কিছু প্রয়োজনে। || by @kazi-raihan
আমার প্রিয় বন্ধুরা,
আমি@kazi-raihan বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ -২৭শে এপ্রিল | ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | শনিবার | গ্রীষ্ম-কাল |
আমি কাজী রায়হান,আমার ইউজার নাম @kazi-raihan।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে অভিনন্দন।
বর্তমানে তাপমাত্রা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে যার কারণে ঘুরাঘুরি বিষয়টা বলতে গেলে ভুলে গিয়েছি। বিশেষ কোনো কাজ ছাড়া বাইরে বের হই না আর যদি কাজের ক্ষেত্রেও বাইরে যাই সে ক্ষেত্রে সকালবেলা অথবা সন্ধ্যাবেলায় কাজগুলো মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করি। সেদিন সকালে হাঁটতে বের হওয়ার পরে বড় ভাইকে বললাম কিছু কেনাকাটা করার জন্য কুমারখালী যাওয়ার দরকার। মূলত টেক্সটাইল জাতীয় যা কিছু আছে সেগুলো কুমারখালী তুলনামূলক অনেক কম দামে পাওয়া যায়। সারা বাংলাদেশের মধ্যে নামকরা বুলবুল টেক্সটাইল সম্পর্কে হয়তো অনেকেই জানেন। এই বুলবুল টেক্সটাইলের কারখানা আমাদের কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে অবস্থিত। বেডশীট সহ সব ধরনের তোয়ালে গামছা এগুলো তারা তৈরি করে। যাই হোক যেহেতু দুপুরে প্রচন্ড রোদ থাকে তাই দুপুরবেলা না গিয়ে বিকেল টাইমে যখন রোদের তাপ অনেকটাই কমে যায় তখন যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আসরের নামাজ শেষ করে ভাইয়া বাসা থেকে আমাদের এলাকায় আসলো। আসলে তার বাইকে তেল লোড করার প্রয়োজন ছিল সাধারণত বর্তমান বাইকে ফুয়েল ইনজেকশন ইঞ্জিন হওয়ায় লোকাল তেল ব্যবহার করা যায় না তাই বাধ্য হয়ে পাম্প থেকে তেল নিতে হয়। রোদের তাপ তখন অনেকটাই কমে গিয়েছে আমরা দুইটা বাইক নিয়ে চারজন ধীরে ধীরে কুমারখালী দিকে রওনা হলাম।
আমরা যখন কুমারখালীতে পৌঁছালাম তখন রোদের তাপ অনেকটা নেই বললেই চলে। সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে। সেই সাথে আবহাওয়াটা যেন ধীরে ধীরে ঠান্ডা হচ্ছে কারণ বর্তমানে প্রচন্ড রোদের কারণেই আবহাওয়ার তাপমাত্রা আরো বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা সবাই গোলাম কিবরিয়া সেতুর উপরে গিয়ে কিছু সময় গল্প করলাম। গল্প করতে করতে সময় বেশ দ্রুত পার হচ্ছিল। সেখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমরা প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা করছিলাম কেননা এই গড়াই নদীতে এখন পানি নেই যার কারণে হয়তো এই অঞ্চলের তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে যদি নদীতে ভরপুর পানি থাকতো তাহলে তুলনামূলক নদী পাড়ের তাপমাত্রাটা অনেকটা কম থাকতো। নদী নিয়ে আলোচনা করতেই লক্ষ্য করলাম একটা ছেলে নদী থেকে গোসল করে উঠছে। তবে ভাই তখন বলছিল ওর শরীরের যে অবস্থা তাতে সারাদিন ওর পানির মধ্যে নেমে থাকা দরকার হা হা হা। এরই মাঝে হঠাৎ করেই একটি গাড়িতে মাঠা বিক্রি করার জন্য একজন লোক আমাদের সামনে এসে দাঁড়ালো। সাধারণত এই গরমের সময়ে ঠান্ডা জাতীয় খাবারগুলো খাওয়ার প্রতি আগ্রহ বেশি থাকে তারপর দুধের খাবারগুলো যদি ঠান্ডা অবস্থায় খাওয়া যায় এমনিতেই মজা লাগে। যেহেতু আমরা চারজন ছিলাম তাই চারজন একই সাথে চার গ্লাস মাঠা নিলাম বেশ মজা পেলাম খেয়ে। তখন মাগরিবের আযান দিবে তাই আমরা ব্রিজ পার হয়ে পরবর্তী এলাকায় গিয়ে মসজিদে নামাজ আদায় করার জন্য সামনের দিকে রওনা হলাম।
