(ক্রিয়েটিভ রাইটিং) গল্প // ছোট্ট বেলায় সেই স্মৃতিময় রমজান মাসের কিছু অনুভূতি
আছসালামু আলাইকুম/আদাব আমার বাংলা ব্লগ স্টিম কমিউনিটির বন্ধু গন আমি @kibreay001 বাংলাদেশ থেকে বলছি আজ (২৩-০৩-২০২৪)
আছসালামু আলাইকুম আমার স্টিম বন্ধু গন আশা করি আপনারা অনেক ভালো আছেন । আপনাদের দোয়ায় আমিও অনেক ভালো আছি। আমি @kibreay001 আমি আজকে আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি (ক্রিয়েটিভ রাইটিং) গল্প // ছোট্ট বেলায় সেই স্মৃতিময় রমজান মাসের কিছু অনুভূতি। আজকে সকাল বেলা থেকেই বেশ ব্যস্ত সময় পার করছি। সকাল বেলায় ঘুম থেকে ওঠার পরে বাড়ি থেকে কোচিং এর উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলাম। বাড়ি থেকে যখন গাড়ির মধ্যে জিতে ছিলাম তখন ঘুমে দুচোখ বন্ধ হয়ে আসছিল। কোচিং এ গিয়ে পৌঁছানোর পরেও বেশ ঘুম পাচ্ছিল যাই হোক পরে কোচিং থেকে বাইরে বের হয়ে এসে চোখে পানি দিয়ে আবারো কোচিং এর মধ্যে প্রবেশ করেছিলাম। কোচিং শেষ করার পরে বাজারে বেশ কিছু সময় ঘোরাফেরা করেছিলাম কিছু কেনার জন্য। অবশেষে বাজার থেকে আবারও গাড়িতে উঠে যখন বাড়িতে এসেছিলাম তখন ঘুমে দুচোখ বন্ধ হয়ে আসছিল। বাড়িতে এসে যখন ঘুমানোর জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলাম তখন আর ঘুম পাচ্ছিল না। তারপরে বিছানা ছেড়ে উঠে গোসল শেষ করে যোহরের নামাজের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম। নামাজ শেষ করে এসে আপনাদের মাঝে পোস্ট লেখার জন্য বসে গেলাম। তবে চলুন আজকের বিষয় নিয়ে আপনাদের মাঝে পোস্ট লিখে শেয়ার করা যাক.........
রমজান মাস হলো প্রত্যেক মুসলমানের জন্য বেশ নেয়ামতের একটি মাস। রমজান মাসে প্রত্যেক মুসলমান মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে বেশি বেশি সালাত আদায় করে এবং বিভিন্ন ধরনের গুনাহ থেকে মুক্তি চাই। ছোটবেলায় এই রমজান মাস আসার আগেই আমরা ছোট্ট ছেলে মেয়েরা বেশ আনন্দিত হতাম। কারণ রমজান মাসের প্রায় দুই থেকে তিন দিন আগে থেকেই স্কুল পুরো এক মাস বন্ধ থাকতো। ছোটবেলায় ভাবতাম স্কুল যেহেতু এক মাস বন্ধ তাই বেশ মজা হবে এই রমজান মাসে। রমজান মাস আসার ১৫ দিন আগে প্রত্যেক মুসলমান শবেবরাত নামে একটি অনুষ্ঠান পালন করে থাকে। প্রত্যেক বছরের ন্যায় এবারেও আমাদের মসজিদের সামনে শবেবরাতের দিন খিচুড়ি রান্না করে পাড়ার সকল মানুষ একসাথে খেয়েছিল। সত্যি সেই ছোট্টবেলা থেকে এই দিনটি দেখে আসছি বেশ ভালোই লাগে। কিন্তু এখন আর সেই ছোট্টবেলার স্মৃতি গুলো ভালো লাগেনা। মনে হয় যদি সেই ছোট্টবেলায় আবার ফিরে যেতে পারতাম বেশ ভালো হতো।
ছোটবেলায় যখন রমজান মাসে রোজা রাখব বলে বাড়িতে আম্মু আব্বুর কাছে আবদার করতাম সকলে রাজি হতো। সেই রাতের দিকে যখন সবাই একসাথে সেহরি খেতে উঠতাম সেই কি আনন্দ কাউকে বলে বোঝানো যাবে না। সেহরি খাওয়ার শেষে আব্বুর সাথে মসজিদে নামাজের উদ্দেশ্যে রওনা দিতাম। রোজায় থাকবো বলে রাতে সেহরি খেয়েছি কিন্তু সকাল বেলায় আম্মু খাওয়ার জন্য বেশ আবদার করত তাও খেতে চাইতাম না। কিন্তু দুপুর বেলার দিকে যখন আর থাকতে পারতাম না তখন একা একা লুকিয়ে গিয়ে ঘরের মধ্যে একাই খেয়ে ফেলতাম সত্যিই এই স্মৃতিগুলোর কথা যখন মাথায় আসে বেশ ভালো লাগে। তারপরে যখন আম্মু আব্বু আমার খাওয়া দেখে ফেলত তখন বলতো তোমার আজকে অর্ধেক রোজা হয়েছে আবার কালকে এভাবে অর্ধেক করবা তাহলে একটি রোজা হয়ে যাবে। আমিও তখন বেশ খুশি হয়ে যেতাম। এভাবেই পুরো রমজান মাস প্রত্যেকদিন অর্ধেক করে রোজা রাখতাম।
