"লাইফ পার্টনার" নাটক রিভিউ
10-02-2023
২৮ মাঘ ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? নিশ্চয় অনেক ভালো আছেন 🌼। আমি ভালো আছি! তবে মুখে ভালো আছি বললেও আমরা কেউই কিন্তু ভালো নেই! কোনো না কোনো সমস্যা থেকেই যাবে! হাসির অন্তরালে কত কষ্ট চাপা পরে যায় তা শুধু সে ব্যক্তিটাই জানে যার আপন মানুষগুলোর সামনে ভালো থাকার অভিনয় করতে হয়! আসলে এই জীবনের ছুটে চলা! এর শেষ কোথায়! মৃত্যু! না না, মৃত্যুর আগেও মানুষকে কয়েকশতবার সংগ্রাম করতে হয় জীবনের জন্য, ভালো থাকার জন্য, ভালো রাখার জন্য। তবে জীবনকে আমরাই সরল করি আবার আমরাই জটিল করি। যাক ঐদিকে না যায়! এডমিশনে এসে বুঝতেছি আসলে টাইম কতটা গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেক সেকেন্ড গুরুত্বপূর্ণ! আসলে সারাদিন পড়ার মধ্যে থাকতে কি ভালো লাগে! বিকালে একটু সময় পেয়েছিলাম! তখন একটু রিফ্রেশমেন্ট এর জন্য একটা নাটক দেখেছিলাম! নাটকটির নাম হচ্ছে লাইফ পার্টনার। আশা করি আপনাদের কাছেও ভালো লাগবে।
নাটকের কিছু তথ্য
নাম | লাইফ পার্টনার । |
---|---|
রচনা ও পরিচালনা | জাকারিয়া সৌখিন |
প্রযোজক | এসকে শাহেদ আলী। |
অভিনয়ে | ফারহান, সামিরা খান মাহি, শাহবাজ সানি, শিরিন আলম, মোশাররফ হোসেন খান রকি সহ আরও অনেকে। |
দৈর্ঘ্য | ৪২ মিনিট ১৭ সেকেন্ড। |
মুক্তির তারিখ | ১১ই জানুয়ারী , ২০২৩ইং |
ধরন | রোমান্টিক , ড্রামা |
ভাষা | বাংলা। |
দেশ | বাংলাদেশ |
চরিত্রেঃ
নাবানঃ
মুশফিক আর ফারহান ।নীলিমাঃ
সামিরা খান মাহি ।কাহিনী সারসংক্ষেপ
নাটকের শুরুতে দেখা যায়, নাবান মজুমদার ফটোসেশন করছে। কারণ তার বিয়ের কথা চলছে। নাবান মজুমদারের সবথেকে বড় পরিচয় আমেরিকার গ্রিন কার্ডদ্বারী নাগরিক! এজন্য পাত্রীপক্ষরা বেশ আগ্রহ দেখায় তাদের মেয়েকে এমন একজন এস্টাবলিশ ছেলের সাথে বিয়ে দেয়ার জন্য। ছেলে আমেরিকার সিটিজেনশিপ পেয়েছে জেনে অনেক মেয়ে বিয়েতে সরাসরি রাজি হয়ে যায়। কিন্তু নাবানের আর মনের মতো পাত্রী মিলে না! পাত্রী যে কয়টা দেখেছে সবাই শুধু আমেরিকার সিটিজেনশিপ নিয়েই বলেছে! সেখানে কিভাবে কি করবে! নাবানকে নিয়ে যে একটা জীবন পার করতে হবে এমন চিন্তা নেই! বেশ কয়েকটি মেয়ে নাবান রিজেক্ট করে দেয়! তার মা হতাশ! আমেরিকা থেকে এর আগেও সাতবার বাংলাদেশে এসেছে! কিন্তু মনের মতো আর কাউকে পায়নি!
নাবান আমেরিকা চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই! তার মায়ের কান্না! এবারও বিয়ে না করে চলে যাবে নাবান! তখন নাবানের ছোট ভাইয়ের কাছে আরেকটি মেয়ের ডকুমেন্ট ছিল! এটাই শেষ দেখা! তার ছোট ভাইয়ের অনুরোধ ছবিটা দেখার জন্য। নাবান বিরক্ত হয়েই ছোট ভাইয়ের আবদার রাখলো! ছবি দেখেই মেয়েটিকে ভালো লেগে যায় নাবানের! পরদিনই সিদ্ধান্ত নেয় মেয়েটিকে দেখতে যাওয়ার জন্য। বরাবরের মতো মেয়ের গার্জেনরা মেয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ! যা মোটেও নাবানের পছন্দ হচ্ছিল! মেয়ে তখন পার্সোনালি কথা বলে। কথা বলে সব সত্যি কথা বলে দেয়! মেয়েটির নাম নীলিমা! এতোক্ষণ তার বাবা-মা যা বলেছে সব মিথ্যে! আর নীলিমা বিয়ে করতেও রাজি নয়! কারণ চেনা-জানা নেই এমন কাউকে সে বিয়ে করবে না! দুজনের ভাবের আদানপ্রদান যদি ঠিকঠাক মতো হয় তাহলে বিয়ে করবে!
