আমেনার জীবন (পর্ব-০৫)|| by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ - ৮ই আষাঢ় | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | শনিবার | বর্ষা-কাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
আমেনা ছেলেটিকে পরীক্ষা করার জন্য কয়েকদিন ধরে ছেলেটির চোখের আড়াল হয়ে গিয়েছিল। ছেলেটি আমেনাকে খুঁজতে খুঁজতে তার বাড়িতে চলে আসলো তবে ছেলেটি যে সময় আমেনার বাড়িতে চলে আসলো সেই সময় আমেনার বাবা বাড়িতে ছিল। ছেলেটিকে দেখে আমেনার বাবা জিজ্ঞেস করল কি চাই?? ছেলেটি আমেনার বাবার এই কথা শুনে চুপচাপ হয়ে গেল কি বলবে সে বুঝতে পারছিল না। কিছু সময় চুপ করে থাকার পরে আমেনার বাবা আবার জিজ্ঞেস করল এই ছেলের কথা বলছো না কেন কি চাই?? ছেলেটা তখন বলে উঠলো একটা গ্লাস দেন আমার পানি পিপাসা লেগেছে আমি পানি খাব। আমেনার বাবা আমেনা কে বলল একটি গ্লাস দিতে যখনই আমেনা বারান্দা থেকে একটি গ্লাস ছেলেটির হাতে দিল তখনই ছেলেটি আমেনার দিকে বেশ কিছু সময় তাকিয়ে থাকলো। আমেনার বাবা বাড়িতে থাকার কারণে আমেনা দেরি না করে গ্লাস দিয়ে আবার ঘরের মধ্যে চলে গেল তখন ছেলেটি পানি খেয়ে আমেনাদের বাড়ির পাশের বাগানে গিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো।
গাছের ছায়ায় বসে বসে ছেলেটি চিন্তা করছিল আসলে আমেনা হঠাৎ করে এরকম বদলে গেল কেন?? বাড়িতে থাকা সত্ত্বেও বাইরে আসছে না কেন তার সাথে কথা বলছে না কেন এরকম নানান প্রশ্ন ছেলেটির মনে জাগতে শুরু করলো। আমেনার বাবা অল্প কিছু সময়ের মধ্যে আবার কাজে বেরিয়ে পড়ল তখন আমেনা আবার উকি দিয়ে দেখছিল ছেলেটি বাগানে বসে আছে নাকি বাড়িতে চলে গিয়েছে। ছেলেটি কোথায়? তখনই ছেলেটির আমেনাকে দেখে ফেলল। ছেলেটি আমেনাকে দেখার সঙ্গে সঙ্গেই উঠে দাঁড়ালো ছেলেটি তাকে দেখে ফেলেছে। আমেনা তখন ধীরে ধীরে বাইরে গেল ছেলেটির সাথে আবার কথা বলছিল। ছেলেটি আমিনাকে প্রশ্ন করল আপনি আমাকে দেখে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কেন?? আমেনা বলল আমি আপনাকে দেখে পালিয়ে বেড়াবো কেন আমি কাজের কারণে বাড়ি থেকে বের হই না। ছেলেটি বলল আপনি তো বাড়িতে কোন কাজ করেন না দেখলাম তো বসে ছিলেন তাহলে বাইরে আসছিলেন না কেন। আমেনা তখন বলল এই যে বাইরে এলাম আপনার সাথে এখন কথা বলছি। ছেলেটি তখন বলেই ফেলল আমি আপনাকে দেখার জন্য আপনাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম, আপনাকে না দেখলে আমার কোন কিছু ভালো লাগে না। আমেনা বুঝতে পারল ছেলেটি আসলে তার প্রেমে মাতোয়ারা হয়ে আছে। আমেনা বিষয়টি বুঝেও না বোঝার অভিনয় করে বলছিল আমাকে এত দেখতে হবে কেন আমি তো আপনার কেউ নই বা আমাদের মাঝে কোন সম্পর্ক ও নেই তাহলে এত দেখাদেখি কিসের??
