জীবনে প্রথমবার রক্ত দেওয়ার অনুভূতি

in আমার বাংলা ব্লগ4 days ago

স্টিমিট প্ল্যাটফর্মের আমার সকল বন্ধুগণকে আমার সালাম ও শুভেচ্ছা আসসালামু আলাইকুম আমি @jubayer001 পরম করুনাময় মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করছি.........


1000062121.jpg


আমি আজকে আপনাদের মাঝে যে ঘটনাটি শেয়ার করতে যাচ্ছি এটি হচ্ছে বেশ কিছুদিন আগের একটি ঘটনা। আমি বাড়ি থেকে কলেজে গিয়েছিলাম যাওয়ার পরে তখন বেশ কয়েকটা ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আমি ক্লাসের মধ্যে বসেই ক্লাস করতে ছিলাম। হঠাৎ দেখি কিবরিয়া আমার মোবাইলে ফোন দিয়েছে। ফোন দেওয়ার পরে আমি যখন ফোন ধরলাম তখন আমাকে জিজ্ঞেস করে তোমার রক্তের গ্রুপ কি। আমি তখন আমার রক্তের গ্রুপ কিবরিয়াকে জানিয়েছিলাম। আমার রক্তের গ্রুপ ছিল (B+) তখন কিবরিয়া আমাকে বলে আজকে এক ব্যাগ রক্ত ইমার্জেন্সি লাগবে দিতে পারবা নাকি। তারপর আমি বলেছিলাম আমি তো এর আগে কখনো রক্ত দেইনি। তখন কিবরিয়া বলে রক্ত দিলে কোন সমস্যা হয় না। তারপর আমি বলেছিলাম আমি রক্ত দেখি খুঁজে পাই কিনা আমাদের কলেজে কোন ছেলে মেয়েদের কাছে। আসলে রক্ত দিতে আমার প্রথমে একটু ভয় লাগছিল তাই আমি নিজে থেকেই দিতে চেয়েছিলাম না। তারপরে আমি বেশ কিছু সময় আমাদের কলেজে বন্ধুবান্ধব কে জিজ্ঞেস করার পরে কেউ রক্ত দিতে রাজি হয় না। বেশ কিছু সময় পরে কিবরিয়া আবার আমার মোবাইলে ফোন দিয়েছে। তারপরে আমি নিজেই রাজি হয়ে গেলাম বললাম আমি নিজে রক্ত দিব কোথায় নিবে ঠিকানাটা আমাকে জানিয়ে দাও। তখন কিবরিয়া আমাকে বলে কিছু সময় অপেক্ষা করো আমি তোমাকে ঠিকানা জানিয়ে দিচ্ছি।


1000062120.jpg


কিবরিয়া আবার আমার কাছে ফোন দিয়ে তখন বলে গাংনীতে রক্ত নিবে। তারপরে বলল গাংনী তাহের ক্লিনিকে রক্ত নিবে। আমি কিবরিয়াকে জিজ্ঞেস করেছিলাম কয়টার সময় রক্ত নিবে। কিবরিয়া আমাকে বলল তুমি এখনই কলেজ থেকে বের হয়ে পড় দেখো সবাই ক্লিনিকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তারপরে সেখানে গিয়ে জানতে পারি আজকে রক্ত নিবে কিবরিয়ার একটা বান্ধবী। কিবরিয়ার বান্ধবীর বাবু হবে এই কারণে রক্ত লাগবে। আসলে আমাদের এলাকায় রক্তের একটা গ্রুপের সাথে কিবরিয়া যুক্ত আছে এবং নিজে কিবরিয়া রক্ত দেয়। তাই আমিও উৎসাহ প্রকাশ করেছিলাম। সেখানে আমার যাওয়ার পরে কিবরিয়ার বান্ধবীর হাসবেন্ড আমাদের সবাইকে একটি করে ডাব খাইয়েছিল এবং বেশ কিছু সময় সেখানে বসে আমরা গল্প করেছিলাম তারপরে আমরা রক্ত দেওয়ার জন্য ক্লিনিক এর মধ্যে প্রবেশ করেছিলাম। আসলে কিবরিয়ার বান্ধবীর হাজব্যান্ড সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা সত্যিই তার সাথে দেখা হয়ে আমার বেশ ভালো লেগেছিল খুব সুন্দর মনের মানুষ।


1000062122.jpg


আমাকে যখন ক্লিনিকের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তখন সত্যি আমি নিজের কাছ থেকে একটু একটু ভয় পাচ্ছিলাম। তারপরে আমাকে একটি বেডের উপর শুয়ে দেওয়া হলো সেখানে এক সিরিঞ্চ রক্ত নিয়ে আমার রক্ত টেস্ট করা হয়েছিল। আসলে এক সিরিঞ্চ রক্ত যখন নিয়েছিল তখন সত্যিই আমার হাতে প্রচন্ড লেগেছিল। সিরিঞ্চ দিয়ে রক্ত যখন টেনে নেয় তখন বেশি লাগে। এভাবে যখন রক্ত নিয়ে ছিল তখন আমার হাত স্যালাইনের পাইপ দিয়ে বাধা হয়েছিল। আসলে ছবিগুলো তুলেছিল আমার বন্ধু আমি বলেছিলাম ভালোভাবে তুলতে তবে সে ছবিগুলো তুলতে পেরেছিল না। তাই আমি এই ছবি দিয়েই আপনাদের মাঝে পোস্ট শেয়ার করছি। যেহেতু প্রথম রক্ত দিয়েছিলাম তাই প্রথমবার রক্ত দেওয়ার আগ মুহূর্তে সত্যি নিজের কাছে বেশ ভয় ভয় লাগছিল। এমনিতেই নিজের শরীরটাও ভালো না স্বাস্থ্য অনেকটাই খারাপ। তাও চেষ্টা করেছিলাম নিজের জায়গা থেকে অন্য মানুষকে কিছুটা উপকার করার জন্য। যেহেতু মানুষ মানুষের জন্য তাই প্রত্যেকটা মানুষ প্রত্যেকটা মানুষের কাজে আসবে এটাই স্বাভাবিক। তাই নিজের জায়গা থেকে চেষ্টা করেছি অন্যকে সাহায্য করার।


