"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা-৫৭ ||পতিং ঘুড়ি তৈরি|| by @kazi-raihan

in আমার বাংলা ব্লগ2 months ago

আসসালামু আলাইকুম


হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক


  • পতিং ঘুড়ি তৈরি
  • ৩০শে, এপ্রিল , ২০২৪
  • মঙ্গলবার


আপনারা সবাই কেমন আছেন?? আশাকরি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালোই আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আমি আজকে একটি DIY প্রজেক্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। কীভাবে পতিং ঘুড়ি তৈরি করতে হয় সেটা তুলে ধরব আশাকরি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।


আমাদের কমিউনিটিতে মাঝে মাঝেই নতুন নতুন সব প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় তবে এবারে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি আয়োজন করা হয়েছে যেখানে ছোটবেলার অতীতের কিছু মুহূর্ত আবার নতুন করে ঝালাই হয়ে যাবে। বিশেষ করে যারা ছোটবেলায় গ্রামে বাস করেছে তারা ঘুড়ি উড়ানোর মজাটা সবচেয়ে বেশি মিস করে। যাইহোক প্রথম যেদিন ৫৭ তম প্রতিযোগিতার অ্যানাউন্সমেন্ট দেখলাম সেদিন মনে মনে ঠিক করে রেখেছিলাম এবারের প্রতিযোগিতায় ঠিক অংশগ্রহণ করব। রেসিপি পোস্ট নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করলে সেই প্রতিযোগিতায় খুব একটা অংশগ্রহণ করা হয় না কারণ সিঙ্গেল মানুষের হেল্প করার মতো কেউ থাকে না। ঘরে বউ থাকলে অবশ্য রেসিপির প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা যায় 😜। যেহেতু এবার ঘুড়ি বানানোর প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল তাই ছোটবেলার কিছু মজার মুহূর্ত মনে পড়ে গেল। স্কুল থেকে বাড়িতে এসে ঘুড়ি তৈরি করতাম। অনেক সময় আম্মুর ভয়ে বাড়ির পেছনে গিয়ে গোপনে ঘুড়ি তৈরি করতাম আর শেষ বিকেলে সেটা আকাশে উড়িয়ে দিতাম। তবে আজকের এই পোষ্টে আমি সেরকম অতীতের একটি বিষয় আবার ফুটিয়ে তুলেছি। ছোটবেলায় ঘুড়ি তৈরির জন্য ভাতের আঠা ব্যবহার করতাম আর কাগজ হিসেবে বই খাতার কাগজই বেশি ব্যবহার করতাম। যেহেতু একটা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করব তাই সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য রঙিন কাগজ নিয়েছিলাম। আর সেই ছোটবেলার অতীত ধরে রাখতে আবারও আঠা হিসেবে ভাতের আঠাই নিয়েছি। অনেকেই হয়তো অবাক হতে পারেন ভাতের আঠা কেন নিয়েছি?? ঘুড়ি বানানোর সময় ও ছোটবেলার সেই মুহূর্তগুলো বারবার মনে পড়ছিল যখন ভাতের আঠা দিয়ে পোট্টিগুলো লাগাচ্ছিলাম। মূলত সেই পুরাতন স্মৃতিটা ঝালাই করার জন্যই ভাতের আঠা ব্যবহার করেছি। সকালের দিকে বাজার থেকে বড় সাইজের দুইটি রঙিন কাগজ এনে ঘুড়ি তৈরি করা শুরু করলাম। সব মিলিয়ে এক ঘণ্টার মধ্যেই ঘুড়ি তৈরি করা শেষ। ঘুড়ি তৈরি শেষে মনে মনে চিন্তা করছিলাম অনেকদিন পরে তো ঘুড়ি তৈরি করলাম আসলে না উড়লে তো আবার সমস্যা। ছোট ভাইকে ডেকে নিয়ে বিকেলের দিকে ঘুরি আকাশে উড়িয়ে দিলাম। সবচেয়ে মজার বিষয় প্রথমবারেই ঘুরিয়ে একদম আকাশে উড়ে গেল আর আমার কষ্ট যেন সার্থক।

1000067199.jpg


পতিং ঘুড়ি ।
Device: Samsung galaxy A52

অবস্থান :https://w3w.co/hassles.aviary.leanness



পতিং ঘুড়ি তৈরির প্রয়োজনীয় উপকরণ:



