মানুষের দ্বারাই অমানবিক কাজ। || by @kazi-raihan

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago (edited)

আসসালামু আলাইকুম


হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।

আজ - ২০শে বৈশাখ | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | গ্রীষ্ম-কাল |


আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।



1000067637.png

Canva দিয়ে তৈরি



আমাদের সমাজে দুই ধরনের লোক বাস করে। একশ্রেণীর লোক আছে যাদের কাজের প্রশংসা করতে হয় আর এক শ্রেণীর মানুষ আছে যারা প্রতি নিয়ত অমানবিক সব কাজের সাথে নিয়োজিত থাকে। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব হওয়া সত্ত্বেও কিছু কিছু মানুষের কর্মকাণ্ডে এতোটা কষ্ট লাগে যেটা আসলে ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমার মনে হয় সমাজে এই জাতীয় লোকের সংখ্যাই বেশি যারা প্রতিনিয়ত মানুষের ক্ষতি করার চেষ্টা করে, কোন সময় মানুষের ভালো চায় না। যার কারণে বর্তমান সময়ে কোন ভালো কাজ করতে গেলে একটু বেশি বাধা আসে কিন্তু আপনি যদি কারো ক্ষতি করার চেষ্টা করেন বা অসামাজিক কাজের সাথে জড়িত থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার কাজের খুব একটা বাধা আসবে না। যদি এর বাস্তব উদাহরণ দেখতে চান তাহলে আপনার আশপাশে ঘটে যাওয়া অমানবিক কিছু কাজের বিষয়টা বিবেচনা করলেই বুঝতে পারবেন।

সাম্প্রতিক বাংলাদেশে একটি ঘটনা বেশ ভাইরাল। রাস্তার অসহায় বৃদ্ধ মানুষকে পুঁজি করে নিজে লোক দেখানো মানবিক কাজ করেছে আর দেওয়ালের আড়ালে যতসব অমানবিক কাজ করেছে। বিষয়টা কতটা ঘৃণিত একটু চিন্তা করে দেখুন। একটি নিউজে দেখলাম মানুষগুলোকে রাস্তা থেকে এনে একটি আশ্রম কেন্দ্রে রাখা হয় আর তার শেষ পরিণতি এমন লোক গুলোর শরীর থেকে কিডনি সহ আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস অস্ত্র পাচারের মাধ্যমে বের করে নেওয়া হয়। প্রথমে যখন লোকটার ভিডিও দেখতাম তখন বেশ ভালোই মনে হতো। আসলে লোকটি এই বৃদ্ধাশ্রমটি খুলে তাদের স্বার্থ হাসিল করেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে থেকে বিভিন্ন মানুষের কাছে থেকে কোটি কোটি টাকা অনুদান নিয়ে সেটা নিজে ভোগ করেছে শুধু তাই নয় শেষ বয়সের মানুষ গুলোকে নিজের পুঁজি হিসেবে বিক্রি করেছে। একজন মানুষ কতটা নিচে নামতে পারলে এরকম কাজ করতে পারে একটু চিন্তা করে দেখুন।



সাম্প্রতিক কুমিল্লার ঘটনাটি সম্পর্কে হয়তো অনেকেই জানেন। নয় বছরের একটি শিশুকে কিভাবে হত্যা করা হয়েছে। মানুষ নামের পশু ছাড়া এরকম কাজ করা তো অসম্ভব। মাত্র নয় বছরের একটি শিশুকে কিভাবে হত্যা করা হয়েছে তার বিবরণ দিতে গিয়ে RAB সদস্য কান্নায় ভেঙে পড়ে। আমরা সবাই হয়তো কম বেশি মানবিক কাজে নিয়োজিত থাকি তবে তারপরেও দেখুন আমাদের আশপাশেই কিছু এমন মানুষ রয়েছে যারা পশুর চেয়েও জঘন্যতম কাজ করে। যেটা আমরা নিজেরাই বলতে পারি না আবার বলতে গেলেও নিজেদের আবেগ ধরে রাখতে পারি না। তাহলে বুঝুন মানুষের দ্বারাই অমানুষিক কার্যকলাপ সংঘটিত হয় এটা কি সত্য নয়?? আমার মাঝে মাঝে মনে হয় যারা এ ধরনের কাজ করে তাদের মনে কি একটুও মায়া দয়া নেই এ ধরনের কাজগুলো করার সময় তাদের কি মনে একটুও বাধা দেয় না?? এই জাতীয় মানুষগুলোর কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত যেন পরবর্তীতে কেউ এ ধরনের কাজ করতে গিয়ে ভয় পায়।