1000062118.jpg

1000062119.jpg


আমার শরীর থেকে যখন রক্ত নেওয়া শুরু করেছিল তখন অনেক বড় একটা সূচ আমার হাতের মধ্যে দেওয়া হয়েছিল সত্যি হাতের মধ্যে দেওয়ার আগেই দেখে আমি বেশ ভয় পেয়েছিলাম। এত বড় সুচ হাতের মধ্যে এর আগে কখনোই দেওয়া হয়নি। তবে যখন আমার হাতের মধ্যে দেওয়া হয়েছিল আমি চোখ বন্ধ করে ছিলাম কোন কিছুই ঠিক পাচ্ছিলাম না। আমার শরীর থেকে এক ব্যাগ রক্ত নিতে প্রায় অনেক সময় লেগেছিল। রক্ত নেওয়া শেষে আমার হাতে তুলা দিয়ে একটা ইনজুরি টেপ দিয়ে দিয়েছিল। তখনই আমি সেখান থেকে উঠে পড়তে চাই তবে ডক্টর আমাকে নিষেধ করেছিল। তারপরে আমাকে গ্লুকোসের পানি দেওয়া হয়েছিল সেখানে খাওয়ার পরে বেশ কিছু সময় শুয়ে ছিলাম। আমি যখন খাড়া হয়ে উঠেছিলাম তখন আমার মাথা একটু ঘুরে ছিল। আসলে প্রথম প্রথম সেজন্য হয়তো এতোটুকু সমস্যা হয়েছে। চেষ্টা করব নিজের জায়গা থেকে মানুষের উপকার করার জন্য। আজকের লেখা পোস্ট এখানে শেষ করছি। দেখা হবে আবারো পরবর্তী কোন পোস্ট নিয়ে।
আমার পরিচয়

1000059568.png

আমার নাম মোঃ জুবায়ের হোসেন। আমি বাংলাদেশের গাংনী থানার,মেহেরপুর জেলার,খুলনা বিভাগের মটমড়া ইউনিয়নের কামারখালী গ্রামে বসবাস করি। ছোটবেলা থেকেই গ্রামে বেড়ে উঠেছি। আমি বর্তমানে একাদশ শ্রেণীর একজন ছাত্র। আমি বর্তমানে গাংনী সরকারি ডিগ্রী কলেজে অধ্যায়নরত রয়েছি। আমি বিভিন্ন সময়ে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করি ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। ছোটবেলা থেকেই আমার স্বপ্ন রয়েছে আমি বড় হয়ে কোন একদিন ফ্রিল্যান্সার হব। সংক্ষিপ্ত আকারে আমি আমার পরিচয় শেষ করলাম সকলকে আমার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ।

1000059906.png

1000059908.png

Sort:  
 2 days ago 

রক্তদান করা খুবই মহৎ একটি কাজ। আমরা যদি একে অন্যের বিপদে এগিয়ে আসি তাহলে আমাদের বিপদেও একসময় সবাই এগিয়ে আসবে। আপনার রক্তদান করার মুহূর্ত দেখে ভালো লাগলো। আশা করছি সবাই উৎসাহ পাবে রক্তদান করতে। ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 days ago 

আপনি জীবনে প্রথম রক্ত দিয়েছেন জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। প্রথমবার রক্ত দিতে একটু ভয় ভয় লাগে এটা স্বাভাবিক। এরপর থেকে রক্ত দিতে দেখবেন অনেক ভালো লাগে। আমি নিজেও নিয়মিত রক্তদান করে থাকি। এই তো গত পরশু দিন ও রক্ত দিলাম।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 4 days ago 

কিবরিয়া ভাইয়া বলেছে রক্ত লাগবে আর আপনিও রক্ত দান করেছেন এটা জেনে সত্যিই ভালো লাগলো। রক্ত দান করা সত্যি অনেক মহৎ একটি কাজ। আমাদের প্রত্যেকের উচিত রক্ত দান করার প্রতি উৎসাহিত হওয়া। অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্ট পড়ে।

 2 days ago 

মানুষ মানুষের জন্য। রক্তদান করে অনেক ভালো একটি কাজ করেছেন। কারণ রক্ত দান করা একটি মহৎ কাজ।একটি মানুষের জীবন রক্ষা করা। আপনি রক্তদান করেছেন দেখে অনেক ভালো লাগলো।রক্তদান করার প্রতি আমাদের সকলের উৎসাহিত হওয়া উচিত। দোয়া করি সৃষ্টিকর্তা আপনাকে ভালো রাখুক।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.030
BTC 59112.75
ETH 2519.48
USDT 1.00
SBD 2.47