  • বড় রঙিন কাগজ ২ টি।
  • নাড়িকেল গাছের শলা।
  • পাটকাঠি।
  • সুতা
  • ভাতের আঠা
  • কাঁচি

1000067201.jpg



পর্যায়ক্রমে পুতিং ঘুড়ি তৈরির ধাপসমূহঃ




ধাপ-১

IMG-20240430-WA0059.jpg

  • প্রথমে দুইটি বড় সাইজের আলাদা আলাদা রঙের রঙিন কাগজ নিয়েছি।
ধাপ-২

1000067369.jpg

  • চিকন সুতা নিলাম।
ধাপ-৩

1000067340.jpg

  • চিকন এবং মজবুত পাটকাঠি নিলাম।
ধাপ-৪

1000067338.jpg

  • ৬ টি লম্বা শলা নিলাম।
ধাপ-৫

20240430_114446.jpg

  • কাগজের কোনাকুনি ভাজ দিয়ে বর্গ আকারে কেটে নিলাম।
ধাপ-৬

1000067342.jpg

  • ত্রিভুজ আকারের কাগজের ২ টি পোট্টি কেটে নিলাম।
ধাপ-৭

1000067343.jpg

  • আয়ত আকারে ৩ টি পোট্টি কেটে নিলাম।
ধাপ-৮

1000067344.jpg

  • বৃত্ত আকারে একটি পোট্টি কেটে নিলাম।
ধাপ-৯

1000067347.jpg

  • কাগজের ওপর কিছু ভাত নিলাম।
ধাপ-১০

1000067341.jpg

  • শলা গুলো একসাথে করে সুতা দিয়ে সুন্দর করে বেঁধে নিলাম।
ধাপ-১১

1000067346.jpg

  • ত্রিভুজ আকারের পোট্টিতে ভাতের আঠা লাগিয়ে নিলাম।
ধাপ-১২

1000067345.jpg

  • লম্বা ভাবে পাটকাঠি দিয়ে ত্রিভুজ আকৃতির পোট্টি লাগিয়ে দিলাম
ধাপ-১৩

1000067348.jpg

  • সুতা দিয়ে বেঁধে রাখা শলা গুলো কোনাকুনি ভাবে রেখে পট্টি লাগিয়ে দিলাম। এখানে কোনাকুনি ভাবে শলা বসিয়ে দ্রুত আঠা লাগিয়ে নিতে হয় যার কারণে মাঝের গোল পোট্টি টা একবারে লাগিয়ে নিয়েছি নিজের কাজের সুবিধার্থে।
ধাপ-১৪

1000067349.jpg

  • লেজের অংশে ত্রিভুজাকৃতির একটি পোট্টি লাগিয়ে নিলাম।
ধাপ-১৫

1000067350.jpg

  • রঙিন কাগজ কেটে দুইটি চোখ তৈরি করে নিলাম।
ধাপ-১৬

1000067352.jpg

  • রঙিন কাগজ দিয়ে ঠোঁট তৈরি করে নিলাম।
ধাপ-১৭

1000067351.jpg

  • রঙিন কাগজের তৈরি চোখ গুলো লাগিয়ে দিলাম।
ধাপ-১৮

1000067353.jpg

  • রঙিন কাগজের তৈরি ঠোঁট লাগিয়ে দিলাম।
ধাপ-১৯

1000067354.jpg

  • রঙিন কাগজগুলো লম্বালম্বি ভাবে কেটে নিলাম।
ধাপ-২০

1000067355.jpg

  • রঙিন কাগজের সাথে আঠা লাগিয়ে লম্বা লেজ তৈরি করে নিলাম।
ধাপ-২১

1000067356.jpg

  • চিকন করে লম্বালম্বি একটি কাগজ কেটে নিলাম।
ধাপ-২২

1000067357.jpg

  • ঘুড়ির দুই অংশে কানের মতো ঝুলিয়ে দিলাম।
ধাপ-২৩

1000067359.jpg

  • ঘুড়ির লম্বা লেজ লাগিয়ে দিলাম।
ধাপ-২৪

1000067360.jpg

  • ঘুড়ির বুকের অংশে ছিদ্র করে বুখ দড়ির জায়গা করে নিলাম।
ধাপ-২৫

1000067361.jpg

  • সুতা দিয়ে বুখ দড়ি বেঁধে নিয়েছি।
ধাপ-২৬

1000067362.jpg

1000067363.jpg

  • আমার তৈরি পতিং ঘুড়ির পুরোপুরি ফটোগ্রাফি। ঘুড়ি এখন পুরোপুরি উড়ানোর জন্য প্রস্তুত, চলুন তাহলে উড়িয়ে দিই।
ধাপ-২৭