আমেনার এই কথা বলার পরে ছেলেটা অনেকটাই মন খারাপ করে চুপচাপ বসে থাকলো আমেনা তখন বুঝতে পারল আসলে ছেলেটা তাকে অনেকটা পছন্দ করে। আমেনা চাইছিল ছেলেটা নিজে থেকে তার মনের কথাটা বলবে। তবে ছেলেটাও কথাটা বলতে সাহস পাচ্ছিল না। আমেনা ছেলেটাকে বলল তার বাড়িতে কাজ আছে। সে বাড়িতে ফিরে যাবে তখনই ছেলেটা বলল আমেনা শুনে আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে। আমিনা বুঝতে পারল ছেলেটা এখন তার মনের কথা প্রকাশ করবে। আমেনা উল্টা ছেলেটাকে প্রশ্ন করল কি বলবেন একটু দ্রুত বলেন আমার বাড়িতে অনেক কাজ। ছেলেটা তখন আমি নাকি বলল আপনি বাড়ি যাওয়ার জন্য এত তাড়াহুড়ো করছেন কেন আমি তো সবেমাত্র আপনার বাড়ি থেকে ঘুরে আসলাম, আপনার বাড়িতে কোন লোক নেই আপনার বাড়িতে তেমন কোন কাজও নেই তাহলে এত তাড়াহুড়ো কিসের আমার সাথে একটু সময় কাটান একটু বসে গল্প করি। আমেনা একটু রেগেই বলে উঠলো আমার এখন গল্প করার সময় নেই আপনি কি বলতে চাচ্ছেন একটু দ্রুত বলেন। ছেলেটা আমেনার সামনে এসে কিছু সময় চুপ করে থাকলো বলার মতো সাহস হচ্ছিল না। ছেলেটাকে আবারো বলল আপনি না বললে আমি বাসায় যাব ছেলেটা তখন আমিনার কাছে আবার কিছু সময় চেয়ে নিল। আমেনাকে বলে ফেলল আমি আপনাকে অনেক ভালোবাসি তাও সেটা চোখ বন্ধ করে। এর আগে ছেলেটা চোখ বন্ধ করে আমেনা কে মনের কথাটা বলতে চেয়েছিল কিন্তু আমেনা কথাটা শোনার আগেই জ্ঞান হারিয়ে পড়ে গিয়েছিল তবে এবারে আমেনা কথাটা পুরোপুরি শুনেছে।
আমেনা ছেলেটার কথা শুনে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল আর বড় বড় চুপ করে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে ছিল। ছেলেটা যখনই চোখ খুলে দেখলো আমেনা তার দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে তখন ছেলেটা আরো ভয় পেয়ে গেল। ছেলেটা আমিনের দিকে তাকিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে অনেক সময় চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে কেউ কোন কথা বলছে না, এদিকে ছেলেটার গা কাঁপতে শুরু করেছে এতটা ভয় পেয়েছে যেটা দেখে আমেনা হঠাৎ করেই খিল খিল করে হাসতে লাগলো। আমেনার এমন হাসি দেখে ছেলেটা আশ্চর্য হয়ে গেল। ছেলেটা ভাবছিল আমেনাকে সে মনের কথা প্রকাশ করেছে তার বিনিময়ে আমেনা হ্যাঁ অথবা না এরকম একটা উত্তর দিবে কিন্তু তার বিপরীতে আমেনা এরকম খিল খিল করে হাসছে কেন?? আমেনা তখন ছেলেটাকে বলছিল এই আপনার গুরুত্বপূর্ণ কথা যেটা বলার জন্য এতদিন আমার পিছে পিছে ঘুরছেন। এই কথা বলতে এত ভয় পান কেন। ছেলেটা আমেনার এই কথা শুনে মুচকি হাসি দিলো। আমেনা ছেলেটাকে বলল আমার বাড়িতে অনেক কাজ আছে আমি এখন যাচ্ছি আবার পরে দেখা হবে। আমেনা এক দৌড়ে বাড়িতে চলে গেল আর ছেলেটা সেখানে দাঁড়িয়ে আমেনার দিকে তাকিয়ে থাকলো।
দীর্ঘ সময় ছেলেটা সেখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চিন্তা করছিল আমি তো আমেনার কাছে আমার মনের কথার প্রকাশ করলাম কিন্তু আমেনা হ্যাঁ অথবা না কিছুই তো বলল না। শুধু আমার কথা শুনে একটা হাসি দিল আসলে এই হাসি দ্বারা আমেনা কী প্রকাশ করতে চেয়েছে সে আমাকে পছন্দ করে নাকি অপছন্দ করে। তার মাথার মধ্যে সব সময় এই চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছিল সে অনেকটা অস্থির হয়ে গিয়েছিল আসলে আমেনার এই কথাটা সে পজেটিভ নিবে নাকি নেগেটিভ নিবে।
(..........চলবে)
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
| 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
এই গল্পের আগের পর্বগুলো আমার পড়া না হলেও আজকের পর্বটা পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। ওই ছেলেটা আমেনাকে অনেক বেশি ভালোবাসত, আর শেষ পর্যন্ত সে নিজের মনের কথাটা আমেনাকে বলেছে বুঝতে পারলাম। কিন্তু সে তো দেখছি উত্তর না দিয়ে হেসে চলে গিয়েছে। আমার তো মনে হচ্ছে তার এই হাসার পেছনের কারণ হচ্ছে সে ছেলেটাকে পছন্দ করে। এখন দেখা যাক এরপরে কি হয়। আশা করছি ছেলেটার প্রস্তাবে আমেনা রাজি হবে। অপেক্ষায় থাকলাম এই গল্পটার পরবর্তী পর্বটা পড়ার জন্য।
আপনার সুন্দর মতামত শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
আমেনা তো দেখছি প্রথমে ছেলেটিকে ভয় পাইয়ে দিয়েছিল। আমিও তো ভেবেছিলাম যে মনে হয় ছেলেকে মার দিবে। আমেনার যেভাবে বড় বড় চোখ করে তাকানোর কথা বললেন। যাই হোক শেষে যখন হেসে চলে গিয়েছে এবং আবার দেখা হবে বলেছে তার মানে বোঝা যাচ্ছে আমেনাও ছেলেটাকে পছন্দ করে। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়। ভালো লাগলো আপনার গল্পটি পড়ে।
কথাটা শুনে আমেনা অনেকটা চমকে গিয়েছিল এজন্যই চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে ছিল।
অনেক সুন্দর একটা গল্পের পঞ্চম পর্ব আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। এই গল্পের আগের পর্বগুলোরতে কি হয়েছে এটা যদিও জানা নেই, কারণ আগের পর্বগুলো আমার পড়া হয়নি। অন্য পর্বগুলো না পড়া হলেও আজকের পর্বটা খুব ভালো লেগেছে। ছেলেটা অনেক ভয় পাওয়ার পরে হলেও আমেনাকে মনের কথা বলেছে এটাতেই ভালো লাগলো। এখন এটাই দেখতে হবে পরে আমেনা এর উত্তরে কি বলে।
হ্যাঁ আমেনাকে মনের কথা তো বলে দিয়েছে এখন পরবর্তীতে কি হয় সেটাই দেখার পালা।