বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে লেখা একটি গল্প
"হ্যালো",
সবাইকে আমার নতুন একটি ব্লগে স্বাগতম। আমরা মেয়েরা অনেকটা তরল পদার্থের মতো। যখন যে পাত্রে রাখা হয় তখন সেই আকার ধারন করি। মেয়েরা কত স্বপ্ন নিয়ে নতুন সংসার সাজাবে বলে শ্বশুরবাড়িতে যায়।তবে আমার মনে হয় না সব নিয়ে নিজের মতো করে সংসার সাজাতে পারে। কারণ শ্বশুরবাড়িতে ননদ এবং শাশুড়ি নামের দুজন ব্যক্তি থাকে। যারা প্রায় সময়ই অনেক রাগী এবং খারাপ ব্যবহার করে ছেলের বউ কিংবা ভাইয়ের বউয়ের সঙ্গে। আমরা মেয়েরা মানসম্মানের ভয়ে অনেক সময় চুপ করে সেই অত্যাচারগুলো সহ্য করি। আবার অনেক সময় রুখে দাঁড়াই। যখন আপনি রুখে দাঁড়াবেন তখন আপনি খারাপ বৌমা হয়ে যাবেন।
সেদিন হঠাৎই ছোট্ট একটা ঘটনা আমার চোখের সামনে ঘটে গেলো।দুদিন আগে সন্ধ্যাবেলা আমার পাশের বাসায় বেশ চেঁচামেচির আওয়াজ পেলাম। অনেকটা আগ্রহ নিয়ে সেখানে গিয়ে দেখলাম পাশের বাড়ির এক মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে কোনো একটা ঝামেলা হওয়ায় বউকে বাবার বাড়িতে রেখে জামাই সেই মেয়েটার ২ বছর বয়সের বাচ্চাটাকে মায়ের কাছে থেকে নিয়ে চলে যাচ্ছে। আমার চোখের সামনে এই ঘটনাটি ঘটে যেতে দেখে আমি ভাবলাম মেয়েদের জীবন কতটা ঠুনকো। একটু কিছু হলেই শ্বশুর বাড়িতে আর জায়গা হয় না। এরপর সেখান থেকে পুরো বিষয়টা জানার চেষ্টা করেছিলাম। কারণ আমার কাছে বিষয়টা খুবই খারাপ লেগেছিল। বিশেষ করে বাচ্চাটার জন্য। এটুকু বাচ্চা কিভাবে তার মাকে ছেড়ে থাকবে।
বিষয়টা ছিল রুবিনা শশুর বাড়িতে তার স্বামীকে নিয়ে আলাদা খেত। তবে রুবিনার স্বামী নিজের সংসারের জন্য যা কিছু কেনাকাটা করত একই কেনাকাটা তার বাবা-মার জন্য করত। এতে রুবিনা কখনোই নিষেধ করত না কিন্তু রুবিনা শাশুড়ি রুবিনাকে একদমই পছন্দ করে না। একটু কিছু হলেই ছেলেকে বলে বউকে বকা খাইয়ে নেই। রুবিনা হাজার কষ্ট মুখ বুঝে সহ্য করে সংসার করছিল। সেদিন রুবিনা তার বাবার বাড়িতে দু-একদিন থাকার উদ্দেশ্যে এসেছিল দুই বছরের বাচ্চাকে নিয়ে। কিছুক্ষণ পর তার স্বামী একটি পলিথিনের ব্যাগ নিয়ে তার বাসায় হাজির। পলিথিনে ছিল কিছু নষ্ট সবজি, ফলমূল এবং পাউরুটি।
যেগুলো রুবিনা চলে আসার পর তার শাশুড়ি রুবিনার ঘর থেকে খুঁজে এই জিনিসগুলো বের করেছে। বের করে ছেলেকে বলেছে রুবিনা এত পরিমাণে হিংসা যে ঘরে জিনিস পঁচিয়ে ফেললেও কাউকে খেতে দেয়না। এই জিনিসগুলো দেখে তার স্বামীর মাথায় রাগ উঠে গেছে।আর তাই সে শ্বশুরবাড়িতে এসে এই ঘটনাটা ঘটিয়ে ছিল।আমার কাছে এটা খুবই ছোট একটা বিষয় মনে হয়েছে। কারণ নরমালি আমরা ফ্রিজে সবজি রেখে খেতে খেতে অনেক সময় সবজি পঁচে যায়। আসলে তার শাশুড়ির উদ্দেশ্য ছিল ছেলেকে দিয়ে ছেলের বউকে কথা শুনানো।
বাচ্চাটাকে নিয়ে চলে যাওয়ার পর রুবিনা অনেক কান্নাকাটি করছিল। বাচ্চাটা তো কিছু বুঝতে পারছিলো না। কারণ সে ভাবছিল তার বাবা তাকে ঘুরতে নিয়ে যাচ্ছে। যাই হোক এরপর সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল আমি সেখান থেকে চলে এসেছিলাম। পরের দিন শুনতে পেলাম রাত দশটায় তার স্বামী এসে বাচ্চাকে দিয়ে গেছে এবং সব ঝামেলা মিটে গেছে। এটা শুনে বেশ ভালো লাগছিল।
পরিশেষে একটাই কথা বলব সংসার করতে গেলে হাজারো কথা পরিবারের সবার সাথে হতেই পারে। তাই বলে এমন আচরণ করা মোটেই ঠিক নয়।তো যাই হোক বন্ধুরা আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে পরবর্তীতে। সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
