নিশ্বাসের কোনো বিশ্বাস নাই💔
"হ্যালো",
শত মন খারাপের মাঝেও ভালো আছি বলতে হচ্ছে। আসলে সত্যি কথা বলতে আমি ভালো নেই। সকালে একটা ফোন কল আসায় হঠাৎ করেই নিমিষেই মনটা খারাপ হয়ে গেছে। ভেবেছিলাম আজকে সকাল সকাল পোস্ট করে সারাদিন কমেন্ট করবো কিন্তু কিছুতেই কাজে মন বসাতে পারছিলাম না ঘটনাটি শোনার পর। অনেক কষ্টে এখন লিখতে বসলাম জানিনা গুছিয়ে বলতে পারব কিনা।
আমার দূর সম্পর্কের খালাতো বোন ছিল লাবনী। ওর সঙ্গে আমার আন্তরিকতা অনেক বেশি। দূর সম্পর্কের বলতে অনেকটাই দূর সম্পর্কের। তারপরও তার সঙ্গে আমি সব সময় যোগাযোগ রাখতাম। সে আমার থেকে বয়সে অনেকটা ছোট। তার মা ছিল না। আজ থেকে ১০ বছর আগে মারা গেছেন। সেই থেকে লাবনী আমার সঙ্গে আরও বেশি করে কথা বলতো। তার দুঃখ কষ্টগুলো আমার কাছে প্রকাশ করতো। কিছুদিন আগেও তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল সে মা হতে চলেছে। কত খুশি ছিল মেয়েটা। এই মাসখানেক হলো কেন জানি না তার সঙ্গে যোগাযোগ করার সময় হয়ে উঠেনি।
আসলে সবাই সবার সংসার নিয়ে এত ব্যস্ত যে অনলাইনে একটিভ দেখেও কারো সঙ্গে কথা বলার সময়টুকু আমাদের নেই। যাইহোক আজ সকাল বেলা তার বড় ভাই আমার কাছে ফোন দিয়েছিল। ফোন দিয়ে বললো লাবনী মারা গেছে। আমি বিশ্বাস করছিলাম না ভাবছিলাম আমার সঙ্গে মজা করছে। আমি সাথে সাথে লাবনীকে মেসেজ পাঠালাম দেখলাম কোন রিপ্লাই নেই। তখন তার স্বামীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না।পরে তার স্বামীর প্রোফাইলে গিয়ে দেখলাম ঘটনা সত্য। হঠাৎ করে একটা ধাক্কা খেলাম।
আমি আমার সেই বড় ভাইকে আবার ফোন দিলাম। ঘটনা জানতে চাইলাম কিভাবে এটা হল।তার ভাইয়ের ভাষ্যমতে "আজ থেকে ৪০ দিন আগে তাকে হসপিটালে ভর্তি করানো হয় ডেলিভারির জন্য। সিজারে তার মেয়ে সন্তান হয়। সবাই খুবই খুশি কিন্তু সেই খুশি যেন বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। সিজারের দুদিন পর হঠাৎ করেই সকালবেলা তার পুরো শরীর সাদা ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। সাথে সাথে তাকে বগুড়া মেডিকেলে রেফার করা হয়। এবার পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য তার রক্ত দরকার কিন্তু পুরো শরীরে কোন রগ খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে হাত কেটে রক্ত নেওয়া হয়েছে।"
এরপর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখে কিডনি দুইটা ড্যামেজ, ফুসফুস একদম নষ্ট। এরপর তাকে লাইফ সার্পোটে রাখা হয়।তার পরের দিন সে সকল মায়া কাটিয়ে না ফেড়ার দেশে চলে যায়। ঘটনাটা শোনার পর খুবই কষ্ট পেয়েছি। কি হবে এই অবুঝ বাচ্চাটার।হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা গুলো মেনে নেওয়া যায় না।
আর বেশি কিছু লিখতে পারছি না। বুকটা ফেটে যাচ্ছে কষ্টে। শেষ বারের মতো একটা নজর দেখতে পারলাম না। এই আফসোসটা থেকেই যাবে সারা জীবন। যাইহোক সবাই আমার বোনটার জন্য দোয়া রাখবেন যেন ও ওপারে ভালো থাকে। এবং তার মেয়েটা সুস্থ থাকে।
আজ এখানেই শেষ করছি। দেখা হবে পরবর্তীতে। সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
❤️আমার পরিচয়❤️
