ঈদ কেনাকাটা। || by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ -২৭শে চৈত্র | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | বুধবার | বসন্তকাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
ঈদ মানে খুশি ঈদ মানে আনন্দ ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য সবাই দূর দূরান্ত থেকে আপন ঠিকানায় পাড়ি জমায়। সামান্য কয়েক দিন ছুটি থাকার পরেও পরিবার-পরিজনের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্যই গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসে। ঈদের বিশেষ এই দিনটি স্পেশালভাবে উপভোগ করার জন্য সবাই সবার সাধ্যমত কম বেশি কেনাকাটা করে। আমাদের গ্রুপে আমরা যারা আছি তারা ঘুরতে বেশি পছন্দ করি। আমাদের গ্রুপে রমজান মাসের নির্দিষ্ট একটি দিনে সবাই মিলে তারাবির নামাজ শেষ করে কিছু কেনাকাটার উদ্দেশ্যে বের হই। মূল উদ্দেশ্য থাকে হালকা কিছু কেনাকাটার পাশাপাশি সারারাত ঘোরাঘুরি করা। সারারাত ঘুরাঘুরি শেষে শেষ রাত্রে বাসায় এসে সেহরি খেয়ে ঘুমানো। রমজানের শুরু থেকেই আমাদের এই প্লানিংটা ছিল। ২৭ টা রোজা শেষ হওয়ার পরে আমরা সবাই কেনাকাটা এবং ঘুরাঘুরির জন্য বের হই বলতে গেলে ২৭ রমজান শেষে তারিখটা যেন আমাদের জন্য ফিক্স করা। রমজানের শেষের দিকে সবাই ছুটিতে বাড়ি চলে আসে তার কারণে একটু লেট করেই দিনটা ঠিক করা। যাতে আমাদের গ্রুপের সবাই একসাথে এই আড্ডাটা উপভোগ করতে পারি।
২৭ রমজান শেষে অর্থাৎ ইফতারি শেষ করে সবাই যে যার মত প্রস্তুতি নিয়ে নিলাম। আমি দোকানে ইফতারি করে আবার বাসায় গিয়ে পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়ে দোকানে এসে সবার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। রাহুলের গাড়িতে একটু কাজ বাকি ছিল যার কারণে একটু দেরি হচ্ছিল তাছাড়া ঈদের সময় সব দোকানে কমবেশি ভিড় থাকে তাই একটু দেরি হচ্ছিল। সবাই আমাদের এলাকার গার্লস স্কুলের সামনে রাত নয়টার সময় উপস্থিত হলো। সেখানে পর্যায়ক্রমে আমাদের গ্রুপের সকলেই চলে আসলো। আমরা ধীরে ধীরে রাত নয়টার সময় কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম আর সবাই মনে মনে বলছিলাম ইস যদি এখন একটু বৃষ্টি হত তাহলে অনেকটাই অ্যাডভেঞ্চার টাইপের একটা ট্যুর হত। যদিও প্রতিবছর এই কাঁচা আম খাওয়া হয় তবে এই বছরে আর গাছে আম বড় হয়নি যার কারণে আমের আইটেমটা মিস হয়েছে। আমরা সোজা কুষ্টিয়া ইজি ব্র্যান্ডের শোরুমের সামনে গিয়ে প্রথমে দাঁড়ালাম। সেখানে বাইক রেখে শোরুম এর ভেতরে গিয়ে সবাই কিছু প্রোডাক্ট দেখলাম তবে রাত হওয়া সত্বেও মার্কেটে প্রচন্ড ভিড় ছিল। যদি ছবিটা দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন আসলে শোরুম এর মধ্যে কতটা ভিড় ছিল। আমার যেহেতু বেশ কিছু কেনাকাটা ছিল তাই আমি আর সময় নষ্ট না করে বক চত্বরে বেবি শপের শোরুমে চলে আসলাম আর আমার ভাতিজার জন্য কয়েকটা ড্রেস দেখলাম। যদিও তুলনামূলক বাচ্চাদের ড্রেসের অনেক দাম। ছবিতে যে ড্রেস দেখতে পাচ্ছেন সেটা ১২০০ টাকা নিয়েছিল। আর বাসায় পড়ার জন্য একটা ড্রেস নিয়েছিলাম সেটা নিয়েছিল ২৫০ টাকা। তখনও তার জুতা কেনা বাকি তাই আবার আড়ংয়ের গেলাম ভাতিজার জুতা কেনার জন্য।
