ফেলে আসা জীবনের দুরন্তপনা ❤
"হ্যালো",
সবাইকে আমার নতুন একটি ব্লগে স্বাগতম। আজ আমি আমার কলেজ জীবনের একটি এ ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। অনেকদিন পর আজ হঠাৎ করে গ্যালারিতে দুটো ফটো দেখতে পেলাম। এই ফটোগুলো আমরা প্রায় রাত বারোটার দিকে তুলেছিলাম। আমি যখন কলেজে ভর্তি হয়ে তখন পড়াশোনার জন্য কলেজ হোস্টেলে ছিলাম। আমাদের হোস্টেলে সব বড় আপুরা ছিল এবং আমরা সেম ইয়ারের ছিলাম প্রায় ছয় জন।পুরো হোস্টেলটা আমরা মাতিয়ে রাখতাম সব সময়। যখন আমরা খাওয়ার জন্য ডাইনিং রুমে যেতাম রান্না খালারা বড় আপুরা বলত গ্যাং আসছে।
আমাদের অনেক দুষ্ট মিষ্টি ঘটনা আছে এই হোস্টেল জুড়ে। তারই একটি ঘটনা আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি। যেহেতু আমরা অনেকগুলো ছিলাম একসঙ্গে তাই মাঝে মধ্যে দুষ্টু বুদ্ধি গুলো আমাদের মাথায় চাপতো। তো একদিন রাতে আমরা রুমের সামনে বসে গল্প করছিলাম।হোস্টেলে তিন তলায় একপাশে রুম ছিল এবং এক পাশে ছাদ ছিল কিন্তু উপরের ছাদে নিষেধ ছিল। এবার মাঝরাতে গল্প করতে করতে আমাদের মাথায় হঠাৎ করে চেপে বসে যে আজ আমরা উপরে ছাদে উঠবো। কিন্তু কথা হলো উপরের ছাদের গেটে সব সময় তালা দেওয়া থাকে আমরা চাবি কোথায় পাবো।
আজ থেকে সাত বছর আগে আমার একটা স্কিন টাচ ফোন ছিল সেই ফোনে তোলা পিক।
এরপর নিচে যে খালা থাকেন আমরা চুপি চুপি সেই খালার কাছে চলে আসি। খালার কাছে চাবি চাই কিন্তু খালা কিছুতেই রাজি হন না চাবি দিতে। এরপর অনেক বোঝানোর পর খালা চাবি দেন কিন্তু বলেন ছাদে গিয়ে যেন কোন শব্দ না করি লাফালাফি না করি। আমরা তো চাবি পেয়ে মহা খুশি। এরপর চুপি চুপি উপরে উঠে চার তলার চাবি খুলে আমরা পা টিপে টিপে ছাদে গিয়ে গোল হয়ে বসে পরলাম। আমাদের অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল চারতলা ছাদে উঠে পুরো শহরটা দেখব।সবাই বসে গল্প করতে করতে সবার আবার মুড়ি মাখা খেতে ইচ্ছে করলো। এরপর আমি এবং সাথে আরো দুইজন বান্ধবী মিলে নিচে এসে মুড়ি মেখে নিয়ে উপরে চলে যায়।
সেদিন আমরা প্রায় রাত তিনটা পর্যন্ত সেখানে বসে আড্ডা দিয়েছিলাম। অনেক ভয়ও লাগছিল। কারণ নিচে আমাদের স্যার সহ তার পরিবার থাকেন। যদি কোনো কারণে জানতে পারেন তাহলে আমাদের বারোটা বাজিয়ে দিবেন।যাই হোক অনেক রাত পর্যন্ত আড্ডা দেওয়ার পর আমরা ঘুমিয়ে পড়ি। সকালবেলা খুব ভয়ে ভয়ে আমরা ডাইনিংয়ে খেতে আসছিলাম ভাবছিলাম কেউ জানতে পেরেছে কিনা। ঐ যে কথায় বলে না চোরের মন পুলিশ পুলিশ আমাদের হয়েছিল সেই অবস্থা। যাই হোক এরপর দেখছিলাম সবকিছু স্বাভাবিক তার মানে কেউ কিছু জানতে পারেনি। তখন আমরা সবাই মিলে খুব জোরে হেসে উঠেছিলাম ডাইনিং এ।এবার সবাই তো অবাক আমরা কেন হাসলাম এত জোরে। সবাই আমাদের পাগল বলে আখ্যায়িত করে চলে গেল রুমে রুমে।
এরকম আরো কিছু ঘটনা আছে যেগুলো আমি অন্য কোন সময় আপনাদের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করব। আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি দেখা হবে পরবর্তীতে। সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে।
❤️আমার পরিচয়❤️
আমি হাবিবা সুলতানা হীরা । জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশাঃ গৃহিণী। শখঃ নতুন নতুন রেসিপি বানাতে ভালো লাগে। তাছাড়া গান গাওয়া, আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা ও বাগান করতে আমি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আমি স্টিমিটে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে যুক্ত হই।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