প্রায় তিন কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার পরে আমরা একটি মসজিদের এরিয়ায় বাইক রেখে ওযু করে নামাজ আদায় করলাম। মসজিদের এরিয়াটা বেশ জাঁকজমকভাবে সাজানো গোছানো রাতের বেলায় লাইটিং করা হয়েছে দেখতে বেশ ভালোই লাগছে। নামাজ আদায় করে বের হওয়ার পরে বুঝতে পারলাম আসলে মসজিদের বিপরীত পাশে যে দুই তলা বিশিষ্ট ভবন সেটা একটি আবাসিক হাফিজিয়া মাদ্রাসা। এর কারণেই এরিয়াটা এত জাকজমক ভাবে সাজানো গোছানো। নামাজ শেষে বের হওয়ার পরে মাদ্রাসার ছেলে মেয়েরা সেখান থেকে পানি নিয়ে যার যার রুমে যাচ্ছিল। তবে সেই মাদ্রাসায় দেখলাম অনেক ছোট্ট ছেলেরাও ভর্তি হয়েছে দেখে অবাক হওয়ার স্বাভাবিক। তাদের মধ্য থেকে একজনের কাছে থেকে পানির পট নিয়ে আমরা সবাই টুকটাক পানি খেলাম কারণ বিকেলবেলা বের হয়েছি এই আবহাওয়া ঘন ঘন পানি পিপাসা পায়। আমার কাছে যে বিষয়টা সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে সেটা হচ্ছে সেখানকার মাদ্রাসার ছেলেদের বেশ ভালো আদব কায়দা দেয়া হয়েছে বাইরের একজন মানুষের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় কেমন ব্যবহার করতে হয় সেটা ওই মাদ্রাসার ছোট্ট ছেলেদের দেখলেই বোঝা যায়। তাদের থেকে বিদায় নিয়ে আমরা আবার কুমারখালী শহরের দিকে রওনা হলাম।
যেহেতু কিছু কেনাকাটা ছিল তাই সোজা আমরা বুলবুল টেক্সটাইলের প্রথম যে দোকান আছে সে দোকানে প্রবেশ করলাম। দোকানদার প্রথমে আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন আপনার কি দেখবেন? যেহেতু আমরা সেখানে কেনার জন্য গিয়েছিলাম তাই লোকটিকে ভালো কোয়ালিটির মধ্যে কয়েকটি বেডশীট দেখাতে বললাম। তিনি পর্যায়ক্রমে আমাদেরকে অনেকগুলো বেডশীট দেখালেন যার মধ্যে ছবিতে দেওয়া মাঝের বেডশিট টা আমাদের সবার পছন্দ হয়েছিল। মূলত কোন কিছু কিনতে গেলে আমার পছন্দ হয় না তাই তাদেরকে সাথে নিয়ে গিয়েছিলাম আর বলছিলাম আজকে আমি আর কিছুই দেখবো না আপনারা যেটা পছন্দ করবেন সেটাই নিব। সবাই মাঝখানের বেডশিট টা পছন্দ করলো। এবারে দাম জিজ্ঞাসা করলাম তিনি ১২০০ টাকার কথা বললেন। যেহেতু সেখানে এক দাম তাই দাম দর করার কোন সুযোগ নেই। বেডশীটের সাথে দুইটা বালিশের কভারও ছিল। সেটা প্যাকেট করে নিয়ে টাকা পরিশোধ করে তার পাশেই ঢাকা পর্দা গ্যালারিতে গেলাম। সেখানে গিয়ে অনেকগুলো আইটেমের পর্দা দেখলাম যার মধ্যে ছবি তোলা গোল্ডেন কালারের পর্দাটা পছন্দ করলাম। সেখান থেকে চারটা জানালার পর্দা নিয়ে আমরা হাইওয়ে রাস্তার দিকে রওনা দিলাম। হাইওয়ে রাস্তার পাশে থেকে সবাই গাড়িতে তেল নিয়ে সোজা বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। তবে সেদিনের পুরোটা সময়ের মধ্যে ব্রিজের উপরে বসে মাঠা খাওয়ার মুহূর্ত টাই সবচেয়ে বেশি ভালো ছিল।
