ঈদ মোবারক। || by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ -২৯শে চৈত্র | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | বসন্তকাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
একমাস রোজা রাখার পরে যখন ঈদ আসে নিজের মনের কাছে ঈদের আনন্দটা একটু স্পেশালি মনে হয়। নতুন জামা কাপড়ের সাথে ঈদের আনন্দটা উপভোগ করেছি। চাঁদ রাত থেকেই ঈদের দিনের প্ল্যানিং করছিলাম। এমন কি চাঁদরাত্রে প্রায় রাত একটা পর্যন্ত বাইক নিয়ে সবাই এদিক-সেদিক ঘুরেছি। শেষে ঘুমোতে প্রায় রাত দুইটা বেজে গিয়েছিল, ঠিক ৪:৪৫ মিনিটে ঘুম থেকে উঠে চারিদিকে যেন ঈদের আমেজ বয়ে যাচ্ছিল। মনের মধ্যে অন্যরকম অনুভূতি কাজ করছিল আজকে ঈদ তাই একটু বেশি খুশি খুশি লাগছিল। সকাল থেকেই ছোটখাটো কাজগুলো শেষ করে বাইক ওয়াশ করলাম। আসলে যেখান থেকে বাইক ওয়াশ করি সেখানে ঈদ উপলক্ষে এত ভীড় ছিল যার কারণে আর সেখানে বাইক দেওয়া হয়নি। তাছাড়া কয়েকদিন একটু ব্যস্ত ছিলাম যার কারণে সময় হয়ে ওঠেনি তাই নিজে নিজেই ঈদের দিন সকালে বাইক ওয়াশ করলাম। পরবর্তীতে গোসল খাওয়াতে শেষ করে নতুন জামা কাপড় পড়ে সবাই রেডি হয়ে নিলাম। যেহেতু এক মাস রোজা রাখার পরে দিনের বেলায় খাওয়া দাওয়া করব তাই সোজা ডাইনিং টেবিলে গিয়ে বসতেই দেখলাম বড় বড় চিংড়ি মাছের ভুনা, আহ দেখে আর দেরি সইছিল না প্লেট নিয়ে বসে গেলাম।
সবাই একসাথে খাওয়া দাওয়া করে ওযু করে ঈদগাহ ময়দানে নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে বের হলাম। ঈদের দিন টা স্মরণীয় করে রাখার জন্য সবাই একসাথে অনেকগুলো ছবি উঠলাম। ছবি ওঠার পর্ব শেষ হয়ে আমি আর আব্বু আবার ছবি উঠলাম। যেহেতু আমাদের বাড়ি আর আমার দাদার বাড়ি থেকে একটু বাইরে তাই সেখান থেকে আবার দাদার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। কেননা সেখানে আমার চাচা সহ দাবি সেখানেই থাকে। ঈদের নামাজে যাওয়ার আগে দাদির সাথে দেখা করলাম চাচা চাচি সহ চাচাতো ভাই বোনদের সবার সাথে দেখা করলাম। এখন বড় হয়ে গিয়েছি তাই আর আমাকে কেউ ঈদ বোনাস দেয় না উল্টা আমাকেই ছোটদেরকে ঈদ বোনাস দিতে হয়। আব্বু সবাইকে ঈদ বোনাস দিল আর দাদিকে বড় এমাউন্টের ঈদ বোনাস দিল। বোনাস আদান-প্রদানের পর্ব শেষ হওয়ার পরে আমরা সবাই একসাথে ঈদ্গাহ ময়দানের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। আমাদের ঈদগাহ ময়দানে সকাল ৯ টায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল তাই মাইকে বারবার বলছিল ঠিক নয়টার সময়েই ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে আপনারা দেরি না করে দ্রুত ঈদগাহ ময়দানে চলে আসুন।
ঈদগাহ ময়দানে গিয়ে আমরা মাঝামাঝি জায়গায় গিয়ে বসলাম কারণ আমাদের ঈদগাহ ময়দানে যেখানে নামাজ আদায় করা হয় সেখানে বেশ কয়েকটি বড় বড় গাছ আছে। যেহেতু কম বেশি ভালোই রোদের প্রভাব ছিল তাই আমরা গাছের নিচে গিয়ে জায়নামাজ বিছিয়ে পর্যায়ক্রমে সবাই বসে পড়লাম আর ইমাম সাহেব আলোচনা করছিল সেটা শুনছিলাম। তারপর পরবর্তীতে ঈদগাহ ময়দানের বাৎসরিক খরচ কত টাকা আয় ব্যয় হয়েছে সেটা উল্লেখ করা হয়েছিল এবং আমাদের ঈদগাহ ময়দানের কিছু উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে সেখানে কত টাকা খরচ হয়েছে আর সেই উন্নয়নমূলক