আমরা দিদু বলি, তার এক জামাতা দুপুরে হঠাৎই গত হয়েছে। মানুষের মৃত্যু তো স্বাভাবিকই। এমন তো নয় মানুষ চিরকাল বেঁচে থাকবে, তবে মৃত্যুটা আমার কাছে খুব একটা স্বাভাবিক মনে হলো না।

সূত্রপাত গত বছর থেকেই। হুট করে একদিন দুপুরে খোঁজ এলো যে দিদুর জামাই কাজ করতে গিয়ে পড়ে গিয়ে শিরদাঁড়ায় প্রচন্ড আঘাত পেয়েছেন।অপারেশন করে ডাক্তাররা বলে দিয়েছেন যে উনি আর চলাচল করতে পারবে না। তারপর কয়েক মাস কেটে গিয়েছিল হঠাৎ শুনি সেই ভদ্রলোক অল্প অল্প করে হাঁটছেন। ঈশ্বরের কৃপাবল সাথে ওই ভদ্রলোকের ছেলে যে অক্লান্ত পরিশ্রম করে বাবাকে দাঁড় করিয়েছে। শুনলাম মাস তিনেক সে হাসপাতালে বাবার সাথেই ছিলো। হাসপাতাল থেকে বাড়ি পর্যন্ত বাবাকে দেখভাল করে ফিরিয়ে নিয়ে এলো। সত্যিকারের আদর্শ সন্তান। বাবার শুশ্রূষার সাথে ছেলেটি কলেজেও ভর্তি হয়েছে।

সব ঠিকই ছিলো, দুমাস আগে রাত বারোটা নাগাদ খবর পেলাম ছেলেটি একটি পথ দুর্ঘটনায় মারা গেছে। বাবাকে ডাক্তার দেখিয়ে টোটোতে চাপিয়ে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিল সেই সময়ে পেছনদিক থেকে আসা একটি মাল বোঝাই করা ট্রাক তাকে ঠুকে দেয়। হাসপাতালে পায়ে হেঁটে পৌঁছালে ডাক্তারবাবুরা বাঁচাতে পারেননি।

আজ দুপুরবেলায় শুনলাম ছেলেটির বাবা গত হয়েছে। শোনার পর বলার মতন মুখে কোনো ভাষা ছিল না। খুবই মুষড়ে পড়লাম। মনে মনে একটা কথাই ঘুরতে থাকলো, ভাগ্যের অদ্ভুত পরিহাস। কয়েক মাসের মধ্যে একটা পুরো পরিবার ধ্বংস করে দিয়ে গেলো। একের পর এক ঘটনা সংসার টাকে তছনছ করে দিয়ে গেল। বুঝলাম ভাগ্য আসলে আমাদের হাতে নেই, ভাগ্যের হাতেই আমরা পুতুল হয়ে আছি।




IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness

Or

Set @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



Hi @kingporos,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

 6 months ago 

আসলে বিপদ সবসময় আমাদের পিছনেই থাকে। কখন যে সামনে এসে হাজির হবে কেউ বুঝতে পারবে না। ছেলেটির বাবা হয়তো ছেলেটির সেবার জন্যই বেঁচে ছিলেন। ছেলেটি মারা যাওয়ার পর এজন্য আর বেশি দিন বাঁচতে পারেনি হয়তো। আর এরকম তরতাজা ছেলে যদি অ্যাক্সিডেন্টে মারা যায় তাহলে কোন পরিবার সহ্য করতে পারে। খুব খারাপ লাগলো দাদা শুনে।

