সাতক্ষীরা ভ্রমণ (পর্ব-০৫) ||১৭-০৩-২০২৪|| by @kazi-raihan

in আমার বাংলা ব্লগ5 months ago

আসসালামুআলাইকুম

বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন? আমি কাজী রায়হান। আমার ইউজার নেম @kazi-raihan বাংলাদেশ থেকে। আশা করি সবাই ভালোই আছেন, আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে আমার একটি ভ্রমণ কাহিনী শেয়ার করব।



গত সপ্তাহে সাতক্ষীরা যাওয়াকে কেন্দ্র করে ৪র্থ পর্ব শেয়ার করেছি মূলত বাসা থেকে বের হওয়ার পর বাইক ট্যুরে ভ্রমণের প্রতিটা অংশ আপনাদের মাঝে আলাদা আলাদা পর্বে তুলে ধরবো। যেহেতু অনেক দিন আগে গিয়েছিলাম তাই কিছু কিছু টপিক হয়তো বাদ পড়তে পারে তবে তারপরও নিজে সর্বোচ্চ দিয়ে প্রতিটা মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। ৪র্থ পর্বে যশোর সহ যশোর সেনানিবাস এলাকার কিছু দৃশ্য শেয়ার করেছিলাম। যশোর সেনানিবাসের বিভিন্ন গেইটের ফটক সহ সেনানিবাসের দৃশ্য তুলে ধরেছি। মূলত সেনানিবাস এরিয়ার মধ্য দিয়ে বাইক নিয়ে যাওয়ার সময় আশপাশের যে দৃশ্যগুলো সম্ভব হয়েছিল সেগুলোই ক্যাপচার করেছিলাম। যশোর সেনানিবাস এরিয়া পার হয়ে যশোর বিমানবন্দরের এরিয়া শুরু হয় আর বিমানবন্দরের এরিয়াসহ বিমানবন্দরের আশপাশের পার্কগুলো নিয়ে চতুর্থ পর্ব সাজিয়েছিলাম। মূলত চতুর্থ পর্বেই যশোরের এরিয়া শেষ করেছি আর পঞ্চম পর্ব শুরু করেছি খুলনা সেনানিবাস এরিয়া থেকে। আজকে যেহেতু পঞ্চম পর্ব শুরু করব তাই আজকের পর্বে খুলনা সেনানিবাস থেকে শুরু করে খুলনা শহর এবং খুলনা থেকে সাতক্ষীরার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কিছু অংশ শেয়ার করব।



20240316_163340_0000.png

Canva দিয়ে তৈরি



যশোরের এরিয়া শেষ করতে একটু সময় লেগেছিল কারণ যশোর নওয়াপাড়া এলাকায় রাস্তার কাজ চলছিল তাছাড়া যশোর নওয়াপাড়া এলাকা অনেকটাই শিল্পনগরী এইজন্যই সেখানে বাইকের স্পিড অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রেখে যেতে হচ্ছিল। আবার যশোর এরিয়া যখন ত্যাগ করলাম তখন ট্রাফিক পুলিশ পোস্টে এসে কিছু সময় দাঁড়াতে হয়েছিল। চেকপোষ্টে পুলিশ আমাদের বাইকের কাগজ সহ আমাদের জাতীয় পরিচয় পত্র এবং ব্যাগে যা কিছু ছিল সবকিছু চেক করেছিল। পরবর্তীতে পুলিশ চেকপোস্ট পার হয়ে আমরা সোজা খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম আর কিছু সময়ের মধ্যেই খুলনার এরিয়ায় প্রবেশ করলাম। খুলনা সেনানিবাসের এরিয়া থেকে আবার ফোন ক্যামেরার মাধ্যমে আশপাশের কিছু ছবি তোলা শুরু করলাম নিচের যে ছবিগুলো দেখতে পাচ্ছেন সেটা খুলনা সেনানিবাস এলাকা থেকে ক্যাপচার করা। খুলনা সেনানিবাসের এরিয়াটা খুব বেশি বড় নয় তবে রাস্তার দুই পাশ দিয়ে সেনানিবাসের এরিয়া আর বড় বড় গাছগুলো হাইওয়ে রাস্তার সৌন্দর্যটা আরো বাড়িয়ে তুলেছে। যেহেতু যশোর সেনানিবাস নিয়ে অনেক ছবি তোলা হয়েছিল তাই খুলনা সেনানিবাসের দৃশ্য গুলো অতটা ক্যাপচার করা হয়নি তাছাড়া খুলনা সেনানিবাসের এরিয়াটা যশোর সেনানিবাসের এরিয়া থেকে অনেকটা ছোট।

