গল্প:- গরম ডাক্তার।( দ্বিতীয় পর্ব)

in আমার বাংলা ব্লগlast month

IMG_20240718_135827.jpg

ক্যানভা দিয়ে তৈরি,

হ্যালো বন্ধুরা,

সবাই কেমন আছেন। আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর রহমতে খুবই ভাল আছি।আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি বাস্তব গল্প শেয়ার করব। আশা করবো গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে। আমাদের চারপাশে প্রায় বিভিন্ন ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। যেগুলো থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়ার অনেক বিষয় রয়েছে। এজন্য এই সকল বিষয়গুলো আপনাদের শেয়ার করলে আপনারাও অনেক কিছু শিখতে পারবেন। এমনকি অনেকগুলো বিষয় সম্পর্কে অবগত হবেন। এইজন্য আমি চেষ্টা করি বিভিন্ন বিষয়গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরার জন্য। এখন মানুষের আসলে ভরসা নেই। একেকজন একেক ধরনের, এবং একেক জন একেক ধরনের মানসিকতার।

আজকে আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করব গরম ডাক্তার এর দ্বিতীয় পর্বটি। কিছুদিন আগে গরম ডাক্তারের প্রথম পর্ব আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছিলাম। আপনারা ইতিমধ্যে অনেকেই জানেন আমাদের এলাকায় একজন গরম ডাক্তার আছে। যিনি বিভিন্ন ধরনের লতা পাতা দিয়ে ওষুধ দেয়। তার ওষুধগুলো যদি কেউ একটু এদিক-ওদিক করে খায় তাহলে তার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। বিগত কয়েক বছর আগে আমাদের এলাকার একজন হুজুরকে তিনি ওষুধ দিয়েছেন। যদিও হুজুরটি অনেক বড় একজন মাওলানা ছিল। মূলত হুজুর বলেছেন তার খাওয়া-দাওয়ার রুচি নেই। এই কারণে তাকে একটু ওষুধ দেওয়ার জন্য বললেন।

এবং গরম ডাক্তার তাকে লতা পাতার ওষুধ দিয়েছে। বলেছে এই ওষুধ এক সপ্তাহ পর সামান্য কিছু ওষুধ খাবেন। এবং ওষুধ খাওয়ার পর হাঁটা চলা এবং গরমের মধ্যে ও গরম জাতীয় খাওয়া-দাওয়া করতে পারবে না। এবং হুজুরকে এই ও বলেছে আপনি যদি ভুল ওষুধ খান তাহলে ক্ষতি হবে। এরপর হুজুর একদিন সকালবেলা লতা পাতার ওষুধ খেলেন দুধ দিয়ে। তারপর হুজুর বাড়ি থেকে বাজারে গেলেন বাজার করার জন্য। যদিও বাজারটি আমাদের বাড়ি থেকে 4-5 কিলোমিটার দূরে। বাড়ি থেকে চার পাঁচ কিলোমিটার দূরে হেঁটে গেলেন হুজুর। এরপর ওইখানে কয়েকজন পরিচিত লোক তাকে কয়েক ধরনের নাস্তা খাওয়ালেন। নাস্তাগুলো খেয়ে বাজার করে আবার বাড়ির সামনে এসে গরম গরম ডালের বুট ভাজি ও খেলেন।

তবে এই হুজুরকে সবাই অনেক ইজ্জত করে এবং সবাই মনে করে হুজুরকে কিছু খাওয়াতে পারলে দোয়া পাবে। আর হুজুরও কেউ কিছু দিতে চাইলে এবং কিছু খেতে বললে মানা করে না। তারপর হুজুর দোকান থেকে ডালের বুট খেয়ে বাড়িতে আসলো। বাড়িতে আসার পর হুজুর বাথরুমে গেলেন জরুরী কাজ সারানোর জন্য। এখন বাথরুমে যাওয়ার পর হুজুরের জরুরী কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এবং হুজুরের প্রস্রাব পায়খানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর জ্বালাপোড়া বেড়ে গেল চেচামেচি চালু করে দিলেন। এবং ঘরের সামনে মাটিতে শুয়ে হুজুর জোরে জোরে কান্নাকাটি করতে লাগলো। এবং বলতেছে গরম ডাক্তার আমাকে ওষুধ দিয়েছে আমি খেয়েছি এখন আমি মরে যাচ্ছি। এই কথা শুনে বাড়ির লোক গুলো তাড়াতাড়ি করে হুজুরকে বড় হাসপাতালে নিয়ে গেল বসুরহাটে।