প্রতিটা দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি মানুষের চাহিদা বৃদ্ধি পেতে থাকে তবে সেই চাহিদা পূরণ করতে গিয়েই আমার মনে হয় এরকম সব অমানবিক কার্যকলাপ এর সাথে জড়িয়ে যায়। মানুষ নিজেদের বিবেক বুদ্ধি হারিয়ে ফেলে। বর্তমান সময়ে প্রতিটা দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে মানুষের টাকার প্রতি লোভ প্রতিনিয়ত বাড়ছে আর এই টাকা রোজগার করার জন্য মানুষ বিভিন্ন পথ অবলম্বন করছে কেউ সৎপথে আয় করার চেষ্টা করছে আবার কেউ অসৎ পথে আয় করার চেষ্টা করছে। তবে যারা স্বল্প সময়ে ধনী হওয়ার চেষ্টা করছে তারা বেশিরভাগ সময় অসৎ পথ অবলম্বন করে টাকা রোজগার করছে। আর যারাই অসৎ পথ অবলম্বন করে টাকা রোজগার করছে তারাই এরকম অমানবিক সব পথ বেছে নিচ্ছে। এই অসৎ পথে অমানবিক কার্যকলাপ এর সাথে জড়িয়ে টাকা রোজগার করে সেটার সার্থকতা কি?? হয়তো যদি তারা মনটা নরম করে এই অমানবিক কার্যকলাপের বিষয়টা চিন্তা করত তাহলে হয়তো আজকে আমাদের সমাজে এই অমানবিক কাজগুলো এরকম প্রতিনিয়ত ঘটতো না। কিন্তু তারা তো টাকার নেশায় অন্ধ হয়ে গিয়েছে কোনটা মানবিক আর কোনটা অমানবিক সেটা যেন ভুলেই গিয়েছে।



ঢাকার শহরসহ আশপাশের অনেক শহরেই কিন্তু মাঝে মাঝে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন ক্ষতিকারক রঙ দিয়ে তৈরি খাবারের কারখানা সিলগালা করা হচ্ছে। মানুষ সামান্য কিছু টাকার জন্যই খাবারের সাথে এরকম সব অস্বাস্থ্যকর জিনিসগুলো মিশিয়ে বাজারজাত করছে। একবারও চিন্তা করছেনা ছোট বাচ্চাদের এই খাবারগুলো খাওয়ানোর পরে তাদের শরীরে কিরকম প্রভাব পড়তে পারে। সে নিজের ছেলে মেয়ে সন্তানদেরকে ভালো রাখার জন্য অন্যের ছেলে মেয়ে সন্তানদেরকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে চিন্তা করুন যে মানুষটা এই অস্বাস্থ্যকর ক্ষতিকারক খাবারটি প্রস্তুত করছে তাকে যখন খাবারটি খেতে বলা হয় সে নিজেই খেতে অস্বীকার করে। যে খাবারটি নিজে খেতে পারবে না সে খাবারটি অন্য একজন মানুষটি কিভাবে খাবে সেটা একটু চিন্তা করে দেখেনা। যারা এরকম অমানবিক সব কাজের সাথে জড়িত তারা যদি বুঝতে পারতো সবাই যদি মানবিক কাজে নিয়োজিত থাকতো তাহলে আমাদের সমাজের ব্যাপক পরিবর্তন হতো‌। কেউ না খেয়ে মারা যেত না, কেউ চিকিৎসার অভাবে মারা যেত না, কেউ নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য অন্যের জীবন ঝুকির মুখে ফেলত না। সেক্ষেত্রে আমাদের পৃথিবীটা হতো স্বর্গের সুখের স্থান।





🔚সমাপ্তি🔚




এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।

সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan



আমার পরিচয়


20231121_224724-01.jpeg

আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।



break .png

Banner.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 3 months ago 

হ্যাঁ ভাই মানুষকে এভাবে অমানুষের পরিচয় দিয়ে চলেছে প্রতিনিয়ত। কিছু কিছু ঘটনা আমাদের চোখে আসে মিডিয়ার মাধ্যমে আবার কিছু কিছু ঘটনা আমাদের চোখ থেকে এড়িয়ে যায়। তবে আমাদের সকল মানুষকে সজাগ ও সচেতন হতে হবে এই সমস্ত বিষয়গুলোতে এবং খুব শক্তভাবে দমন করতে হবে।

 3 months ago 

হ্যাঁ ভাই, আপনি ঠিক বলেছেন।

 3 months ago 

হ্যাঁ ভাইয়া মানুষ প্রতিনিয়ত এভাবে পশুদের পরিচয় দিয়ে চলেছে। এ সমস্ত ঘটনাগুলো জানলে আমার খুবই কষ্ট লাগে। তবে প্রায় এমন এমন ঘটনা আমরা শুনে থাকি। এ সমস্ত বিষয়গুলো দূর করতে হলে দেশের আইন আরো কঠোর হতে হবে। জনসাধারণেরও হতে হবে অনেক সতর্ক। খুব সুন্দর একটা বিষয় আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 3 months ago 

ঠিকই বলেছেন আইনগতভাবে একটু কঠোর হলে এই সমস্ত ঘটনা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