আড়ংয়ের নিচতলায় শুধু মেয়েদের কালেকশন আর দ্বিতীয় তলায় ছেলেদের সহ বাচ্চাদের কালেকশন আছে। আড়ং থেকে কেনার মত তেমন কিছু ছিল না শুধু ভাতিজার জুতা কেনার প্রয়োজন ছিল তাই যেখানে বাচ্চাদের কালেকশন সোজা সেখানে গেলাম। জুতার কালেকশনে গিয়ে প্রথমে যে জুতাটা দেখলাম সেটাই পছন্দ হয়ে গেল। জুতাটা পুরোপুরি চামড়া দিয়ে তৈরি তুলনামূলক দামটাও বেশ চড়া। ছবিতে ছোট্ট যে জুতা দেখতে পাচ্ছেন সেটার দাম ছিল এক হাজার টাকা। যাই হোক ভাতিজার জন্য কিনব টাকা তো ফ্যাক্ট না। ১০০০ টাকা দিয়ে ভাতিজার জন্য জুতাটা নিয়ে নিলাম। আপাতত ভাতিজার কেনাকাটা শেষ করে নিজের জন্য কিছু কেনার জন্য চিন্তা করেছিলাম তখন মনে হল রমজানের আগে তো লোফার কিনেছি কিন্তু পাঞ্জাবির সাথে যদি চটি স্যান্ডেল হয় তাহলে বেশ মানাবে তাই কয়েকটি দোকানে চটি স্যান্ডেল দেখলাম কিন্তু পছন্দ হলো না। আসলে দোকানগুলোতে প্রচন্ড ভিড় ছিল যার কারণে ছবি তোলা হয়নি। পরবর্তীতে লোটো শোরুমে গেলাম। লোটোর লিকপার থেকে চটি স্যান্ডেল পছন্দ করলাম আর সেটা পায়ের সাথে বেশ ম্যাচিং হয়েছিল। ১৫৯০ টাকা প্রাইজ ছিল কিন্তু ঈদের অফার থেকে ৩০০ টাকা ক্যাশব্যাক পেয়েছিলাম। ট্রাইল দেওয়ার পর ৪২ সাইজ টা নিয়ে আবার শার্ট কেনার জন্য সামনের দিকে গেলাম। কয়েকটি শোরুম দেখার পরে mens world এ গিয়ে একটি শার্ট পছন্দ করলাম তবে তুলনামূলক দামটা অনেক বেশি। শার্টের দাম ছিল ২১৫০ টাকা তবে কাপড়টা অনেক ভালো ছিল। সাধারণত ব্র্যান্ডের শার্টগুলো পড়ে অনেক মজা তাই সেখান থেকেই শার্ট নিলাম। আর আমি যেহেতু export এর প্যান্ট পড়ি তাই এক্সপোর্টের দোকান থেকে অল্প দামেই একটি প্যান্ট নিয়েছিলাম। হঠাৎ ছোট ভাই বাসা থেকে ফোন দিয়ে বলল তার জন্য যেন একটি কালো পাগড়ী নিয়ে আসি। সে আবাসিক মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে যার কারণে জুব্বার সাথে পাগড়ী পড়লে বেশ ভালো লাগে তাই তার জন্য আবার কালো পাগড়ি কিনতে গেলাম। পাগড়ী কেনার পরেই আপাতত ঈদের শপিং শেষ করলাম। ফোন করে জানতে পারলাম সবাই যে যার মত পারছে কেনাকাটা করছে আর ঘোরাঘুরি তো চলছেই।
যত সময় শোরুম গুলো খোলা থাকবে তত সময় আমরা ঘোরাঘুরি করব আর পোশাক দেখব। সাড়ে বারোটা পার হওয়ার পরে দোকানপাট বন্ধ হতে শুরু করল। রাত একটার মধ্যেই অনেক দোকান বন্ধ হয়ে গেল তখন আমরা ভাবলাম এবারে বাসার দিকে যাওয়া যাক কেননা তিনটার মধ্যেই বাসায় পৌঁছাতে হবে। বাসায় গিয়ে যেহেতু সেহরি খেয়ে তারপর ঘুমাতে হবে। আমরা বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম ঠিক তখনই