কনসিসটেন্সি বা ধারাবাহিকতা
20-11-2022
০৬ অগ্রহায়ণ ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? নিশ্চয় ভালো আছেন বা ভালো থাকার চেষ্টা করছেন। তবে ভালো থাকাটাই হলো মুখ্য। যাক, আজকে কিছু কথা শেয়ার করতে চলে এলাম।
আপনাকে যদি কেউ জিজ্ঞেস করে সবচেয়ে কঠিন কাজ কি? তাহলে কি বলবেন? আমাকে এই প্রশ্নটা করলে সোজা বলবো কনসিসটেন্সি মেইনটেইন করা! কি অবাক হচ্ছেন! অবাক হওয়ার কিছু নেই । বরং যা সত্যি তাই বললাম। কারণ কনসিসটেন্সি বা ধারাবাহিকতা কোনো কাজে বজায় রাখা কঠিন। আর সেই কঠিন কাজটা যারা করতে পেরে তারাই শুধু জীবনে সফল হতে পেরেছে! ইতিহাসের পাতা ঘাটলেই চোখে পড়ে হাজার হাজার সব সাফল্যের গল্প। তাদের সাফল্যের মূলমন্ত্র ছিল কনসিসটেন্সি। অর্থাৎ তারাঁ যে কাজ শুরু করতেন সে কাজটি ধারাবাহিকতা বজার রেখে করতেন। আজ যতটুকু করার দরকার ঠিক তত টুকুই করতেন আবার কাল ঠিক একইভাবে করে যেতেন। মূলত তারাঁ টার্গেট ফিক্সড করে সামনে আগাতেন। যার জন্য তারাঁ খুব সহজে জীবনে সফল হতে পেরেছে।
ধরুন আপনার হঠাৎ মনে হলো আপনাকে পড়ালেখায় সিরিয়াস হতে হবে! সামনে ফাইনাল পরীক্ষা। একটা রুটিনও তৈরি করেছেন। রুটিনে ঠিক করলেন প্রতিদিন ছয়ঘন্টা করে পড়াশোনা করবেন। প্রথম দিন একটানা ছয়ঘন্টা পড়াশোনা করেই টেবিল থেকে উঠলেন । দ্বিতীয় দিন সেইম ছয় ঘন্টা পড়াশোনা করলেন। কিন্তু তার পর থেকে আর ছয় ঘন্টা পড়তে পারছেন না। দুই ঘন্টা পড়েই পড়াশোনা অফ করে দেন। তাহলে আপনার যে টার্গেট ছিল ফাইনালের আগে বই শেষ করার সেটা কি সম্পূর্ণ করতে পারবেন? করতে পারবেন না কখনো। কারণ প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন কভার করতে না পারলে এটা শুধু বাড়তেই থাকবে। এদিকে আপনার পড়ার প্রতি আগ্রহ কমতে। অথচ আপনি নিজেই কিন্তু কাজটা আগ্রহ নিয়ে শুরু করেছিলেন। এখন আর কাজটা করতে পারছেন। অর্থাৎ আপনি ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারছেন না। আর ধারাবাহিকতা যেহেতু বজায় রাখতে পারছেন না তাহলে আপনার টার্গেটও পূরণ হবে না!
আপনি যদি জীবনে সাফল্য পেতে চান অবশ্যই আপনাকে কনসিসটেন্সি বজায় রাখতে হবে। ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে না পারলে কখনই সফল হওয়া সম্ভব না। আপনি যে কাজই করেন না কেন কনসিসটেন্সি মেইনটেইন করতে না পারলে আপনার কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌছাঁতে পারবেন না। আমরা বাঙালিদের একটা প্রবলেম হচ্ছে কোনো একটি কাজ খুব আগ্রহ নিয়ে শুরু করি কিন্তু কিছুদিন পরেই আমরা ভুলে যায়। ছোট বেলায় যখন স্কুলের নতুন বই হাতে পেতাম তখন খুব আনন্দ হতো। বাড়িতে গিয়েই সন্ধ্যা থেকে পড়া শুরু করে দিতাম। কিন্তু কিছুদিন বাদেই আর পড়ার কোনো খবর নাই। পরীক্ষার আগে অনেক পড়া জমে যেত। রেজাল্টও খারাপ আসতো। অথচ আমার সাথেই যারা ভর্তি হয়েছিল তারা ভালো করেছে। তারা পড়ালেখায় হয়তো কনসিসটেন্সি বজায় রেখেছিল!