1000067364.jpg

1000067365.jpg

1000067366.jpg

1000067367.jpg

1000067368.jpg

  • ঘুড়ি এখন আকাশে উড়ছে। ঘুড়ি উড়িয়ে দিয়ে ছবি তুলেছিলাম। ঘুড়ি প্রথমবার উড়িয়ে দিতেই সোজা আকাশে উড়তে থাকলো আর আমি নিচে থেকে বেশ কয়েকটি এলোমেলো ফটোগ্রাফি করেছিলাম সেগুলোই উপরে শেয়ার করেছি।


আজকে এই পর্যন্তই ছিল। আবার অন্য কোন দিন হাজির হবো নতুন কোন বিষয় নিয়ে।
আমার আজকের পতিং ঘুড়ি তৈরি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে সেটা আপনাদের মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে জানাবেন। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।

সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan



আমার পরিচয়


20231103_120723-01.jpeg

আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।



break .png

Banner.png

Sort:  
 2 months ago 

আপনি আমার বাংলা ব্লগের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো। আপনি বেশ চমৎকারভাবে ঘুড়িটি বানানোর প্রক্রিয়াটি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন ও বানানো শেষ এ ঘুড়িটি উড়িয়ে দেখিয়েছেন। অনেক শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 months ago 

প্রথমেই অভিনন্দন জানাই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য। এই ঘুড়ি ছোটবেলায় অনেক উড়িয়েছি। ঘুড়ি উড়ানোর সাথে ছোটবেলার ইমোশন জড়িয়ে আছে। তোমার তৈরি ঘুড়ি দেখে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। শুভকামনা রইল

 2 months ago 

প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য খুবই সুন্দর ঘুড়ি তৈরি করে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন এটা দেখে খুবই ভালো লাগলো ভাইয়া। যদিও আমি ঘুড়ি উড়াইনি কিন্তু ঘুড়ি উড়াতে অনেক দেখেছি খুবই ভালো লাগে এটা দেখতে আমার কাছে।

প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য প্রথমে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এবং আপনার পুতিং ঘুড়িটা বেশ চমৎকার উড়ছিল, প্রতিটি ধাপ আপনি বেশ চমৎকারভাবে আমাদের মাঝে ফুটিয়ে তুলেছেন অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 months ago 

ওরে অবস্থা এ কি বানাইছেন আপনে।দেখেই তো হুস হারা হয়ে গেছি।এতো সুন্দর ঘুরি কেমনে বানাইলেন।বাহ বাহ খুব সুন্দর হয়েছে লাটাই ছাড়া ঘুরি উরাচ্ছেন।প্রতিটি ধাপ সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।

 2 months ago 

পতিং ঘুড়ি নামটি যেমন সুন্দর তেমনি ঘুড়িটিও।আমরাও ছোটবেলায় খাতার কাগজ ছিড়ে ভাতের আঠা দিয়ে ঘুড়ি তৈরি করতাম।আপনার ঘুড়ির লেজ ইয়া লম্বা হওয়ার জন্য সাপের মতোই লাগছে উড়ন্ত অবস্থায়।ভীষণ সুন্দর হয়েছে ঘুড়িটি ভাইয়া, ভালো লাগলো দেখে।প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 months ago 

রঙিন কাগজ দিয়ে আপনি অনেক সুন্দর তৈরি করেছেন। পতিং ঘুড়ি ছোটবেলায় অনেকবার তৈরি করেছিলাম। আমরা তো ছোটবেলায় পলিথিন দিয়ে এই ঘুড়িগুলো তৈরি করেছি, আর উড়াতে অনেক বেশি ভালো লাগতো। আপনার তৈরি করা ঘুড়িটা দেখছি আকাশে অনেক সুন্দর ভাবে উঠতেছে। আপনি ঘুড়ি তৈরি করার মধ্যে ভাতের আটা ব্যবহার করেছেন, বিষয়টা কিন্তু অনেক বেশি ইন্টারেস্টিং ছিল। ভাতের আটাটা দেখে আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গিয়েছে। এত সুন্দর করে ঘুড়ি তৈরি করে সবার মাঝে উপস্থাপন করেছেন দেখেই অনেক ভালো লাগলো।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 61577.64
ETH 3448.57
USDT 1.00
SBD 2.53