কক্সবাজার ভ্রমণ (পর্ব-০৫) ||১৩-০৭-২০২৪|| by @kazi-raihan
আসসালামুআলাইকুম
বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আমি কাজী রায়হান। আমার ইউজার নেম @kazi-raihan বাংলাদেশ থেকে। আশা করি সবাই ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে আমার একটি ভ্রমণ কাহিনী শেয়ার করব।
গত মাস থেকে আমি আপনাদের সাথে কক্সবাজার ভ্রমণের পর্বগুলো শেয়ার করে আসছি সেই ধারাবাহিকতায় আজকে পঞ্চম পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি মূলত পঞ্চম পর্বে থাকছে কক্সবাজার ভ্রমণের তৃতীয় দিনের কিছু মুহূর্ত। যারা প্রথম চারটা পর্ব পড়েছেন তাদের মনে একটা আগ্রহ তৈরি হয়েছে পঞ্চম পর্বে কি রয়েছে সেটা জানার জন্য। প্রতি সপ্তাহে একটি করে পর্ব শেয়ার করেছি সেই ধারাবাহিকতায় এই সপ্তাহে পঞ্চম পর্ব নিয়ে হাজির হলাম। পঞ্চম পর্বে থাকছে আমাদের তৃতীয় দিনের কাটানো কিছু মুহূর্ত সেই সাথে আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে আমাদের কিছু প্ল্যানিং মিস হয়েছে সেগুলো তুলে ধরব।
কক্সবাজার ভ্রমণের তৃতীয় দিন সকাল বেলা আমাদের একটা বড় প্ল্যানিং ছিল যে সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে সমুদ্রসৈকতে যাব সেখানে গিয়ে সকালের নাস্তা করব। কিছু সময় সমুদ্র সৈকতের পাড়ে সময় কাটানোর পরে মেরিন ড্রাইভে যাওয়ার জন্য যে গাড়ি ঠিক করেছিলাম সেই গাড়ির মালিকের সাথে কথা বলে আমরা মেরিন ড্রাইভে যাব। তবে আবহাওয়াটা সবকিছু এলোমেলো করে দিয়েছিল। সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখলাম গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে আকাশটা প্রচন্ড মেঘলা। রুমের বারান্দায় গিয়ে যখনই সমুদ্রের দিকে তাকালাম রীতিমত অবাক হয়ে গেলাম। সমুদ্রের পানি যেন ফুলে ফেঁপে উঠছে। প্রচন্ড ঢেউ কি ভয়ংকর সমুদ্রের সৌন্দর্য। বন্ধু অংকনকে বলছিলাম আজকে আর বোধহয় মেরিন ড্রাইভে যাওয়া হবে না বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে আর সমুদ্র কি ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। যেহেতু তখন ঘূর্ণিঝড় রেমালের জন্য সমুদ্র পাড়ে বিপদ সংকেত দেওয়া হয়েছিল।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।
what3words address.
https://w3w.co/followings.bathers.twirl
সুগন্ধা সি বিচ কক্সবাজার।
what3words address.
https://w3w.co/spooned.smug.warblers
সকাল থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল যার কারণে বাইরে যেতে অনেকটা দেরি হয়েছে। রুমের টপ বারান্দা থেকে দেখলাম সমুদ্রের এমন ভয়ঙ্কর রূপ তখন বুঝতে পারলাম সমুদ্র পাড়ে যে সমস্ত খাবার হোটেলগুলো আছে সেগুলো বোধহয় আর খোলা হয়নি কারণ সেখানে বিপদ সংকেত চলছে। অপেক্ষা করছিলাম কখন বৃষ্টি থামবে আর আমরা বাইরে যাব কিন্তু দীর্ঘ অপেক্ষা করার পরেও বৃষ্টি থামার কোন লক্ষণ পাচ্ছিলাম না। সকাল থেকে একটানা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে তাই আমরা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে আমাদের হোটেলের পাশের একটি রেস্টুরেন্টে খেতে গেলাম। আমার তো সকালবেলা খিচুড়ি ভাতের সাথে আলু ভর্তা বেশি মজা লাগে। সবাই বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি ভাতের সাথে আলু ভর্তা টাই খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। সকালের খাওয়া-দাওয়া টা বেশ ভালোই হল বৃষ্টি কমতে থাকলো তখন আমরা সমুদ্রপাড়ের দিকে রওনা হলাম। গিয়ে দেখলাম সমুদ্রপাড়ের সব দোকান বন্ধ হাতে গোনা কয়েকটা দোকান খোলা আছে তাও অর্ধেকটা খুলে রাখা হয়েছে।
বনফুল এন্ড কোং।
what3words address.
