তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিশেষ প্রতিযোগিতা ~ স্মৃতিকথা মূলক রচনা || by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ - ২৬শে জ্যৈষ্ঠ | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রবিবার | গ্রীষ্ম-কাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
সময়টা ছিল ২০২০ সাল, সারা বিশ্বের উপর করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়তে শুরু করে। ভাইরাসটি সারা বিশ্বের সব দেশেই আঘাত হানতে থাকে অনেক মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। সব দেশেই লকডাউন শুরু হয়ে যায় সেই সময় সাধারণ মানুষ অনেকটাই ঘরবন্দী হয়ে জীবন যাপন করতে থাকে। সেই সময় থেকেই মানুষের অনলাইনে রোজগারের প্রতি আগ্রহ বাড়তে থাকে। করোনা কালীন সময়ে বন্ধুদের সাথে খুব একটা দেখা হতো না টুকটাক মেসেঞ্জারে কথা হতো। ২০২১ সালের প্রথম দিক থেকেই করোনার প্রকোপ কিছুটা কমতে থাকল অর্থাৎ বাংলাদেশে লকডাউন কিছুটা শিথিল করা হয়েছিল। তখন থেকেই আবার বন্ধুদের সাথে খোলামেলা চলাফেরা শুরু হল। বন্ধু রাহুলের মাধ্যমে জানতে পারলাম অনলাইনে steemit নামে একটা প্ল্যাটফর্ম আছে যেখানে অনলাইনে কাজ করে টাকা রোজগার করা যায়। প্রথম থেকেই আগ্রহ ছিল কিন্তু নানা জটিলতার কারণে আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও রাহুলের কাছে থেকে কাজ বুঝে নিতে একটু বিলম্বে পড়তে হয়েছিল। ২০২১ সালের জুলাই মাস থেকে steemit সম্পর্কে টুকটাক জানার চেষ্টা করলাম রাহুলের মাধ্যমে অনেক তথ্যই জানতে পারলাম বিস্তারিত সবকিছু জানার পরে ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমি একটি steemit একাউন্ট খুললাম সেটা রাহুল নিজে খুলে দিয়েছিল। সারাদিন রাহুলকে বেশ ভালোই বিরক্ত করতাম কোন কাজটা কিভাবে করতে হবে সেটা রাহুলের মাধ্যমেই শিখে নিতাম।
যখন পোস্ট করা শুরু করলাম তখন একটা পোস্ট লিখতে আমার দীর্ঘ সময় লাগতো মার্ক ডাউন গুলো খুব একটা তখন বুঝতাম না রাহুলের সাহায্য নিয়ে অনেক কষ্টে পোস্ট করতাম। একটু ভুল হলে সেটা শুধরে নিতে অনেক কষ্ট হতো আবার রাহুলের কাছে গিয়ে শিখতে হতো আসলে কোথায় ভুল হয়েছে। এরকম এক সপ্তাহ ধরে পোস্ট করতে থাকলাম। সেই সময়ে আবার এবিবি স্কুল চালু করা হলো। প্রথম যখন এবিবি স্কুলের ক্লাস শুরু করা হলো তখন আমি প্রথম ব্যাচ থেকেই ক্লাস করা শুরু করলাম। সত্যি বলতে প্রথমদিকে @abb-school স্কুলের ক্লাস করতে একটু বিরক্ত বোধ করতাম। চিন্তা করতাম আবার এত কষ্টের ক্লাস করে ভেরিফাইড মেম্বার হতে হবে। কিন্তু যখন বিষয়গুলো শিখতে শুরু করলাম জানতে শুরু করলাম মার্ক ডাউন গুলো বুঝতে শুরু করলাম তখন বিষয়টা আরো মজা লাগতো খুব সহজেই পোস্ট লিখতে পারতাম পোষ্টের কোয়ালিটি বৃদ্ধি করতে পারতাম মার্কডাউন পরিবর্তন করতে পারতাম বিষয়টা তখন বেশ উপভোগ করতাম। ক্লাস থেকে যেটা শিখতাম তার মাধ্যমে সহজেই পোস্টের ভিন্নতা আনতে পারতাম। এক পর্যায়ে এবিবি স্কুলের সবগুলো লেবেল অর্থাৎ পাঁচটি লেভেল পার করে ভেরিফাইড মেম্বার হলাম। তবে এর মাঝে যখন লেভেলে ছিলাম তখন আমাদেরকে শুধু এবিবি স্কুল থেকে সাপোর্ট দেওয়া হতো কিন্তু @shy-fox থেকে কোন সাপোর্ট দেয়া হতো না।