20230811_103314.jpg

20230811_103324.jpg

20230811_103337.jpg

20230811_103347.jpg

20230811_103351.jpg

20230811_103353.jpg

20230811_103400.jpg

20230811_103402.jpg

খুলনা সেনানিবাস, খুলনা।

what3words address.
https://w3w.co/streetcar.wagers.fast

20230811_103731.jpg

20230811_103733.jpg

20230811_104305.jpg

20230811_110221.jpg

20230811_110300.jpg

20230811_110306.jpg

20230811_110309.jpg

ঢাকা-খুলনা রোড, খুলনা।

what3words address.
https://w3w.co/streetcar.wagers.fast

খুলনা সেনানিবাস অঞ্চলটি খুলনার দৌলতপুর উপজেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল আর আমরা দৌলতপুর পার হওয়ার পরেই খুলনা শহরে প্রবেশ করলাম। খুলনায় প্রবেশ করার আগে খুলনা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার এবং পরবর্তীতে খুলনা বিজিবি ক্যাম্প সেক্টর এবং খুলনা শহরে যখন প্রবেশ করলাম তখন নৌবাহিনীর একটি জাহাজও দেখতে পেলাম। খুলনা নৌবাহিনীর পরিত্যক্ত এ জাহাজটি খুলনা শহরের প্রবেশদ্বারে রাখা হয়েছে যেন খুলনা শহরের সৌন্দর্য আরো বৃদ্ধি পায় সেইসাথে নৌবাহিনীর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। আমরা খুলনা শহরে প্রবেশ করে বাইকের ছোট্ট একটু সমস্যা সমাধান করে নিলাম সেখানে গিয়ে আমাদের সর্বোচ্চ পাঁচ মিনিট মতো অপেক্ষা করতে হয়েছিল সেই অপেক্ষার মাঝেই আমি আমার চাচাতো ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করে নিলাম কেননা ভাবি ট্রেনিং এর জন্য খুলনাতে এসেছে আর সেখানে তার বাসা রয়েছে। যেহেতু দুপুরের মধ্যে আমরা খুলনায় চলে এসেছি তাই খুলনায় একটা ব্রেক নিব তাছাড়া সাগর ভাইয়ের খুলনায় পরীক্ষা ছিল।

20230811_110915.jpg

20230811_140548.jpg

20230811_145625.jpg

20230811_145652.jpg

20230811_164745.jpg

20230811_174320.jpg

খুলনা শহর।

what3words address.
https://w3w.co/streetcar.wagers.fast

আমরা আমাদের বাইকের কাজ কমপ্লিট করে লোকেশন অনুযায়ী খুলনা মেডিকেল কলেজের বিপরীত পাশে ভাবির বাসায় গেলাম। যেহেতু দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে এসেছি তাই সবাই গোসল করে নিলাম যেন শরীরের সতেজতা ফিরে পাই। তাছাড়া সেদিনের শুক্রবার ছিল তাই আমরা গোসল শেষে বাসার পাশেই জুম্মার নামাজ আদায় করার জন্য গেলাম। নামাজ শেষ করে বাসায় ফিরে দেখলাম ভাবি আমাদের জন্য বেশ কয়েক ধরনের আইটেমের রান্না করে বসে আছে। বলতে গেলে এই সীমিত সময়ের মধ্যে এতগুলো রান্না করা দেখে আমরা তো রীতিমতো সবাই অবাক হয়ে গেলাম। যাইহোক খাওয়া দাওয়া শেষ করে আবার আমরা আমাদের যাত্রা শুরু করলাম। সাগর ভাইয়ের পরীক্ষা ছিল আমরা ঠিক তিনটার সময় পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রবেশ করলাম আর সাগর ভাই এর পরীক্ষা শেষ হওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম। পরীক্ষা শেষে খুলনা রেলওয়ে স্টেশনের সামনে দিয়ে আমরা সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম আর যাওয়ার পথে খুলনা রেলস্টেশনে কিছুটা বিরতি নিয়েছিলাম আরো কিছু ছবি তুলেছিলাম। তবে খুলনা রেলস্টেশনে আরো একটু সময় কাটিয়েছিলাম কারণ খুলনা থেকে সাতক্ষীরার দূরত্ব আমরা গুগল ম্যাপে দেখলাম এবং কোন রুট দিয়ে যাব সেগুলো দেখে নিলাম। যেহেতু খুলনা থেকে সাতক্ষীরার দূরত্ব বেশ খানিক এজন্য আমরা সবাই একটা করে ডাব খেয়ে আমাদের যাত্রা আবার শুরু করলাম। বিকেলের হালকা রোদের ছোঁয়ায় আমরা বাইক নিয়ে সাতক্ষীরার উদ্দেশ্যে ছুটে চললাম।

