অন্ধকারের আশ্চর্য: পর্ব ২

in আমার বাংলা ব্লগlast year

নমস্কার বন্ধুরা,

অন্ধকারের আশ্চর্য: পর্ব ১ এর পর...


অন্ধকারের আশ্চর্য: পর্ব ২


সুকেশকে দেখে সুদীপ্তর দুটো চোখ জ্বলজ্বল করে উঠলো। যেন না মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। সুদীপ্ত সুকেশকে জড়িয়ে ধরে বলল, শোন চল বিকেলে আশেপাশে কোথাও থেকে ঘুরে আসি। অনেকদিন কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয়না।

সুকেশ মুচকি হেসে বললো, সুদীপ্ত দা বাড়ি গিয়ে আগে বিশ্রাম করে নাও। কলকাতা থেমে এসে ঘরে পর্যন্ত ঢুকলে না আর নেমেই তোমার ঘুরতে যাওয়া। হাঃ হাঃ।

সুকেশের কথা শুনে সুদীপ্ত অল্প দমে গেলো। মুখ খানি আমের মতো করে সুকেশকে বিদায় জানিয়ে সে বাড়ির দিকে রওনা হলো। বাড়িতে ঢুকেই সুদীপ্তর মনে হলো, তার বাড়িটা আগের মতই রয়ে গেছে, ছয় মাস আগে যেমনটা দেখে গিয়েছিলো। মাঝে কোনো পরিবর্তনই হয়নি। একটা সময় ছিলো যখন সুদীপ্তের বাড়িতে অনেক মানুষের আনাগোনা থাকতো, বাড়ি সারাক্ষন গমগম করতো। কিন্তু এখন বাড়িতে জনা প্রাণী বলতে মাত্র দুজন সুদীপ্তর বাবা এবং মা। সুদীপ্তরা অর্থনৈতিক ভাবে কম জোর হওয়ার পর থেকেই আত্মীয় স্বজনরা তাদের বাড়ির দিকে পা মাড়ায় না।

PXL_20221213_205501496_copy_1209x907.jpg

বাড়ি পৌঁছে কোনো মতে হাত মুখ ধুয়ে খেতে বসে পড়লো। ছেলে ছয় মাস পর বাড়িতে এসেছে তাই মা অনেক গুলো পদ রান্না করেছ, তাই সুদীপ্তর দুপুরের খাওয়া-দাওয়াটা বেশ জমিয়েই হলো। খাওয়া শেষ করে উঠে সুদীপ্তর মনে হচ্ছিলো খাওয়া যেন বেশিই চেপে হয়ে গেছে। আদপে গত দশ বছর নিজের হাতের রান্না খেয়ে খেয়ে সুদীপ্তর মুখটা যেন পচে গেছে তাই মায়ের হাতের রান্না পেতেই খাওয়াটা বেশি করে ফেলেছে। যাক সন্ধ্যের দিকে কোথাও তো আর যাওয়া নেই তাই এখন পড়ন্ত দুপুরের মিষ্টি রোদে গায়ে দিয়ে অল্প একটু ঘুম দেবে ঠিক করলো সে।

মায়ের ডাকে সুদীপ্তর ঘুমটা ভাঙলো। সুকেশ বারবার ফোন করছে বলেই উনি মুঠোফোনটা সুদীপ্তর হাতে দিয়ে দিলো। ফোনটা তুলতেই সুকেশ ওপাশ থেকে বললো, গমের ক্ষেতে জল দেওয়া হচ্ছে, রাত্রি নয়টার দিকে যাবো, তুমি যাবে?

ঘুমের তালেই সুদীপ্ত সুকেশকে যাবো বলে জানিয়ে দিলো।

PXL_20221213_204537691_copy_1209x907.jpg

তারপর ঘুম ঘুম চোখে চারপাশটা দেখে সুদীপ্ত অবাক হয়ে গেলো, চারিদিক অন্ধকার হয়ে রীতিমতো রাত হয়ে গেছে। আসলে মায়ের হাতের রান্না খাওয়া দাওয়ার পর মিষ্টি রোদে ঘুমটা একটু বেশিই হয়ে গেছে। তারপর আধো আধো ঘুমে সুকেশকে সে কিসে সম্মতি জানিয়েছে অনেক চিন্তার পরে সেটা খেয়াল করতে পারলো না। ঘুমটা একটু বেশিই গাঢ় হয়ে গেছে। আসলে অনেকদিন পরে বাড়ির মায়ের হাতের রান্না সাথে শীতের বিকেলের মিষ্টি রোদ দুয়ে ঘুমটা খুব গভীর হয়েছে।

সুদীপ্ত চিন্তা মাথায় থেকে ঝেড়ে ফেলে বিছানা ছেড়ে মায়ের কাছে গিয়ে হাঁটু মুড়ে বসে পড়লো... অনেকদিন মায়ের সাথে গল্প করা হয়নি। সেই ঘাটতি পূরণ করে নিতে হবে যে।


চলবে...



IMG_20220926_174120.png

Vote bangla.witness


Support @heroism by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

|| Join HEROISM ||

Sort:  
 last year 

আশেপাশে ঘুরতে যাওয়ার বিষয়ে সুদীপ্তকে সুকেশ খুবই সুন্দর কথা বলেছে। আসলে বিশ্রাম করাটাই উত্তম সুদীপ্তের জন্য। সুদীপ্তের গভীর ঘুমের বিষয়টি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। অনেকদিন পরে মায়ের হাতের খাবার খাওয়াটা নিঃসন্দেহে মজার একটি বিষয়। দারুন একটি গল্পের পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য প্রিয় দাদা আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 last year 

মায়ের হাতের খাবার খেলে ঘুম আসতে বাধ্য। হাঃ হাঃ

 last year 

খুবই ভালো লাগার কিছু মুহূর্ত ফুটে উঠেছে এখানে। বিশেষ করে ৬ মাস পর মায়ের হাতের রান্না খেতে পেরে অনেক শান্তিতে ঘুমিয়েছে সুদীপ্ত। সত্যি বলতে আমিও যখন অনেক দিন পর বাড়ি যাই মা এভাবেই অনেক পদ রান্না করে রাখে। যা কিনা এক অদ্ভুত অনুভূতির সৃষ্টি করে। ধন্যবাদ দাদা সুন্দর একটা কাহিনী শোনানোর জন্য। পরবর্তী অংশের জন্য অপেক্ষায় রইলাম। আসলেই কি সুদীপ্ত শেষমেশ মনে করতে পারলো কিনা না যে সুকেশের সংগে তার কি কথা হয়েছিলো।

 last year 

গল্পের সাথে জীবনের মিল পাওয়া যাচ্ছে তাহলে।

 last year 

হ্যা দাদাভাই। আমরা যারা পড়ালেখা বা কাজের জন্য নিজ পরিবার থেকে দূরে থাকি তারাই মায়ের রান্না অমেক মিস করি। অনেক দিন পর মায়ের হাতের রান্না পেয়ে নাক ডুবিয়ে খেয়ে নেয়।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 63013.55
ETH 2460.64
USDT 1.00
SBD 2.64