শিক্ষা ব্যবস্থার একাল-সেকাল
03-02-2024
২১ মাঘ , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো ভালো থাকতে পারাটাই আমাদের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আজকে অবশ্য চলে এলাম ভিন্ন টপিক নিয়ে আলোচনা করার জন্য! আপনারা নিশ্চয় অবগত আছেন যে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী পরীক্ষা নামক প্যারাট বলতে গেলে একেবারে তুলেই দেয়া হয়েছে। আর নবম-দশম শ্রেণীতে শাখা ভিত্তিক পড়াশোনাটাও এবারের কারিকুলাম অনুযায়ী তুলে দেয়া হয়েছে। বলতে গেলে সবাই এখন একই বই পড়বে। কাউকে বলতে হবে না উনি বিজ্ঞান শাখার ছাত্র অথবা কমার্স বা মানবিক শাখার ছাত্র! তো এবারের শিক্ষা ব্যবস্থায় অনেক সমালোচনার ঝড় ইতোমধ্যে সোস্যাল মিডিয়াতে দেখলাম। শিক্ষার পুরো প্রসেসটা একদম ভিন্ন করে ফেলা হয়েছে বলতে গেলে।
আমি কিছুদিন আগে নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী ক্লাস নবম-দশম শ্রেণীর বইগুলো দেখলাম। বলতে গেলে অনেকটাই অবাক হয়ে গেলাম। আসলে পরীক্ষা নামক যে প্যারাটা এটা যদি তুলে দেয়া হয় তাহলে স্বভাবতই ছাত্ররা পড়তে চাইবে না। কারণ তথ্য প্রযুক্তির যুগে বর্তমান জেনারেশন একটু বেশি আকৃষ্ট হয়ে গিয়েছে। তারা কম বয়সেই হাতে স্মার্টফোন পেয়ে যাচ্ছে এবং খুব সহজেই নতুন দুনিয়ার সাথে পরিচিতি লাভ করছে। তবে সমস্যা হলো ফোনের অপব্যবহার! কম বয়সে হাতে ফোন দেয়ার ফলে হয় কি, ফোনে ফ্রি ফায়ার, পাবজি এমন ধরনের গেইমে আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। এতে করে এমনিতেই তাদের পড়ালেখার প্রতি অনীহা বাড়ছে। বর্তমান কারিকুলাম অনুযায়ী বলি তাহলে আমি বলবো তাদেরকে আরও বেশি সুযোগ দেয়া হয়ে গিয়েছে এসবে! কারণ আপনি খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন, এমনিতেই তারা পড়তে চাই না তার উপর আবার পরীক্ষার প্যারাও নাই!
তার মানে তাদের সৃজনশীলতার বিকাশটা হবে কি করে! বরাবরই সৃজনশীল মানসিকতা তৈরি হবে না। তবে বিশেষজ্ঞদের মত হলো, মুখস্থ থেকেও প্র্যাকটিক্যালি মানুষের মনে থাকে বেশি। আপনি যদি মুখস্থ না করে প্র্যাকটিক্যালি কাজটা করেন তাহলে কাজটা আপনার মনে থাকবে এবং আপনার জীবনেও এটিকে ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু ঝামেলা হলো বর্তমান জেনারেশনের বাচ্চারা জানার আগ্রহটা অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছে। বইয়ে যদি দেখে কিভাবে নাচতে হয় কিভাবে ডিম ভাজতে হয় তাহলে কেমন হবে! এ বিষয়গুলো বইয়ের বাইরেও জানা যায়। তবে পাঠ্যবইয়ে যোগ করে প্র্যাকটিক্যালি দেখানোর কি মানে আছে আমার জানা নেই আসলে। তবে এটা ঠিক, একটা জাতিকে উন্নতির চরম শিকরে নিতে হলে প্র্যাকটিক্যালি জ্ঞান থাকা জরুরি। প্র্যাকটিক্যালি জ্ঞান থাকলে সহজেই টাকা আয় করার উপায় পাওয়া যায়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এগুলো আদৌ সম্ভব হনে কি না।
২০১৮ সালের কথাই যদি বলি! আমাদের সময়ই সাতটা সৃজনশীল দিয়েছিল তারপর থেকে কার্যকর হয়েছিল। বলতে গেলে আমরাও অনেকটা স্ট্রাগল করেছিলাম তখন। হঠাৎ করেই পরীক্ষার আগে সাতটা সৃজনশীল লিখতে হবে এটা আমাদের উপর এক প্রকার চাপিয়েই দেয়া হয়েছিল বলতে গেলে। আমাদের সময় তো একটু হলেও পড়াশোনা হতো। কিন্তু বিশ্বাস করেন, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান যথাযথ শিক্ষা হয় না। কারণ পড়াশোনার প্রতি তাদের অনীহা চলে আসছে। এখন কথা হলো আপনি মাথায় চল্লিশ কেজি বস্তা নিতে চান না, আমি যদি আপনাকে আশিঁ কেজি বস্তা দিয়ে বলি চলো যায়। তাহলে কেমন লাগবে! মোটেও ভালো লাগবে না। আপনি যতটুকু নিতে পারবেন ততটুকুই দিতে পারলে ভালো। তবে আপনার যদি সেটুকুও নেয়ার আগ্রহ না থাকে তাহলে আর যায়হোক কিছুই হবে হবে।