20230811_175714.jpg

20230811_181014.jpg

20230811_181018.jpg

20230811_181616.jpg

20230811_182203.jpg

20230811_182835.jpg

20230811_182855.jpg

20230811_183912.jpg

20230811_183923.jpg

সাতক্ষীরা-খুলনা হাইওয়ে।

what3words address.
https://w3w.co/streetcar.wagers.fast

শেষ বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরোটা সময় সাতক্ষীরা খুলনা হাইওয়ে রাস্তায় ছিলাম আর সেই হাইওয়ে রাস্তার সৌন্দর্যটা আমাদেরকে প্রতিনিয়ত মুগ্ধ করেছে। রাস্তার দুইপাশ দিয়ে ফাঁকা মাঠ আর শেষ বিকেলের মিষ্টি রোদ সবমিলিয়ে সময়টা মনে রাখার মতই ছিল। আর এমন ফাঁকা রাস্তায় বাইক চালানোর তো মজাই আলাদা। যদি ছবিগুলো দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন আসলে হাইওয়ে রাস্তাটা কতটা সুন্দর ছিল। আমরা যখন খুলনায় এরিয়া শেষ করে সাতক্ষীরায় প্রবেশ করলাম তখন একটি বড় সাইনবোর্ডে সাতক্ষীরা শহরের দূরত্ব উল্লেখ করা ছিল। যেহেতু আমাদের সাতক্ষীরা শহর থেকে আরও ৩০ কিলোমিটার ভেতরে যেতে হবে তাই আমরা বেশ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। যাওয়ার সময় আমরা মাইকেল মধুসূদন দত্তের সেই কপোতাক্ষ নদের উপর দিয়ে গিয়েছিলাম। ছবিতে যে ব্রীজটা দেখতে পাচ্ছেন আর যে নদী দেখতে পাচ্ছেন সেটাই কপোতাক্ষ নদ। সেখানে একটি বড় সাইনবোর্ডে বিষয়টা উল্লেখ করা ছিল। দিনের আলো থাকা পর্যন্ত কিছু ছবি তুলেছিলাম সেগুলো শেয়ার করেছি আর রাত্রিবেলার ছবিগুলো আর শেয়ার করা হয়নি যাই হোক বাকিটা পরবর্তী পর্বে শেয়ার করব।



বন্ধুরা, এটিই ছিল আমার আজকের আয়োজনে, আশাকরি আপনাদের সবার কাছেই ভালো লেগেছে।এই ভ্রমণ কাহিনী পড়ে আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে সেটা কমেন্ট বক্সে আমাকে জানাবেন। আর আমার ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন 🙏


আমার পরিচয়


20231103_120723-01.jpeg

আমি কাজী রায়হান।আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।



break .png

Banner.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 5 months ago 

সাতক্ষীরা ভ্রমণ করছেন দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। খুলনা সেনানিবাস এরিয়া এবং পরিবেশ বেশ সুন্দর। রাস্তা গুলো ও দেখতে আরো বেশি সুন্দর লাগতেছে। আপনার ফটোগ্রাফির মাধ্যমে খুলনার গুরুত্বপূর্ণ জায়গা গুলো তুলে ধরেছেন। আপনার পোস্ট দেখে খুলনা শহর এক নজরে ঘুরে দেখলাম। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।

 5 months ago 

হ্যাঁ খুলনা সেনানিবাস এরিয়াটা অনেক সুন্দর বলতে গেলে সবুজে ঘেরা।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

বাইক লাভারদের জন্য বাইক টুর আসলেই অনেক স্পেশাল। সাতক্ষীরা ভ্রমণের পঞ্চম পর্ব আজ শেয়ার করেছেন যা পড়ে ভালো লাগলো। ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারণ ভাবে ক্যাপচার করেছেন। যদিও ব্যস্ততার কারণে এই টুর আমার মিস হয়ে গেছে। নেক্সট টাইম অন্য কোথাও যাবো ইনশাল্লাহ। ধন্যবাদ আপনাকে ভ্রমণ পোস্ট শেয়ার করার জন্য

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

হ্যাঁ ঈদের পরে প্ল্যান করলে মন্দ হয় না কিন্তু।

Posted using SteemPro Mobile

 5 months ago 

সাতক্ষীরা ভ্রমণের সবগুলো পর্ব আমি দেখে আসছি৷ আজকে এর পঞ্চম পর্ব দেখেও খুবই ভালো লাগলো৷ খুব সুন্দর ভাবে আপনি পঞ্চম পর্বটিও শেয়ার করেছেন৷ আপনার এই ভ্রমণের প্রত্যেকটি পর্ব আমি একের পর এক দেখে যাচ্ছি৷ খুব সুন্দর ভাবে আপনি সবগুলো পর্বের মধ্যে খুব সুন্দর সুন্দর কিছু সময় অতিবাহিত করছেন তা আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন এবং সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফিও আমাদের মাঝে শেয়ার করে যাচ্ছেন। আশা করি আরো অনেকগুলো পর্বের মাধ্যমে অনেক সুন্দর কিছু সৌন্দর্য দেখতে পারব৷ অসংখ্য ধন্যবাদ৷

 5 months ago 

হ্যাঁ সামনে আরো অনেকগুলো পর্ব শেয়ার করব ইনশাল্লাহ।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59467.52
ETH 2609.98
USDT 1.00
SBD 2.38