নাবানের কেন জানি এই মেয়েটিকেই ভালো লেগে যায়! বাসায় গিয়ে নাবান সিদ্ধান্ত নেই এই মেয়েকে বিয়ে করবে! তার মা আর ছোট ভাই এই খবর শুনে মহাখুশি! এদিকে নীলিমার মা-বাবা টেনশন করছিল কারণ! নাবানের পরিবার থেকে তখনও কিছু জানায়নি! কিছুক্ষণ পরেই ফোন করে জানায় মেয়ে তাদের পছন্দ হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব বিয়ে করে ফেলবে! নীলিমা অবাক হয়ে যায় এই নিউজ শুনে। কারণ ছেলেকে তো সে সব বলে দিয়েছিল, তারপর কেন বিয়েতে রাজি হলো! নীলিমা বিয়েতে রাজি হবে তবে নাবানের বেশ কিছু শর্ত মানতে হবে। যদি শর্তগুলো সে মানতে পারে তাহলে তাকে বিয়ে করে। প্রথমেই তাকে পরীক্ষা দিতে হলো বাবু ভাইয়ের কাছে। কলেজের সভাপতি বাবুভাই অনেকদিন ধরে নীলিমাকে পছন্দ করে। যদি বলতে পারে আমরা বিয়ে করবো তাহলে সে বিয়ে করবে! পরীক্ষায় পাস হলো নাবান! তারপর আবার আরেক পরীক্ষায় পরতে হলো!
এইসআইভি টেস্ট করতে হবে। কারণ বাহিরের দেশে কি না কি করেছে! যদি এইচআইভি থাকে তখন!! এইচআইভি টেস্ট করে দুজন। দুজন পরীক্ষায়-ই এইচ আইভি নেগেটিভ এসেছে! তারপর নীলিমা রাজি বিয়ে করার জন্য! বিয়ের সব এরেঞ্জমেন্ট করা শেষ এখন শুধু বিয়ের পালা! ঠিক তখন নাবান একটা গোপন কথা বলে নীলিমাকে! আমেরিকায় গ্রিন কার্ড পাওয়ার জন্য সে কন্টাক্ট ম্যারেজ করেছিল! এটা শুনে নীলিমার মন একদম ভেঙে যায়! বিয়েটাও ক্যানসেল করে দেয় নীলিমা!
তার কিছুদিন পর নাবান নীলিমাদের বাসায় যায়! নীলিমা মন খারাপ করে বারান্দায় দাড়িঁয়ে আছে! নাবান তখন বলে বিয়েটা ভেঙে দিলে যে! কারণ সে কন্টাক্ট ম্যারেজ করা কারো সাথে বিয়ে করতে পারবে না! নাবানকে সে ভালোবেসে ফেলেছিল। বিয়ের পর জানতে পারলে বিষয়টা আরও বড় হতো। তখন নাবান সত্যটা বলে দেয়! আমেরিকায় সে কোনো কন্টাক্ট ম্যরেজ করেনি। তার মানে নীলিমার সাথে ফ্লার্ট করেছিল। ফাইনালি দুজনের বিয়েটা হয়েই যায়! নালিমার মনের মতো একজনকে পায়! আর সেখানেই নাটকের সমাপ্তি ঘটে।
ব্যক্তিগত মতামত
ব্যক্তিগতভাবে বলতে গেলে নাটকটি ভালোই ছিল। সমাজের যে বিয়ে করা নিয়ে কিছু অপসংস্কৃতি আছে সে বিষয়গুলোও ফুটে উঠেছে। পরিচালক বুঝাতে চেয়েছেন, ছেলে কর্মজীবী হলেই তাকে বিয়ে করতে হবে এমন নয়, মনের মতো একজন মানুষ পেলেই হলো। যাকে নিয়ে বাকিটা জীবন অনায়াসে পার করা যাবে। ফারহানের অভিনয় ভালো ছিল। যদিও ফারহানের নাটক কম দেখা হয় আমার। সামিরা খান মাহি ভালো অভিনয় করেছে।
ব্যক্তিগত রেটিং
নাটকটির লিংক
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
সবাই চায় নিজের মনের মত করে লাইফ পার্টনার বানাতে। কিন্তু এই বিষয়টি সবাই মানতে চায় না। যদিও এই নাটকটি আমার এখনো দেখা হয়নি কিন্তু আপনার রিভিউ পোস্টের মাধ্যমে দেখে একটু বেশি ভালো লেগেছে। এই নাটকটিতে কিন্তু বেশ ভালোই একটি বিষয় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তাহলে। আসলে মনের মত একজন মানুষ ফেলে তাকে নিয়ে বাকিটা জীবন অনাহাসে পার করা যাবে। ভালই লাগলো আপনার আজকের নাটকের রিভিউ।
জি ভাইয়া আপনি ঠিক বলেছেন। মনের মতো একজন মানুষ পেলেই হয়! যার সাথে বাকিটা জীবন পার করা যায়, যতটুকু চাহিদা দরকার সেটুকু নিয়েই সন্তুষ্ট থাকে
নাটকের রিভিউ দেখে মনে হচ্ছে নাটকটি বেশ সুন্দর ছিল। তবে আগে যে পরিমাণ নাটক দেখা হতো এখন তেমন দেখাই হয় না। আগে তো দিনে তিন-চারটা নাটকও দেখা হতো। কিন্তু এখন কবে যে নাটক দেখেছি সেটাই ভুলে গিয়েছি। তবে অনেকের নাটকের রিভিউ গুলো দেখে ইচ্ছে করে সময় নিয়ে বসে নাটক গুলো দেখি। কিন্তু সময় আর হয়ে ওঠে না।
জি আপু ঠিকই বলেছেন! আগের তুলনায় এখন আর ওভাবে নাটক দেখা হয়না। সময় ম্যানেজ করাটাই যে কঠিন এখন!