হোস্টেল জীবন মানেই কত শত ঘটনা আর আনন্দ-বেদনার গল্প। তেমনি একটি নষ্টালজিক ঘটনা আপনি আজ আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন আপু। আপনাদের ঘটনাটি অনেক দুঃসাহসিক ছিল।তবে তখনকার বয়সটাই তো দুঃসাহসিতার! নিয়ম ভাঙ্গার। খুব ভালো লেগেছে পোস্টটি। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ আপু।
হ্যাঁ আপু এমন ঘটনা আরও অনেক আছে। সেগুলো এখন মনে পড়ে অনেকটাই ভালো লাগে। কত কি করেছি। আর এখন কেমন গুটিয়ে গেছি। সংসার নিয়ে ব্যস্ত। সুন্দর মন্তব্য পেয়ে অনেক ভালো লাগলো আপু।
সত্যি আপু কলেজ জীবনের দুরন্তপনার কথা বলে শেষ করা যাবে না। তখন শুধু মনে হতো পড়াশোনা না হলে ভালো হতো । এটা সত্যি আপু চোরের মন সব সময় পুলিশ পুলিশ থাকে। যাইহোক এখন আর সেই সময় ফিরে পাওয়া যাবে না। ধন্যবাদ আপু বেশ ভালো লাগলো।
এখন খুব আফসোস হয় সে দিনগুলো কেন শেষ হয়ে গেল। আগের দিনগুলোতে আবারো ফিরে যেতে মন চায়। যাইহোক ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।
বাহ সাত বছর আগের গল্প আপনি শেয়ার করলেন। আবার ফটোগ্রাফির মাধ্যমে শেয়ার করতে পেরেছেন। অনেক ভালো লাগলো আপু আপনারা তো দেখছি অনেক গল্প গুজব করেছিলেন ছাদে উঠে সবাই মিলে। আবার মুড়ি মাখাও খেলেন। অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত শেয়ার করলেন ধন্যবাদ।
আপু আমরা কয়জন ছিলাম সেই লেভেলের দুষ্ট। আমাদের হোস্টেলটা কলেজের মধ্যেই ছিল তাই কলেজে যেকোন ফলের গাছ কিংবা ফুল থেকে শুরু করে সবকিছুর উপরে আমরা ঝাপিয়ে পড়তাম। সাথে আরো অনেক দুষ্টুমি আছে পরে একদিন শেয়ার করব। ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
সাত বছর আগের হোস্টেলের ঘটনা আপনি খুব সুন্দর করে আমাদের মধ্যে তুলে ধরেছেন। তবে আপনাদেরকে গ্যাং বলা হত শুনে অবাক লাগলো। তবে মনে হয় আপু আপনাদের রুম গ্যাং অনেক শক্ত ছিল। তবে রাত্রেবেলা ছাদের উপর নিরিবিলে গেলে এমনিতে বেশ ভালো লাগে। যাইহোক সাদে গিয়ে আবার মুড়ি মাখা খেলেন। অতীতের খুব ভালো একটি স্মৃতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
আমরা কয়েকজন খুবই দুরন্তপনা করেছিলাম হোস্টেলে।আবার আমরা সবাই খুব ভালোও ছিলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
হোস্টেল জীবনের মজার ঘটনা গুলো শুনতে বেশ ভালই লাগে। আপনাদের তো অনেক সাহস ছিল আপু, তাই তো এত রাত পর্যন্ত বান্ধবীরা সবাই মিলে হোস্টেলের ছাদে সময় কাটাতে পেরেছিলেন। আমি চিন্তা করছি, ওই সময় ধরা পড়লে আপনাদের কি অবস্থা হতো! যাই হোক, পুরোনো ফটোগ্রাফিতে আপনাকে দেখে বেশ ভালোই লাগছে আপু।
একদিক দিয়ে খুব ভালো লাগছিল আবার অন্যদিকে চিন্তাও হচ্ছিল যদি ধরা পড়তাম তাহলে কি হতো। অবশেষে সেরকম কিছুই হয়নি। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
এরকম পরিস্থিতিতে আপু ভয় লাগা এবং ভালো লাগা একসাথেই কাজ করে।
আমাদের জীবনের কিছু কিছু স্মৃতি মনের মধ্যে সারাজীবন রয়ে যায়। বিশেষ করে স্কুল কিংবা কলেজ জীবনের স্মৃতিগুলো সবচেয়ে বেশি মজার হয়ে থাকে। যাইহোক এতো বছর আগের ফটোগ্রাফি রয়েছে আপনার কাছে, এটা দেখে খুব ভালো লাগলো। আমার কাছেও ১৪/১৫ বছর আগের ছবি রয়েছে। হোস্টেল লাইফটা ভীষণ মজার হয়। সবাই একসাথে বেশ মজা করতেন তাহলে। আসলে মাঝে মধ্যে ইচ্ছে করে কিছু কিছু নিয়ম ভঙ্গ করতে। আপনারা এতো রাত পর্যন্ত ছাঁদে বসে আড্ডা দিয়েছেন এবং মুড়ি খেয়েছেন, এককথায় দুর্দান্ত সময় কাটিয়েছিলেন তখন। যাইহোক এমন মজার স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।