তারপর ওখানে ডাক্তার হুজুরকে দেখাশোনা করে দেখলো তার পায়খানা প্রস্রাব বন্ধ হয়ে গেল। এবং এইগুলো ওষুধ ও ডাক্তারি মেডিসিন দিয়ে বাহির করল। এবং তিনদিন হুজুর ওই হাসপাতালে ছিলেন। শুধু একটু ভুল ওষুধ খাওয়ার কারণে। এইদিকে আমাদের এলাকা হইচই পড়ে গেল গরম ডাক্তার ভুল ওষুধ দিয়ে হুজুরকে মেরে ফেলতেছে। এখন হুজুর বড় হাসপাতালে আছেন। এবং হুজুরের কিছু হলে গরম ডাক্তার ও তার পরিবার সবাইকে মেরে ফেলবে হুজুরের আত্মীয়-স্বজন বলতেছে। যখন হুজুর সুস্থ হলেন তখন বাড়িতে আসলেন। এলাকার লোক এবং হুজুরের আত্মীয় মিলে গরম ডাক্তারকে ধরে নিয়ে গেলেন তার বাড়ির সামনে। কেন গরম ডাক্তার ভুল ওষুধ দিয়ে তার এই ক্ষতি করেছে।

এঈদিকে গরম ডাক্তার বলেছে আমি ওষুধ সঠিক দিয়েছি কিন্তু সেই ভুল ওষুধ খেয়েছেন। এই কারণে তার এই ক্ষতি হয়েছে। যদিও হুজুরের আত্মীয়-স্বজন ডাক্তারকে মারার চেষ্টা করেছে। তখন গরম ডাক্তার বলতেছে হুজুর আপনি সত্য কথা বলেন আমি ওষুধ দেওয়ার সময় কি বলেছি আপনাকে। আপনি আলেম মানুষ মিথ্যা বলবেন না। তারপর হুজুর সত্য স্বীকার করেছেন। এবং হুজুর নিজেও বলতেছে ওষুধ দেওয়ার সময় আমাকে বলে সপ্তাহে সামান্য পরিমাণ ওষুধ খাওয়ার জন্য লতা পাতার। এবং চলাফেরা ও খাওয়া-দাওয়া করার জন্য মানা করেছে। বিশেষ করে ওষুধ খাওয়ার পর দুই ঘন্টা কোন খাওয়া-দাওয়া যেন না করে।

আর আমি এই ওষুধ খেয়ে বাজারে গেলাম এবং অনেক জনে আমাকে নাস্তা খাওয়ালো আমি সব খেলাম। লাস্ট বাড়ির সামনে এসে গরম গরম ডালের বুট ভাজি ও খেলাম। এরপর আমি বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছি। তারপর গরম ডাক্তার বলতেছে দোষটি কি আমার না আপনার। তখন হুজুর স্বীকার করেছেন দোষ আমার। কারন আমি তার কথামতো ওষুধ খেয়ে কথাগুলো রাখতে পারিনি। এই কারণে আমার এই অবস্থা হয়েছে। তবে কেউ তাকে কিছু বলবেনা আমি আমার ভুলের কারণে কষ্ট পেয়েছি। আসলে হুজুরের এই কথাগুলো শুনে সবাই গরম ডাক্তারকে ছেড়ে দিলেন। এই হচ্ছে গরম ডাক্তারের দ্বিতীয় পর্ব। (চলবে)

আমার পরিচয়

IMG_20221006_094439.jpg

আমার নাম মোঃ জামাল উদ্দিন। আর আমার ইউজার নাম @jamal7। আমি বাংলাদেশে বসবাস করি। প্রথমত বাঙালি হিসেবে আমি নিজেকে অনেক গর্বিত মনে করি। কারণ বাংলা ভাষা আমাদের মাতৃভাষা। তার সাথে ফটোগ্রাফি করা আমার অনেক শখ। আমি যে কোন কিছুর সুন্দরভাবে ফটোগ্রাফি করার চেষ্টা করি। তার সাথে ভ্রমণ করতেও ভীষণ ভালো লাগে। বিশেষ করে নতুন নতুন জায়গা ভ্রমণ করতে ভীষণ ভালো লাগে। তার সাথে লেখালেখি করতে ও ভীষণ ভালো লাগে। যে কোন বিষয় নিয়ে কিংবা যে কোন গল্প লিখতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আর সব সময় নতুন কিছু করার চেষ্টা। নতুন ধরনের কিছু দেখলে করার চেষ্টা করি।
35FHZ8gBpndbrF88KC8i6DmfoqNdVfSnhzJshZCJksDJs27YpCCUjp1oaP6ko3mLJbQtLE76ZKc5r3aFXKh8EK2Xg2XbxHP97436Dksrat...K3RRDcGvdyC6bx3TE39Zctd2ho1pJ1hm9nj6RC6gfhhSEVDEf6zHmiqsgBwDTEDG8onxfxrWKe5ZMmiwAvtnX6XvsCqykCT5aFqMFBq2wcdKNs74j1RgTuza3g.png

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjde9gvbjDSDFUe2t87sHycAo9yh4cXNBQ2uKuZLC2jPzA8Qx5HRSqkJDxCm2F1P...XMCuWWrUK8WEzc1spvbtGymKcxp9cSaiY7YD7nmGv2yy3TJjQK1R5Bx6mMsJqHLdPZ4gBXB1M3ZGWR3ESWZxh8hd9tvb68pfdL8xHrioiqDnHuRUqd8FYt5aog.png

ধন্যবাদ সবাইকে

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59696.15
ETH 2618.35
USDT 1.00
SBD 2.41