ভেরিফাইড মেম্বার হওয়ার পরে তখন মনে আর একটা আগ্রহ জাগতে শুরু করল আসলে কবে আমি সাইফক্স থেকে সাপোর্ট পাবো। কারণ দীর্ঘদিন লেভেলে ক্লাস করেছি টুকটাক পোস্ট করেছি কিন্তু বড় পরিসরে কোন সাপোর্ট পায়নি ছোট যে সাপোর্ট গুলো পেতাম সেগুলো যেন আমার কাছে অনেক মনে হতো। একদিন সকালে উঠে যখন দেখলাম আমার একটি পোস্টের সাইফক্স ভোট দিয়েছে তখন আসলে অনুভূতিটা অন্যরকম ছিল সত্যি বলতে আমি আমার বন্ধু রাহুলের কাছে ফোন দিয়ে হাসছিলাম আর বলছিলাম বন্ধু আমি তো থেকে ভোট পেয়েছি। কারণ যখন আমি এবিবি স্কুলে ছিলাম তখন দেখতাম রাহুল পোস্ট করে এবিবি স্কুল থেকে ভোট পেত আর আমি শুধু চিন্তা করতাম কবে যে ভেরিফাইড মেম্বার হব আর এরকম সাইফক্স থেকে ভোট পাব তবে সেই স্বপ্নটা পূরণ হয়েছিল আর তার কারণেই রাহুলের কাছে ফোন করে মনের আবেগটা প্রকাশ করেছিলাম। এখনো সেই স্মৃতিটা মনে পড়লে খুবই ভালো লাগে।
যখন সাইফক্স থেকে ভোট পাওয়া শুরু করলাম তখন এখানে কাজ করার প্রতি আগ্রহ আরো বেড়ে গেল। তবে আমার মনে আছে আমি একটানা পাঁচ থেকে ছয় মাস কাজ করেছিলাম কিন্তু এক টাকাও এখান থেকে তুলেছিলাম না শুধু পাওয়ার হিসেবে রেখে দিয়েছিলাম আর কিছুটা বাইনান্সে জমা রেখেছিলাম। সময়টা ছিল সম্ভবত মার্চ মাসের শেষের দিকে, গরমের প্রভাব শুরু হয়েছে এটা মনে আছে। আমি প্রথম এই প্লাটফর্ম থেকে কিছু টাকা তুলব তবে প্রথমবার টাকা তুলতে একটু ভয় পাচ্ছিলাম। আসলে লেভেল থেকে যে বিষয়গুলো শিখেছি সেই বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা আছে কিন্তু প্র্যাকটিক্যালি এর ব্যবহার প্রথমবার করতে যাচ্ছি তাই মনের মাঝে একটু ভয় কাজ করছিল। মনে হলো রাহুলের সাথে বসেই টাকা তুলি বিষয়গুলো যেহেতু আমি জানি আর রাহুলের যেহেতু অভিজ্ঞতা আছে সে ক্ষেত্রে কোন রিস্ক থাকবেনা। আমি রাহুলকে ফোন দিয়ে আমাদের দোকানে আসতে বললাম এখান থেকে আমরা একটা নিরিবিলি জায়গায় গিয়ে বসে দুজন মিলে স্টিমগুলো ডলারে কনভার্ট করলাম। ডলারগুলো বাইন্যান্স থেকে কিভাবে সেল করতে হয় সেটা রাহুল আরো সুন্দরভাবে দেখিয়ে দিল। আমার বিকাশে টাকা চলে আসলো আমিতো খুশিতে আত্মহারা। দীর্ঘ কয়েক মাসে পরিশ্রম শেষে আমি এখান থেকে টাকা তুলেছি। আসলে বিশ্বাস হচ্ছিল না আমিও অনলাইন থেকে কোন ইনভেস্ট ছাড়াই রোজগার করেছি। রাহুল তখনই আবদার করে বসলো বন্ধু তুমি প্রথম টাকা তুলেছ কিছু খাওয়াতে হবে। আমার মনে আছে সেই টাকা তোলা উপলক্ষে রাহুলকে কুমারখালী রেল স্টেশনের পাশের একটি রেস্টুরেন্ট থেকে চিকেন খাইয়েছিলাম।
এখান থেকে তোলা কিছু টাকা আমি জমিয়ে রেখেছিলাম কারণ এখান থেকে তোলা সর্বপ্রথম টাকা দিয়ে আমি আমার আব্বু আম্মুর জন্য কিছু কেনাকাটা করতে চেয়েছিলাম। রমজানের শেষের দিকে আমি এই প্লাটফর্ম থেকে তোলা টাকা দিয়ে আম্মু আর আব্বুর জন্য কিছু কেনাকাটা করেছিলাম আর তার সাথে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্য হালকা কিছু কেনাকাটা করেছিলাম এটা ছিল আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত। প্রতিটা ছেলে বা মেয়েই চেষ্টা করে নিজের প্রথম রোজগারের টাকা দিয়ে বাবা মাকে কিছু একটা গিফট করবে আর আমি এই স্বপ্নটা এই স্টিমমিট প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেই পূরণ করেছিলাম। আমার স্বপ্ন পূরণে @rme দাদা অনেক বড় ভূমিকা রেখেছে কারণ তিনি আমাদের টাকা রোজগারের সুযোগ করে দিয়েছেন। তারপর থেকে ছোট পরিসরে অনেক টাকা তুলেছি নিজের মনের আশা পূরণ করেছি নিজের ছোট ছোট চাহিদাগুলো পূরণ করেছি যেটা চিরদিন আমার কাছে স্মৃতি হয়ে থাকবে। এইজন্য আমি বলতে চাই ভালবাসি আমি এই পরিবারটিকে ভালোবাসি "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটিকে।
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
https://x.com/KaziRai39057271/status/1799653306777874648
বেশ সুন্দর করে আপনি আপনার স্মৃতি কথা তুলে ধরেছেন এবারের প্রতিযোগিতায়। আপনার জন্য রইল শুভ কামনা। আসলে আমরা যারা এই প্লাটফর্মে কাজ করি প্রত্যেকের মনেই কিছু না কিছু স্মৃতি রয়েছে। আর এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সবাই বেশ সুন্দর করে তাদের স্মৃতি কথা গুলো তুলে ধরছেন।
আমার বাংলা ব্লগে কাজ করার শুরু থেকেই আপনি এখানে সবকিছু উল্লেখ করেছেন, যেটা জানতে পেরে সত্যি খুব ভালো লেগেছে। এখানে ক্লাস করে তারপর ভেরিফাইড হওয়ার পরে যে অনুভূতিটা কাজ করেছিল, সেটা সত্যিই বলে বোঝানো যাওয়ার মতো না। আর সাইফক্স থেকে সাপোর্ট পাওয়ার আনন্দটা তো আরো বেশি ছিল। আসলে এই সব কিছুতেই দাদার অবদান রয়েছে সবথেকে বেশি। স্মৃতি কথাগুলো প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন দেখে ভালো লাগলো।
আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আপনি বেশ দারুন একটি স্মৃতিচারন মূলক পোস্ট লিখেছেন ভাই। আসলে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি সম্পর্কে আমরা যদি লিখতে যায় সারাদিন লিখে শেষ করা যাবে না। আপনি আপনার প্রথম স্টিমিটের টাকা দিয়ে আপনার আব্বু আম্মুর জন্য কিছু কেনাকাটা করেছিলেন জেনে সত্যি বেশ ভালো লাগে। প্রথম রোজগারের টাকা দিয়ে পরিবারের সদস্যের জন্য কিছু উপহার নিতে পারলে সত্যি বেশ ভালো লাগে ভাই। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
সুন্দর স্মৃতিচারণ করলেন আপনি আমার বাংলা ব্লগ কে নিয়ে। সত্যি আমার বাংলা ব্লগকে নিয়ে যখন আমরা স্মৃতিচারণ করি বলে শেষ করা যায় না। যতই বলি ততই যেন কথা চলে আসতে থাকে। আপনার সুন্দর অনুভূতিগুলো পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। আমার বাংলা ব্লগকে কেন্দ্র করে আপনি অনেক সুন্দর সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করলেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
এই কমিউনিটির সাথে আপনার সম্পূর্ণ জার্নিটা শেয়ার করেছেন। লেখাগুলো পড়ে বেশ ভালো লাগলো। পাঁচটা লেভেল পাড় করে ভাই বা দিয়ে তারপর ভেরিফাইড মেম্বার হওয়ার অনুভূতি অন্যরকম। তবে আমি যখন আমার বাংলা ব্লগে পোস্ট করেছিলাম তখন ভেরিফাইড হওয়ার জন্য তেমন কোন ক্লাস করা লাগত না। কিন্তু তারপরও একবার ভাইবা নেওয়া হয়েছিল। আপনি আপনার প্রথম উপার্জিত টাকা দিয়ে পরিবারের জন্য কিছু করেছেন জেনে খুবই ভালো লাগলো। সুন্দর স্মৃতি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনি নিজের স্মৃতি গুলোকে এত সুন্দর করে তুলে ধরেছেন দেখে ভালো লেগেছে। রাহুল ভাইয়ের মাধ্যমেই আপনার এখানে আসা শুনে ভালো লাগলো। প্রথম থেকে কি হয়েছিল সবকিছুই আপনি সুন্দরভাবে শেয়ার করেছেন। সাইফক্স এর ভোট পাওয়ার অনুভূতিটা সবথেকে বেশি ভালো ছিল বুঝতেই পারছি। প্রথম উঠানো টাকা দিয়ে রুহুল ভাইয়াকে তাহলে ট্রিট দিয়েছিলেন। আসলে সবারই ইচ্ছে প্রথম রোজগারের টাকা দিয়ে সবাইকে কিছু না কিছু কিনে দেওয়াটা। আপনিও দিয়েছেন শুনে ভালো লেগেছে। আসলে দাদা এখানে যে ভূমিকা রেখেছে সেটা আমরা কখনো বলে বোঝাতে পারবো না। যত বলব তত কম হবে।
স্টিমিট এবং আমার বাংলা ব্লগ দুই জায়গাই আমার এবং আপনার আগমনের সময় প্রায় একই। চমৎকার ছিল আপনার অনূভুতি গুলো ভাই। স্টিমিট এর টাকা দিয়ে করা বেশ কিছু বিষয় এখনও আমার কাছে স্মৃতি হয়ে আছে। অফিশিয়ালি আমি এবিবি স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলাম না তবে ক্লাস করেছি। আপনার অনূভুতি টা অসাধারণ ছিল ভাই। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।