কাজ বাবদ কত টাকা উঠেছে সেগুলো মাইকে বলছিল। তার পাশাপাশি যারা ঈদগাহ ময়দানের উন্নয়নমূলক কাজে অংশ নিয়েছে তাদের নাম উল্লেখ করেছিল। সবাই সবার স্বার্থ মতো ৫০০-১০০০ থেকে শুরু করে দশ হাজার পর্যন্ত অর্থ দিয়ে ঈদগা ময়দানের উন্নয়নে মূলক কাজে অংশ নিয়েছিল। ঘড়ির কাটায় সকাল ৯ টা বেজে গিয়েছিল তখন ইমাম সাহেব সবার কাছ থেকে ১০ মিনিট সময় চেয়ে নিলেন আর বলছিলেন যেহেতু ঈদুল ফিতরের নামাজ ১০ মিনিট সময় আপনাদের কাছ থেকে চেয়ে নিচ্ছি ঈদুল আযহা হলে আর বাড়তি সময় নিতাম না। ১০ মিনিট সময় নিয়ে তিনি সবার উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বললেন এবং তার পরবর্তীতে তাই ঈদের নামাজ শুরু হল। ঈদের নামাজ শেষ করে সবাই মোনাজাতে নানা নানী দাদা তাদের জন্য দোয়া করছিল সেই সাথে যে সকল আত্মীয়-স্বজন গহীন কবরে শুয়ে আছে তাদের জন্য দোয়া করছিল। ঈদগাহ ময়দান থেকে সবার সাথে কোলাকুলি করে আবার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।
যেহেতু নামাজ শেষে সবাই বাসায় ফিরছিল তাই পথে প্রচন্ড ভিড় ছিল যেন সামনে পেছনে পা ফেলানো যাচ্ছে না। আমি ধীরে ধীরে কিছুটা এগিয়ে আসার পরে সাইড রাস্তা দিয়ে দ্রুত পার হয়ে আসলাম। ঈদগাহ ময়দানে যেখানে মেলা লেগেছিল সেখানে গিয়ে কিছু মিষ্টি সহ অন্যান্য খাবার কিনার ইচ্ছে ছিল কিন্তু এই ভিড়ের কারণে আর ভিতরে যাইনি। আব্বুকে ফোন করে দিলাম আব্বু মিষ্টি সহ কিছু শুকনা খাবার কিনে এনেছিল। উপরের কয়েকটি ছবি দেখলে বুঝতে পারবেন আসলে নামাজ শেষে কত মানুষের ভিড় ছিল। রাস্তার দুই পাশ দিয়ে বেশ কিছু দোকান বসে ছিল তার মধ্যে কয়েকটি দোকানের ছবি তুলেছিলাম। নামাজ শেষে বাসায় ফিরে রস মিষ্টির সাথে সেমাই খেয়ে ছিলাম বেশ মজা লেগেছিল। তবে সারাদিন একের পর এক মিষ্টি খাওয়ার পরে এখন পর্যন্ত মিষ্টি খাওয়ার প্রতি কোন আগ্রহ নেই বললেই চলে। এ বছরের ঈদ একদমই ভালো কাটেনি। কারণ নানা বাড়ির অনেকেই এবারের ঈদে বাড়ি আসেনি, যদি ঈদে তারা বাড়ি আসতো তাহলে হয়তো আনন্দটা আরও বেশি হত। তবে ঈদের দিন রাতে আমাদের যে প্ল্যানিং থাকে এ বছরে সেটা বাদ পড়েছে।
⬇️📥 | ⬇️📥 |
---|---|
ডিভাইস | Samsung galaxy A52 |
ফটোগ্রাফার | @kazi-raihan |
লোকেশন | |
সময় | এপ্রিল,২০২৪ |
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
https://x.com/KaziRai39057271/status/1778724386230686114
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আপনাকেও ঈদ মোবারক ভাই। আপনার ঈদে আনন্দও আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আসলে ঈদের আনন্দময় মুহূর্ত খুবই ভালো লাগে। পরিবারের সকলের সাথে নামাজ পড়া মুহূর্তটা অনেক আনন্দময় হয়। আর আপনার আজকের এই অনুভূতি জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো।
আপনার গোছানো মন্তব্য আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
প্রথমেই আপনাকে ঈদের শুভেচ্ছা ভাই। ঈদগাহ ময়দান মাঠে নামাজ পড়ার মধ্যে অন্য রকম অনুভুতি কাজ করে। যদিও অনেক দিন হলো ঈদগাহ ময়দান মাঠে নামাজ পড়া হয়নি। আপনার লেখা এবং ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। আপনাদের জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকবেন।
কেন ভাই ঈদগাহে নামাজ পড়েন নি কেন?