সন্ধ্যাবেলার আগে আসরের নামাজ আদায় করে এসে আম্মুর সাথে ইফতারি আয়োজনে বেশ ব্যস্ত থাকতাম সেই সময়। আম্মু ইফতারির আয়োজনের জন্য বিভিন্ন ধরনের জিনিস বাড়িতেই তৈরি করত সেগুলো দেখে খেতে বেশি ইচ্ছা করত কিন্তু আম্মু বলতো এখন খাওয়া যাবেনা সবাই মিলে একসাথে ইফতারি করা হবে। বিকেল বেলার দিকে পাড়ার ছেলেরা মিলে একত্রে রমজান মাসে মেসওয়াক কেটে পাড়ার সকল রোজাদার ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করতাম সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়লে সত্যি বেশ ভালো লাগে এখন। মেসওয়াক দেওয়া শেষে বাড়িতে এসে ইফতারি সামনে নিয়ে আব্বু আম্মু দাদা দাদি সকলের সাথে বসে যেতাম ইফতারি খাওয়ার জন্য। ইফতারি শেষে আবারো আব্বুর সাথে নামাজ আদায়ের জন্য যেতাম।
রাতে আবারও যখন সকলে মিলে একসাথে তারাবির নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে যেতাম সত্যি বেশ ভালো লাগতো। আসলে ২০ রাকাত তারাবির নামাজ আদায় করতে অনেক সময় প্রয়োজন হতো এখন সেই দিনগুলোর অনুভূতি সত্যি বেশ ভালো লাগে। রমজান মাসের শেষ হওয়ার কিছুদিন আগে বাড়ি থেকে সকলে একত্র মিলে নতুন জামা কাপড় কেনার জন্য বাজারে যেতাম। নতুন জামা কাপড় গায়ে দিয়ে ঈদের নামাজ পড়ার জন্য ঈদগাহ ময়দানে উপস্থিত হতাম সেই সময়ের স্মৃতিগুলো বেশ ভালো লাগে। কিন্তু এখন হাজার হাজার টাকা দিয়েও জামা কাপড় কিনলে সেই দিনের মজাগুলো আর ফিরে আসে না। আশা করি আজকের লেখা পোস্টি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লাগবে। সকলের মতামত নিচে কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে জানাবেন। সকলের জন্য আমার পক্ষ থেকে শুভকামনা রইল।
আমি মোঃ কিবরিয়া হোসেন। আমি বাংলাদেশ খুলনা বিভাগে মেহেরপুর জেলার গাংনী থানা কামারখালী গ্রামে বসবাস করি। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমি বর্তমানে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। আমার মাতৃভাষা বাংলা। আমি বাংলা ভাষায় কথা বলতে এবং লিখতে অনেক ভালোবাসি। সব থেকে আমি বেশি পছন্দ করি ফটোগ্রাফি করতে। আমি বেশিরভাগ সময় বিভিন্ন জায়গা ঘোরাঘুরি করে থাকি। কয়েকটি শখের মধ্যে আমার প্রধান শখ হচ্ছে বিভিন্ন জায়গা ভ্রমণ করা। সংক্ষিপ্ত আকারে আমি আমার নিজের পরিচয় শেয়ার করলাম আপনাদের মাঝে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পক্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল।
(১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য )
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলে ছোটবেলায় আমাদের অনেক ধরনের স্মৃতি রয়েছে৷ রমজান মাসের স্মৃতি গুলো একটু ভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে৷ আপনি রোজা থাকার পরে দুপুরবেলা একা একা নিজ থেকে খাবার খেয়ে নিতেন শুনে খুবই ভালো লাগছে৷ আসলে এরকম ঘটনা আমাদের সকলের সাথে ঘটেছে৷ যখন আমরা বেশিক্ষণ ধরে কিছু না খেয়ে থাকতে পারিনা তখন আমরা লুকিয়ে লুকিয়ে নিজ থেকে খেয়ে নিই৷ অনেক ধন্যবাদ এই পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য৷
ঠিক বলেছেন ভাই আপনি আসলেই লুকিয়ে লুকিয়ে যখন খেয়ে ফেলতাম এবং খাওয়া শেষে বলতাম আমি আজকে রোজায় আছি বেশ ভালো লাগতো সেই দিনের স্মৃতিগুলো।
আসলে এরকম আমার সাথে অনেক হয়েছে৷ একদম আজান দেওয়ার পূর্ব মুহূর্তে চুরি করে খেয়ে ফেলেছি। তার পরেও বলেছিলাম যে রোজা আছি৷ আসলে সে মুহূর্তগুলো এখন মনে পড়লে হাসিও পায় মজাও লাগে৷
https://x.com/GKibreay/status/1772278339023069475?s=20