❤️আমার পরিচয়❤️
আমি হাবিবা সুলতানা হীরা । জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশাঃ গৃহিণী। শখঃ নতুন নতুন রেসিপি বানাতে ভালো লাগে। তাছাড়া গান গাওয়া, আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা ও বাগান করতে আমি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আমি স্টিমিটে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে যুক্ত হই।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
বিশ্বাস করেন আপু যদিও এখন ডিজিটাল যুগ। তবুও এই সময়ে এসেও সমাজে এমন কিছু শ্বশুড়ী এখনও আছে যারা ছেলের বউ এর সুখ সহ্য করতে পারে না। আসলে আপনার গল্প পড়ে আমার কাছে বেশ খারাপ লেগেছে। যাক অবশেষে যে সব ভালোই ভালোই সমাধান হয়েছে সেটাই অনেক। ধন্যবাদ আপু এমন সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
ঠিক বলেছেন আপু ডিজিটাল যুগ হলেও শাশুড়িরাও ডিজিটাল হয়েছে।সবশেষে সমাধান হয়ে গিয়েছিল জেনে আমারও বেশ ভালো লেগেছিল আপু।
আসলে সত্যি কথা বলতে কি আপু প্রায় প্রত্যেকটা সংসারে কম বেশি হিংসা-বিদ্বেষ লেগেই থাকে। তবে ফ্রিজে এমন তরকারি বুঝতেই পারে। তাই বলে ছেলের সামনে উপস্থাপন করে ছেলের বউকে আঘাত দেওয়াটা ঠিক নয়। এমনিতেই পুরুষ মানুষের যে কোন ব্যস্ততার কারণে মাথা গরম থাকতে পারে আর ওই মুহূর্তে আঙ্গুল ঘুরিয়ে দোষ খুঁজে দেখানোটা বোকামি ছাড়া কিছুই না। এতে পরিবারে অশান্তি লেগে থাকে। এ থেকে আবার বড় আকারের দুর্ঘটনা হয়ে যায়।
মনের কথা বলেছেন ভাইয়া সব কথা পুরুষ মানুষকে বলতে হবে এমনটা মোটেই ঠিক না। কারণ তারা বাহির থেকে কোন ব্যস্ততা নিয়ে আসে না আসে বলা যায় না। যাক অবশেষে সব কিছু মিটে গিয়েছিল এটাই অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
খুব দুঃখজনক ঘটনাটি।আসলেই মেয়ের জীবনটাই এমন কিছু হলে শ্বশুড়বাড়িতে জায়গা হয় না আর।আসলেই রুবিনার শ্বশুড়িটি দজ্জাল প্রকৃতির।একজন মেয়ে হয়ে কি করে আর একটি মেয়ের সাথে এমন আচরণ করে বুঝি না।যাইহোক পরিশেষে বাচ্চাকে দিয়ে গেছে এবং সব কিছু মিটমাট হয়ে গেছে জেনে বেশ ভালো লাগলো।ধন্যবাদ পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।
আসলে আমার মাথাতেও আসে না একটা মেয়ে হয়ে কিভাবে অন্য একটা মেয়ের ক্ষতি করে। সেটা ছেলের বউ কিংবা যে কেউ হোক। যাক অবশেষে তাদের মিলমিশ হয়েছিল সেটা শুনে অনেক ভালো লেগেছিল আপু। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
রুবিনার ব্যাপারটা জেনে আসলেই খুব খারাপ লাগলো। রুবিনার শ্বাশুড়ি তো দেখছি একেবারে অদ্ভুত টাইপের। তাছাড়া রুবিনার শ্বাশুড়ির কথা শুনে তার স্বামী যে এমনটা করে, সেটা মোটেই উচিত নয়। রুবিনার স্বামীর উচিত ছিলো সত্যিটা খুঁজে বের করা। তাছাড়া রুবিনার মুখের কথা শোনা উচিত ছিলো। প্রতিটি ছেলের দায়িত্ব মা'কে সাপোর্ট করার পাশাপাশি নিজের বউকেও সাপোর্ট করা। তাছাড়া দু'জনকে ভালোভাবে সবকিছু বুঝানো। যাইহোক সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক সেই কামনা করছি। পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
হ্যাঁ ভাইয়া আমারও এটা মনে হয়েছিল রুবিনার স্বামীর উচিত ছিল রুবিনার কাছ থেকে পরবর্তীতে সব কিছু জেনে নেওয়া। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।