নাটক রিভিউ || "রূপকথা"

আপনাদের সাথে আরো একটি ভিন্ন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আপনাদের সাথে একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করব। পোস্টে ভিন্নতা আনার জন্য একেক সময় একেক ধরনের পোস্ট করা হয়। আজকে যে নাটকের রিভিউ টি শেয়ার করবো সেই নাটকের নাম হচ্ছে "রূপকথা"। নাটকটি দেখে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে এই নাটকের ট্রেলার দেখার পর এই নাটকটি দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তবে সময় না পাওয়ার কারণে এতদিন দেখতে পারিনি। গতকাল সকালেই নাটক টি দেখেছি। আশা করছি রিভিউটি পড়ে আপনাদের কাছেও ভালো লাগবে।

নাটকের তাওসিফ মাহবুব এর নাম থাকে ইমন এবং পায়েলের নাম থাকে তমা। তমার বাবার চাকরির ট্রান্সফারের কারণে তারা নতুন একটা এলাকায় আসে। সেখানেই ইমনের সঙ্গে দেখা হয়। ইমন একজন বখাটে ছেলে। সারাদিন নেশা করে জুয়া খেলে। সে তমা কে প্রথম দেখেই পছন্দ করে কিন্তু তমা প্রতিদিন তাকে ইগনোর করতো বখাটে ছেলে বলে। ইমনের বন্ধুরা লুকিয়ে তমার সম্পর্কে অনেক কিছু জেনে নেয়। তমা বাংলা সাহিত্যের বই পড়তে ভীষণ ভালোবাসতো। বিশেষ করে হুমায়ন আহমেদের লেখা তার অনেক পছন্দের ছিলো। ইমন যখন এই কথা জানতে পারে তখন সে হুমায়ন আহমেদের সব বই পড়তে শুরু করে। মোবাইল রিচার্জের দোকান থেকে তমার নাম্বার নিয়ে নেয়। তারপর সে মোবাইলে কল দিয়ে খুব সুন্দর ভাবে কথা বলে। রূপকথার গল্পের মতো অনেক কথা হয় তাদের। তমার মূলত একটা ইচ্ছা ছিলো যে একদিন তার রূপকথার রাজকুমার আসবে। তমা এই জিনিস গুলো ইমনের কথার মধ্যে খুঁজে পায়। কিন্তু তমার জানতো না যে এটা তাকে প্রতিদিন বিরক্ত করা বখাটে ছেলে টা। মোবাইলে অনেক কথা হলো তাদের। তমা দেখা করতে চাইলে ইমন দেখা করতে চাইতো না। কিন্তু লুকিয়ে লুকিয়ে তার পছন্দের জিনিস গুলো গিফট করতো।

হঠাৎ একদিন তমার বাবা তার বিয়ে ঠিক করে। এবং বলে তাকে ছেলে পক্ষ দেখতে আসবে। তখন সে মোবাইল ইমনের সঙ্গে কথা বলে দেখা করতে চায়। এরপর দিন তারা একটা জায়গায় দেখা করে। তমা যখন জানতে পারে যে সে এতদিন মোবাইলে এই বখাটে ছেলের সঙ্গে কথা বলেছে তখন সে কিছু না বলেই বাসায় চলে যায়। এবং সেভাবে সে এতদিন ভুল করেছে। এরপর সে পুরোপুরি ভাবেই ইমনের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ছেলে পক্ষ যেদিন তাকে দেখতে আসে সেদিন তারা প্রায় ১৫ লক্ষ যৌতুক চায়। সেদিন তমা ভাবে সে যদি ইমনের সঙ্গে পালিয়ে যায় তখন তার ভুল হবে কিন্তু তার বাবা যেটা করছে সেটাও ভুল। তাই সে নিজের ভুলটাকে বেছে নেয়। এরপর সে ইমনের সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করে ফেলে। তমা আস্তে আস্তে চেষ্টা করে ইমন কে ভালো করার জন্য। তাকে নেশা করতে দেয় নাই। তাকে কাজ করে টাকা উপার্জন করতে বলে। সেও আস্তে আস্তে ঠিক হচ্ছিল। তবে তার আগের বন্ধুদের সাথে দেখা হলে তারা জোর করে তাকে নেশা জাতীয় জিনিসগুলো খাওয়াতো। একদিন হঠাৎ তমা একটা দাওয়াতে যায়। কিন্তু ইমন যায় না। তার বন্ধুরা এই জিনিসটা দেখে তারা নেশা জাতীয় জিনিসগুলো নিয়ে ইমনের বাসায় চলে আসে। ইমন খেতে না চাইলেও তারা জোর করে খাওয়ায় তাকে। তমা এসে যখন এই জিনিসটা দেখে তখন সে রাগ করে তার বাবার কাছে চলে আসে।

ইমন অনেক চেষ্টা করে তাকে ফিরিয়ে আনতে তবে সে যায় না। এবং তমা তাকে বলেছি ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিবে। এই কথাগুলো শুনে ইমন তার বাড়ি থেকে চলে যায় অনেক দূরে। হঠাৎ একদিন তমা জানতে পারে সে প্রেগনেন্ট। এরপর সে আর ডিভোর্স লেটারের সাইন করে না। সে প্রতিদিন ইমনকে বাড়িতে খুঁজতে যেতো। কিন্তু প্রতিদিন ফিরে আসতো। ইমন হঠাৎ একদিন তার বাড়িতে ফিরে আসে। তখন সে তমার একটা চিঠি পায়। এই চিঠিটা পেয়েছে তমার বাড়িতে যায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখে তমা আর বেঁচে নেই। ডেলিভারির সময় সে মারা গিয়েছি। তোমার বাবা ইমন এর হাতে ইমন এবং তমার মেয়ে রূপকথা কে তুলে দেয়।

সকল ছবি মোবাইলে স্ক্রিনশট নেওয়া।

নাটকটা আমার কাছে বেশ ভালোই লেগেছে। ভিন্ন ধরনের গল্প ছিল নাটকে । যদিও হ্যাপি এন্ডিং ছিল না। এই নাটকটি থেকে আমরা যে জিনিসটা শিখতে পারি সেটা হচ্ছে আমরা যদি নিজেদের খারাপ অভ্যাসগুলো ত্যাগ করতে চাই তাহলে আগে আমাদের খারাপ সঙ্গ ত্যাগ করা উচিত। নাটকের মধ্যে ইমন অনেক চেষ্টা করে কিন্তু তার বন্ধুরা তাকে জোর করে। আর আরো একটা জিনিস হচ্ছে মানুষকে কথা দিয়ে কথা রাখা উচিত। ইমন বেশ কয়েকবার তমা কে মাথা ছুঁয়ে কথা দিয়েছে সে এই নেশা করবে না কিন্তু সে প্রথমদিকে তার কথা রাখেনি।