বাদ পড়া!

22-11-2022

০৮ অগ্রহায়ণ ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


flower-887443_1280.jpg

copyright free image from pixabay

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই অনেক ভালো আছেন 🌼। আমি ভালো খারাপ মিলিয়েই আছি। তবে সবসময় যে কথাটা বলি, ভালো থাকার চেষ্টা করছি। আসলে আমাদের লাইফে কিছু অনুভূতি থাকে যা মনে দাগ হয়ে রয়ে যায়। চাইলেও সে অনুভূতিগুলো প্রকাশ করা যায় না। তবে সে অনুভূতিগুলো থেকেই একটা সময় আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হয়! সামনে এগিয়ে যেতে হয়। তবেই জীবনে কিছু করা সম্ভব বলে আমি মনে করি।

ছোটবেলা থেকেই একটু কম কথা বলতাম! বন্ধুদের আড্ডায় গেলে শুধু বসে বসে বন্ধুদের কথা শুনতাম! গুরুত্বপূর্ণ কোনো অভিমত না হলে তেমন কথা হতো না! বন্ধুরাও যে আমাকে তেমন পাত্তা দিতো না সেটা আমি ঠিকই বুঝতে পারতাম। আমি ছিলাম নীরব দর্শকের মতো। তবে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম একদিন হয়তো কেউ আমার কথাগুলো মন দিয়ে শুনবে, কোনো মঞ্চে উঠে মোটিভেশনাল কিছু কথা বলবো। আমার কথা শুনে কেউ হয়তো আরও একবার বেচেঁ থাকার ইচ্ছে তৈরি হবে। জীবন থেমে থাকে না। মাঝে মাঝে নিজের ভিতরে ফ্যান্টাসি কাজ করতো! আমার স্বপ্নগুলো কখন পূর্ণ হবে! সেবার স্কুল থেকে পিকনিকে যাবে। পিকনিকে জায়গা সিলেক্ট করার দায়িত্ব দেয়া হলো এক বন্ধুকে। তখনও স্যারদের কাছে সুপ্রিয় কোনো ছাত্র হতে পারেনি। কোনো কাজ হলে প্রথম সারীর ছাত্ররাই ট্যাকেল দিতো সব!

ট্যরের জন্য গোগলে তখন বেশ কয়টি স্পট দেখা হলো! বিশেষ করে রাঙামাটির দিকে নজর ছিল খুব! স্পট সিলেক্ট করা হলো সাজেক! বাংলাদেশে যে এমন একটি জায়গা আছে আমি সেবার প্রথম জানতে পেরেছিলাম! ইন্টারনেট ব্রাউজিং সম্পর্কে তখনও এতোটা এক্সপার্ট ছিলাম না! স্যার এমন জায়গা শুনে সোজা রাজি হয়ে গেল। গৌতম স্যার আবার ভ্রমণ করতে ভালোবাসেন। তখন শীত ছিল! ট্যুরে যাওয়ার পারফেক্ট টাইম ছিল তখন। একটা তারিখ ফিক্সড করা হলো। কিন্তু ট্যুরে যেতে পারবে ৪০ জন! আমি ভেবে রেখেছিলাম যেতে পারবো। যেহেতু জায়গাটাও সুন্দর আর যাওয়াও হয়নি। এবার যেতে পারলে ভালোই হয় । কিছুটা এক্সাইটেড ছিলাম তখন। কিন্তু যখন দেখি আমার নাম নেই, তখন মনে হয়েছিল পৃথিবীর অভাগা লোকদের মধ্যে একজন। আমাকে না নেয়ার কারণ জানতে চায়নি। চুপ করে বাড়িতে চলে আসি। এর পরে এক সপ্তাহ স্কুলেই যাওয়া হয়নি । স্টুডেন্ট হিসেবে এতোটাও ভালো ছিলাম না। তাই কারো দরকারও হয়নি যোগাযোগ করার। তখন বুঝতে পেরেছিলাম, জীবনে একা চলাটাই ভালো। যদিও সেটা কষ্টকর!