 6 months ago 

কয়েক মাসের ব্যবধানে পুরো সংসার উজাড় হয়ে গেলো।

 6 months ago 

মানুষের জীবনে কখন কোন দুর্ঘটনা চলে আসে সেটা কেউ জানে না । আপনি অনেক সাবধানতার সাথে অবলম্বন করা সত্ত্বেও এমন কিছু দুর্ঘটনার সাক্ষী হবেন যেখানে কিছুই করার থাকে না। এইরকম মর্মান্তিক ঘটনাগুলো সত্যিই মানুষকে অনেক কষ্ট দেয়। অনেক ভাবায় সুন্দর একটি জীবন অল্প বয়সে যখন পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নেয় সেটা কোনভাবে মেনে নেওয়া যায় না । ছেলেটি তার বাবার অসুস্থতার জন্য অনেক শ্রম দিল হঠাৎ করে রোড এক্সিডেন্টে মারা গেল। সত্যিই এই ধরনের ভাগ্যের পরিহাস মেনে নেয়া যায় না।

 6 months ago 

ভাই একদম ঠিক বলেছেন!! দুর্ঘটনা যেকোনো মানুষের জীবনে আসতে পারে তবে কিছু জিনিস মেনে নেওয়া যায় না।

 6 months ago 

আপনার লেখাটা পড়ে খুব খারাপ লাগলো ভাইয়া।অনেকেই বলে ভাগ্য আমাদের নিজেদের হাতে কিন্তু আমিও আপনার মত এই কথার সাথে পুরোপুরি একমত নয়।আপনার লেখা গল্পটিতে প্রথমে ছেলের গত হওয়া তারপর বাবার গত হয়ে যাওয়া দুই মাসের মাত্র ব্যবধান।ছেলেটি তার বাবাকে প্রথমবার সুস্থ করে হাঁটতে শিখিয়েছিলেন।একজন আদর্শ সন্তানের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।মুহূর্তেই তাদের পরিবার টা শেষ হয়ে গেল।এটা আসলেই ভাগ্য আর আমরা ভাগ্য দিয়েই নিয়ন্ত্রিত প্রত্যেকেই।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 6 months ago 

সেটাই বারবার প্রমান হয়। আমরা ভাগ্যের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।

 6 months ago 

দাদা ভাগ্য বলতে অবশ্যই কিছু আছে এবং এটা আমাদেরকে বিশ্বাস করতেই হবে। আমরা মুসলিমরা বিশ্বাস করি জন্ম,মৃত্যু এবং বিয়ে আল্লাহর হাতে রয়েছে। যাইহোক পুরো পরিবার একেবারে তছনছ হয়ে গেলো,ব্যাপারটা জেনে ভীষণ খারাপ লাগলো দাদা। সন্তানের মৃত্যু কোনো বাবা মেনে নিতে পারে না। আর এমনিতেই তো তিনি অনেক অসুস্থ ছিলেন, তাই পরপারে চলে গিয়েছেন। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।

 6 months ago 

আমিও বিষয়টা যেন মেনে নিতে পারছিনা। ভাগ্য সত্যিই অদ্ভুত।

 6 months ago 

ভাগ্য আমাদের নিজের হাতে রয়েছে একথা সত্য। তবে পারিপার্শ্বিক কিছু ব্যাপার রয়েছে, সেক্ষেত্রে আবার ভাগ্যটা সব সময় আমাদের হাতে থাকে না। তোমার আজকের ঘটনাটা পড়ে সত্যিই অনেক কষ্ট পেলাম দাদা। ছেলেটা পথ দুর্ঘটনায় মারা গেল আর তার পরে তার বাবাও মারা গেল, এর মানে পুরো একটা পরিবার ধ্বংস হয়ে গেল। এরকম ঘটনা যেন ভগবান আর কারো সাথে না ঘটায়, এটাই প্রার্থনা করি।

 6 months ago 

আমার মনে হয়, ভাগ্যের পথে আমরা হয়তো কিছুটা বদল আনতে পারি পুরোপুরি নয়।

 6 months ago 

হ্যাঁ দাদা, ঠিক কথা বলেছ তুমি।

Coin Marketplace

STEEM 0.26
TRX 0.20
JST 0.038
BTC 96560.41
ETH 3644.15
USDT 1.00
SBD 3.81