সাকিব আল হাসানের কথায় ধরুন না কেন! এক ম্যাচ খারাপ খেললেই আমরা তাকে নিয়ে কতো সমালোচনা করে বসে থাকি। তাকে কেন টিমে রাখে? অলরাউন্ডার হয়েও পারফর্মেন্স এতো খারাপ কেন! নানা ধরনের প্রশ্ন করে থাকে। আর মিডিয়া একের পর এক নিউজ বানিয়েই যায়। ঠিক উল্টো চিত্রটা হয় যখন সাকিব আল হাসান ভালো খেলে! প্রতিটা ম্যাচে রান পায়! খেলায় কনসিসটেন্সি বজায় রাখে। আমরাই তাকে বাহবা দেয়! এটাই তো নিয়ম! সো বুঝতেই পারছেন কনসিসটেন্সি কতটা গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জীবনে! একমাত্র ধারাবাহিকতা বজায় রাখলে নির্দিষ্ট টার্গেট ফিল আপ করা সম্ভব! আমি নিজেই চেষ্টা করি কনসিসটেন্সি বজায় রাখার। মাঝে মাঝে সেটা অনেক সময় সম্ভব হয়ে উঠেনা। এখন ভাবতে পারেন আপনি নিজেই তো পালন করতে পারেন না! তাহলে বলতেছেন কেন? আমি কনসিসটেন্সি বজায় রাখার চেষ্টা করি সবসময়। আর আমি কনসিসটেন্সি ব্যাপারটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জীবনে সেটা বলতে চাচ্ছি।
এবার স্টিমিটের কথায় আসি! ধরুন আপনি গত সপ্তাহে সাতটি পোস্ট করলেন। এক্টিভিটিসও খুব ভালো। এজন্য এক্টিভ লিস্টেও আসতে পেরেছেন। কিন্তু পরের সপ্তাহ থেকে আপনার খবর নাই! মাত্র দুটি পোস্ট করেছেন! তাহলে কিভাবে আপনি এক্টিভ লিস্টে আসবেন! এক্টিভিটিস ধরে রাখতে হলে অবশ্যই কাজের প্রতি কনসিসটেন্সি হতে হবে। কনসিসটেন্সি না হলে আপনি কখনই এক্টিভ লিস্টে আসতে পারবেন না। সো ধারাবাহিকতা বজায় রেখে কাজ করতে হবে। যদিও ধারাবাহিকতা বজায় রাখা কঠিন একটি কাজ। তবে চেষ্টা করতে তো কোনো ক্ষতি নেই! এ সপ্তাহে যেমন সাতটি পোস্ট করেছেন ঠিক পরের সপ্তাহেও সাতটি বা ছয়টি পোস্ট করার চেষ্টা করুন। তাহলে দেখবেন আপনার টার্গেটও পূরণ হলো এক্টিভ লিস্টেও আসতে পারতেছেন!
যাক, আর বেশি কথা বাড়ালাম না! আমার বাংলা ব্লগকে ধন্যবাদ না দিলেই নয়! এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে আমার মায়ের ভাষায় কথা বলা ও লেখার সুযোগ করে দেয়ার জন্য। এজন্য আমার বাংলা ব্লগের প্রতি আমি চির কৃতজ্ঞ! আমি সবসময় যে কথাটা বলি! আমি আসলে কোনো মোটিভেটর নয়, আমি জাস্ট মনের ভিতরের কথাগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিলাম। আপনাদের কাউকে কষ্ট দিয়েও কোনো কথা লিখেনি। ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। সকলের সু্স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি! আল্লাহ হাফেজ 🌼🦋
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
আপনার পড়াটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া এবং অনেক বেশি অনুপ্রেরণা পেয়েছি।আপনার কথা একদম বাস্তব।জীবনে যদি সফলতা অর্জন করতে হয় তাহলে কনসিসটেন্সি অবশ্যই বজায় রাখা দরকার।কারণ কোন কাজের ধারাবাহিকতা থেকে যদি গ্যাপ পড়ে তাহলে কভার করা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে।ফলে সফলতার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায়।আমাদের সকলের উচিত কনসিসটেন্সি বজায় রাখা। ধন্যবাদ আপনাকে মূল্যবান একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন।
জি আপু! আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার একটি মন্তব্য করার জন্য 🌼🦋
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
কনসিসটেন্সি অথবা ধারাবাহিকতা খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে গেছেন। আপনি ঠিকই বলেছেন সফলতা অর্জন করতে হলে অবশ্যই ধারাবাহিকতা থাকতে হবে। জীবনে ধারাবাহিকতার অমূল্য একটা জিনিস। আপনি বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে গেছেন। ভালো করলে সবাই বাহবা দিবে, খারাপ করলে আবার ঠিক তার উল্টোটা নিন্দা শুনতে হবে। অতএভ কনসেসটেন্সি বজায় রাখতে পারলে জীবনে সফল হওয়া যায়। আমাদের মাঝে এত সুন্দর করে আপনার অনুভূতিগুলো শেয়ার করার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
জি আপনাকেও ধন্যবাদ পোস্টটি পড়ার জন্য 🌼। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল 🌼🦋
ভাইয়া আপনি খুবই সুন্দর একটি পোস্ট নিয়ে আমাদের মাঝে হাজির হয়েছেন। ধারাবাহিকতা নিয়ে আপনি খুব সুন্দর একটা পোস্ট করেছেন। আসলে প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে একটি লক্ষ্য ঠিক রেখে, সে ধারাবাহিকতা অনুযায়ী চলা উচিত। সেটা যে ক্ষেত্রেই হোক না কেন, যেমন আপনি কয়েকটি উদাহরণ দিয়েছেন। সেটা হচ্ছে পড়াশুনা নিয়ে, জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছানো নিয়ে, এবং স্টিমেট নিয়ে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে আপনার এই উদাহরণগুলো।
জি আপু । চেষ্টা করেছি বাস্তব সম্মত উদাহরণ দেয়ার জন্য। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু 🌼🦋
খুবই অনুপ্রেরণামূলক কথা বললেন। আসলে ঠিকই বলেছেন যে কোন কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখলে সেটাতে সফলতা সম্ভব। আমি মনে করি কোন কাজের ধারাবাহিকতা যদি না থাকে তাহলে সে কাজটা সম্পূর্ণ করা সম্ভব নয়। আমি নিজেও ধারাবাহিকতার সাথে কাজ করতে পছন্দ করি। বিশেষ করে আমার বাংলা ব্লগের কথা বললেও আমি সবসময় প্রতি সপ্তাহে নিজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার চেষ্টা করি। আসলে ধারাবাহিকতা বজায় না রাখলে প্রতি সপ্তাহে সুপার অ্যাকটিভ লিস্টে আসাও সম্ভব নয়। আর আপনার উদাহরণ প্রত্যেকটা ভীষণ ভালো লাগলো।