দিনপঞ্জি ২৫-শে ভাদ্র, ১৪২৮ // শিকাগো বক্তৃতার ১৫৯-তম বছর, কলকাতা স্টেশন // ১০% পেআউট লাজুক খ্যাঁক-কে
নমস্কার,
শনিবার কোর্টের কোনো কাজ থাকে না, টুকটাক যা থাকে সবই জিএসটি ক্লায়েন্টদের। সকাল সকাল জলখাবার খেয়েই সব ক্লায়েন্টদের ফোন করে দিনের ফিরিস্তি শেষ করে বসেছি মাত্র। হঠাৎ মনে পড়লো, আজকের তারিখেই স্বামীজি ঐতিহাসিক শিকাগো বক্তৃতা দিয়েছিলেন, সিস্টার্স এন্ড ব্রাদার্স অফ আমেরিকা। প্রথম লাইনেই দুনিয়া মাত। শিকাগোতে বিশ্ববাসী মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিল এই ৩০ বছরের যুবকের চিন্তাচেতনার মাধ্যমে। ভারতীয় জাতীয়তাবাদের মানসপুত্র জয় করলেন আমেরিকা। বাকি সকালটা তাই স্বামীজিকে নিয়েই কেটে গেলো।
কখন দুপুর ১ টা বেজে গেছে খেয়াল করিনি, এদিকে একটু পরে কলকাতা স্টেশন যেতে হবে, আমার এক দাদা আর তাঁর ছেলে আসছে। রবিবার ভাইপোর মেডিক্যাল এন্ট্রান্স পরীক্ষা আছে, কলকাতায় সিট। তাঁদের খড়দহ স্টেশনের কাছে এক দিদির বাড়িতে পৌঁছে দিতে হবে। ঘড়িটা দেখেই ঝটপট স্নান খাওয়া সেরে বেরিয়ে পড়লাম। ২:২০ এর দিকে ট্রেন স্টেশনে পৌঁছানোর সময়।
বাসে উঠতেই দাদার ফোন আমরা দমদমের কাছে চলে এসেছি, আর ১৫ মিনিট লাগবে। বাস ১৫ মিনিট লেট করে ঢুকলো। বাস থেকে নেমে স্টেশনের দিকে হাঁটা শুরু করলাম, ৪০০ মিটার হবে, রাস্তার অর্ধেক পেরিয়েছি টিপ টিপ করতে করতে অঝোরে বৃষ্টি শুরু হলো। যেন ছাতা ফুঁড়ে বৃষ্টি পড়বে। কোনোমতে স্টেশনে ঢুকলাম।
স্টেশনের মুখটাতেই দেখা হলো দাদাদের সাথে। ওরাও একটু আগেই ঢুকেছে। প্রায় ৭ মাস পরে দেখা।
ওদের সাথে দেখা হয়েছে মাত্রই বৃষ্টি থামলো। আমরাও বেরিয়ে পড়লাম। কিলোমিটার খানেক হেঁটে বিধাননগর রোড স্টেশনে পৌঁছতে হবে তারপর আমাদের গন্তব্য স্টেশনের ট্রেন। গল্প করতে করতে স্টেশন পৌঁছে গেলাম বুঝতেই পারিনি। ভাগ্যক্রমে চলতি পথে কোনো প্রকার বৃষ্টিও হয়নি, হাঁটতে হাঁটতে বেশ ভালভাবেই স্টেশন পৌঁছে যাওয়া গেলো।
যেইনা প্লাটফর্মে দাঁড়িয়েছি আবার বৃষ্টি শুরু। পুরো স্টেশন ফাঁকা, লোকজন আঁটো সাঁটো হয়ে শেডের তলায় দাঁড়িয়ে।আমরাও হুর পারাপারি করে স্টেশনের ছাদের তলায় এলাম।
বৃস্টির দিনে ট্রেন লেট হবেনা তাই কখন হয়!? যথারীতি মিনিট ৭ লেট করেই স্টেশন ঢুকলো আমরা বৃষ্টির মধ্যেই দৌড়ে গিয়ে শেডের বাইরে একটা কামরায় উঠলাম। যাক অন্তত ভালোভাবে পৌঁছে যাওয়া যাবে। ট্রেন প্রতি স্টেশনেই বেশ কিছুটা সময় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চললো, ৩০ মিনিটের রাস্তা ৪০ মিনিট লাগিয়েই দিলো।
নেমে টোটো ধরা হলো, দিদির ফ্ল্যাট কাঠিয়া বাবার আশ্রমের কাছে। গ্রান্ড ট্যাংক রোড ধরে টুকটুক করে পৌঁছে গেলাম। গঙ্গার একদম পাশে। জোয়ারের জলে গঙ্গা ফুঁসছে। তবুও যেন অপরূপ দৃশ্য! সারাদিন বসে গঙ্গা দেখে কাটিয়ে দিতে পারি।
বৃষ্টির মধ্যে বসে থাকা সম্ভব না। দিদির ফ্ল্যাটে যাওয়া ঠিক মনে হলো। এখানে প্রায় ৪ বছর পরে এলাম। অনেক গল্প করা হলো। সাথে চা আর চানাচুর। ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়ায় বেশ জমে গেলো আড্ডা। ভিডিও কল চললো সন্ধ্যে অবধি।
আবহাওয়া বেগতিক রাতের দিকে বৃষ্টি নামতে পারে এই চিন্তা করে আমি বেরিয়ে পড়লাম বাড়ির দিকে। থাকার কথা অনেক বললেও, রাতটা থাকা যায়নি। এমনিই ঘুম হয় না, তার উপরে অন্য জায়গায় আরোই ঘুম আসবে না। আগামীকালকে ভাইপোকে আবার পরীক্ষা দিতেও নিয়ে যেতে হবে।
দাদা আমি আপনার লেখার ভক্ত হয়ে গিয়েছি। আপনি সাধারণ দিনপঞ্জি এত সুন্দর করে বর্ণনা করেন মনে হচ্ছে একজন লেখক কোন গল্প বলছেন। চমৎকার দাদা।
কি যে বলেন দাদা! আপনারাই দেখেই শিখছি। যা কিছু শিক্ষা সবই আপনাদের কাছ থেকে। আরো Variety আনার চেষ্টা করবো দাদা। ধন্যবাদ 🤗
ফ্রী সময়ে আপনার বই পড়াটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে ভাই।আপনি তো সর্বদা নলেজ আহরণ করতে ব্যাস্ত।দাদা আপনি যে বইটা পড়ছেন সেটা মনে হচ্ছে ইংলিশ ভার্সন।বাংলায় এই বইটি পাওয়া যাবে কি?