 3 months ago 

আসলে আমাদের সমাজটাই এখন এমন এখানে আপনি ভাল কাজ করতে গেলে বাধা পাবেন কিন্তু খারাপে কাজে কেউ বাধা দিবে না।সাম্প্রতিক যে বৃদ্ধাশ্রমে কাহিনীটা হয়েছে এটার সঠিক তদন্ত ছাড়া কিছু বলা ঠিক না।আমরা চায় সঠিক তদন্ত হোক এতে মানুষ বুঝতে পারবে দিন শেষে কেউ বিশ্যাসের যোগ্য না।কুমিল্লার ঘটনাটি খুবই রিদয় বিদারক।এদের কঠিন শাস্তি হোক।

 3 months ago 

দিনশেষে নিজের জায়গা থেকে নিজেকে অসহায় মনে হয় তারা আর কি বলবো।

 3 months ago 

আসলে আমাদের আশেপাশে থাকা মানুষগুলো এত বেশি হিংস্র হয়ে পড়তেছে যে, কখন কি করতেছে এটার যেন কোন ঠিক নেই। তারা নিজেও যেন বলতে পারবে না, তারা কি করতেছে। ৯ বছরের শিশুটার কথা আমি শুনেছিলাম। তখন তো চোখে জল চলে এসেছিল। সত্যি এরকম ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না একেবারে। মানুষ কিভাবে এত হিংস্র হতে পারে। বৃদ্ধাশ্রম এর জায়গায় এরকম কিছু হচ্ছে, এগুলো ভাবতেই তো খারাপ লাগতেছে। সমাজে এরকম মানুষদের টিকে থাকাই যেন মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। সবার সামনে কে অপরকে খুন করে দিচ্ছে, এরকম কিছু কিভাবে মেনে নেয় মানুষ। এরকম অমানবিক কাজ পশুরাও করবে না, মানুষরা যেভাবে করে। হিংস্র পশুর থেকেও খারাপ হয়ে যাচ্ছে এই মানুষগুলো।

 3 months ago 

সত্যি বলতে আপু যত দিন যাচ্ছে সমাজব্যবস্থা যেন আরো বেশি ভয়ঙ্কর হচ্ছে।

 3 months ago 

ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। হ্যাঁ ভাই আপনি ঠিকই বলেছেন মানুষের দ্বারাই অমানবিক কাজ বেশি হয়ে থাকে। আজ আমাদের সমাজে অনেকেই আছে যারা শুধু টাকাই চিনে। আজকে কয়েকজন মানুষ আছে যারা টাকার জন্য সব কাজ করতে রাজি। যেমন তারা সামান্য কিছু টাকার জন্যই খাবারে অনেক কিছু মিশিয়ে দিচ্ছে। আর এটা ঢাকা শহরে বেশী হচ্ছে যা আপনার পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 3 months ago 

আসলে এই ঘটনাগুলো শহর অঞ্চলে বেশি লক্ষ্য করা যায়। যাই হোক মতামত করার প্রশ্ন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 3 months ago 

বেশ কিছুদিন যাবৎ দেখছি বিষয়টি নিয়ে পুরো অনলাইন মিডিয়া ভাইরাল । যার ছায়া পড়েছে আমাদের কমিউনিটিতেও। বেশ কয়েকটি পোস্ট করা হয়েছে এই বিষয়টি নিয়ে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো এ কেমন দেশ যেখানে একজন মানুষ অনেক বছর ধরে এমন একটি কাজ করেই যাচেছ? যেখানে সরকারের কোন নিয়ম কানুন নেই। আমার মতে এই জন্য সবার আগে সরকার কে দায় স্বীকার করতে হবে।

 3 months ago 

আপনি সঠিক কথা বললে আপনাকে সরকার বিরোধী বলে আখ্যায়িত করা হবে সে দেশে আর কি আশা করতে পারেন।

 3 months ago 

খারাপ মানুষগুলো ছাড়া এরকম অমানবিক কাজ আর কেউই করে না এবং করতে পারে না। মানুষ কেন যে এগুলো করে এটাই বুঝি না। একজন মানুষ নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্য আরেকজন মানুষকে মেরে ফেলতে তার হাতও কাঁপে না। আমি তো মাঝে মাঝে শুধু এটাই ভাবি, মানুষ কিভাবে হতে পারে এতটা হিংস্র। ছোট বড় কিছুই মানে না তারা। নয় বছরের বাচ্চাটার কথা শুনেছিলাম যখন তখন অনেক বেশি কষ্ট হয়েছিল। আর বৃদ্ধাশ্রম এর কথা শুনে তো তাদের উপর অনেক বেশি রাগ হয়েছিল। শেষ বয়সে এগুলো সহ্য করতে হয়েছে।

 3 months ago 

আসলে বিষয়টা নিয়ে বলার মত কিছু আর নেই যাইহোক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 69629.04
ETH 3375.52
USDT 1.00
SBD 2.74