মনে মনে সেদিন প্রতিজ্ঞা করেছিলাম। ভালো করে পড়াশোনা করবো। সেভাবে শুরু করেছিলাম। স্কুল ছুটির পরও লাইব্রেরিতে গিয়ে বই পড়তাম। একা একা বসে। বাহিরের জগত সম্পর্কে জানার চেষ্টা করতাম। প্রতিবারই বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হতো স্কুলে। আমার খুব ইচ্ছে ছিল বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার! যুক্তি দিয়ে হলেও বুঝিয়ে দিতো পারবো আমি পারি! কিন্তু সেটাও যেন আমার ভাগ্যে ছিল না । ক্লাসে স্যার এসে নাম ঘোষণা করলেন পাচঁ জনের। সেটাও আবার ক্লাসের টপারদের দেখে দেখে। এতোটা ভালো ছাত্র না হওয়ায় সেদিনও বাদ পড়েছিলাম। পাশের বেঞ্চে বসে কেউ একজন বলেছিল আমার নামটি দিতে। কিন্তু স্যার আর আগ্রহ দেখায়নি। মানসিকভাবে সেদিনও খানিকটা ভেঙে গিয়েছিলাম। বাদ পড়ার মতো দূর্বিষহ যন্ত্রণার আর কিছু নেই। আমি যেন হারে হারে টের পেয়েছিলাম। এর পর অবশ্য সাহস হয়নি বন্ধুদের সাথে তেমন মেশার। স্পেসেপিক কয়েকজন বন্ধু ছাড়া আর কারো সাথে তেমন মেশা হতোই না।

তবে যায়হোক, এখন আলহামদুলিল্লাহ মানসিকভাবে ভালো আছি বা ভালো থাকার চেষ্টা করি! আমার বাংলা ব্লগের সাথে যুক্ত হবার পর থেকে মানসিকভাবে আমি মনে করি সবাই স্ট্রং হয়েছে! সবাই তাদের মনের কথাগুলো শুনতে পারছে। কিছুটা হলেও তার অনুভূতি বুঝতে পারছে। আপনার অনুভূতি শোনার মানুষ তো পেয়েছেন, সেটাই বা কম কিসের! তবে আমার মাঝে মাঝে খারাপ লাগে, যারা আমার মতো বাদ পড়ে যায় তাদের দেখে। সে অনুভূতিটা যে কতটা যন্ত্রণার শুধু তারাই বুঝতে পারে।

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 2 years ago 

আপনার লেখাটি পড়ে আসলেই অনেক খারাপ লাগলো। যারা একটু কম বোঝে এবং কম কথা বলে মানুষ মনে করে যে তাদের কোন গুরুত্ব নেই কিন্তু আমি মনে করি সবারই গুরুত্ব রয়েছে এবং সবারই একটা সুযোগ দেওয়া উচিত। সুযোগটা দিলে মানুষ তার শেয়ারটা দিয়েই চেষ্টা করবে। আজ এখানে আমরা সবাই একসাথে মিলে কাজ করছি এবং সবাই সবার লেখাটা মনোযোগ সহকারে পড়ছি এটাই তো বড় কথা।

 2 years ago 

জি আপু আপনি একদম ঠিক বলেছেন! সবাই আমরা একজন আরেকজনের অনুভূতিগুলো কিছুটা হলেও বুঝতে পারছি! এটাই তো অনেক 🌼🦋

 2 years ago 

বিশ্বের সবচেয়ে জ্ঞানী গুণী মানুষজন যারা আছেন তারা বিচার বিশ্লেষণ করে যেটা বের করছেন সেটা হচ্ছে সবচেয়ে পিছনের বেঞ্চে বসা ছেলে-মেয়েটি সাইনি করতে পারে তাদের জীবনকে।আমি নিজের চোখেই দেখেছি যেসব ভালো ছাত্রছাত্রীরা পিছনের স্টুডেন্টদেরকে অবহেলা করে সে সব ভালো স্টুডেন্টরা আজকাল অবহলিত।তারা জীবনকে সাইন করতে পারেনা।অতীতে যা হয়েছে সেটা মনে করে লাভ নেই।এখন তো ভালো আছেন সেটা হচ্ছে খুশির কথা।ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

জি অতীতের কথা মনে করে লাভ নেই! বর্তমান নিয়ে ভাবাই ব্যাটার হবে । ধন্যবাদ আপনাকে 🌼🦋

