ভূতুড়ে গল্প। || by @kazi-raihan

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

আসসালামু আলাইকুম


হ্যালো..!!
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।

আজ - ২রা বৈশাখ | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সোমবার | গ্রীষ্ম-কাল |


আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।



Screenshot_20240415_114243_Canva.jpg

Canva দিয়ে তৈরি



অনেকদিন পরে আজকে একটি ভুতুড়ে গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি। গল্পটা আমার এক চাচার মুখে শোনা, এটি একটি বাস্তব গল্প। ঘটনাটি ঘটেছিল আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে। আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি, প্রতিদিন রাতের বেলায় গল্প শোনার জন্য চাচার কাছে গিয়ে বসে থাকতাম কখনো ভুতুড়ে গল্প আবার কখনো হাসির গল্প বলতো। তৎকালীন সময়ে এলাকায় বিদ্যুতের প্রভাব পুরোপুরি ছড়ায়নি যারা নতুন বাড়ি করেছে তাদের বাড়িতে বিদ্যুৎ যায়নি। আমার আব্বুর কয়েকজন চাচাতো ভাই আমাদের ঈদগা গোরস্থানের পাশে গিয়ে নতুন বাড়ি করে। সেই বাড়িতে বিদ্যুতের লাইন তখনো ছিল না। তবে তারা অনেক সাহসী ছিল কোন কিছুতেই ভয় পেত না।

তখন ছিল গরমের দিন রাতের বেলায় প্রচন্ড গরম পরছে তারপর তাদের বাড়িতে বিদ্যুতের লাইন ছিল না যার কারণে ফ্যান দিতে পারছে না। গরম থেকে বাঁচার জন্য পাশের জানালা খুলে রেখেছে আর সেই জানালা খুললেই স্পষ্ট ‌ কবরস্থান দেখা যায়। যদিও কবরস্থান থেকে তাদের বাড়ির দূরত্ব বেশ খানিক। তবে কবরস্থানের আশপাশের গাছপালা সহ এরিয়াটা বেশ ভালোভাবেই দেখা যায়। আর তারা সারাদিন কবরস্থানের আশপাশ এরিয়াটা দেখাশোনা করে। তারা সবাই অনেক দরিদ্র ছিল যার কারণে সারাদিন কবরস্থানের আশপাশের যে জমিগুলো ছিল সেই জমিতে চাষাবাদের কাজ করতো। যেহেতু তাদের বাড়ির পাশের জমি তাই তারাই জমিগুলো চাষাবাদ করতো। সারাদিন প্রচন্ড গরম পড়েছে যার কারণে সন্ধ্যার পরেই খাওয়া দাওয়া শেষ করে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাছাড়া প্রচন্ড রোদের মাঝে সারাদিনে মাঠে কাজ করে শরীর অনেক ক্লান্ত তাই ঘুমোনোর জন্য একটু তড়িঘড়ি করছে। একটু গরমের প্রভাব বেশি দেখায় কবরস্থানের দিকে থাকা জানালাটি খুলে দিয়ে জানালার পাশে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। হালকা ঠান্ডা বাতাস আসছে মাঠের দিক থেকে যার কারণে ঘুমটা আরো ভালো হচ্ছে। জানালা দিয়ে তাকালে চাঁদের আলোয় সবকিছুই ভালোই দেখা যাচ্ছে চারিদিকে।



1000060469.jpg

Source



জানালার পাশ দিয়ে ঠান্ডা বাতাস আসছিল আর সেই ঠান্ডা বাতাসে ঘুমিয়ে পড়লেন। মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে যায়। প্রচন্ড গরমের কারণে কিছুটা পানি পিপাসা পেয়েছে মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে কিছুটা পানি পান করে বাইরে থেকে ঘুরে এসে আবার ঠিক একই জায়গায় জানালার পাশে মাথা দিয়ে ঘুমাতে গিয়েছে। জানালা দিয়ে কবরস্থানের দিকে তাকাতেই তিনি লক্ষ্য করলেন কবরস্থানের পাশে যে বড় লম্বা তালগাছ আছে সেই তাল গাছের ডালে কিছু একটা দেখা যাচ্ছে। তার মনে কৌতুহল সৃষ্টি হল আসলে জিনিসটা কি সেটা দেখার প্রতি তার আগ্রহ তৈরি হলো। তিনি জানালা দিয়ে বেশ কিছু সময় সেই তাল গাছের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। অনেকটা দূর থেকে বিষয়টা স্পষ্টভাবে দেখতে পারছিলেন না তবুও বিষয়টা উপলব্ধি করার চেষ্টা করছিলেন। তিনি দেখলেন তাল গাছের উপরে দুইটা আলো ঝিল মিল করে জ্বলছে আর মাঝে মাঝেই একটা আলো আর একটা আলোর উপরে বলের মতো জাম্প করছে। এই দৃশ্যটা তিনি কিছু সময় দেখলেন তারপরে হঠাৎ লক্ষ করলেন সাদা কাপড়ে মোড়ানো একজন মানুষের দাফনের কাপড় পরানো মত কিছু একটা তাল গাছের উপরে শুয়ে আছে। এই দৃশ্যটা দেখে সে অনেক ভয় পেয়ে গেল দ্রুত জানালা আটকে দিয়ে খাটের উপরে চুপচাপ বসে থাকলো। তার স্ত্রী তাকে এরকম বসে থাকতে দেখে জিজ্ঞেস করছিল জানালা আটকে দিলে কেন আর এরকম বসেই আছো কেন?? তখনও তিনি চুপ করে আছেন কোন কথা বলছেন না। তার স্ত্রী ও বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি কারণ মাঝরাতে তার স্ত্রীরও খুব ঘুম পাচ্ছিল। তবে তার স্ত্রী ঘুমানোর আগে বলছিল জানালা খুলে দাও আমার গরম লাগছে।