⬇️📥 | ⬇️📥 |
---|---|
ডিভাইস | Samsung galaxy A52 |
ফটোগ্রাফার | @kazi-raihan |
লোকেশন | |
সময় | এপ্রিল,২০২৪ |
এই ছিল আমার আজকের আয়োজনে।
ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ভালো থাকবেন সবাই , আল্লাহ হাফেজ👋।
সবাই ভালোবাসা নিবেন 💚🌹
ইতি,
@kazi-raihan
আমার পরিচয়
আমি কাজী রায়হান। আমি একজন ছাত্র। আমি বাংলাদেশে বাস করি। আমি কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে লেখাপড়া করছি। আমি ফটোগ্রাফি করতে, গল্প লিখতে ও বাইক নিয়ে ঘুরতে খুবই ভালোবাসি। মনের অনুভূতির ডাকে সাড়া দিয়ে কবিতা লিখতে পছন্দ করি। সেই সাথে যে কোনো নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পছন্দ করি। আমি ভালোবাসি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করতে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
https://x.com/KaziRai39057271/status/1784090539090207008
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
মানুষের জীবনে অনেক কিছুর প্রয়োজন হয় । প্রয়োজনের অভাবটা হয়তো পুরোপুরি কখনো পূরণ হয় না তবুও যথাসাধ্য পূরণ করার চেষ্টা করে । এই দিনটি বন্ধু তোমার জন্য খুবই স্পেশাল ছিল। সামনে ভালো একটি সুখবর আসছে । আশা করি সেই পূর্ণতা খুব তাড়াতাড়ি পাবে। অনেক কিছু কেনাকাটার মধ্যেও আনন্দ খুঁজে পাওয়া যায় ঠিক তেমনি বন্ধু তোমার মধ্যে সেটা দেখতে পেয়েছি।
আমাদের কুমারখালির বুলবুল টেক্সটাইল আন্তর্জাতিক নাম করা একটা ব্র্যান্ড কুমারখালির গৌরব বলা যায়।চাদর গুলো খুবই সুন্দর ছিল হাই কোয়ালিটি চাদর তাই দামটাও বেশ।আসলেই এই গরমে বৃষ্টি না হওয়া অবদি সস্তি নেই আমাদের।ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
প্রচন্ড তাপপ্রবাহে একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বের না হওয়াই ভালো। আপনার পোস্টটি অনেক সুন্দর হয়েছে ভাইয়া।গড়াই নদীর ছবিসহ প্রতিটি ছবি ভালো হয়েছে। আসলে নদীতে পানি আর পর্যাপ্ত গাছগাছালি থাকলে এই তাপপ্রবাহে আমাদের ভুগতে হতনা। আমাদের প্রকৃতিকে আমরাই শেষ করে দিচ্ছি। বেডসিট ও পর্দার কালার দারুণ কিনেছেন। পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
প্রচন্ড পরিমাণে গরমের কারণে হয় সকালবেলা নয়তো সন্ধ্যেবেলায় বাইরে বেরোনোই ভালো ভাই। আপনারা দেখছি বুলবুল টেক্সটাইলে যাওয়ার পূর্বে গোলাম কিবরিয়া সেতুর উপরে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে বিকেলটা উপভোগ করেছিলেন। তারপর বুলবুল টেক্সটাইল থেকে একটি পছন্দসই চাদর পেয়েছিলেন আবার তার সাথে ঢাকা পর্দা গ্যালারি থেকে পছন্দর সই পর্দা পেয়েছিলেন জেনে ভালো লাগলো ।
বুলবুল টেক্সটাইল টা কিন্তু একেবারে আমার বাড়ির কাছেই। তবে বুলবুল টেক্সটাইলের অধিকাংশ পণ্য তৈরি হয় মডার্ন টেক্সটাইলে। এটাও ওদেরই কারখানা। একসময় সারা বাংলাদেশের মধ্যে সবচাইতে বড় কাপড়ের লুঙ্গির হাঁট বসতো এই কুমারখালীতে। মাঠা জিনিসটা বেশ ভালো। তবে আমার খুব একটা পছন্দ না। কিন্তু এই গরমে ঠান্ডা মাঠা হলে খারাপ হয় না কিন্তু।।