আমি হাবিবা সুলতানা হীরা । জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশাঃ গৃহিণী। শখঃ নতুন নতুন রেসিপি বানাতে ভালো লাগে। তাছাড়া গান গাওয়া, আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা ও বাগান করতে আমি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আমি স্টিমিটে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে যুক্ত হই।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
আসলে আপু জীবনটা সংগ্রামী নময়, তাই নিজের কাজ কর্মের পাশাপাশি আপনজনদের সময় দেওয়া তেমন একটা হয়ে ওঠেনা কিন্তু এভাবে যে মানুষের জীবন হুট করে চলে যায় বেশ মেনে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। যেহেতু উনার দুইটা কিডনি ড্যামেজ ফুসফুসের সমস্যা আর এভাবে হঠাৎ করে মারা গেলেন, এটা আপনজনদের মেনে নেওয়াটা খুবই কষ্টদায়ক।
হ্যাঁ ভাইয়া তার চলে যাওয়াটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। খালি মনে হচ্ছিল কেন একটু যোগাযোগ রাখলাম না তাহলে হয়তো আরো বেশি কিছু সুন্দর মুহূর্ত কাটাতে পারতাম। দোয়া রাখবেন ভাইয়া আমার বোনটা যেন ওপারে ভালো থাকে।
এমন একটা মৃত্যুর খবর জেনে খুবই খারাপ লাগলো আপু। আসলে মানুষের মৃত্যুটা কত কঠিন। আর কত সহজেই জীবন চলে যায়। মানুষটার কিডনি নষ্ট আবার ফুসফুসের সমস্যা এভাবেই জীবন শেষ। সত্যিই বেশ কষ্ট লাগার একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন।
আমারও খুবই কষ্ট হচ্ছে আপু একদমই মেনে নিতে পারছি না। কি আর করার বাস্তবটা তো মেনে নিতেই হবে। ওর জন্য দোয়া রাখবেন আপু।
পোস্ট টি পড়ে ভীষণ খারাপ লাগছে।কিছু কিছু মৃত্যু মেনে নিতে ভীষন কষ্ট হয়।আপনার আপনার খালাতো বোন লাবনী একজন প্রসূতি মা।প্রসূতি মা তার নিস্পাপ শিশুকে রেখে চলে গেলেন না ফেরার দেশে পোস্ট টি পড়ে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। বার বার মনে হচ্ছে বাচ্চাটির কথা।ভালো থাকুন লাবনী পরপারে সেই কামনা করছি।
আমারও বাচ্চাটার কথা ভেবে ভীষণ খারাপ লাগছে আপু। কি আর করার পরিশেষে একটাই চাওয়া ওপারে লাবনী ভালো থাকুক এবং তার মেয়েটা সুস্থ থাকুক।
আপনার আজকের লেখাটা পড়ে সত্যিই অনেকটা কষ্ট পেলাম আপু। একজন মানুষের যখন দুইটা কিডনি ড্যামেজ হয়ে যায় এবং ফুসফুস অকেজো হয়ে যায়, তখন বেঁচে থাকার সম্ভাবনা একেবারেই থাকে না। যেহেতু আপনার বান্ধবী ছিল সে, এজন্য আপনার কষ্ট লাগাটাই স্বাভাবিক। এখন আমি শুধু চিন্তা করছি, এই সদ্য জন্মগ্রহণ করা বাচ্চাটার ভবিষ্যৎ কি হবে 😥।
বাচ্চাটার জন্যই আমার এত বেশি খারাপ লাগছে ভাইয়া। দোয়া রাখবেন বাচ্চাটার জন্য।
আপু আপনার দূর সম্পর্কের খালাতো বোনের কথা গুলো পড়ে আমার ও ভীষণ খারাপ লাগলো।বাচ্চা হওয়ার সময় আমাদের দেশে অনেক মেয়েরই এমন অকাল মৃত্যু হয়।ছোট মেয়েটির কি হবে এখন? আল্লাহই ভালো জানেন।আপনার বোনকে আল্লাহ জান্নাতবাসী করুন,আমিন।নিশ্বাসের কোনো বিশ্বাস নেই এটাই দিনশেষে সত্যি কথা।
হ্যাঁ যে কোনো সময় মৃত্যু হতে পারে। এই ঘটনাটা আমাকে বেশ ভাবিয়েছে।ধন্যবাদ আপু মন্তব্য করার জন্য।
আসলে এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। মাঝেমধ্যে এমন হঠাৎ মৃত্যুর কথা শুনলে মনটা একেবারে খারাপ হয়ে যায়। যাইহোক আপনার দুঃসম্পর্কের সেই খালাতো বোনের দুটি কিডনি যে ড্যামেজ হয়ে গিয়েছিল, সেটা কি আগে কোনো লক্ষণ দেখে বুঝতে পারেনি? সদ্য জন্ম নেওয়া নিষ্পাপ শিশুটির জন্য ভীষণ খারাপ লাগছে। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।