ঈদের অনেক শুভেচ্ছা ভাইয়া। খুব সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন ঈদের দিন। ঈদগাহে যাওয়ার আগে সবার সাথে দেখা করে গিয়েছেন। তবে আমি কিন্তু এখনো অনেক সালামি পাই। বলতে গেলে আদায় করে নেই সবার কাছ থেকে 😁
তবে আপনাদের ঈদের দিনের রাতের প্ল্যানিং এবার ক্যান্সেল হয়েছে জেনে খারাপ লাগলো।
ঈদের সালামি সহ আরো বোনাস কুরিয়ার করে পাঠিয়ে দিব।
ভাইজান আপনাকেও জানাই ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক ঈদ মোবারক। আশা করি ঈদের দিনটা বেশ সুন্দর কাটিয়েছেন। আপনজনদের সাথে নিয়ে। বিস্তারিত অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন কালকের দিনটা কেমন কেটেছে সে বিষয়ে ব্লগ তৈরি করে। খুবই ভালো লাগলো আপনার ঈদের দিন সম্পর্কে ধারণা পেয়ে।
আপনার সুন্দর মতামত শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
একটা মিল পেয়ে গেলাম ভাই। ঈদের দিন আমার বাড়িতে বড়বড় চিংড়ি মাছ ভুনা করেছিল। আমি নামাজ পড়ে এসে ঐটাই খেয়েছিলাম। আপনাদের এলাকার ঈদগাহ টা বেশ বড় এবং সুন্দর। মাঠের মধ্যে হওয়াই এবং অনেক গাছ থাকার দরুণ লাগছে বেশ দারুণ। নামাজ শেষ হলে মানুষের একটু চাপ হবে এটাই স্বাভাবিক। পরিবারের সবার সাথে বেশ ভালোই উৎযাপন করেছেন ঈদ টা ভাই।
আরে ভাই-ভাই বলে কথা রেসিপির মিল কেন সব কিছুর মিল থাকতে পারে।
ঈদ মোবারক ভাই। ঈদের দিনটা যে খুব ভালো করে কাটিয়েছেন তা আপনার পোস্ট পড়ে আর ছবিগুলো দেখেই বুঝতে পারলাম। আসলেই দীর্ঘ একমাস অপেক্ষার পর যখন আপনারা চাঁদ রাত দেখেছেন তখন থেকে ঘুম না আসারই কথা, তখন থেকেই মূলত আনন্দের শুরু হয়ে গিয়েছিল। আসলেই বড় হয়ে যাওয়ার কারণে আপনাকে বেশ বোনাস দিতে হয়েছে দেখছি, হি হি হি। দারুন কিছু খাবারের কথা বললেন যা শুনে জিভে জল চলে এলো।
ছোট সময়ে বোনাস নিয়েছি আর এখন বড় হয়ে গিয়েছি বলে বোনাস দিতে হচ্ছে।
বাহ চমৎকার একটি ঈদের দিন কাটালেন আপনি। আপনার শেয়ার করা ফটোগ্রাফির মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে পুরো গ্রামের মধ্যে ঈদের একটি বেশ আমেজ বয়ে গেল। সকাল থেকে আপনি অনেক কাজকর্ম করলেন। পরিবারের সাথে ঈদের নামাজ আদায় করলেন এবং খুব সুন্দর একটি সময় অতিবাহিত করলেন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আপনার দিনগুলো আরো ভালো কাটুক সেই দোয়া রইলো।
হ্যাঁ ঈদের দিন টা অনেক সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছিলাম।