আবদার পূরণ। || by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ - ২৪শে ফাল্গুন | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | বসন্ত-কাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
আসলে যারা বয়সে বড় তাদের কাছে ছোটরা আবদার করবে এটা কিন্তু স্বাভাবিক। তাছাড়া আমার কাছে মনে হয় আমি যদি আমার ছোট ভাই বোনদের ছোটখাট আবদার গুলো পূরণ করতে পারি সেটা যেন আমার বড় সার্থকতা। যখনই আমি আমার ছোট ভাই বা বোনদের কোন আবদার পূরণ করি তখন আমার মনের মধ্যে এক ধরনের প্রশান্তি কাজ করে যেটা অন্য কোন কাজ করলে পাই না। মাঝে মাঝে মনে হয় আমার যদি অনেক টাকা থাকতো তাহলে আমার ছোট ভাই বোন গুলোর প্রতিটা আবদার পূরণ করতে পারতাম। তবে তার পরেও ছোটখাটো নিজের সাধ্যের মধ্যে যে আবদার গুলো তারা আমার কাছে করে সেগুলো আমি পূরণ করার চেষ্টা করি। আজকে কেন এই কথা বলছি তা জানার ইচ্ছা হতেই পারে। আজকে আমার ছোট বোনের ছোট্ট একটা গিফট দিয়েছি। অনেকে হয়তো জানেন আমার কোন বোন নেই তবে আমার খালাতো বোন, চাচাতো বোন, ফুফাতো বোনদের একদম আপন বোনের মতো ভালোবাসি। বোন থাকলে যতটুকু ভালবাসতাম সেটা তাদের মাঝে বিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। আর ছোট বোন থাকলে তো প্রতিনিয়ত আমার কাছে অনেক আবদার করতো, যেহেতু ছোট বোন নেই তাই কাজিনদেরকেই ছোট বোনের ভালোবাসাটা দেওয়ার চেষ্টা করি।
আমরা এই প্লাটফর্মে যারা কাজ করি তারা সবাই অবশ্য জানি বর্তমানে মার্কেট মোটামুটি ভালোই আছে তাই সবাই টুকটাক কিছু স্টিম বিক্রি করে হাত খরচে টাকা সহ কিছু টাকা কাছে রাখার মত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমি সকালে অল্প কিছু স্টিম বিক্রি করলাম আর সেখান থেকে যে টাকা পেলাম সেই টাকা থেকে ছোট বোনের জন্য একটা গিফট কেনার সিদ্ধান্ত নিলাম। প্রায় এক বছর পরে আমার খালাতো বোন আমাদের বাসায় এসেছে যদিও আমি নিজেই তাকে তাদের বাসা থেকে নিয়ে এসেছি। যখন একদম পিচ্চি ছিল তখন প্রতিনিয়তই আসতো কিন্তু এখন তার লেখাপড়ার প্রেশারের কারণে আর তেমন আসতে পারে না। যাই হোক আমাদের বাসায় এসে সে অনেকদিন থেকেছে তাই ভাবলাম ছোট বোনকে ছোট্ট একটা গিফট দিবো। তবে সমস্যা হচ্ছে আমি কখনো মেয়ে মানুষের কোন ড্রেস কিনিনি তাই সেটা নিয়ে আমার কোন ধারণা নেই। কোন ড্রেসের কাপড় কেমন, দাম কিরকম বা কেমন ড্রেস মেয়েদের পছন্দ সে সম্পর্কে ধারণা একদম শূন্য।
প্রথমে ভাবছিলাম নিজেই একটা কিনে নিয়ে এসে ছোট বোনকে সারপ্রাইজ দিবো কিন্তু পরে মনে হল হুটহাট করে একটা ড্রেস কিনে আনার পরে যদি সেটা তার পছন্দ না হয় তাহলে তো আবার অন্য ঝামেলা হয়ে যাবে। টাকা খরচ করে ছোট বোনকে একটা গিফট দিব যদি সেই গিফট তার মনের মত না হয় তাহলে তো আবার আমার নিজের মনের কাছেও ভালো লাগবে না তাই ভাবলাম তাকে সাথে নিয়ে যাব। সকালের দিকে ঘুম থেকে উঠে খাওয়া দাওয়া করে আম্মুকে বলে ছোট বোনকে বললাম বাজারে গিয়ে তোকে একটা গিফট দিব আমার সাথে চল। প্রথমে সে খুব হাসছিল কিন্তু পরবর্তীতে আমার সাথে বাজারে গিয়ে কাপড়ের দোকান থেকে একটা ড্রেস পছন্দ করলো। আসলে আমার খালার কোন ছেলে নেই আর যার কারণে আমরা খালাতো ভাই বোন অনেকটা আপন ভাইবোনদের মতোই। ওর যদি ভাই থাকতো তাহলে এরকম নিয়ে গিয়ে সারপ্রাইজ দিত। যেহেতু ওর কোন ভাই নেই তাই বড় ভাই হিসেবে আমি সেই অভাবটা পূরণ করার চেষ্টা করেছি মাত্র।
Device : Samsung galaxy A52
What's 3 Word Location :
যাইহোক দোকানদারের কাছে গিয়ে বললাম ভালো একটা ড্রেস দেখাতে, দোকানদার আবার আমাকে জিজ্ঞেস করলেন কিরকম ড্রেস দেখাবো?? তখন আমি ছোট বোন তিশাকে বিস্তারিত বলার পরে দোকানদার গিয়ে তার সাথে কথা বলল এবং কিছু ড্রেস এনে দেখালো। প্রথমে যেগুলো দেখালো সেগুলো খুব একটা পছন্দ হয়নি পরবর্তীতে তাকে বললাম আপনার দোকানের সবচেয়ে দামি ড্রেসগুলো দেখান। পরবর্তীতে তিনি বললেন ইন্ডিয়ান কিছু থ্রি পিস আছে সেগুলো দেখাবো?? আমরা দেখতে চাওয়ার পরে দোকানদার সেগুলো আমাদের সামনে দেখালেন তার মধ্যে হালকা কালো জাতীয় কালারটাই আমরা পছন্দ করলাম। মূলত আমি তিশাকেই বারবার বলছিলাম তুই নিজে নিজেই পছন্দ কর, দেখ তোর কোনটা বেশি ভালো লাগে সেটাই নিবি। উপরের ছবিতে যে ড্রেসটা দেখছেন সেটাই সবশেষে আমরা পছন্দ করলাম। যেহেতু আমাদের বাজার থেকে নেওয়া তাই কিছু টাকা বেশি লাগবে এটা স্বাভাবিক যাইহোক টাকার প্রসঙ্গ বাদ দেই আমরা ড্রেসটা পছন্দ করে প্যাকেট করে নিয়ে চলে আসলাম।
বাড়িতে আসার পরে আম্মু ড্রেসটা দেখে বেশ পছন্দ করলো তখন আম্মু বলছিল তিশার কোন ভাই নেই আর রায়হানের কোন বোন নেই তাই রায়হান ছোট বোনকে গিফট করেছে। আসলেই আমার যদি একটা ছোট বোন থাকতো তাহলে তাকেও আমি এরকম সুন্দর সুন্দর গিফট দিতে পারতাম কিন্তু সবই তো সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা। তবে তারপরেও যারা কাজিন আছে তারাও তো বোন। সব মিলিয়ে দিনশেষে আপন মানুষ গুলোকে খুশি রাখাই আমার মনে হয় জীবনের সবচেয়ে বড় সার্থকতা। তবে হ্যাঁ আপন বোন নেই ঠিক আছে তবে তার পরেও কমিউনিটিতে কিন্তু অনেকগুলো বোন আছে বিশেষ করে @monira999 আপু যাকে সব সময় বুবুজান বলে সম্বোধন করি। তাছাড়া @samhunnahar আপু এবং @bristychaki দিদি আমাকে ছোট ভাই হিসেবে দেখে আর আমিও ঠিক তাদেরকে বড় বোনের মতোই সম্মান করি। আসলে তাদের সাথে রক্তের সম্পর্ক আছে এমন না কিন্তু তাদের সাথে যখন কথা বলি তখন মনে হয় আমি যেন আমার আপন বড় বোনের সাথে কথা বলছি আর তাদেরকে সে রকম সম্মান দিয়েই কথা বলি। যাইহোক আবেগে পড়ে অনেক কথাই বলে ফেললাম। আপনাদের তিনজনকে মেনশন দিয়েছি, তার জন্য ছোট ভাইকে ক্ষমা করে দিয়েন 🙏
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আমাদের চারপাশে এমন কিছু মানুষ আছে যাদের সাথে আমাদের কোন রক্তের সম্পর্ক নেই। কিন্তু মাঝে মাঝে মনে হয় তারা সত্যি আমাদের অনেক আপনজন। ভাইয়া আপনি যেমন আমাকে নিজের বোন মনে করেন তেমনি আপনাকেও আমি নিজের ভাই মনে করি। আমার কোনো ভাই নেই। তবে এই প্লাটফর্মে এসে ভাই পেয়ে সত্যিই ভালো লেগেছে। অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে।
আপু আমার কোন বোন নেই তাই আপনারাই আমার বোন, আপনাদের সাথে কথা বললে বড় বোনের অভাব পূরণ হয়।
আসলে শুধুমাত্র আপন ভাই বোনকেই নয়, ছোটদের কোন কিছু উপহার দিতেই ভীষণ ভালো লাগে। একটা আলাদা আনন্দের দেখা পাওয়া যায়। আর আপনার যেহেতু বোন নেই আপনার চাচাতো এবং খালাতো বোনদের আপনি নিজের বোনের মতোই স্নেহ করে আসছেন। যাই হোক আপনার বোনটি বাড়িতে বেড়াতে এসেছে এবং তার জন্য কেনা উপহারটি সত্যি অসাধারণ হয়েছে। আর দামের ব্যাপারটা বাদ দিলাম। যাইহোক স্টিমের দাম বেশ কিছুটা বেড়েছে এবং আমরা ছোট ছোট স্বপ্নগুলো পূরণ করতে পারছি। এটা দেখে সত্যি ভীষণ ভালো লাগছে। আর আমাদের কমিউনিটির কিছু সদস্যকে আপনি আপনার বড় বোনের মত সম্মান করেন এবং তাদের কাছ থেকে স্নেহ ভালোবাসা পাচ্ছেন জেনে খুব ভালো লাগলো। এটা নিঃসন্দেহে অকৃত্রিম একটি সম্পর্ক।
সুন্দর মতামত শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
রক্তের সম্পর্কের চেয়ে কখনো কখনো আত্মার সম্পর্ক গুলো অনেক বড় হয়ে যায়।ঠিক তেমনি ভাই তোমাকে একদম নিজের ছোট ভাইয়ের মতোই মনে করি।আমার পরিবারে যতোগুলো ভাই-বোন আছে আমি সবার কাছে অনেক অনেক ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা পাই ঠিক তেমনি কমিউনিটির সকল ভাইবোনেরা আমাকে অনেক ভালোবাসে আমিও তাদের নিজের ভাইবোন মনে করি, তার মধ্যে বিশেষ ভালোবাসা সবসময়ই তোমার জন্য থাকে।ঈশ্বরের কাছে সবসময়ই প্রার্থনা করি আমার ছোট ভাই টাকে যেনো অনেক ভালো রাখেন এবং সুখে রাখেন।ধন্যবাদ ভাই।❤️❤️
ভালোবাসা নিবেন দিদি ভাই 💞
বেশ ভালো লাগলো আপনার পুরো পোস্ট টি পড়ে। এখন এমন একটা সময়, যেখানে বেশিরভাগ মানুষ ই কেবলই আত্নকেন্দ্রীক। তাদের সব চিন্তাভাবনা কেবলই যেন নিজেকে নিয়ে। সেখানে আপনি আপনার কাজিন, ছোট বোনের কথা ভেবে তার নিজের পছন্দসই একটি জামা গিফট করে সারপ্রাইজ দিলেন, ব্যাপারটি আমার কাছে খুবই ভালো লাগলো। সামর্থ্য থাকলে যারা নিজের চেয়ে অন্যের কথা বেশি ভাবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করে, তারাই তো প্রকৃত ভালো মানুষ, আমার দৃষ্টিকোণ থেকে। আপনাদের সকল ভাইবোনের সম্পর্ক আরো দৃঢ় হোক, এই শুভকামনা।
আসলে দিদি আমি শুধু নিজের সামান্য ইচ্ছে পূরণ করেছি মাত্র।
আপনার পোস্ট বিস্তারিত পড়েছি ভাইয়া ভীষণ ভালো লেগেছে। ছোট বোনকে গিফট দিলেন এটা সবচেয়ে বড় কথা কিন্তু প্রাইস এর বিষয়টা আমি চিন্তা করি না। কারণ গিফটের জিনিস সেটা যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী। আপনার খালাত বোন তীশা বেশ খুশি মত আপনার দেওয়া গিফট গ্রহণ করলো এবং নিজে গিয়ে থ্রি পিস পছন্দ করে নিয়েছে। ভাই বোনের সম্পর্কটা যেন এমন থাকুক সারা জীবন। আমিও আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে কাজ করার পর অনেক গুলো ভাই পেয়েছি। ছোট ভাই বড় ভাই তবে আপনাদেরকে ছোট ভাই হিসেবে সম্বোধন করি সব সময় বেশ ভালোই লাগে। আমারও নিজের দুইটা ছোট ভাই আছে তাদের সমতুল্য মনে করি আপনাদেরকে। যখন বোন বলে সম্বোধন করেন তখন সবচেয়ে বেশি ভালো লাগার কাজ করে। কারণ বোন শব্দটা বেশ ভালো লাগার একটি শব্দ। আর বোনদের কাছেও ভাইদেরে প্রতি আন্তরিকতা অনেক বেশি। অনেক ভালো লেগেছে আপনার পোস্ট পড়ে আপনার জন্য শুভকামনা রইল।