1000060470.jpg

Source



তার স্ত্রী ঘুমিয়ে গেলেন কিন্তু তিনি দৃশ্যটি দেখার পরে অস্থির হয়ে থাকলেন মোটেই রাত্রে আর ঘুমাতে পারলেন না। জানালা বন্ধ করে সারারাত বসে থেকে কাটিয়ে দিলেন সকাল বেলা ঘুম থেকে ওঠার পরে তিনি তার স্ত্রীর কাছে পুরো ব্যাপারটা খুলে বললেন। গোরস্থানের বড় তাল গাছের উপরে তিনি যা যা দেখেছেন তার সম্পূর্ণ বিবরণ পর্যায়ক্রমে দিচ্ছিলেন। তার স্ত্রী কথাটা শুনে চমকে গেলেন। তার স্ত্রী তখন বলছিলেন বিষয়টা তাহলে রাতেই আমার কাছে বলতে আমি যখন তোমাকে জানালা খুলে দিতে বললাম তখন তুমি তো কিছু বললে না। লোকটি তখন বলছিলেন কখন কি হয়েছে আমার আর কিছু মনে নেই আমি ওই যে জানালা বন্ধ করে দিয়েছি তারপরে পুরোটা রাত আমি কিভাবে পার করেছি সেটা আর জানিনা। সকাল হয়ে যখন রোদের আলো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়া শুরু করল তখন লোকটি ধীরে ধীরে তাল গাছের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো আর তাল গাছের উপরে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছিল আসলে রাত্রিবেলায় সে কি দেখেছে। আসলে সে ভুতুড়ে কিছু দেখেছে সেটা তাল গাছের নিচে গিয়েই পুরোপুরি বুঝতে পারল।

সেদিনের পর থেকে লোকটি আর সেই জানালা খুলে কখনো ঘুমায়নি এমনকি সেই কবরস্থানের পাশের জানালাটা পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছিল। লোকটির কাছে এখনো বিষয়টি অজানা আসলে সেদিন রাত্রে সে তাল গাছের উপরে কি দেখেছিল। যদিও সে এই বিষয়টি হুজুর বলেছিলেন হয়তো কোন দুষ্টু জ্বীন হতে পারে। হুজুর বলেছিলেন রাতের বেলায় জ্বীনের দল কবরস্থানে আসা-যাওয়া করে আর কিছু দুষ্টু জ্বীন মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য, ভয় দেখানোর জন্য এরকম অনেক কাহিনী করে।



🔚সমাপ্তি🔚


এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।

সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan



আমার পরিচয়


IMG-20211015-WA0027.jpg

আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।



break .png

Banner.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 6 months ago 

মাঝরাতে এমন ঘটনা দেখার পর তো কারোরই ঘুম আসার কথা না। কবরস্থানের আশেপাশে বাড়িঘর তৈরি করে সবাই থাকতে পারে না। যাদের অনেক সাহস,একমাত্র তারাই পারে। এমন ঘটনা ছোটবেলায় আমিও অনেক শুনেছি। উনি যা দেখেছেন, সেটা অবশ্যই কোনো জ্বীন ছিলো। যাইহোক আমার কাছে ভূতুড়ে গল্প শুনতে খুব ভালো লাগে। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

 6 months ago 

আপনার মতামত শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

 6 months ago 

আপনি তো দেখছি একেবারে ভয়ানক একটা গল্প শেয়ার করেছেন আমাদের মাঝে। গল্পটা পড়ে তো আমার গাঁ শিওরে উঠেছে একেবারে। অনেক বেশি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। যেন মনে হচ্ছে জানালা দিয়ে তাল গাছের উপর আমি নিজেই কোন কিছু দেখছি। হতে পারে কোন জ্বীন ছিল ওখানে। এরকম ঘটনা ঘটলে তো কারোরই ঘুম আসবে না। আমি হলে তো মনে হয় অজ্ঞান হয়ে পড়েই যেতাম। আগের দিন এরকম ভুতুড়ে ঘটনা সব থেকে বেশি ঘটেছিল। তবে এখন এরকম গল্প গুলো শোনা যায় না। আগের দিনেই এগুলো বেশি হতো। ভুতুড়ে গল্পটা পড়ে এমনিতে ভালোই লেগেছে।

 6 months ago 

গল্পে যে ঘটনাটি ঘটেছে আসলে বাস্তব এরকম কোন ঘটনা চিন্তা করতেই তো আমার ভয় লাগে।

 6 months ago 

কবরস্থানকে ঘিরে তো অনেক ভৌতিক ঘটনা থাকে। তার ওপর আবার কবরস্থানের পাশেই তালগাছ, যেটাও বেশ ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে রাতের বেলা। বিশেষ করে তাল গাছের মাথার উপর আলো দেখা কিংবা সাদা শাড়ি পড়ে বসে থাকতে দেখা, সেই সময়ে গ্রাম অঞ্চলগুলোতে দেখা যেত। তবে লোকটা যে ভয় পেয়ে অসুস্থ হয়ে যায়নি, এটাই হল সবথেকে বড় কথা। বেশ ভয়ংকর ছিল ভাই গল্পটা।

 6 months ago 

আসলে গল্পের কথা মনে পড়লে আমার এখনো গা শিউরে ওঠে বিশেষ করে রাতের বেলা এরকম গল্প শুনলে বেশি ভয় লাগে।

 6 months ago 

রাতের বেলায় এরকম হওয়াটা স্বাভাবিক ভাই।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 63702.19
ETH 2490.35
USDT 1.00
SBD 2.67