 2 years ago 

মানসিক যন্ত্রণা অনেক বড় একটি যন্ত্রণা যার কোনো ওষুধ নেই যার কোনো চিকিৎসা নেই। তবে এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হলে অবশ্যই বন্ধুর প্রয়োজন এবং সময় কাটানোর জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রয়োজন। শুনে আনন্দিত হলাম আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি তে এসে আপনি সেই বিষয় থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন, আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

জি আপু মানসিক যন্ত্রনা খুবই পীড়াদায়ক! এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হলে একজন বন্ধুর প্রয়োজন। কিন্তু এখানে অনেক ভাই, বোন, বন্ধু পেয়েছি এটাই বা কম কিসের 🌼🦋

 2 years ago 

ভাইয়া আপনার কথাগুলো মনে আসলেই দাগ কেটে গেলো।আসলেই অবহেলা জিনিসটা খুব খারাপ জিনিস,কেউ অবহেলা করলে মন থেকে অনেক কষ্ট লাগে।ভাইয়া আপনি যেহেতু ভেঙ্গে পড়েননি,আশা করি আপনি একটা ভালো পর্যায়ে যেতে পারবেন।আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো। ধন্যবাদ

 2 years ago 

জি আপু অবহেলা জিনিসটা আসলেই খুব কষ্টের! আপনাকে ধন্যবাদ 🌼🦋

 2 years ago 

স্কুল লাইফে ভালো ছাত্র না হলে বা ভালো ছাত্রদের গ্রুপে না থাকলে এভাবেই অবহেলিত হতে হয়। আপনার হয়তো অবহেলিত হওয়ার আরো একটি কারণ যে কথা কম বলতেন। অনেকে আছে পড়ালেখায় খুব একটা ভালো না হলেও তার মেশার ক্ষমতায় তাকে অনেক দূর নিয়ে যায়। যাই হোক আপনি আপনার কথাগুলো বলার জন্য এখন ভালো একটি প্ল্যাটফর্ম এখানে পেয়েছেন। আশা করি আপনার স্বপ্ন পূরণ হবে।

 2 years ago 

কম কথা বলা আমার খারাপ গুণ বলবো কি না জানিনা, তবে বেশি কথা বলতে পারিনা তেমন! যায়হোক আপু আপনাকে ধন্যবাদ 🌼🦋

 2 years ago 

ভাই আপনার লেখাগুলো পড়ে মনটা বেশ খারাপ হয়ে গেল। এই পৃথিবীতে যারা কম কথা বলে তারাই কিন্তু বেশি জ্ঞানী। কারণ জ্ঞানীরা সবসময় কথা কম বলে। আমি বলব মানুষিক যন্ত্রণা একটি কঠিন রোগ। আর এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে মানুষের সাথে চলাচল করতে হবে, সবসময় মানুষের সাথে মিশে থাকতে হবে।এত প্রতিকূলতার মধ্যেও নিজেকে শক্ত করে দাঁড়িয়ে আছেন এটাই সব থেকে বড় ব্যাপার। এভাবে একদিন আপনি নিজেকে উন্নতি করতে পারবেন।

 2 years ago 

জি ভাইয়া! আপনার মন্তব্য পড়ে অনেক ভালো লাগলো 🌼🦋। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।

 2 years ago 

আপনি সকল রোগের ওষুধ পাবেন কিন্তু কখনো মানসিক রোগের ওষুধ পাবেন না। আমার মতে কম কথা বলাটাই ভালো। যে কম কথা বলে তারাই জীবনে সাফল্য অর্জন করতে পারে। আমাকেও ছোটবেলায় অনেকে অনেক কথা বলতো আমি কথা কম বলতাম বলে। কিন্তু আমি কারো কথায় পাত্তা দিতাম না। আমি নিজের মতোই থাকতে বেশি পছন্দ করতাম। তারাই বেশি জ্ঞানী হয় যারা কথা কম বলে। আপনার এই গল্পটি পড়ে খুবই খারাপ লাগলো। অতীতের এরকম কথা গুলো মনে না রাখাই ভালো।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64041.25
ETH 2762.17
USDT 1.00
SBD 2.66