ইমামি জগন্নাথ মন্দির
নমস্কার বন্ধুরা,
ঈমামি জগন্নাথ মন্দিরে পৌঁছতে একটু কষ্ট করতে হয়েছিল তবে মন্দিরে ঢুকে সব কষ্ট এক নিমিষেই উবে গেলো। যদিও যখন মন্দিরে পৌঁছেছিলাম তখন গর্ভগৃহ সর্বসাধারণের জন্য বন্ধ ছিল তবে মন্দিরের বাকি অংশটা খোলা থাকায় মন্দির ঘুরে নিয়েছিলাম। উড়িষ্যার সাথে প্রভু জগন্নাথের নাম সমার্থক। বালেশ্বর থেকে আড়াইশো কিলোমিটার দূরে পুরীতে প্রভু জগন্নাথ যুগে যুগে পুজিত হয়ে আসছেন। পুরীর মন্দিরে প্রভু জগন্নাথ, ভ্রাতা বলরাম এবং ভগ্নী সুভদ্রা একসাথে ভক্তদের থেকে পুজো পান। ইমামি রেমুনা শহরে পুরী মন্দিরের অনুকরণে তাদের মন্দির খানি বানিয়েছে যেখানে কোনার্কের সূর্য মন্দিরের জাদুকরী ও দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য নকশা স্থান পেয়েছে সাথে সাথে আকার নন্দী ঘোষের রথের।
পদ্মবিভূষণ শ্রী রঘুনাথ মহাপাত্র ইমামি জগন্নাথ মন্দিরটি কোনার্ক সূর্য্য মন্দির এবং নন্দী ঘোষ রথের স্থাপত্যের সমন্বয়ে তৈরি। পুরো মন্দিরটি সাড়ে তিন একর জমির উপর নির্মিত এবং উচ্চতা পঁচাত্তর ফুট। মন্দিরটি নন্দী ঘোষের রথের চাকার ন্যায় ষোলটি চাকার উপর স্থাপন করা হয়েছে যা সামনে চারটি ঘোড়া দ্বারা চালিত হচ্ছে। মন্দিরের গাত্র উড়িষ্যায় প্রাপ্ত বাউলামালা পাথর এবং সাহান পাথর দিয়ে তৈরি অপূর্ব হস্তশিল্পের মেলবন্ধন সজ্জিত। মন্দিরের চারপাশে চারটি দরজা এবং সিংহ দ্বারে রয়েছে গরুড় স্তম্ভ।
মন্দির গর্ভগৃহের একদম চূড়ায় রয়েছে জগন্নাথের ধ্বজা। মন্দিরের গায়ে নানা স্থাপত্য ভাস্কর্যের মধ্যে রয়েছে দশ দিকপাল, নবগ্রহ, দশাবতার ইত্যাদি। পুরো মন্দির জুড়ে মুক্তেশ্বর, কোণার্ক মন্দিরের স্থাপত্য পরিলক্ষিত হয়। এছাড়া মন্দিরের গাত্রে বিভিন্ন লক্ষ্মী নারায়ণ, হর পার্বতী, শ্রী গণেশ এর ভাষ্কর্য দেখতে পাওয়া যায়। মন্দিরের পাথরে খোদাই করা হয়েছে রামায়ণ মহাভারতের নানা পর্বের অংশ বিশেষ।
২০১৫ সালে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার মন্দির টির কারুকাজ দেখে অবাক হতে হয়। এই সময়েও এত সুন্দর পাথরের উপরে হস্তশিল্পের কাজ দেখতে পাওয়া যায়! শিল্পীর চিন্তনকে সত্যি বাহবা দিতে হয়, ভাবনাকে তিনি এত সুন্দর ভাবে পাথরের উপর ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন, যা অতুলনীয়। সত্যি কথা বলতে গোপীনাথ মন্দির থেকে ২ কিলোমিটার পথ হাঁটার যখন মন্দির চকে পৌঁছে ছিলাম তখন কিছুটা হলেও আসার ইচ্ছেটা কমে ছিলো কিন্তু এসে কতটা ভালো লাগছে সেটা আপনারা ছবিতেই কিছুটা বুঝতে পারছেন।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
পুরীর জগন্নাথ মন্দির কারো পোস্টের মাধ্যমে দেখেছিলাম অনেকদিন আগে। পুরী মন্দিরের অনুকরণে এই মন্দিরটা তৈরি করা হয়েছে, দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। বিশেষ করে পাথরের উপরে হস্তশিল্পের কাজ দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছি। খুবই নিখুঁতভাবে কাজগুলো করেছে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি গুলো জাস্ট অসাধারণ হয়েছে দাদা। সবমিলিয়ে পোস্টটি দারুণ লাগলো। যাইহোক এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
অনেক সুন্দর একটি মন্দির সম্পর্কে ধারণা পেলাম। বেশ দারুণভাবে সাজানো এ মন্দিরটার দৃশ্য। এই সমস্ত সুন্দর সুন্দর স্থান গুলো এবং প্রতিষ্ঠানগুলো দেখার মধ্য দিয়ে অনেক কিছু ধারণা পাওয়া যায়। কারণ এগুলো একটি স্থানের বেশ কিছু তথ্য বহন করে থাকে। কিছুদিন আগে একটা পোস্ট শেয়ার করেছিলেন মনে হয়। আজকেও মন্দির সম্পর্কে দারুন একটি পোস্ট দেখতে পারলাম।
ইমামি জগন্নাথ মন্দির সম্পর্কে তুমি যে বর্ণনা দিয়েছো, সেটা সত্যি অতুলনীয় দাদা। আমি তোমার পোস্ট পড়ছিলাম আর মন্দিরের একটা স্ট্রাকচার মনে মনে তৈরি করে নিয়েছিলাম। তাছাড়া তোমার শেয়ার করা ফটোগ্রাফি গুলো দেখে আসলে বোঝা যাচ্ছে যে মন্দিরটা কত সুন্দর। আসলে মন্দির দেখার পাশাপাশি সেই মন্দিরের ইতিহাস ঐতিহ্য জানার যে ব্যাপারটা, সেটাও কিন্তু খুব ইন্টারেস্টিং।