রেলগেটের সামনে গেটম্যান গেট নামিয়ে দিল বুঝতে পারলাম খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা গামি সুন্দরবন এক্সপ্রেস ঢাকার উদ্দেশ্যে যাবে। হুট করে ট্রেন ক্রসিং করে আমরা বাইকের তেল নেওয়ার জন্য পাম্পে গেলাম। তেল নেওয়া শেষে কয়েকজন আবার বলে উঠল তাদের নাকি একটু ক্ষুদা পেয়েছে। তাই তারা আবার হোটেলে গিয়ে খিচুড়ি আর ডিম খেলো। আমি বলছিলাম এখন রাত একটার বেশি বাজে যদি খিচুড়ি আর ডিম খাই তাহলে আর সেহরির সময় খেতে পারব না আমি খাব না তোমরা যে যে খেতে চাও খাও। ৬ জন খিচুড়ি ভাত খেতে গেল আর বাকি সবাই বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলাম। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমরা সোজা রওনা হলাম আর কুমারখালী তরুণ মড়ে এসে আমরা একটি চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে চায়ের বিরতি নিলাম। চায়ের দোকানে চা খাওয়ার জন্য চায়ের অর্ডার দিলাম। তখন ঘড়ির কাঁটায় রাত দুইটার বেশি বাজে। হাইওয়ে রাস্তা দিয়ে মাঝে মাঝেই বেশ গতির সাথে গাড়িগুলো পার হচ্ছে আর তার পাশে বসে আমরা সবাই চা খাচ্ছি তবে দোকানে সবচেয়ে একটি জিনিস ভালো লাগলো সেখানে অনেক কিউট একটি বিড়াল ছিল। সেখান থেকে চা খাওয়ার পরে সোজা বাসায় চলে আসলাম আর বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে সেহরি খেয়ে তারপরে ঘুমালাম। যেহেতু কালকে ঈদ তাই আজকে শেয়ার করলাম ঈদের পরে ঈদের কেনাকাটা শেয়ার করলে বিষয়টা কেমন দেখায় যার কারণে চাঁদ রাতে শেয়ার করলাম।
⬇️📥 | ⬇️📥 |
---|---|
ডিভাইস | Samsung galaxy A52 |
ফটোগ্রাফার | @kazi-raihan |
লোকেশন | |
সময় | এপ্রিল,২০২৪ |
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
https://x.com/KaziRai39057271/status/1778105975347741161
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বাহ! আমিও অনেক ফ্রেন্ডের থেকে শুনেছিলাম তারা শপিং করেই চাঁদরাতে। এটার নাকি মজাই আলাদা। আজ আপনার পোষ্ট পড়েও সেরকম ভাইভ পেলাম। যেহেতু ২৭ রমজানের সময় ইতিমধ্যে প্রায় সুকলেই চলে আসে, তাই সকলে মিলে একসাথে শপিং করা আড্ডা দেয়া যায়। আর ঈদের উপলক্ষে ছাড় ও পেয়েছেন। মেনস ওয়ার্ল্ড থেকে কেনা শার্টটাও আমার পছন্দ হয়েছে৷ পাঞ্জাবি কই? পাঞ্জাবি দেখলাম না যে?
আসলে দিদি কিছুদিন আগে একটা পাঞ্জাবি কেনা হয়েছিল মাত্র একদিন পড়েছি তাই আর নতুন পাঞ্জাবি কেনা হয়নি।
রমজানের শেষের সময়টাতে সবাই ঈদ উদযাপন করতে বাড়ি চলে আসে।আর তাই এই ২৭ রমজান পর রাত করে কেনাকাটা ঘোরাঘুরি করতে সবাই মিলে ভালো ই লাগার কথা।আপনি আপনার অনুভূতি গুলো খুব চমৎকার ভাবে তুলে ধরেছেন। ভাতিজার জন্য নিজের জন্য কেনাকাটা করলেন।ধন্যবাদ ভাইয়া অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
আপনার সুন্দর মতামত আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।