যেহেতু নতুন কারিকুলাম এড করা হয়েছে। আর তথ্য প্রযুক্তির প্রসারও বাড়ছে। তো দেখার বিষয় হলো সামনের দিনগুলোতে কি হয়। আমি ইতোমধ্যেই বুঝতে পারছি ছাত্রদের পড়ালেখার প্রতি একটা অনীহা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কারণ আমি বেশ কিছু ছাত্রকে পড়িয়েছে। তাদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ তেমন নেই বলতে গেলে তাদেরকে জোর করে পড়ানো হয়। জোর করে আর যায়হোক পড়াশোনাটা কখনোই সম্ভব না আসলে। তবে আমি বিশ্বাস করি আগামীর প্রজন্মের হাত ধরেই বাংলাদেশ অনেকদূর এগিয়ে যাবে। তথ্য প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের পাশাপাশি আমাদের কোনো কিছু জানার আগ্রহটাও থাকা জরুরি। তবেই এ দেশ উন্নত হবে।
যাক, আজ এই পর্যন্তই। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এাখনেই বিদায় নিচ্ছি আল্লাহ হাফেজ 🌼
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
twitter share
কিছুই বুঝিনা আমরা যখন পড়ালেখা করেছিলাম তখন শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক কঠিন ছিল। দিন যতই যাচ্ছে ততই শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন আসতেছে। কি যে শুরু করে দিয়েছে সেটা নিজেও বুঝতে পারছি না। যাক সরকার যেটাই সকলের জন্য ভালো মনে করেছেন সেটা করছেন। সেটা আমি বা আপনি চিন্তা করলেও কিছু হবে না। কারণ সকলের বিচার বিবেচনা করে যেটা তারা ভালো মনে করেছেন সেটাকে মেনে নিতে বাধ্য জনগণ।
একদম ঠিক বলেছেন আপু। আমি বললে তো আর হবে না, বিশেষজ্ঞরাই এমন সিদ্ধান্ত নিলেন
কোন শিক্ষা ক্ষেত্রেই যদি পরীক্ষা ব্যবস্থা উঠিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে তো ছেলে মেয়েরা আর পড়াশোনা করবে না, এটা তো স্বাভাবিক বিষয়। তবে আমিও মনে করি যে, পাঠ্যপুস্তকের পুঁথিগত জ্ঞান থেকে প্রাকটিক্যাল জ্ঞান অনেক বেশি কার্যকরী। তবে সেটা সব ক্ষেত্রে হয় বলে আমার মনে হয় না। আর এখনকার ছেলে মেয়েরা যে পরিমাণে গেম কিংবা মোবাইলে আসক্ত তাতে পরীক্ষা ব্যবস্থা যদি পুরোপুরি উঠিয়ে দেওয়া হয় তাহলে পরবর্তী প্রজন্ম উন্নতির চরম শিখরে যাবে কিনা বলতে পারছি না, তবে বেশ ভালো রকমের একটা পরিবর্তন হবে এই দিকটাতে। এখন সরকার যেহেতু পদক্ষেপ নিয়েছে তার মানে কিছু একটা বুঝেই নিয়েছে। সেটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
জি দাদা আপনার সাথে আমিও একমত। তবে দেখার বিষয় হলো কতটুকু জ্ঞান তারা অর্জন করতে পারলো
হ্যাঁ ভাই, কতটুকু তারা জ্ঞান তারা অর্জন করতে পারছে এটাই আসল বিষয়। সময়ের সাথে সাথে সব কিছু বোঝা যাবে।
আমি মনে করি, আমাদের দেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থাটা একেবারেই বাজে। কারণ বেশিরভাগ স্টুডেন্টের হাতে এখন স্মার্টফোন রয়েছে। মূলত স্মার্টফোন ব্যবহারের সুফলের চেয়ে কুফল সবচেয়ে বেশি। সেজন্য দিন দিন স্টুডেন্টরা মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। তারা সারা বছর পড়াশোনা না করে, শুধুমাত্র পরীক্ষায় পাশ করার জন্য, পরীক্ষার সময় ভালো করে পড়তো। কিন্তু এখন যেহেতু পরীক্ষা দেওয়ার কোনো ঝামেলা নেই তাদের, তাহলে পড়াশোনার চাপ তাদের একেবারেই থাকলো না। এতে করে পড়াশোনার মান একেবারেই খারাপ হয়ে যাবে। তারা না পাবে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, না পাবে প্র্যাকটিক্যাল শিক্ষা। যাইহোক দারুণ লিখেছেন ভাই। এতো গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।