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
লাইফ পার্টনার নাটকটি কখনো আমার দেখা হয়নি। কিন্তু আপনার নাটক রিভিউ পড়ে দেখার ইচ্ছে হলো। কিন্তু নাটকটি ডাউনলোড করতে কি আমি দেখলাম আপনি ইউটুবের লিংক এখানে দেননি। এমনিতেই মুশফিক ফারহান এর নাটক দেখতে আমি অনেক বেশি পছন্দ। নাটকের মধ্যে রোমান্টিক কিছু দৃশ্য ছিল সবগুলো মিলিয়া নাটকটি বেশ দারুন হয়েছে।
লিংক তো দিয়েছি ভাই নাটকের নিচে দেখেন। সেখানে ক্লিক করলেই ইউটিউব এ দেখতে পারবেন।
আসলে ছেলে কর্মজীবী হলেই তাকে বিয়ে করতে হবে এমন তো নয়। মনের মত একজন মানুষ পেলেই হয়েছে। পরিচালক এই নাটকটিতে কিন্তু বেশ ভালোই একটি বিষয় ফুটিয়ে তুলেছে। আমার কাছে এরকম নাটক গুলোর রিভিউ পড়তে একটু বেশি ভালো লাগে। সম্পূর্ণটা বলতে গেলে এক কথায় অসাধারণ ছিল। এরকম নাটকগুলোর মাধ্যমে বেশ কয়েক রকমের বিষয় তুলে ধরা হয়। সেজন্য একটু বেশি ভালো লাগে।
জি আপু! নাটকের বিষয়বস্তু আমার কাছেও ভালো লেগেছিল, তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।
ভাইয়া খুব সুন্দর একটি নাটকের রিভিউ দিয়েছেন। এই নাটক আগে দেখা হয়নি। কিন্তু আপনার রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লাগলো। সত্যি জীবনে একজন ভালো লাইফ পার্টনার না থাকলে সামনে এগিয়ে যাওয়া খুবই কষ্টের। তারজন্য সবকিছু দেখে শুনে লাইফ পার্টনার ঠিক করা উচিত। ধন্যবাদ সুন্দর একটি নাটক রিভিউ দেওয়ার জন্য।
জি আপু! জীবনে একজন ভালো লাইফ পার্টনার না পেলে জীবনে অনেক কষ্ট পেতে হয়।
twitter share link
বাংলাদেশের নাটক গুলোতে এক একটা নাটকের এক একটা বিষয়বস্তু তুলে ধরে।বর্তমান সমাজে বেকার ছেলেদের বিয়ের খুব কঠিন একটা বিষয়। মেয়ের বাপ-মা সব সময় চায় একটা চাকরিজীবি ছেলের সাথে মেয়েকে বিয়ে দেয়।এ বিষয়টাও ঠিক আছে কিন্তু লাইফ পার্টনার অর্থাৎ জীবন-সঙ্গিনী যদি মনের মত হয় তাহলে খুব কম কিছু থাকলেও সেখানে সুখী হওয়া যায়।এই নাটকের পরিচালক জাকারিয়া সখৌন খুব সুন্দর হবে এই বিষয়টি ফুটে তুলেছেন। অনেক সুন্দর একটি নাটক আমাদের মাঝে রিভিউ করেছেন আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
জি ভাইয়া। আমাদের সমাজে বেকার ছেলেদেরকে বলতে গেলে উপেক্ষা করা হয়! ছেলে কর্মজীবী না হলে মেয়ে পাওয়া কঠিন।
ঠিক বলেছেন হাসির অন্তরালে কত কষ্ট চাপা থেকে যায় তার হিসেব নেই। আপনি পড়ার ফাঁকে সুন্দর একটি নাটক দেখে ফেললেন। আসলে যেকোন লম্বা সময়ের কাজে একটু রিফ্রেশমেন্ট না হলে একঘেয়েমি ভাব চলে আসে। নাটকের রিভিউ পড়ে ভাল লাগল। মুশফিক ফারহান এর নাটক কম দেখা হয় তবে সে খুব ভাল অভিনয় করে। সামিরা মাহি নতুন মুখ হিসেবে ভাল করছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
জি ভাইয়া। আপনি ঠিক বলেছেন। পড়ার ফাকেঁ একটু রিফ্রেশমেন্ট না হলে কেমন জানি বোরিং ফিল হয়।