https://w3w.co/invitingly.poetic.unbuckles
সবাই কিছু শুটকি মাছ কেনার কথা বলছিল। তবে সমুদ্র পাড়ে যে সমস্ত শুটকি মাছের দোকানগুলো ছিল সবগুলো বন্ধ ছিল। মূলত ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর সতর্কবার্তা আর বিপদ সংকে জারি করার কারণে সব দোকানগুলো বন্ধ ছিল। দোকানগুলোকে বন্ধ দেখে আমরা সমুদ্র পাড়ে চলে গেলাম অনেক বড় বড় ঢেউ এসে ঝাপটে পড়ছিল। সমুদ্রের ঢেউ এতটাই উপরে উঠে আসছিল যে সমুদ্র পাড়ে বসার জন্য যে বেঞ্চগুলো রাখা হয়েছে সেগুলো সব উপরে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এমনকি মাঝে মাঝে ঢেউগুলো রাস্তার কাছে চলে আসছিল। সমুদ্র পাড়ে তেমন কোন লোক ছিল না আর জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে সেখানে কয়েকজন পুলিশ মতায়ন করা হয়েছে যেন যে সকল পর্যটক ঘুরতে এসেছে তারা এই বিপদ সংকেত এর মধ্যে পানিতে নামতে না পারে শুধু পুলিশ নয় সাথে কিছু ফায়ার সার্ভিস সদস্য ও ছিল। যেকোনো পরিস্থিতিতে যেন তারা সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে পারে। যাইহোক কিছু সময় সেখানে কাটানোর পরে আবার আমরা হোটেলে ফিরব সেই মুহূর্তে হাফিজ ভাইয়ের আবার সেই একই কথা, মিষ্টি খাওয়ার কথা বললেই আরিফ ভাই আবারও রাজি হয়ে যায় মূলত পুরোপুরি মিষ্টি খাওয়ানোর দায়িত্বটা আরিফ ভাই নিজেই নিয়েছে হা হা হা। তবে এবার অন্য মিষ্টির টেষ্ট নিব হি হি হি।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।
what3words address.
https://w3w.co/swatted.engraving.shall
যেহেতু মেরিন ড্রাইভে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে সেটা আর সম্ভব হয়নি তাই আবার দুপুরের খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমরা বেরিয়ে পড়লাম সমুদ্র সৈকতের উদ্দেশ্যে। সমুদ্র পাড়ে দেখলাম জনমানব শূন্য। হাতেগোনা কয়েকজন মানুষ আছে তবে প্রচন্ড বাতাস আর বাতাসের সাথে বাষ্প আর বালি। কিছু সময় সেখানে থাকার পরেই চুলমুখ যেন আঠা হয়ে যাচ্ছিল। সমুদ্রের পানি থেকে বাতাসের সাথে লবণ উঠে আসছিল। তবে তখন সমুদ্রের আলাদা সৌন্দর্য উপভোগ করা যাচ্ছিল যদি ছবিগুলো দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন সমুদ্রের সৌন্দর্যটা কতটা সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে তার চেয়ে মজার বিষয় সমুদ্র পাড়ে তেমন কোন মানুষ নেই। মানুষের চলাচল কম থাকায় কাক পাখি গুলো সমুদ্র পাড়ে ঘুরতে এসেছে সেই কাক পাখি গুলোর ছবিও তুলেছিলাম। পুরোটা সময়ের মধ্যে এরকম সমুদ্র সৈকত থাকা অবস্থায় কখনো দেখা হয়নি যাইহোক নিজেরা অনেক সময় সেখানে দাঁড়িয়ে গল্প করলাম তবে সেখানে থাকা পুলিশ সদস্য আমাদেরকে বললেন আপনারা কেউই নিচে নামবেন না উপরের অংশে থাকার চেষ্টা করবেন। আমরা তার কথা অনুযায়ী আর খুব বেশি নিচে নামতে যাইনি তবে সেখানে দাঁড়িয়ে বালির মধ্যে অনেক কিছু অঙ্কন করেছিলাম। বালির মধ্যে লাভ অঙ্কন করে অনেকেই নাম লিখেছিল সেগুলো আর না বলি হা হা হা।
বন্ধুরা, এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজনে, আশাকরি আপনাদের সবার কাছেই ভালো লেগেছে।এই ভ্রমণ কাহিনী পড়ে আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে সেটা কমেন্ট বক্সে আমাকে জানাবেন। আর আমার ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন 🙏
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান।আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
https://x.com/KaziRai39057271/status/1811988823980544238
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
জীবনে এই একটা জায়গায় যাওয়ার শখ ছিলো তাও আজ পর্যন্ত পূরণ হলো না।😥কক্সবাজারে গিয়ে তোমরা যে অনেক মজা করেছো তা বুঝতে পারছি হয়তো গত পোস্ট গুলো পড়লে পুরোটা জানতে পারতাম কিন্তু দুঃখজনক ঘটনা হলো আমি পড়তে পারিনি।তোমরা যেসময় ঘুরতে গেছো তখন তো প্রকৃতির ভয়ংকর রূপ ছিলো তার মধ্যে মেরিন ড্রাইভ না করাটা খুবই ভালো হয়েছে তা না হলে বিপদে পড়তা।তুমি বালিতে কার নাম লিখছো সেটা জানতে চাওয়া আমার অবুঝ মন।😅 আরিফ ভাইয়ের মিষ্টির স্বাদ কেমন সেটা জানার অপেক্ষায় থাকলাম।🤭 সুন্দর মুহূর্ত গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।
শুধু আমি না,আরো অনেকে বালির উপর অনেক কিছু লিখছে 😁
আপনি সব সময় পোষ্টের মধ্যে অনেক ছবি শেয়ার করে থাকেন। আজকেও সেইম দেখলাম। উত্তাল সমুদ্রের ফটোগ্রাফি গুলো আর বিচের ফটোগ্রাফি সবার নজর কেড়ে নিবে। বৈরী আবহওয়ার কারনে মানুষের সংখ্যা কম। তবে দৃশ্য গুলো দারুন ছিল। বিশাল বড় শুটকির ছবিও দেখলাম। ধন্যবাদ।