আপনার দিনটি শুভ হোক অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইলো ভাই।
বাংলাতেও আছে। স্বামী বিবেকানন্দের শিকাগো বক্তৃতা। কাছে কোনো রামকৃষ্ণ মিশন থাকলে সেখানে পাওয়া যাবে।
আমার পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ 🤗
খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন দাদা আপনার দিনপঞ্জিটা ।চানাচুর খেতে খুবই মজা।আমি রোজ খাই।দিনপঞ্জি পড়ে খুবই ভালো লাগলো।ধন্যবাদ দাদা।
রোজ চানাচুর। দারুন তো। আমার সহ্য হয় না
কি দারুন ফটোগ্রাফি দাদা,আপনি বরাবরের মতো এবার ও সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন এবং ফটোগ্রাফি গুলোও সুন্দর করেছেন
বৃষ্টির দিনে চা, আর চানাচুর, আহ কি যে মজা লাগে বলে বোঝানো যাবে না
চায়ের সাথে চানাচুর খেয়ে রাতে আর খাওয়া হলো না। খেতে দারুন লাগলো, তবে দৌড়াদৌড়ি আর অনেক ক্ষণ কিছু না খাবার পরে আম্বল করে দিলো।
আমিও রূপক ভাইয়ের কথার সাথে একমত কি অসাধারণ লিখেন আপনি দাদা। আপনার প্রতিটি দিনপন্জী আমি ভালোভাবে পড়ি যতই পড়ি ততই আরও পড়ার ইচ্ছা জাগে। যদিও আপনার দিনপঞ্জিতে ব্যস্ততার মাঝে কেটেছে তার ভিতর থেকে আপনি সময় বের করে এরকম একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন ধন্যবাদ আপনাকে।
কমিউনিটির থেকেই শিখছি। সবাই এতো ভালো লেখে।
সকালটা একটু আলসেমিতে কেটেছে। তারপর ঘড়ি দেখে লম্ফঝম্প করে বেরোতে হলো 😂।
আমার পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
"স্বামীজি" বলতে এখানে হয়তো স্বামী বিবেকনানন্দ কে বোঝানো হয়েছে। এবং আপনাদের লেকটাউন ব্লক টাওয়ার টা আমার কাছে অসাধারণ লাগছে। এবং বৃষ্টির মধ্যে স্টেশন টার সৌন্দর্যই বদলে গেছে। সবমিলিয়ে ব্যস্ততার মধ্যেও সুন্দর একটি দিন কাটিয়েছেন দাদা।
স্বামীজি বলতে উনিই। ক্লক টাওয়ার তো বেশ সুন্দরই।
সবটা পড়তে পড়তে আমার ও একটু কলকাতা ভ্রমণ হয়ে গেল মনে হলো। আর স্বামীজির বই হাতে দিন শুরু করলে দিনটা যে সব দিক দিয়ে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে একথা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।
ফ্রী টাইমে বই টই পড়ার অভ্যাস আমার কাছে একদম অন্য লেভেলের মনে হয়। অন্য লেভেলের বলতে অবসর সময়ে হুদাই বসে থাকলে মাথায় শয়তান কিলবিল করে তবে বই পড়লে মাইন্ড ফ্রেস থাকে।
লেকটাউন ক্লক টাওয়ারটা আমার কাছে খুব আকর্ষণীয় মনে হয়েছে। আসলে এমন পুরনো জিনিষপত্র আমার কাছে খুবই পছন্দের।আপনার দিনপঞ্জিতে অভ্যস্ত হয়ে গেলাম আমি 😜।
ইতিহাসের বই বেশি ভালো লাগে। আগেও এই বইটা পড়া, ইংরেজিতে আর বাংলাতে দুটোই।
ক্লক টাওয়ার কম পিসার হেলান বেশি লাগছে 😁। আমার মতো মহা কুঁড়ের দিনপঞ্জিতে অভ্যস্ত না হলেই ভালো 😂
কুঁড়েই কুঁড়ের দিনপঞ্জি পড়বে।তাই তো স্বাভাবিক😝
😂😂😂। এটা ভালো ছিলো।